প্রেস রিলিজ
রাজধানীর মোহাম্মাদপুর, আদাবর, নাখালপাড়া, তেজগাঁও এর আশপাশের এলাকা থেকে ‘কিশোর গ্যাং’ এর বিভিন্ন গ্রুপের ডাকাতি, ছিনতাই, চাঁদাবাজি, বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের সাথে জড়িত সন্ত্রাসী গ্যাং ‘এফডিসি মুন্না’ এর অন্যতম মূলহোতা মোঃ ইসমাইল @ এফডিসি মুন্না এবং ‘কিং জামাল গ্রুপ’ এর অন্যতম মূলহোতা মোঃ জামাল হোসেন ও ‘কিং মোশারফ গ্রুপ’, ‘আপনা ভাই গ্রুপ’সহ বিভিন্ন গ্রুপের ৩৫ জন’কে গ্রেফতার করেছে র্যাব-২; উদ্ধার করা হয় দেশীয় অস্ত্র।
“বাংলাদেশ আমার অহংকার” এই স্লোগান নিয়ে র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে বিভিন্ন ধরনের অপরাধীদের গ্রেফতারের ক্ষেত্রে জোরালো ভূমিকা পালন করে আসছে। র্যাবের সৃষ্টিকাল থেকে বিপুল পরিমাণ অবৈধ অস্ত্র, গোলাবারুদ উদ্ধার, চাঁদাবাজ, সন্ত্রাস, খুনী, ছিনতাইকারী, অপহরণ প্রতারকদের গ্রেফতার করে সাধারণ জনগণের মনে আস্থা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে।
এছাড়াও বিভিন্ন সময়ে চাঞ্চল্যকর অপরাধে জড়িতদের দ্রæততম সময়ে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় এনে র্যাব জনগণের সুনাম অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে।
সাম্প্রতিক সময়ে রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকায় বেশ কয়েকটি ‘কিশোর গ্যাং’ গ্রুপের সদস্য কর্তৃক ডাকাতি, ছিনতাই, চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন ধরণের সন্ত্রাসী কার্যক্রম লক্ষ্য করা যায়। এ সকল সন্ত্রাসীদের হামলা ও ছিনতাইয়ের অভিযোগে রাজধানীর বিভিন্ন থানায় একাধিক সাধারণ ডায়েরী ও মামলা হয়।
বিভিন্ন ‘কিশোর গ্যাং’ এর সন্ত্রাসীরা নিজেদের মধ্যে আধিপত্য বিস্তারের লক্ষ্যে এক গ্রুপ অপর গ্রুপের সাথে সংঘাতে জড়িয়ে মারামারি ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে জখম করার প্রবণতাও লক্ষ্য করা যায়।
অতি সম্প্রতি মোহাম্মদপুর, আদাবর, নাখালপাড়া ও তার আশপাশের এলাকায় বেশ কয়েকটি ছিনতাই, চাঁদাবাজি ও অন্যান্য সন্ত্রাসী কর্মকান্ড সম্পর্কে তথ্য পায় র্যাব। ফলশ্রুতিতে র্যাবের টহল ও গোয়েন্দা কার্যক্রম বৃদ্ধি করা হয়।
এরই ধারাবাহিকতায় গত ১১ মার্চ ২০২৪ ইং তারিখ হতে ১৮ মার্চ ২০২৪ ইং তারিখ পর্যন্ত র্যাব-২ এর একাধিক আভিযানিক দল রাজধানীর মোহাম্মদপুর, আদাবর, নাখালপাড়া এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে ছিনতাই, চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের সাথে জড়িত সন্ত্রাসী গ্যাং ‘এফডিসি মুন্না’ এর অন্যতম মূলহোতা ১) মোঃ ইসমাইল হোসেন@ এফডিসি মুন্না (২৮), গ্যাং সদস্য ২) মোঃ আকাশ (২৪), ৩) মোঃ ফরিদ, ‘কিং জামাল গ্রুপ’ এর মূলহোতা ৪) মোঃ জামাল হোসেন (৩১), ৫) মোঃ ইমাম হোসেন (২০), ৬) মোঃ আরিফ@ রাসেল মিয়া (২০), ‘কিং মোশারফ গ্রুপ’ এর ৭) মোঃ মোশাররফ (৩২) তার সহযোগী ৮) মোঃ ফেরদাউস বেপারী (২৫), ৯) মোঃ আরমান শেখ (১৮), ১০) মোঃ সানি মিয়া (১৮), ‘আপনা ভাই গ্রুপ’ এর মূলহোতা ১১) শাকিব @ বস্তি শাকিব (১৯), ১২) মোঃ নাহিদ (২০), ১৩) মোঃ লাদেন (২১) সহ অন্যান্য গ্রæপের ১৪) মোঃ হৃদয় (২২), ১৫) মোঃ আবু সিদ্দিক (৪৫), ১৬) মোঃ খোকন (৩৫), ১৭) মোঃ নিলয় আহম্মেদ (২৫), ১৮) মোঃ ইব্রাহিম (২৬), ১৯) মোঃ বিপ্লব শেখ (২০), ২০) রাব্বি হোসাইন (২৪), ২১) তারেক জিয়া (২২), ২২) মোঃ জামাল (২৬), ২৩) মোঃ শিমুল (২৩), ২৪) মোঃ রতন(১৯), ২৫) মোঃ পলাশ (২৪), ২৬) মোঃ সাঈদ (২৪), ২৭) মোঃ শরিফ (২০), ২৮) মোঃ রাজন (২২), ২৯) মোঃ মানিক (২৪), ৩০) মোঃ কবির (২৪), ৩১) হাসান (২২), ৩২) মোঃ সাইদ (১৯), ৩৩) মোঃ রাজা শেখ (২৮), ৩৪) মোঃ ইকরাম (২৫) এবং ৩৫) মোঃ বিপ্লব শেখ (২২)দের’কে গ্রেফতার করা হয়। উদ্ধার করা হয় ছিনতাই ও ডাকাতিসহ বিভিন্ন সন্ত্রাসী কার্যক্রমে ব্যবহৃত দেশীয় অস্ত্র চাপাতি, ছুরি, চাকু, চাইনিজ কুড়াল, এন্ট্রি কাটার ও বিভিন্ন দেশীয় ধারালো অস্ত্র। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃতরা পূর্বের বিভিন্ন অপরাধ এবং ভবিষ্যতের বিভিন্ন সহিংসতা সৃষ্টির পরিকল্পনা সর্ম্পকে তথ্য প্রদান করে।
গ্রেফতারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, শেরে বাংলা নগরের নাখালপাড়া এলাকা মোহাম্মদপুর, আদাবর, বেড়িবাধঁ ও ঢাকা উদ্যান এলাকায় চাঁদাবাজি, ছিনতাই, ডাকাতিসহ অন্যান্য সন্ত্রাসী কার্যক্রম পরিচালনা করতো।
উল্লেখিত গ্রুপের সন্ত্রাসীরা একাকী পথচারীদের আকস্মিক ভাবে ঘিরে ধরে চাপাতিসহ ধারালো অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে জোরপূর্বক অর্থ ও মূল্যবান সামগ্রী ছিনতাই করে দ্রুত পালিয়ে যায়। তারা বিভিন্ন সময় চাঁদাবাজিসহ আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে শেরে বাংলা নগরের নাখালপাড়া এলাকাসহ ঢাকা উদ্যান, আদাবর, মোহাম্মদপুর এর পাশর্^বর্তী এলাকায় দেশীয় ধারালো অস্ত্র দিয়ে মারামারিসহ বিভিন্ন ধরণের সন্ত্রাসী কার্যক্রম পরিচালনা করতো।
এছাড়াও তারা মাদক সেবনসহ বর্ণিত এলাকাসমূহে মাদক ব্যবসার সাথেও জড়িত ছিল। মূলত তারা নাখালপাড়া ও মোহাম্মদপুর, আদাবর এলাকায় আধিপত্য বিস্তারের জন্য বিভিন্ন অপরাধমূলক কার্যক্রম পরিচালনা করতো বলে জানা যায়। গ্রেফতারকৃতরা বিভিন্ন গাড়ীর হেলপার ও ড্রাইভার, দোকানের কর্মচারী, নির্মাণ শ্রমিক, পুরাতন মালামাল ক্রেতা, সবজি বিক্রেতা ইত্যাদি পেশার আড়ালে ডাকাতি, ছিনতাই ও চাঁদাবাজি করতো বলে জানা যায়।
গ্রেফতারকৃত আসামিদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় মাদক, ছিনতাই ও মারামারি সংক্রান্ত মামলা রয়েছে এবং এ সকল মামলায় কারাভোগ করেছে বলে জানা যায়। প্রাপ্ত তথ্য যাচাই বাছাই করে র্যাব এ ধরনের অভিযান অব্যাহত রাখবে।
গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য রাজধানীর বিভিন্ন থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
শিহাব করিম, সিনিঃ এএসপি
সিনিঃ সহকারী পরিচালক (মিডিয়া)
পক্ষে অধিনায়ক
মোবাঃ ০১৭৭৭-৭১০২০৩