মোঃ নুরনবী ইসলাম, খানসামা (দিনাজপুর) প্রতিনিধিঃ
নির্ধারিত সময় পেরিয়ে গেলেও ব্রিজের কাজ শেষ না হওয়াতে দিনাজপুরের খানসামা উপজেলার পাকেরহাটে বেলান নদীর গতিপথ বন্ধ করে নির্মিত বিকল্প রাস্তা পুনরায় ভেঙে যাওয়ায় চরম ভোগান্তির মুখে পড়েছে স্থানীয়রা। এর আগেও গত বছর বেশ কয়েকবার দায়সারাভাবে সাঁকো ও রাস্তা মেরামত করা হলেও কিছুদিন পর সেগুলো ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়েছিল। নিয়মিত চলাচলের এই বিকল্প রাস্তাটি সামান্য বৃষ্টিতেই ভেঙ্গে যাওয়কয় পথচারী ও বিভিন্ন যানবাহন রাস্তা পার হতে এসে হয়রানি হয়ে দুই কিলোমিটার ঘুরে যাচ্ছে গন্তব্যে।
উপজেলা প্রকৌশলী কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, ব্রীজটি গত ২০২১ সালের ১৪ জানুয়ারী কাজ শুরুর কথা থাকলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান তা শুরু করেন ১৬ জুন। এ ব্রিজটির কাজের মেয়াদ শেষ হয়েছে এ বছরের ১৪ জানুয়ারী। কিন্তু এখনো শেষ হয়নি ব্রিজ নির্মাণ। এ ব্রীজটি এলজিইডি’র বন্যা ও দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক অবকাঠামো পুনর্বাসন প্রকল্পের আওতায় পাকেরহাট-খানসামা সড়কে বেলান নদীর ওপর প্রায় ৩ কোটি ৮৯ লাখ টাকা ব্যয়ে ৩৫ মিটার গার্ডার ব্রিজের নির্মাণকাজটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কুড়িগ্রামের এম/এস বসুন্ধরা।
তবে গত বছরের বর্ষার আগেই ব্রিজের কাজ শেষ করবে মর্মে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান যানবাহন ও পথচারীদের যাতায়তে নদীর গতিপথ বন্ধ করে বিকল্প রাস্তা নির্মাণ করে। কিন্তু কাজ শেষ হওয়ার আগেই বর্ষা মৌসুম শুরু হওয়ায় পানি নিষ্কাশনে রিং বসানো হয়েছিল। সেটিও পানি প্রবাহের জন্য পর্যাপ্ত ছিল না। পরে সেই রাস্তা ভেঙে যাওয়ায় সাঁকো নির্মাণ করে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু পানির চাপে সেই সাঁকোর দুই পার ভেঙে পড়েছিল। তবে এ বছরের ১৪ জানুয়ারী কাজ শেষ করার কথা থাকলেও তা শেষ করতে পারে নি।
রবিবার সরেজমিনে দেখা যায়, নদীর ওপর নির্মিত বিকল্প রাস্তাটি শনিবারের বৃষ্টিতে ভেঙে যাওয়ায় স্থানীয় বাসিন্দারা চরম ভোগান্তির মুখে পড়ে। প্রয়োজনের তাগিদে পথচারী ও বিভিন্ন যানবাহনে যাতায়াতকারীরা প্রায় ২ কিলোমিটার ঘুরে খানসামাসহ পার্শ্ববর্তী উপজেলায় যাচ্ছে। এ রাস্তাটি দিয়ে প্রতিদিন প্রায় এক থেকে দেড় লোক চলাচল করে।
এ ব্যাপারে ডাঙ্গাপাড়া গ্রামের বাসিন্দা আরশাদ আলী বলেন, ঠিকাদার ঠিক মতো কাজ করেনি। সময় শেষ হয়েছে। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের গাফলতি আর কর্তৃপক্ষের অবহেলার কারণে আমরা এখন চরম ভোগান্তিতে আছি।
ভান্ডারদহ গ্রামের মাসুদ রানা নামে এক যুবক রাস্তা ভেঙ্গে যাওয়ার দুটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করে মন্তব্য করেন, আমাদের খানসামা থানার সস্তা জনপ্রতিনিধির জন্যই আজকে আমাদের এই দশা।এরা অল্পতেই বিক্রি হয়ে যায়। তা না হলে এক থানা ইন্জিনিয়ারের কারনে হাজার হাজার জনগনের দুর্দশা এমন হত না। আর এরকম থানা ইন্জিনিয়ার প্রতিটি ঘরে ঘরে জন্মানো উচিৎ।
বালাডাঙ্গী গ্রামের মনছুর আলী বলেন, উপজেলার মধ্যে পাকেরহাট একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ হাট। এখানে ৫০ শয্যাবিশিষ্ট উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সও অবস্থিত। অতি গুরুত্বপূর্ণ এই রাস্তাটি ভেঙে যাওয়ার ফলে এলাকার মানুষের জনদুর্ভোগের শেষ নেই।
এ ব্যাপারে উপজেলা এলজিইডি প্রকৌশলী হারুন-অর-রশিদ বলেন, ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের গাফিলতির ফলেই কাজটি শেষ করা সম্ভব হয় নি। তবে আগামী মাসে কাজ শেষ করা সম্ভব হবে। এর মধ্যে পথচারী ও হালকা যানবাহন চলাচলের জন্য সাঁকো নির্মান করা হবে।