বদলগাছী উপজেলা প্রতিনিধি, নওগাঁ।
নওগাঁর বদলগাছীতে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ডিলার নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক সাবরিন মুস্তারীর বিরুদ্ধে। নীতিমালা ভঙ্গ করে পছন্দের লোককে ডিলার হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন তিনি এমন অভিযোগ করেছেন ডিলারের জন্য আবেদন করা ভুক্তভোগী ব্যক্তিরা। এ বিষয়ে বঞ্চিত একাধিক ব্যক্তি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন।
জানা যায়, অনিয়মের অভিযোগে গত ৭ অক্টোবর উপজেলার আটটি ইউনিয়নের ১৬ জন খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ডিলারের নিয়োগ বাতিল হয়। এর প্রেক্ষিতে ১৪ অক্টোবর নতুন ডিলার নিয়োগের আবেদন আহবান করা হয়। এতে ৬৬জন আবেদন করেন। প্রাথমিক যাচাই বাচাইয়ে ২৭ জনের আবেদন বাতিল হয়ে যায় এবং ৩৯ জন বৈধতা পায়। হটাৎ করে গত মঙ্গলবার ১৫ জনকে ডিলার নিয়োগ দিয়ে নাম প্রকাশ করেন উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রণ অফিস।
সরেজমিনে ঘুরে একাধিক আবেদনকারীর সাথে কথা বললে তারা জানান, স্বচ্ছতার ভিত্তিতে নয় বরং অস্বচ্ছভাবে এবং খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা নিজস্বেচ্ছাচারিতায় নিজের পছন্দের মানুষদের ডিলার নিয়োগ দিয়েছেন উপজেলা খাদ্যবান্ধব কমিটি এবং উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রণ অফিস।
ডিলার নিয়োগ বিষয়ে সদর উপজেলার চাংলা গ্রামের এস এম এনামুল হক চমচম বলেন, যাচাই বাছাইয়ের আমার আবেদন বৈধতা পেয়েছে। কিন্তু হটাৎ গতকাল রাতে শুনি ডিলার নিয়োগ হয়ে গেছে। আমরা কিছুই জানি না।তাই গতকাল বুধবার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ করেছি।
একই অভিযোগ করে সদর ইউপির আবেদনকারী মের্সাস, অপু ভ্যারাইটি স্টোর এর পরিচালক মোঃ সারোয়ার হোসেন অপু বলেন, আমার জানামতে, আমার সবকিছু বৈধ। তবে বৈধ বা অবৈধ সেই বিষয়ে খাদ্য নিয়ন্ত্রণ অফিস আমাকে কিছুই জানায়নি। তবে লোক মারফত জানতে পারি গত মঙ্গলবার বিকেল ৫ টায় খাদ্য বান্ধব ডিলার নিয়োগ তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। আবেদন কারীরা যদি জানতে না পারে কাকে কখন কিভাবে ডিলার নিয়োগ দেওয়া হলো? তবে প্রশ্ন থেকে যায় কিভাবে স্বচ্ছতার ভিত্তিতে ডিলার নিয়োগ করা হলো? সুতরাং স্বচ্ছতার মাধ্যমে নয় বরং অস্বচ্ছভাবে খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তার স্বেচ্ছাচারিতায় তার পছন্দের লোকদের এখানে ডিলার নিয়োগ করা হয়েছে।
একই অভিযোগ করেন আব্দুল্লাহ ইবনে আজিজ তিনি বলেন, সবকিছু বৈধ থাকা সত্ত্বেও আমি কেন নিয়োগ পেলাম না তা জানার জন্য সকাল থেকেই অপেক্ষা করছি। আমার জানামতে একাধিক বৈধ প্রার্থী হলে লটারির মাধ্যমে ডিলার নিয়োগ হবে। কিন্তু উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক স্বেচ্ছাচারিতার মাধ্যমে তার পছন্দের ব্যক্তিকে ডিলার নিয়োগ দিয়েছেন।
মিঠাপুর ইউনিয়ন আবেদনকারী এনামুল কবির এনাম অভিযোগ করে বলেন, আমার সবকিছু বৈধ আছে। আমার এলাকায় ১ টি নিয়োগ স্থগিত আছে। এই নিয়োগটি লটারির মাধ্যমে হলে কোন সমস্যা হতো না। গোপনে নিয়োগ মানে চুরি করার লক্ষণ ও স্বেচ্ছাচারিতার লক্ষণ প্রকাশ পায়। কেননা যারা খাদ্য নিয়ন্ত্রণ অফিসে যারা ধর্না দিয়েছে তারাই এখানে ডিলার নিয়োগ পেয়েছে।
এ বিষয়ে উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক সাবরিন মোস্তারী বলেন, নিয়মতান্ত্রিকভাবে কমিটির মাধ্যমে ডিলার নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। লটারির মাধ্যমে কেন নিয়োগ দিলেন না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, কমিটি যাকে অধিকতার যোগ্য মনে করেছেন তাকে ডিলার নিয়োগ দিয়েছেন। অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, যাদের নিয়োগ দেয়া হয়েছে, তারা বৈধ। এর বাহিরে কোন সিদ্ধান্ত হয়নি।
খাদ্য বান্ধব কর্মসূচির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাহবুব হাসান বলেন, এবিষয়ে কয়েকজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ এসেছে। তাদের ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কে বলেছি।
জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক ফরহাদ খন্দকার বলেন, কয়েকজনের নামে অভিযোগ এসেছে। তাদের কার্যক্রম আপাতত স্থগিত করা হয়েছে।