বাংলাদেশ ০১:২৫ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
নোটিশ :

সাংবাদিক নিয়োগ চলছে,, সাংবাদিক নিয়োগ চলছে,,০১৯৯৯-৯৫৩৯৭০, ০১৭১২-৪৪৬৩০৬,০১৭১১-০০৬২১৪ সম্পাদক

     
ব্রেকিং নিউজ ::
মির্জাগঞ্জে বৃষ্টি কামনায় ইস্তিস্কার নামাজ আদায় শনিবারের ছুটি ও আমাদের অবস্থান মির্জাগঞ্জে বিনাদোষে দুই নারীকে মারধরের প্রতিবাদে মানববন্ধন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান হলেন যে নারী। নবীনগরে সড়ক ও খালের জায়গা দখলের চলছে মহোৎসব! চট্টগ্রামে সহ সারা দেশে সাংবাদিকের উপর হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে ‘সিইউজে’ সিংগাইরে সাংবাদিকের চাঁদাবাজি,দুই জন আটক দিনাজপুরে সজনের ডাটার বাম্পার ফলন সাংবাদিক হামলার মামলায় সুদেব মাষ্টার জেল হাজতে প্রেরণ চট্টগ্রাম টেকপাড়া ও এয়াকুব নগরে অগ্নিকান্ডে ক্ষতিগ্রস্থদের মাঝে নগদ অর্থ ও শাড়ি-লুঙ্গি বিতরণ পিরোজপুরের চরখালী ফেরীতে মেট্রোপলিটন পরিবহনের ধাক্কায় ফেরী থেকে একাধিক মোটরসাইকেল নদীতে কটিয়াদীতে সর্বজনীন পেনশন স্কিম অবহিতকরণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত সাত গ্রামের সমর্থিত চেয়ারম্যান প্রার্থী এড. রেজাউল করিম বালিয়াডাঙ্গীতে খাপড়া ওয়ার্ড দিবসে শহীদদের স্মরণে সিপিবির লাল পতাকা মিছিল ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত। স্কুলের জমি দখলের প্রতিবাদে এলাকাবাসীর মানববন্ধন 

ফুলবাড়ী উপজেলা খয়েরবাড়ীতে তেজপাতা চাষের অফার সম্ভাবনা

  • নিজস্ব সংবাদ :
  • আপডেট সময় ০৮:৩০:২০ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৮ মার্চ ২০২৩
  • ১৭২২ বার পড়া হয়েছে

ফুলবাড়ী উপজেলা খয়েরবাড়ীতে তেজপাতা চাষের অফার সম্ভাবনা

 

 

 

ফুলবাড়ীয়া প্রতিনিধি:

ফুলবাড়ীতে গতানুগতিক ভাবে শস্য আবাদ হিসাবে ধান, গম, ভুট্টা, লিচু, আম, ফুল, তুলা,সরিষা, আলু,মাল্টা ও কমলাসহ বিভিন্ন রবিশস্য চাষাবাদ করে থাকেন এখনাকার কৃষকেরা।

 

এবারেই প্রথম উপজেলার খয়েরবাড়ী ইউনিয়নের আকিলাপাড়া গ্রামে বাণিজ্যিকভাবে ১ একর ২০ শতক জমিতে তেজপাতার বাগান লাগিয়েছেন নৌবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. রহমত আলী। এরই মধ্যে তেজপাতার বাগানটি সাড়া ফেলেছে সারা উপজেলায় ।

 

 

প্রতিদিন স্থানীয় কৃষকের পাশাপাশি উৎসুক লোকজন তেজপাতার বাগান দেখতে ভিড় করছেন। তেজপাতা বাগানে কাজের সাথে জড়িত রহমত আলীর ছোট ভাই রাশেদ মাহমুদ জনান, আমার বড় ভাই রহমত আলী ২০০৯ সালে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর পিটি অফিসারের পদ থেকে অবসর গ্রহণ করেন। এরপর তার নিজ গ্রাম আকিলাপাড়ায় অবসর জীবনযাপনের পাশাপাশি শুরু করেন বিভিন্ন প্রকার ফসল ও শাকসবজি চাষাবাদ। বর্তমানে তেজপাতার ক্রমান্বয়ে চাহিদা ও দাম বৃদ্ধির কথা চিন্তা থেকে ২০১৭ সালে এক একর ২০ শতক জমিতে বাণিজ্যিক ভাবে শুরু করেন তেজপাতা বাগান তৈরি। তিনি একযোগে ১ হাজার হাইব্রিড তেজপাতা গাছের চারা রোপণ করেছেন। এর দুই বছরের মধ্যেই প্রত্যেকটি গাছে ব্যাপক পরিমানে পাতা গজায়। সেই পাতা সংগ্রহ এবং বাজারজাত করা শুরু করেন।

 

 

 

তেজপাতা বাগান মালিক রহমত আলী বলেন, আমি বাংলাদেশ নৌবাহিনীর চাকুরী শেষে ২০০৯ সালে অবসরে যাই। গ্রামে ফিরে বিভিন্ন ধরনের ফসল চাষাবাদ শুরু করি। ইন্টারনেটে দেখে বাণিজ্যিকভাবে তেজপাতা চাষ করার কথা মাথায় আসে। তারপর ২০১৭ সালে ১ একর ২০ শতক জমিতে প্রায় ১ হাজার তেজপাতার চারা রোপণ করি। পরে চারাগাছ বড় হলে স্বল্প পরিসরে ২ বছরের মাথায় পাতা সংগ্রহ ও বাজারজাত করতে শুরু করি। গত দুই বছরে থেকে ব্যাবসায়ী পর্যায়ে প্রায় দেড় লক্ষ টাকার তেজপাতা বিক্রি করেছি। বছর খানেক আগে তেজপাতার বাগানের চারপাশে নতুন করে ৪শ সুপারির চারা লাগিয়েছি। কিছুদিন আগে তেজপাতার গাছের ফাঁকে কিছু এলাচ ও দালচিনির গাছও লাগিয়েছি। বর্তমানে বাগান তৈরিতে চারা কেনা থেকে রোপণ, গাছের যতত্ন এবং সার, কীটনাশক ওষুধ ও বাগান শ্রমিক সব মিলিয়ে খরচ হয় প্রায় সাড়ে ৫ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। ফুলবাড়ীতে তেজপাতা বাগান আছে এবং এখানে তেজপাতা উৎপাদিত হয় এটি অনেক ব্যবসায়ীরাই জানেনা।

 

 

 

তাই উৎপাদিত তেজপাতা বাজারজাত করতে বেশ সমস্যা হচ্ছে। এ ব্যাপারে সরকারি কৃষি বিভাগের সহায়তা পাওয়া গেলে তেজপাতা বাজারজাত করা সহজ হবে। প্রচার প্রসার বৃদ্ধি করা গেলে এই তেজপাতার বাগান থেকেই বিনিয়গের চেয়ে দ্বিগুন পরিমানে অর্থ উপার্জন করা সম্ভব। স্থানীয় কৃষক আব্দুল ওহাব বলেন, ফুলবাড়ীতে প্রথম বারের মতো তেজপাতা বাগান হয়েছে। আমরা তেজপাতার গাছ ও চারা রোপনের বিষয়ে বিভিন্ন ভাবে জানতে শুরু করেছি। সরকারী কৃষি বিভাগের সহায়তা পেলে, বাজারজাত করা সহজ ও দাম ভালো পাওয়া গেলে ভবিষ্যতে উপজেলায় ব্যাপকহারে তেজপাতা বাগান গড়ে উঠবে। রহমত আলীর তেজপাতা বাগানের সফলতা দেখে আমি তেজপাতা বাগান করার চিন্তা করছি।

 

 

 

এমন কথা বলেন আব্দুল কুদ্দস, সোয়েব আলীসহ স্থানীয় অনেক কৃষক। এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ রুম্মান আক্তার জানান, রহমত আলীর তেজপাতা বাগানের মধ্য দিয়ে প্রথমবারের মতো ফুলবাড়ী উপজেলায় বানিজ্যিক ভাবে তেজপাতার চাষ শুরু হয়েছে। তেজপাতা উপজেলার মসলার চাহিদা মেটাতে ভূমিকা রাখবে। তিনি আরও জানান, এ উপজেলায় মসলা ও ঔষধ গুণে সমাহার তেজপাতা চাষে ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে। চারা রোপণের দুই থেকে আড়াই বছরের মধ্যে তেজপাতা সংগ্রহ করা যায়। একটি তেজপাতা গাছ থেকে প্রতি বছর দুই থেকে তিন বার পাতা ভাঙ্গা যায় ।

 

 

 

বর্তমানে বাজারে এক কেজি কাঁচা তেজপাতা ১১০-১২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এতে কৃষক বেশ লাভবান হবেন। আমরা সব ধরনের কৃষি পণ্য উৎপাদন বৃদ্ধিতে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ কৃষকদের সার্বিকভাবে পরামর্শ ও সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছি। দিনাজপুরের মসলা গবেষাণা ইনিস্টিটিউট নির্মান করা হলে এই এলাকায় নতুন নতুন কৃষক আরও বেশি করে মসলা চাষে এগিয়ে আসবে। যেহেতু দেশে মসলার চাহিদা ব্যপক বৃদ্ধি পেয়েছে। কৃষকেরা এতে লাভবান হবে। রংপুর বিভাগে মসলা গবেষণা ইনস্টিটিউট নেই। তাই মসলা চাষে কৃষকেরা পিছিয়ে আছে।

 

 

 

 

জনপ্রিয় সংবাদ

মির্জাগঞ্জে বৃষ্টি কামনায় ইস্তিস্কার নামাজ আদায়

ফুলবাড়ী উপজেলা খয়েরবাড়ীতে তেজপাতা চাষের অফার সম্ভাবনা

আপডেট সময় ০৮:৩০:২০ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৮ মার্চ ২০২৩

 

 

 

ফুলবাড়ীয়া প্রতিনিধি:

ফুলবাড়ীতে গতানুগতিক ভাবে শস্য আবাদ হিসাবে ধান, গম, ভুট্টা, লিচু, আম, ফুল, তুলা,সরিষা, আলু,মাল্টা ও কমলাসহ বিভিন্ন রবিশস্য চাষাবাদ করে থাকেন এখনাকার কৃষকেরা।

 

এবারেই প্রথম উপজেলার খয়েরবাড়ী ইউনিয়নের আকিলাপাড়া গ্রামে বাণিজ্যিকভাবে ১ একর ২০ শতক জমিতে তেজপাতার বাগান লাগিয়েছেন নৌবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. রহমত আলী। এরই মধ্যে তেজপাতার বাগানটি সাড়া ফেলেছে সারা উপজেলায় ।

 

 

প্রতিদিন স্থানীয় কৃষকের পাশাপাশি উৎসুক লোকজন তেজপাতার বাগান দেখতে ভিড় করছেন। তেজপাতা বাগানে কাজের সাথে জড়িত রহমত আলীর ছোট ভাই রাশেদ মাহমুদ জনান, আমার বড় ভাই রহমত আলী ২০০৯ সালে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর পিটি অফিসারের পদ থেকে অবসর গ্রহণ করেন। এরপর তার নিজ গ্রাম আকিলাপাড়ায় অবসর জীবনযাপনের পাশাপাশি শুরু করেন বিভিন্ন প্রকার ফসল ও শাকসবজি চাষাবাদ। বর্তমানে তেজপাতার ক্রমান্বয়ে চাহিদা ও দাম বৃদ্ধির কথা চিন্তা থেকে ২০১৭ সালে এক একর ২০ শতক জমিতে বাণিজ্যিক ভাবে শুরু করেন তেজপাতা বাগান তৈরি। তিনি একযোগে ১ হাজার হাইব্রিড তেজপাতা গাছের চারা রোপণ করেছেন। এর দুই বছরের মধ্যেই প্রত্যেকটি গাছে ব্যাপক পরিমানে পাতা গজায়। সেই পাতা সংগ্রহ এবং বাজারজাত করা শুরু করেন।

 

 

 

তেজপাতা বাগান মালিক রহমত আলী বলেন, আমি বাংলাদেশ নৌবাহিনীর চাকুরী শেষে ২০০৯ সালে অবসরে যাই। গ্রামে ফিরে বিভিন্ন ধরনের ফসল চাষাবাদ শুরু করি। ইন্টারনেটে দেখে বাণিজ্যিকভাবে তেজপাতা চাষ করার কথা মাথায় আসে। তারপর ২০১৭ সালে ১ একর ২০ শতক জমিতে প্রায় ১ হাজার তেজপাতার চারা রোপণ করি। পরে চারাগাছ বড় হলে স্বল্প পরিসরে ২ বছরের মাথায় পাতা সংগ্রহ ও বাজারজাত করতে শুরু করি। গত দুই বছরে থেকে ব্যাবসায়ী পর্যায়ে প্রায় দেড় লক্ষ টাকার তেজপাতা বিক্রি করেছি। বছর খানেক আগে তেজপাতার বাগানের চারপাশে নতুন করে ৪শ সুপারির চারা লাগিয়েছি। কিছুদিন আগে তেজপাতার গাছের ফাঁকে কিছু এলাচ ও দালচিনির গাছও লাগিয়েছি। বর্তমানে বাগান তৈরিতে চারা কেনা থেকে রোপণ, গাছের যতত্ন এবং সার, কীটনাশক ওষুধ ও বাগান শ্রমিক সব মিলিয়ে খরচ হয় প্রায় সাড়ে ৫ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। ফুলবাড়ীতে তেজপাতা বাগান আছে এবং এখানে তেজপাতা উৎপাদিত হয় এটি অনেক ব্যবসায়ীরাই জানেনা।

 

 

 

তাই উৎপাদিত তেজপাতা বাজারজাত করতে বেশ সমস্যা হচ্ছে। এ ব্যাপারে সরকারি কৃষি বিভাগের সহায়তা পাওয়া গেলে তেজপাতা বাজারজাত করা সহজ হবে। প্রচার প্রসার বৃদ্ধি করা গেলে এই তেজপাতার বাগান থেকেই বিনিয়গের চেয়ে দ্বিগুন পরিমানে অর্থ উপার্জন করা সম্ভব। স্থানীয় কৃষক আব্দুল ওহাব বলেন, ফুলবাড়ীতে প্রথম বারের মতো তেজপাতা বাগান হয়েছে। আমরা তেজপাতার গাছ ও চারা রোপনের বিষয়ে বিভিন্ন ভাবে জানতে শুরু করেছি। সরকারী কৃষি বিভাগের সহায়তা পেলে, বাজারজাত করা সহজ ও দাম ভালো পাওয়া গেলে ভবিষ্যতে উপজেলায় ব্যাপকহারে তেজপাতা বাগান গড়ে উঠবে। রহমত আলীর তেজপাতা বাগানের সফলতা দেখে আমি তেজপাতা বাগান করার চিন্তা করছি।

 

 

 

এমন কথা বলেন আব্দুল কুদ্দস, সোয়েব আলীসহ স্থানীয় অনেক কৃষক। এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ রুম্মান আক্তার জানান, রহমত আলীর তেজপাতা বাগানের মধ্য দিয়ে প্রথমবারের মতো ফুলবাড়ী উপজেলায় বানিজ্যিক ভাবে তেজপাতার চাষ শুরু হয়েছে। তেজপাতা উপজেলার মসলার চাহিদা মেটাতে ভূমিকা রাখবে। তিনি আরও জানান, এ উপজেলায় মসলা ও ঔষধ গুণে সমাহার তেজপাতা চাষে ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে। চারা রোপণের দুই থেকে আড়াই বছরের মধ্যে তেজপাতা সংগ্রহ করা যায়। একটি তেজপাতা গাছ থেকে প্রতি বছর দুই থেকে তিন বার পাতা ভাঙ্গা যায় ।

 

 

 

বর্তমানে বাজারে এক কেজি কাঁচা তেজপাতা ১১০-১২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এতে কৃষক বেশ লাভবান হবেন। আমরা সব ধরনের কৃষি পণ্য উৎপাদন বৃদ্ধিতে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ কৃষকদের সার্বিকভাবে পরামর্শ ও সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছি। দিনাজপুরের মসলা গবেষাণা ইনিস্টিটিউট নির্মান করা হলে এই এলাকায় নতুন নতুন কৃষক আরও বেশি করে মসলা চাষে এগিয়ে আসবে। যেহেতু দেশে মসলার চাহিদা ব্যপক বৃদ্ধি পেয়েছে। কৃষকেরা এতে লাভবান হবে। রংপুর বিভাগে মসলা গবেষণা ইনস্টিটিউট নেই। তাই মসলা চাষে কৃষকেরা পিছিয়ে আছে।