তারেকুজ্জজামানঃ ফরিদপুর প্রতিনিধি
নানা কর্মসচির মধ্যে দিয়ে ফরিদপুরে পল্লী কবি জসীম উদদীনের ৪৬ তম (ছেচল্লিশ তম) মৃত্যুবার্ষিকী পালিত হয়েছে। ১৪ মার্চ আজ সোমবার দিবসটি উপলক্ষে ফরিদপুর জেলা প্রশাসন ও জসীম ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। সকাল ৮ টায় ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক ও জসীম ফাউন্ডেশনের সভাপতি অতুল সরকারের নেতৃত্বে শহরের গোবিন্দপুরে কবির সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়।
এসময় অন্যান্যের মধ্যে জেলা পুলিশ, আনসার উদ্দিন উচ্চ বিদ্যালয়সহ বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠনের পক্ষ থেকেও কবির সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়। সকাল সোয়া ৮ টায় কবির বাড়ির আঙ্গিনায় আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।
আলোচনা সভার শুরুতে কবি ও তার পরিবারের যারা ইন্তেকাল করেছেন তাদের আত্মার মাগফিরাত কামনায় এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) দীপক কুমার রায়ের সভাপতিত্বে সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা প্রশাসক অতুল সরকার। আবু সুফিয়ান চৌধুরী কুশল এর পরিচালনায় সভায় আরো ছিলেন- অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) জামাল পাশা, স্থানীয় সরকারের উপপরিচালক আসলাম মোল্লা, অতিরিক্ত জেলা (শিক্ষা ও আইসিটি) মোহাম্মদ সাইফুল কবির, জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ নুরুল্লাহ মোঃ আহসান, বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ আবুল ফয়েজ শাহনেওয়াজসহ প্রশাসনের উর্দ্ধতন কর্মকর্তাবৃন্দ।
আলোচনা সভায় বক্তব্য প্রদান করেন কবিপুত্র ড. জামাল আনোয়ার, ডাঃ এমএ জলিল, সরকারি ইয়াছিন কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর শীলা রানী মন্ডল, কবি শওকত আলী জাহিদ, সরকারি রাজেন্দ্র কলেজের ইংরেজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক রেজভী জামান, নারী নেত্রী আসমা আক্তার মুক্তা, অম্বিকাপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবু সাঈদ চৌধুরী বারী প্রমুখ। আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক বলেন, পল্লীকবি জসীম উদদীন বাংলার অপরূপ সৌন্দর্য তার সাহিত্য ও কবিতার মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী তুলে ধরেছেন।
গ্রাম-বাংলার সেই রূপ সৌন্দর্য অনুধাবন করতে হলে জানতে হবে পল্লী কবি জসীম উদদীনকে, পড়তে হবে তার কবিতা ও গ্রন্থাবলী। যিনি গাছের পাশে, নদীর পাড়ে মাটিতে বসে মাটির সাথে মিশে গিয়ে কবিতা, গল্প লিখতেন। তিনি বলেন, রুপসী গ্রাম বাংলাকে তাঁরমতো ভালোবেসে অন্যকেউ সাহিত্য রচনা করেননি। জসীম উদদীন পল্লীর মানুষকে নায়ক-নায়িকায় পরিনত করেছেন। আসমানী, গুনাই বিবি, রুপাই, সাজু প্রভৃতি তার সৃজিত শ্রেষ্ঠ চরিত্র। তিনি একজন বিখ্যাত বাঙালি কবি।
তিনি বাংলাদেশে ‘পল্লী কবি’ হিসেবে পরিচিত। তাঁর লেখা কবর কবিতাটি বাংলা সাহিত্যে এক অবিস্মরণীয় অবদান। আজ ডিজিটাল যুগে গ্রাম বাংলার সেই রুপ সৌন্দর্য প্রায় হারিয়েই গেছে। গ্রাম বাংলার সেই রুপ সৌন্দর্য অনুধাবন করতে হলে জানতে হবে পল্লী কবি জসীম উদ্দীনকে, পড়তে হবে তার কবিতা-গ্রন্থাবলী। পল্লী কবিকে স্মরণ রাখতে কবিকে নিয়ে সারা বছর বিভিন্ন অনুষ্ঠান করতে আহবান জানান তিনি।
জেলা প্রশাসক এ সময় জানান, আগামী ঈদের পর জসীম পল্লী মেলা আয়োজন করা হবে। তবে এবারের মেলাটি ভিন্ন ভাবে আয়োজন করার পরিকল্পনা রয়েছে। মেলাটি যেন পল্লী কবি জসীম উদদীনকে স্মরণ করিয়ে দেয় সে জন্য মেলা চলাকালীন নিয়মিত কবির জীবনী নিয়ে আলোচনা, কবির রচয়িতা বিভিন্ন গান, কবিতা, গল্প ইত্যাদি উপস্থাপন এর ব্যবস্থা থাকবে।