১৪৮ হিজরীতে শহীদ হওয়ার আগ পর্যন্ত ইমাম জাফর সাদেক আলাইহিস সালামের কাছে ৪ সহস্রাধিক ছাত্র ইসলামী জ্ঞানের বিভিন্ন শাখায় শিক্ষা লাভ করেন।যাদের মধ্যে হযরত জুরারা বিন আ’ঈন, বুরাঈদ বিন মুয়াবিয়া, জামিল বিন দাররাজ, আব্দুল্লাহ বিন মুসকান, আব্দুল্লাহ বিন বুকাইর, জাবির ইবনে হাইয়ান, ইমাম আবু হানিফা, ইমাম মালেক বিন আনাস, সুফিয়ান সাওরী, বায়েজিদ বোস্তামী রেজওয়ানুল্লাহি তায়ালা আলাইহিম আজমাঈন অন্যতম।
আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া আলেহীর আহলে বাইতের মধ্যে হযরত ইমাম জাফর সাদেক আলাইহিস সালাম থেকে সবচেয়ে বেশী হাদীস বর্ণনা হয়েছে। ফেকাহর বিভিন্ন মতপার্থক্যর ক্ষেত্রে ইমাম জাফর সাদেক আলাইহিস সালামের সমাধানগুলোর অনুসরণকারীরা জাফরী মাজহাবের অনুসারী নামে পরিচিতি পেয়েছেন। শুধু জাফরি মাজহাবের অনুসারীরা নয় বরং মসজিদে নববীতে তাঁর হাত দিয়ে জ্ঞান চর্চার যে বিপ্লব শুরু হয়েছিল তা দ্বারা সমগ্র মুসলিম বিশ্ব উপকৃত হয়েছে।
পরবর্তী সময়ে ৩৬১ হিজরির ৭ রমজান মিশরে ফাতেমি খেলাফতের চতুর্থ খলিফা আল-মুয়িজ লি-দ্বীনিল্লাহর নির্দেশে বিশ্ববিখ্যাত আল আজহার বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করা হয়। মুয়িজ লি-দ্বীনিল্লাহ মাজহাবগত দিক থেকে ইসমাঈলি ছিল। আর ইসমাঈল ছিল ইমাম জাফর সাদেক আলাইহিস সালামের পুত্র।
আল আজহার বিশ্ববিদ্যালয় প্রারম্ভে শুধু একটি মসজিদ দিয়ে শুরু হয়েছিল আর আজকে মুসলিম বিশ্বের শীর্ষ দ্বীনি মার্কাজ। অনেকের মতে হযরত ফাতেমা আলাইহাস সালামের ‘জাহরা’ উপাধি থেকেই ফাতেমীরা আল আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ের নামকরণ করেছেন।
আল আজহার বিশ্ববিদ্যালয় ইসমাঈলীদের দ্বারা প্রতিষ্ঠিত হলেও কালক্রমে বিশ্বের সুন্নি মুসলমানদের কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। যা বর্তমানে মধ্যমপন্থী সুফি মুসলমানরা পরিচালনা করছেন। জ্ঞানচর্চাসহ মুসলিম উম্মাহর ঐক্যের ক্ষেত্রে আল আজহার বিশেষ ভূমিকা রাখছে।