২০২০ সালের আগস্টে এই উপজেলায় যোগদানের পর থেকেই মেধা, যোগ্যতা আর দায়িত্ববোধের প্রমাণ দিয়ে জয় করে নিয়েছেন এ উপজেলাবাসীর ভালোবাসা ও আন্তরিকতা।

তিনি একজন শিক্ষাবান্ধব উপজেলা নির্বাহী অফিসার হিসেবে শিক্ষার্থীদের দুর্বলতা কাটিয়ে তোলার জন্য উপজেলার অন্যান্য কর্মকান্ডের পাশা পাশি বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ঝড়ে পড়া রোধ, শিক্ষার মান বাড়াতে বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহণ, মাদকমুক্ত যুবসমাজ গড়তে খেলাধূলার প্রতি নজর দিয়েছেন, জাতীয় দিবসগুলো অড়ম্বরভাবে উদযাপনের নিশ্চয়তা, বঙ্গবন্ধু, মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার বিষয়ে প্রাথমিকের ছাত্র-ছাত্রীদের আগ্রহ তৈরির লক্ষ্যে কুইজসহ বিভিন্ন প্রতিযোগিতার আয়োজন ও বিজয়ীদেরকে পুরস্কার প্রদান, জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা সপ্তাহের বিভিন্ন কর্মসূচি উৎসবমুখর পরিবেশে বাস্তবায়ন, বঙ্গবন্ধু ও বঙ্গমাতা গোল্ডকাপ প্রাথমিক বিদ্যালয় ফুটবল টুর্নামেন্ট জাঁক-জমকপূর্ণ ভাবে আয়োজনসহ আরো অনেক ইতিবাচক কার্যক্রম বাস্তবায়ন করে চলেছেন।

প্রাথমিক শিক্ষায় নানা ধরণের শিক্ষাবান্ধব উদ্যোগ গ্রহণ করে অনন্য নজির সৃষ্টি করেছেন। করোনায় দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর ক্ষতিগ্রস্থ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবন, শ্রেণি কক্ষ, আসবাবপত্র, বেঞ্চ মেরামতের উদ্যোগ নিয়েছেন তিনি। প্রশাসনের অনেক কাজের মধ্যেও নিত্যদিন প্রাথমিক শিক্ষার উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছেন তিনি। সুযোগ পেলেই ছুটে যান উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলের বিভিন্ন বিদ্যালয়ে।

বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ছড়িয়ে দিতে “বঙ্গবন্ধুকে জানো” শীর্ষক উদ্যোগ গ্রহণ করে উপজেলার সকল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের হাতে ‘ছোটদের বঙ্গবন্ধু’ বই উপহার দিয়ে অভিভাবকসহ সর্বমহলে প্রশংসিত হয়েছেন।

তিনি দরিদ্র-অসহায়-মেধাবী শিক্ষার্থীদের খাতা, কলম, পেন্সিল, স্কুল ড্রেস, শিক্ষার্থীদের পড়াশোনায় উজ্জিবীত করতে পুরস্কার বিতরণ, ক্রীড়া সামগ্রী প্রদান, শতভাগ উপস্থিতি নিশ্চিতে বিদ্যালয়গুলোতে নিয়মিত তদারকি, আইসিটি সামগ্রী বিতরণ, মিড-ডে চালুর উদ্যোগ গ্রহণ, শিক্ষকদের মাসিক সমন্বয় সভায় উপস্থিত থেকে শিক্ষকদের পরামর্শ, শিক্ষার মানবৃদ্ধিতে দিক-নির্দেশনা প্রদান, বিভিন্ন বিদ্যালয়ে শিক্ষক-অভিভাবক সমাবেশে অংশগ্রহণ, শিক্ষকদের আইসিটি প্রশিক্ষণ প্রদান এবং ব্যক্তি ও বেসরকারি উদ্যোগে বিভিন্ন বিদ্যালয়ে টুল, বেঞ্চ প্রদানে উৎসাহিত করা।

উপজেলার সকল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নিয়মানুবর্তিতা ও শৃঙ্খলা বজায় রাখতে তিনি নিজ উদ্যোগে কাব স্কাউট দল চালুর লক্ষ্যে ওরিয়েন্টেশন ও বেসিক কোর্সের আয়োজন করেন। তাঁর চেষ্টায় বর্তমানে এ উপজেলায় প্রাথমিক পর্যায়ে শতভাগ স্কাউট কার্যক্রম চালু আছে বলেও জানা গেছে।

ইউএনও উপজেলার বিভিন্ন বিদ্যালয়ে নতুন ভবনের কাজ সমাপ্ত করতে জমি, সীমানা নির্ধারণ সমস্যাসহ অনেক জটিলতার নিরসন করে দিয়েছেন বলে একাধিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জানিয়েছেন। সরকারি বরাদ্দের সদ্ব্যবহার নিশ্চিত করার পাশাপাশি, তিনি ব্যক্তিগত পর্যায়ে উদ্যোগ গ্রহণের মাধ্যমে পৌরসভার পশ্চিম ভালুকা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, সিধলা ইউনিয়নের নোয়াপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ বেশ কয়েকটি বিদ্যালয়ে অস্থায়ী শ্রেণিকক্ষ নির্মাণ করে পাঠদান অব্যাহত রাখার ব্যবস্থা করে দিয়েছেন।

এছাড়াও শিক্ষার মানোন্নয়নে উপজেলার প্রত্যেকটি প্রাথমকি ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলো পরিদর্শন করেছেন হাসান মারুফ। নির্বাহী অফিসার হিসেবে তার তত্ত¡াবধানে চলছে আধুনিক, শিক্ষিত, মার্জিত গৌরীপুর উপজেলা গড়ার কাজ।

গৌরীপুর মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রহিম বলেন- ইউএনও ইতোমধ্যে তার একমাত্র মেয়েকে পৌর মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি করিয়ে দেশের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার প্রতি আস্থা অর্জনে সাধারণ মানুষের প্রতি বার্তা প্রেরণ করেছেন ও নজির সৃষ্টি করেছেন।

ইউএনওর উদ্যোগ সম্পর্কে উপজেলা শিক্ষা অফিসার মনিকা পারভীন বলেন, “যোগদানের পর থেকেই স্যার প্রাথমিক শিক্ষার উপর জোর দিয়েছেন। তিনি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের উন্নয়ন ও শিক্ষা নিয়ে বহু মুখী কাজ করে যাচ্ছেন, যাতে এ উপজেলার শিক্ষার পরিবেশ সুন্দর হওয়ার পাশাপাশি আমরাও গর্বিত অনুভব করছি। স্যারের এই প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকলে আমি বিশ্বাস করি একদিন প্রাথমিক শিক্ষায় দেশের শ্রেষ্ঠ উপজেলায় পরিণত হবে গৌরীপুর।