দেলোয়ার হোসেন সরকার, কেন্দুয়া (নেত্রকোনা) প্রতিনিধি: কথাসাহিত্যিক নন্দিত ড. হুমায়ূন আহমেদের ৭৫তম জন্মদিন পালিত।
তিনি ১৯৪৮ সালের এই দিনে নেত্রকোনা জেলার কেন্দুয়া উপজেলা কুতুবপুর গ্রামে জন্ম গ্রহণ করেন। বাবা ফয়জুর রহমান আহমেদ ও মা আয়েশা ফয়েজ। তিন ভাই ও দুই বোনের মধ্যে তিনি সবার বড়। তার ভাইদের মধ্যে কথাসাহিত্যিক ও শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপক মুহম্মদ জাফর ইকবাল এবং কার্টুনিস্ট ও রম্যলেখক আহসান হাবীব।
নাট্যকার ও চলচ্চিত্র নির্মাতা কথাসাহিত্যিক নন্দিত ড. হুমায়ূন আহমেদের ৭৫তম জন্মদিনে সোমবার (১৩ নভেম্বর) জন্ম স্থান কুতুবপুর গ্রামের তার নিজের প্রতিষ্ঠিত ‘শহীদ স্মৃতি বিদ্যা পীঠের’ প্রাঙ্গণে অনুষ্ঠিত হয়। বিদ্যালয়টি সাজসজ্জা ও আলোকসজ্জায় মুখরিত ছিল। এছাড়াও বিদ্যাপীঠে চলেছে নানা আয়োজন।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আসাদুজ্জামান বলেন, কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে- সকালে কোরআন খতম, হুমায়ূন আহমেদ স্যারের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে শ্রদ্ধা নিবেদন, কেক কাটা, আনন্দ শোভাযাত্রা, পরে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করে কবিতা আবৃত্তি, চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা। পরে আলোচনা সভা ও পুরাতন শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।
তিনি আরও জানান, এই এলাকায় কোন মাধ্যমিক পর্যায়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছিলনা দীর্ঘকাল থেকে শিক্ষাবঞ্চিত ছিল এ এলাকার মানুষ। হুমায়ূন আহমেদ স্যার তার মা আয়েশা ফয়েজের অনুরোধে এখানে এই বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা করেন। ২০০৬ সালে মাত্র ৪৮ শিক্ষার্থী নিয়ে যাত্রা শুরু করে শহিদ স্মৃতি বিদ্যাপীঠ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি। বর্তমানে স্কুলটিতে ৩৪৮ শিক্ষার্থী এবং ১৮ শিক্ষক-কর্মচারী রয়েছেন। বিদ্যালয়টি পাবলিক পরীক্ষায় ফলাফল উপজেলার শীর্ষে অবস্থান।
কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদ তার দীর্ঘ চার দশকের সাহিত্যজীবনে উপহার দিয়েছেন সাড়া জাগানো সব উপন্যাস। তৈরি করেছেন হিমু, মিসির আলীর মতো জনপ্রিয় চরিত্র। নির্মাতা হিসেবেও উপহার দিয়েছেন জনপ্রিয় নাটক এবং চলচ্চিত্র। বহু পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন তিনি। তার মধ্যে একুশে পদক, বাংলা একাডেমি পুরস্কার, হুমায়ূন কাদির স্মৃতি পুরস্কার, লেখক শিবির পুরস্কার, মাইকেল মধুসূদন দত্ত পুরস্কার, জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ও বাচসাস পুরস্কার উল্লেখযোগ্য। মুগ্ধ পাঠকের হৃদয়ে তিনি বেঁচে থাকবেন তার রচনাবলিতে। এই কথাসাহিত্যিক ২০১২ সালে মরণব্যাধি ক্যানসার ১৯ জুলাই নিউ ইয়র্কে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।