মামুন হোসেন ভান্ডারিয়া (পিরোজপুর):
একজন কণ্ঠশিল্পীর বয়স হয়, আর তার ভোকাল ডাউন হতে থাকে। সুরে, কণ্ঠে এক ধরনের বার্ধক্য বিরাজ করে। আর এই মানুষটার বয়স হচ্ছে, আর তিনি যেনো গান দিয়ে নিজেকে ছাড়িয়েই যাচ্ছেন’।
গানে বিমুগ্ধ করে রবিবার রাতে পিরোজপুরের ভান্ডারিয়া হাসপাতাল মাঠে ‘নগর বাউল’ খ্যাত জেমসের গান শুনে কথায় কথায় এমনটিই বলছিলেন অনেকে। হ্যাঁ। সত্যি সত্যিই যেন দিনকে দিন নিজেকে ছাড়িয়ে যাচ্ছেন ‘গুরু’ খ্যাত তারকা শিল্পী জেমস। তার গান শুনে নিমিষেই অজস্র তরুণ যুবক নিজেদের হারিয়ে ফেলেন। গানের রাজা জেমস যেন এক মুগ্ধতার নাম। আর এই মুগ্ধতার স্পর্শ নিতে ভা-ারিয়া হাসপাতাল মাঠে রবিবার রাতে উপস্থিত ছিলেন হাজারো তরুণ তরুণী।
এর আগে দুপুরে ভান্ডারিয়া হাসপাতাল ময়দানে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০৩ তম জন্মদিন উদযাপন উপলক্ষে আলোচনা সভা ও সাংস্কৃত অনুষ্ঠানের আয়োজন করে ভা-ারিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠন। আলোচনা সভায় উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এবং ভা-ারিয়া পৌর প্রশাসক ফাইজুর রশিদ খশরু জোমাদ্দারের সভাপতিত্বে এবং ভান্ডারিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান মিরাজুল ইসলামের সঞ্চালনায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন,পিরোজপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এবং পিরোজপুর -১ আসনের সাবেক এমপি আলহাজ্ব এ কে এম এ আউয়াল।
এছাড়াও বক্তব্য রাখেন, পিরোজপুর জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মহিউদ্দিন মহারাজ, পিরোজপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক জিয়াউল আহসান গাজী, ভান্ডারিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি আবু বক্কর সিদ্দিক মন্টু হাওলাদার,জেলা আওয়ামী লীগ নেতা এ্যাডভোকেট শহিদুল হক পান্না,বীর মুক্তিযোদ্ধা খান এনায়েত করিম ,ভাইস চেয়ারম্যান মশিউর রহমান মৃধা, ইউপি চেয়ারম্যান সিদ্দিকুর রহমান টুলু ডাকুয়া, আ.লীগ নেতা আব্দুর রশিদ মৃধা, টুঙ্গিপাড়া আ’লীগ নেতা হাফিজুর রশিদ তারিক জোমাদ্দার,যুবলীগের উপজেলা সভাপতি টিপু তালুকদার, যুব মহিলা লীগের সভাপতি আসমা সুলতানা যুথী,স্বেচ্ছা সেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক ওয়াহিদ মন্নান উজ্জল হাওলাদার, যুবলীগের উপজেলা সাধারণ সম্পাদক এহসাম হাওলাদার প্রমুখ।
এদিকে জেমসের গান শুনতে বিকাল থেকেই তরুণ তরুণীরা উপস্থিত হন সুবিশাল হাসপাতাল ময়দানে, সন্ধ্যা গড়িয়ে ঘড়িতে তখন রাত দশটা। এদিকে মুহু মুহু বৃষ্টিও কম নয়। বৃষ্টি বিকাল থেকেই। আলস্য ভঙ্গিতে চা ফুকতে ফুকতে যখন কিছুটা উষ্ণতা খুঁজছেন তরুণ-তরুণীরা, তখনই ঘোষণা হল এবার মঞ্চে উঠছেন জেমস! চারদিকে হই হুল্লোড় তখন। তুমুল কড়তালি। এবং নগর বাউলের উপর ভর করে হাসপাতাল ময়দানে এখন উষ্ণতা! নড়ে চড়ে উঠলেন তরুণ যুবকরা। এদিকে মঞ্চে উঠেই গুরু ঘর বানাইলা কি দিয়া গান গেয়ে দর্শকদের উস্কে দিলেন জেমস।
উপস্থিত দর্শক শ্রোতারা সুর মেলালেন নগর বাউলের সঙ্গে। তরুণ তরুণীরা তার কথায় তালিতে তালিতে মুহূর্তেই হাসপাতাল ময়দান যেন কাঁপিয়ে তুললেন। এরপর একে একে গাইলেন বিজলী চলে যেওনা, লিখতে পারিনা কোন গান, আসবার কালে আসলাম একার মতো দর্শক মাতানো গান। এই গানগুলোর বেশীর ভাগই গেয়েছে দর্শক। সুরে কণ্ঠে জেমসের সঙ্গে একাত্বতায় মিশে গেছে সকলে।
ভান্ডারিয়া মাতালেন জেমস ঘড়িতে তখন প্রায় সাড়ে দশটা। টানা এক ঘন্টার মত গাইলেন জেমস। তবু মন ভরছে না দর্শকদের। জানিয়ে দেয়া হল এটাই জেমসের শেষ গান। শ্রোতা দর্শকের চিৎকার করে অনুরোধ, যেন আরো অন্তত একটি গান পরিবশেন করেন জেমস। ফের দর্শকের অনুরোধে জেমস গেয়ে উঠেন ‘পাগলা হাওয়া’। সবার মাঝে ফের উষ্ণতা ছড়িয়ে যায়। তার আগে জেমস সবার উদ্দেশ্যে বলে যান, বেঁচে থাকলে আবার দেখা হবে! । এছাড়াও অনুষ্ঠানে আরো গান গেয়েছেন কণ্ঠ শিল্পী প্রতিক হাচান ও ঐশী।