মোঃ নুরনবী ইসলাম, খানসামা (দিনাজপুর) প্রতিনিধিঃ
দিনাজপুরের খানসামা উপজেলায় হঠাৎ করেই বেড়েছে ডায়রিয়ার প্রকোপ। গত ২৪ ঘণ্টায় ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হয়েছে অন্তত ২২ জন রোগী। এদের মধ্যে সবেচেয়ে বেশি আক্রান্ত হয়েছে শিশুরা। ৫১ শয্যার এ হাসপাতালে মোট ৮৫ জন রোগী ভর্তি থাকায় শয্যা শঙ্কট দেখা যাওয়ায় অধিকাংশ রোগীদের হাসপাতালের মেঝে ও করিডোরে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। এছাড়াও সম্প্রতি আউটডোরে প্রতিদিন কমপক্ষে দেড় শতাধিক রোগী ডায়রিয়ার প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বাড়িতে যাচ্ছে।
সরেজমিনে হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে প্রায় ১৬ জন রোগী নির্ধারিত বেড ছাড়াও মেঝে ও করিডোরে শুয়ে বসে রয়েছেন। এদের মধ্যে শিশু রোগীর সংখ্যাই সবচেয়ে বেশি।
খামারপাড়ার আবু মুসা নামে এক ব্যক্তি তার ভাগ্নেকে নিয়ে এসেছেন হাসপাতালে। তিনি জানান, হঠাৎ করে জ্বর-সর্দি ও কাশি হওয়ার পর পাতলা পায়খানা শুরু হয়। বাড়িতে কোনো সমাধান না হওয়ায় হাসপাতালে আসতে হয়েছে।
আঙ্গারপাড়া গ্রাম থেকে আসা আয়েশা বেগম জানান, ডায়রিয়ায় আক্রান্ত তার স্বামীকে বাড়িতে রেখে দু’দিন চিকিৎসা দেওয়ার পর কোনো কাজ না হওয়ায় অবশেষে হাসপাতালে তারা এসেছেন। এখানেই তিনদিন ধরে চিকিৎসা চলছে তার।
চকসাকোয়া গ্রামের রহিমা খাতুন জানান, রাতে খাওয়ার পর ঘুমিয়ে যাই। সকালে উঠে দেখি দুই তিনবার পাতলা পায়খানা হচ্ছে। মনে করেছি ঠিক হয়ে যাবে। কিন্তু সুস্থ না হওয়ার কারণে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছি।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডাঃ মোঃ আসিফ জাহান পিয়াস খান বলেন, আবহাওয়া পরিবর্তনজনিত কারনেই এ সমস্যা দেখা দিয়েছে। সুস্থ থাকতে বিশুদ্ধ পানি পানের পাশাপাশি বাসি খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। খাওয়ার পূর্বে ও টয়লেট থেকে বের হওয়ার পর ভাল ভাবে সাবান দিয়ে হাত ধুতে হবে। প্রয়োজনে স্যালাইন খেতে হবে।
আবাসিক মেডিকেল অফিসার শামসুদ্দোহা মুকুল বলেন, শীতের শেষে গরম আবহাওয়ার কারণেই হঠাৎ করে ডায়রিয়ার প্রকোপ বেড়ে গেছে। তবে একটু সতর্কতার সঙ্গে শিশুদের খাবার খাওয়ানোর পাশাপাশি নিজেদেরও সতর্ক থাকতে হবে। হাসপাতালে রোগীর চাপ বাড়লেও তাদের সেবা দিতে রয়েছে পর্যাপ্ত ঔষধ ও স্যালাইন।