মাহবুব হোসেন, ভূরুঙ্গামারী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধিঃ
কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারীতে চলতি মৌসুমে সরিষার বাম্পার ফলন আর ভালো দামে কৃষকের মুখে ফুটে ওঠেছে স্বপ্ন পুরনের হাসি। এবার ভোজ্য তেলের দাম বাড়ার কারণে কৃষকদের সরিষা চাষে আগ্রহ ছিল বেশি। এছাড়াও সারা বছর ভোজ্যতেলের চাহিদা মেটাতেও সরিষা চাষ করছেন অনেক কৃষক। দাম ভালো পাওয়ায় খুশি কৃষকরা।
উপজেলা কৃষি অফিস সুত্রে জানাগেছে, চলতি মৌসুমে উপজেলার ২ হাজার ৪৫ হেক্টর জমিতে সরিষা আবাদের লক্ষ্য মাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। অর্জিত হয়েছে ২ হাজার ২০ হেক্টর। এর মধ্যে উচ্চ ফলনশীল বীনা-৪, বারী- ৯, বারী-১৪, বারী-১৭, বারী-১৮ ও দেশী জাতের সরিষা চাষ করেছেন কৃষক। উপজেলার বিভিন্ন হাট বাজার ঘুড়ে দেখা গেছে, প্রতি মণ সরিষা প্রকার ভেদে ২ হাজার ৪০০ টাকা থেকে ২ হাজার ৬০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
একাধিক কৃষকের সাথে কথা বলে জানা গেছে সরিষা চাষ খুবিই লাভজনক একটা আবাদ। অতি অল্প সময়ে, অল্প পুজিতে কৃষকরা লাভবান হন তাই অধিকাংশ কৃষক এখন সরিষা চাষের দিকে ঝুকছেন। দুটি ফসলের মাঝে কৃষকরা সরিষা চাষের ফলনকে বোনাস হিসেবে দেখছেন। আমন ধান কাটার পর জমিতে সরিষা লাগাতে হয়। যা মাত্র ৬০ থেকে ৭০ দিনের মধ্যে ফসল কৃষক ঘরে তুলতে পারেন। এক বিঘা (৩২ শতাংশ) জমিতে সরিষা আবাদ করতে খরচ হয় চার থেকে সাড়ে চার হাজার টাকা। যদি সঠিক ভাবে পরিচর্চা করা যায় তাহলে প্রতি বিঘায় ফলন হয় ৫ থেকে ৬ মণ সরিষা।
উপজেলার পাইকেরছড়া ইউনিয়নের ছিট পাইকেরছড়া গ্রামের কৃষক জব্বার আলী জানান, আমন ধান কাটার পর তিন বিঘা জমিতে সরিষা চাষ করেছি। ফলনও বেশ ভাল হয়েছে। প্রতি মণ সরিষা ২ হাজার ৫০০ টাকায় বিক্রি করেছি।এতে বোরো আবাদের তেল ও সার কেনার টাকা জোগাড় হয়ে যাবে। ভূরুঙ্গামারী সদর ইউনিয়নের নলেয়া গ্রামের কৃষক আবু বক্কর জানান, পরিবারের খাবার তেলের চাহিদা মেটাতে তিনি আড়াই বিঘা জমিতে সরিষার আবাদ করেছেন। ফলন খুব ভালো হয়েছে। নিজের চাহিদা মিটিয়ে অতিরিক্ত সরিষা বিক্রি করেছেন। ভালো দাম পেয়ে তিনি খুশি।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান বলেন, উপজেলায় এবার সরিষার বাম্পার ফলন হয়েছে । স্বল্প সময়ের মধ্যে কৃষককে অধিক ফলন পেতে নানা ভাবে প্রশিক্ষন দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও কৃষি প্রনোদনায় সার ও বীজ সঠিক সময়ে কৃষকদের কাছে পৌছে দেয়া হয়েছে। ফলে কৃষকের কোন সমস্যার সৃষ্টি হয়নি। উৎপাদন ও দামে কৃষকদের সন্তুষ্টি দেখে তিনিও খুশি হয়েছেন।