সুদীপ দাশ, ছাতক (সুনামগঞ্জ) প্রতিনিধি:
সুনামগঞ্জের ছাতকে এস আলম গ্রুপের মালিকানাধীন ফাস্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক গোবিন্দগঞ্জ শাখা থেকে টাকা না পেয়ে খালি হাতে ফিরছেন গ্রাহকরা। প্রতিদিন ব্যাংকে গিয়েও টাকা তুলতে পারছেন না। ব্যাংক থেকে প্রতিদিনে গ্রাহকদের ৫ থেকে ১০ হাজার টাকা দিলেও বেশির ভাগ গ্রাহকরা ফিরছেন খালি হাতে। জমাকৃত টাকা তুলতে না পেরে হয়রানির শিকার হচ্ছেন শাখার প্রায় ১৩ হাজার গ্রাহক।
সোমবার দুপুরে ফাস্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক গোবিন্দগঞ্জ শাখায় গিয়ে দেখা গেছে, গ্রাহকরা টাকা উত্তোলন করতে এসে খালি হাতে ফিরে যাচ্ছেন। এ ব্যাংকের দিনে ১৮০ থেকে ১৯০ গ্রাহক জড়ো হন টাকা উত্তোলনের জন্য। কিন্তু এ শাখাতে তারল্য সংকট থাকায় এবং গ্রাহকরা নতুন করে টাকা জমা না দেওয়ায় নগদ টাকার সংকট কাটছে না।
জানা গেছে, ব্যাংকে ইলেক্ট্রনিক ফান্ড ট্রান্সফার (ইএফটি) ও রিয়েল-টাইম গ্রস সেটেলমেন্ট (আরটিজিএস) বন্ধ থাকার পাশাপাশি মোবাইল ব্যাংকিং ও এটিএম বুথেও টাকা দেওয়া বন্ধ থাকার কারণে গ্রাহক ভোগান্তি চরমে পৌছেছে।
ব্যাংকের গ্রাহক ছাবিনা খানম বলেন, ব্যাংকে ৪ লাখ টাকা জমা রেখেছি। তারা আমাকে মাত্র ৫ হাজার দেয়। গত দুই সপ্তাহ টাকা তুলতে পারিনি। ব্যাংকের অফিসাররা বলছেন তাদের কাছে টাকা নেই। আরেক গ্রাহক রুকসনা জানান, বাচ্চার অসুখ নিয়ে ব্যাংকে এসেছি টাকা তুলতে। ব্যাংক কোনও টাকা দিচ্ছে না। ওষুধ কিনবো কেমনে? তাদের মারপিট করলেও টাকা বের হবে না।
গ্রাহকরা চেকে স্বাক্ষর করে টাকার অঙ্ক না লিখে তা ব্যাংকের কর্মকর্তাদের কাছে জমা রেখে যাচ্ছেন। যেন ব্যাংকে টাকা জমা হলে সামান্য কিছু হলেও পান। শত শত গ্রাহক জড়ো হয়ে আছেন ব্যাংকটির ক্যাশ কাউন্টার ও ব্যবস্থাপক কক্ষের সামনে। কিন্তু গ্রাহকরা দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করেও টাকা পাচ্ছেন না।
ব্যাংকের জুনিয়র ক্যাশ অফিসার ও ক্যাশ ইনচার্জ শাহজাহান বলেন, ব্যাংকে গ্রাহক টাকা জমা দিচ্ছেন না। সবাই শুধু নিতে আসেন। প্রতিদিন গ্রাহকের টাকা জমা প্রদান সাপেক্ষে পাঁচ হাজার থেকে ১০ হাজার টাকা করে দেয়া হচ্ছে।
এ ব্যাপারে ব্যাংক ব্যবস্থাপক নাসিম আহমদ চৌধুরী টাকা সংকটের সত্যতা স্বীকার করে বলেন, প্রতিদিন গ্রাহকদের ৫ হাজার থেকে ১০ হাজার টাকা করে দেয়া হচ্ছে। একসঙ্গে সব গ্রাহকরা টাকা তুলতে আসছে। কিন্তু নতুন করে গ্রাহকরা টাকা জমা না দেওয়ায় এ সংকট দেখা দিয়েছে।