প্রেস বিজ্ঞপ্তি
জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে গাজীপুরে প্রকাশ্যে ছুরিকাঘাতে এক যুবকের মৃত্যুর চাঞ্চল্যকর ঘটনার প্রধান আসামি এবং তার সহযোগীসহ ০২(দুই ) জনকে গ্রেফতার করেছে র্যাব-১।
র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে সবসময় বিভিন্ন ধরণের অপরাধীদের গ্রেফতার এবং হত্যার রহস্য উদঘাটনে অত্যন্ত অগ্রণী ভূমিকা পালন করে আসছে।
এছাড়াও র্যাবের সৃষ্টিকাল থেকে এ পর্যন্ত অপহরণকারী, সন্ত্রাসী, এজাহারনামীয় আসামী, ছিনতাইকারী, চাঁদাবাজ, প্রতারকচক্র, ধর্ষণকারী, পর্ণোগ্রাফি বিস্তারকারী, চোরাকারবারীদের গ্রেফতার করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।
বিশেষত সাম্প্রতিক সময়ে অনেকগুলো ক্লুলেস ও চাঞ্চল্যকর হত্যা ঘটনার দ্রুততম সময়ে নিষ্পত্তি করে র্যাব সাধারণ জনগণের মনে আস্থা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে।
গত ০৯ মার্চ ২০২৪ ইং তারিখ রাত আনুমানিক ১৮.০০ ঘটিকার সময় গাজীপুর জেলার শ্রীপুর থানাধীন বাঁশবাড়ী সাকিনস্থ বাঁশবাড়ী বাজারের পূর্বপাশে জনৈক সুরুজ মিয়ার সেমিপাকা টিনসেড ভবনের পিছনে ফাঁকা জায়গায় ০১। নং আসামী মোঃ শহিদুল ইসলাম @ শহিদ (৪৫) পিতা-মৃত কাশেম আলী, সাং-বাঁশবাড়ী, ইউপি-গাজীপুর, থানা-শ্রীপুর, জেলা-গাজীপুর, ০২। নং আসামী এছানুল হক (২৪) পিতা-মোঃ শহিদুল ইসলাম @ শহিদ, সাং-বাঁশবাড়ী, ইউপি-গাজীপুর, থানা-শ্রীপুর, জেলা-গাজীপুর, ৩। রফিক (৫৫) পিতা-মৃত মুছেন আলী, সাং- সাং-বাঁশবাড়ী, ইউপি-গাজীপুর, থানা-শ্রীপুর, জেলা-গাজীপুর, ৪। ইমরুল (৪০) পিতা-ইউনুছ আলী মাস্টার, সাং-বাঁশবাড়ী, ইউপি-গাজীপুর, থানা-শ্রীপুর, জেলা-গাজীপুর, ৫। ছানোয়ারা হোসেন (২৪), পিতা-রফিক, সাং-বাঁশবাড়ী, ইউপি-গাজীপুর, থানা-শ্রীপুর, জেলা-গাজীপুর, ৬। নূরুল ইসলাম নূরু (৪০), পিতা-সিরাজুল ইসলাম, সাং-বাঁশবাড়ী, ইউপি-গাজীপুর, থানা-শ্রীপুর, জেলা-গাজীপুর, ৭। শফিকুল ইসলাম বিএ (৪৫) পিতা-মৃত নূরুল ইসলাম মাস্টার, সাং-বাঁশবাড়ী, ইউপি-গাজীপুর, থানা-শ্রীপুর, জেলা-গাজীপুর, ৮। মোস্তফা (৫২), পিতা-মৃত কাশেম, সাং-বাঁশবাড়ী, ইউপি-গাজীপুর, থানা-শ্রীপুর, জেলা-গাজীপুর সহ অজ্ঞাতনামা ৫/৬ জন আসামীরা জমি-জমা সংক্রান্ত সমস্যা, পাওনা টাকা না দেওয়া এবং সর্বশেষ চায়ের দোকানের হাতাহাতির বিষয়টি শহিদুল এর ভিতরে প্রচন্ড ক্রোধ এবং প্রতিশোধ পরায়ণতার সৃষ্টির জের ধরে পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী দেশীয় অস্ত-শস্ত্রে সজ্জিত হয়ে ভিকটিম আব্দুল্লাহ (২৬) পিতা-সাহাদত আলী (৫৫) সাং-বাঁশবাড়ী, থানা-শ্রীপুর, জেলা-গাজীপুর’কে মূল পরিকল্পনাকারী মোঃ শহিদুল ইসলাম@ শহিদ (৪৫) এর হাতে থাকা ধারালো ছোরা দিয়ে ভিকটিমের বাম পাজরে স্বজোরে পার মারিয়া গুরুতর জখম করে এবং সহযোগী আসামী এছানুল হক (২৪) ভিকটিমের মৃত্যু নিশ্চত করার জন্য বাম পাজরে পার মারিয়া গুরুতর জখম করে।
ভিকটিম গুরুতর জখমপ্রাপ্ত হইয়া রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে লুটাইয়া পড়ে থাকা অবস্থায় অন্যান্য আসামীরা ভিকটিমের শরীরের বিভিন্ন স্থানে কিল, ঘুষি, লাথি মারিয়া আনন্দ উল্লাস করে। ভিকটিমের আত্মচিৎকারে আশপাশের লোকজন আগাইয়া আসলে আসামীগণ দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করে।
ভিকটিমের পিতা সাহাদত আলী (৫৫) সহ অন্যান্য স্থানীয় লোকজন ভিকটিমকে মুমুর্ষ অবস্থায় উদ্ধার করিয়া সিএনজি যোগে শ্রীপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত ডাক্তার ভিকটিমকে মৃত ঘোষণা করে।
পরবর্তীতে গাজীপুর জেলার শ্রীপুর থানা পুলিশ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে হাজির হইয়া ভিকটিমের মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, গাজীপুর মর্গে প্রেরণ করেন।
উক্ত ঘটনায় ভিকটিমের পিতা-সাহাদত আলী(৫৫), পিতা-মৃত আনছার আলী, সাং-বাঁশবাড়ী, ইউপি-গাজীপুর, থানা-শ্রীপুর, জেলা-গাজীপুর বাদী হয়ে গাজীপুর জেলার শ্রীপুর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। যাহা গাজীপুর জেলার শ্রীপুর থানার মামলা নং-১৮/১০৯, তারিখঃ ১০ মার্চ ২০২৪ ইং, ধারাঃ ৩০২/৩৪ পেনাল কোড ১৮৬০ রুজু হয়। এই ঘটনাটি বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় ব্যাপকভাবে প্রচারিত হয় এবং এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে।
পরবর্তীতে এই হত্যাকান্ডের ঘটনায় জড়িত আসামীদেরকে গ্রেফতারের জন্য র্যাব-১, স্পেশালাইজড কোম্পানী পোড়াবাড়ি ক্যাম্প, গাজীপুর এর আভিযানিক দল বিষয়টি আমলে নিয়ে ছায়া তদন্ত শুরু করে এবং আসামীদেরকে গ্রেফতারের জন্য গোয়েন্দা নজরদারী বৃদ্ধি করে।
এরই ধারাবাহিকতায় গত ১৩ মার্চ ২০২৪ খ্রিঃ তারিখ রাত আনুমানিক ২১.১৫ ঘটিকায় র্যাব-১, স্পেশালাইজ্ড কোম্পানীর একটি আভিযানিক দল তথ্য প্রযুক্তি ও গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারে, গাজীপুর জেলার শ্রীপুর থানার মামলা নং-১৮/১০৯, তারিখঃ ১০ মার্চ ২০২৪ ইং, ধারাঃ ৩০২/৩৪ পেনাল কোড ১৮৬০ এর এজাহারনামীয় ০১। নং প্রধান আসামী মোঃ শহিদুল ইসলাম @ শহিদ (৪৫) পিতা-মৃত কাশেম আলী, সাং-বাঁশবাড়ী, ইউপি-গাজীপুর, থানা-শ্রীপুর, জেলা-গাজীপুর এবং ০২। নং সহযোগী আসামী এছানুল হক (২৪) পিতা-মোঃ শহিদুল ইসলাম @ শহিদ, সাং-বাঁশবাড়ী, ইউপি-গাজীপুর, থানা-শ্রীপুর, জেলা-গাজীপুরদ্বয় ডিএমপি, ঢাকা দক্ষিণখান থানাধীন আব্দুল্লাহপুর আটিপাড়া এলাকায় অত্মগোপনে আছে।
উক্ত সংবাদের ভিত্তিতে অত্র ক্যাম্পের আভিযানিক দল ডিএমপি, ঢাকা দক্ষিণখান থানাধীন আব্দুল্লাহপুর আটিপাড়া এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে সঙ্গীয় অফিসার ও ফোর্সের সহায়তায় উল্লেখিত মামলার পলাতক আসামী ০১। নং আসামী মোঃ শহিদুল ইসলাম @ শহিদ (৪৫) এবং ০২। নং আসামী এছানুল হক (২৪) দ্বয়’কে ডিএমপি, ঢাকা দক্ষিণখান থানাধীন আব্দুল্লাহপুর আটিপাড়া সাকিনস্থ সুজনের বাড়ী হতে গত ১৩/০৩/২৪খ্রিঃ তারিখ আনুমানিক ২২.৪০ ঘটিকার সময় গ্রেফতার করতঃ তাহাদের দখল হতে ০১ টি মোবাইল, ০১ টি আসামীর নামীয় এনআইডি কার্ড, ০১ টি মানিব্যাগ ও নগদ ৪,৭৪০/-(চার হাজার সাত চল্লিশ) টাকা উদ্ধার করা হয়।
র্যাবের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ধৃত প্রধান আসামী মোঃ শহিদুল ইসলাম @ শহিদ (৪৫) ও অন্যমত সহযোগী আসামী এছানুল হক (২৪) দ্বয় উক্ত হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে এবং তাদের ভাষ্যমতে জানা যায় ধৃত আসামী ও ভিকটিমের মধ্যে জমি-জমা সংক্রান্ত সমস্যা, পাওনা টাকা না দেওয়া এবং সর্বশেষ চায়ের দোকানের হাতাহাতির বিষয়টি মোঃ শহিদুল ইসলাম এর ভিতরে প্রচন্ড ক্রোধ এবং প্রতিশোধ পরায়ণতার সৃষ্টি করে। ফলশ্রুতিতে ধৃত আসামীদ্বয় ভিকটিমকে হত্যা করার পরিকল্পনা করা সহ সুযোগ খুঁজতে থাকে।
পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী গত ০৯ মার্চ ২০২৪ তারিখ বিকাল অনুমান ৪.৩০ ঘটিকার সময় ভিকটিম আব্দুল্লাহ (২৬) তাহার নিজ মোটরসাইকেল যোগে বাঁশবাড়ী বাজারের পূর্ব পাশে মেধা বিকাশ প্রি-ক্যাডেট স্কুলের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান দেখতে যায়।
ভিকটিম অনুষ্ঠান চলাকালীন অনুষ্ঠান স্থলের পশ্চিম পাশে জনৈক সালাম এর চায়ের দোকানে বসিয়া একই তারিখ বিকাল অনুমান ৫.৩০ ঘটিকার সময় চা খাইতেছিলো।
এ সময়ে উক্ত বিরোধের জের ধরে ঘটনার দিন ধৃত আসামী মোঃ শহিদুল ইসলাম @ শহিদ (৪৫) ভিকটিম আব্দুল্লাহ (২৬) এর সহিত গায়ে পড়ে ঝগড়ার সৃষ্টি করলে দুই জনের মধ্যে মারামারি ও হাতাহাতি হয়।
উপস্থিত স্থানীয় লোকজন এটা মিটমাট করে দেয়। ভিকটিম আব্দুল্লাহ (২৬) কনসার্টের ভিতরে চলে যায়। ইং ০৯ মার্চ ২০২৪ তারিখ সন্ধ্যা অনুমান ৬.০০ ঘটিকার সময় প্রধান আসামি মো: শহিদুল ইসলাম @ শহিদের নির্দেশে আসামী রফিক (৫৫) এবং আসামী নূরুল ইসলাম নূরু (৪০) ভিকটিম আব্দুল্লাহ (২৬)’কে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে ডাকিয়া গাজীপুর জেলার শ্রীপুর থানাধীন বাঁশবাড়ী সাকিনস্থ বাঁশবাড়ী বাজারের পূর্বপাশে জনৈক সুরুজ মিয়ার সেমিপাকা টিনসেড ভবনের পিছনে ফাঁকা জায়গায় নিয়ে যায়।
ঘটনাস্থলে পৌছামাত্র পূর্ব থেকে ওৎ পেতে থাকা শহিদুল ইসলাম @ শহিদ (৪৫) এর হাতে থাকা ধারালো ছোরা দিয়ে ভিকটিমের বাম পাজরে স্বজোরে পার মারিয়া গুরুতর জখম করে এবং সহযোগী আসামী এছানুল হক (২৪) ভিকটিমের মৃত্যু নিশ্চত করার জন্য বাম পাজরে পার মিারিয়া গুরুতর জখম করে।
ভিকটিম গুরুতর জখমপ্রাপ্ত হইয়া রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে লুটাইয়া পড়ে থাকা অবস্থায় অন্যান্য আসামীরা ভিকটিমের শরীরের বিভিন্ন স্থানে কিল, ঘুষি, লাথি মারিয়া আনন্দ উল্লাস করে। ভিকটিমের আত্মচিৎকারে আশপাশের লোকজন আগাইয়া আসলে আসামীগণ দ্রুত ঘটনাস্থল ত্যাগ করে আত্মগোপনে চলে যায়।
গ্রেফতারকৃত আসামীদ্বয়কে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য গাজীপুর জেলার শ্রীপুর থানা পুলিশের নিকট হস্তান্তর প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
স্বাক্ষরিত/-
মোঃ মাহফুজুর রহমান
সহকারী পুলিশ সুপার
সহকারী পরিচালক ( মিডিয়া অফিসার)
অধিনায়কের পক্ষে
ফোনঃ ৪৮৯৬৩১৫২।