বাংলাদেশ ০২:৩২ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৪, ৩ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
নোটিশ :

সাংবাদিক নিয়োগ চলছে,, সাংবাদিক নিয়োগ চলছে,,০১৯৯৯-৯৫৩৯৭০, ০১৭১২-৪৪৬৩০৬,০১৭১১-০০৬২১৪ সম্পাদক

     
ব্রেকিং নিউজ ::
নলছিটির ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতির চাঁদাবাজী।। মহাসচিবের কাছে অভিযোগ। পা দিয়ে লিখে আলিম পাশ করলো রাসেল নাইক্ষ‍্যংছড়ি মদিনাতুল উলুম মডেল ইন: ফাজিল ডিগ্রী মাদ্রাসা আলিম পরীক্ষায় এবারও শীর্ষস্থানে নলছিটি সুবিদপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতির বিরুদ্ধে চাঁদা দাবীর অভিযোগ ভান্ডারিয়ায় শিল্পপতি সৈয়দ সোহেল রানার ওপর সন্ত্রাসী হামলা: বিচারের দাবিতে মানববন্ধন ভান্ডারিয়ায় পূজা উদ্যাপন কমিটির সাথে বিএনপির মতবিনিময় সভা ভান্ডারিয়ায় সিরাত সন্ধ্যায় প্রাণের ছোঁয়া ভান্ডারিয়ায় “মুক্তকন্ঠ” শিল্পী ও সাংস্কৃতিক জোটের কুইজ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত গণঅভ্যুত্থানে মানুষের কাঁধে চেপে বসা জালিম শাসকের পতন হয়েছে – মাহমুদুর রহমান ২৬ লাখ টাকার ঘড়ি ৪ মাসেই নষ্ট ঠাকুরগাঁওয়ের শ্রী শ্রী রসিক রায় জিও মন্দির প্রাঙ্গন ও আশপাশ এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি ১৪ মাসেই কোরআনের হাফেজ বালক গৌরনদীতে সাংবাদিক সোহেবের চেক ছিনতাই ও চাঁদাবাজির ঘটনায় আদালতে মামলা মুন্সিগঞ্জ জেলা ক্রিড়া অফিসের আয়োজনে বার্ষিক ক্রিড়া প্রতিযোগিতা ও পুরষ্কার বিতরণ অনুষ্ঠিত। শরীয়তপুরের জাজিরায় ডিজিএম এর একঘেয়েমীর কারণে বিদ্যুৎ স্পৃষ্ট হয়ে প্রাণ গেল এক পল্লীবিদ্যুৎতের লাইনম্যানের।

বরগুনায় গণহত্যা দিবস ২৯ ও ৩০শে মে 

  • নিজস্ব সংবাদ :
  • আপডেট সময় ১১:২০:০৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৮ মে ২০২২
  • ১৭২২ বার পড়া হয়েছে

বরগুনায় গণহত্যা দিবস ২৯ ও ৩০শে মে 

মোঃরনি মল্লিক বরগুনা জেলা প্রতিনিধি:
২৯ ও ৩০ মে বরগুনা গণহত্যা দিবস। ১৯৭১ সালের এ দু’দিনে সংগঠিত হয়েছিলো বরগুনার ইতিহাসের সবচেয়ে বর্বরোচিত কালো ঘটনা। মানুষের জন্য নিরাপদ স্থান বলে বিবেচিত বরগুনা জেলখানায় ৭৬ জন স্বাধীনতাকামী নিরপরাধ বাঙালিকে গুলি করে হত্যা করে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী। পাক হানাদার বাহিনীর মেজর নাদের পারভেজের নেতৃত্বে স্থানীয় শান্তি বাহিনীর প্রধান এমএলএ আ. আজিজ মাস্টারের সহযোগিতায় এ নৃশংস গণহত্যা সংঘটিত হয়।
উল্লেখ্য, মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে ২৭ মে মেজর নাদের পারভেজের নেতৃত্বে পাক হানাদার বাহিনী বরগুনায় প্রবেশ করে। তৎকালীন গণপূর্ত ডাকবাংলোয় অবস্থান নেয় বর্বর এ বাহিনীর সদস্যরা। ওইদিনই তারা বরগুনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেন এবং মুসলিম লীগের নেতাদের সাথে বৈঠক করে একটি নিখুঁত গণহত্যার পরিকল্পনা করেন। তাদের সহায়তা করে দেশীয় রাজাকার আলবদর বাহিনীর সদস্যরা। সেই পরিকল্পনা অনুযায়ী তারা মুক্তিকামী পরিবারে হানা দিয়ে দিয়ে পুরুষ মহিলাদের হাত পেছন মোড়া করে বেঁধে নিয়ে আসে ক্যাম্পে।
সেখান থেকে যুবতী এবং মহিলাদের পাঠানো হয় ডাকবাংলোয় আর পুরুষদের পাঠানো হয় জেলখানায়। পৈশাচিক নির্যাতন শেষে মেয়েদের পরের দিন ছেড়ে দেয়া হয়। জানানো হয় পুরুষদের দু’দিন পরে ছাড়া হবে। কিন্তু তাঁদের আর দেখা পায়নি পরিবারের সদস্যরা। ২৯ ও ৩০ মে মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম জঘন্য এক ঘটনা ঘটে বরগুনার জেলখানায়। কারা অভ্যন্তরে ২৯ মে সকালে সারিবদ্ধ দাঁড় করিয়ে গুলি করা হয় ৪২ জন মুক্তিকামী জনতাকে।
পরের দিন সকালে একইভাবে আরও ৩৪ জনকে হত্যা করা হয়। এই শহীদদের লাশও স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়নি। জেলখানার পশ্চিম পাশে গণকবরে মাটি চাপা দেয়া হয় তাদের। গুলি খেয়েও যারা সৌভাগ্যক্রমে বেঁচে গিয়েছিলেন তাঁদের বেয়নেট দিয়ে খুঁচিয়ে ও কোদাল দিয়ে পিটিয়ে হত্যা নিশ্চিত করা হয়। মুক্তিযুদ্ধে অনেক নারকীয় ঘটনা ঘটেছে তবে জেলখানার অভ্যন্তরে গণহত্যার ঘটনা বিরল।
বরগুনা-১ আসনের ৫ বারের জননন্দিত সাংসদ এবং মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি অ্যাডভোকেট ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভুর বাবা ধৈর্য্যধর দেবনাথ ছিলেন সেই মহান শহীদদের ভেতরে অন্যতম প্রধান। তাঁকে হত্যা করা হয়েছিলো ৩০ মে। সেদিন জেলাখানার হত্যাকাণ্ড থেকে ভাগ্যগুণে রক্ষা পেয়েছিলেন এমন কয়েকজনের সাথে কথা বলে জানা যায়, জেলখানা থেকে অনেক লোককে ছেড়ে দেয়া হলেও তখনকার তুখোড় ছাত্রনেতা শম্ভু মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন বলে এবং বরগুনা শহরে তাদের বাড়িটি থেকে মুক্তিযুদ্ধের বিভিন্ন কর্মকাণ্ড পরিচালিত হওয়ায় তাঁর বাবাকে ছাড়া হয় নি।
এ কারণে সেসময়ে পটুয়াখালী জেলার সামরিক আইন প্রশাসক হিসেবে দায়িত্বপ্রাপ্ত, ৬ পাঞ্জাব রেজিমেন্টের মেজর নাদের পারভেজ প্রকাশ্য জনসভায় তখনকার প্রখ্যাত ছাত্রনেতা শম্ভুসহ ১২ জন ছাত্রনেতা এবং মুক্তিযোদ্ধার মাথার মূল্য এক সের স্বর্ণ ঘোষণা করেছিলেন। কিন্তু বেশ কয়েকবারের চেষ্টাতেও ছাত্রনেতা শম্ভুকে ধরতে না পেরে তাঁর বাবাকে ধরে নিয়ে যাওয়া হয়েছিলো। পাক বাহিনীর মেজর নাদের পারভেজ এবং ক্যাপ্টেন শাখাওয়াতের পক্ষ থেকে শর্ত দেয়া হয়েছিলো, শম্ভুকে আমাদের হাতে তুলে দিন অথবা তাঁর খোঁজ দিন, আমরা আপনাকে ছেড়ে দেবো।
একজন মুক্তিযোদ্ধা সন্তানের পিতা হয়ে সেই শর্ত মেনে নিতে রাজি হন নি তিনি। মৃত্যুর মুখোমুখি দাঁড়িয়ে জীবনের সবচেয়ে কঠিন পরীক্ষায় তিনি সফলভাবে উত্তীর্ণ হয়েছিলেন। তখন এক দিকে ছিলো দেশ আর নিজের সন্তান অন্য দিকে মৃত্যু। সেই সংকটময় মূহুর্তে দেশ আর নিজের সন্তানকে নিঃশঙ্ক চিত্তে উপরে তুলে ধরে তিনি মেনে নিয়েছিলেন মৃত্যুর নিষ্ঠুরতম নিয়তিকে। অমানুষিক নির্যাতন শেষে হায়েনারা দুটো গুলি করেছিলো তাঁকে। প্রথম গুলিতে মৃত্যু না হওয়ায় দ্বিতীয় গুলিটি করে নিশ্চিত করা হয়েছিলো মৃত্যু।
এ প্রসঙ্গে বরগুনা সেক্টর কমান্ডারস ফোরাম, মুক্তিযুদ্ধ একাত্তর বরগুনা জেলা কমিটির আহ্বায়ক আনোয়ার হোসেন মনোয়ার বলেন, মুক্তিযুদ্ধের সময়ে বরগুনা-১ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভুর বরগুনার বাড়িটি মুক্তিযোদ্ধাদের অস্ত্রাগার হিসেবে ব্যবহৃত হতো। এ কারণে ধরে নেওয়া সব বয়স্ক মানুষকে ছেড়ে দেওয়া হলেও সংসদ সদস্যের বাবাকে ছাড়া হয় নি। তিনি তাঁর সন্তানের খোঁজ পাক হানাদার বাহিনীকে দেন নি।
এ বরগুনা-১ আসনের সাংসদ ও মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি অ্যাডভোকেট ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু বলেন, ১৯৭১ সালের ২৯ ও ৩০ মে বরগুনার ইতিহাসের সবচেয়ে বর্বরতম কালো অধ্যায় রচিত হয়েছিলো। মুক্তিকামী সাধারণ জনগণকে ধরে নিয়ে এনে তাঁদেরকে গুলি করে মেরে ফেলা হয়, গুলির পরেও যাঁরা মারা যায়নি তাঁদেরকে কোদাল ও কুড়াল দিয়ে কুপিয়ে কুপিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করা হয়েছিলো।
সেদিনের সে মহান শহীদদের ভেতরে আমার বাবাও ছিলেন। তিনি আমাকে বাঁচাতে এবং দেশের স্বাধীনতার প্রশ্নে নির্ভীক চিত্তে নিজের জীবনকে উৎসর্গ করেছিলেন। এটা আমার জন্য যেমন অত্যন্ত গর্বের এবং তেমনি কষ্টের। সেদিন আমার বাবাসহ দেশের স্বাধীনতা আন্দোলনে যাঁরা আত্মত্যাগ করেছেন তাঁদের প্রতি আমি বিনম্র শ্রদ্ধা জানাই।
তিনি আরও বলেন, বরগুনা বধ্যভূমির সংস্কার ও উন্নয়নের লক্ষ্য ইতিমধ্যেই আমাদের সরকার প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিয়েছে এবং এখন পর্যন্ত ৫০ লক্ষ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। সেখানে প্রয়োজনীয় সংস্কারের জন্য ভবিষ্যতেও আমি যথাযপদক্ষেপ নেবো।
আপলোডকারীর তথ্য

Banglar Alo News

hello

নলছিটির ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতির চাঁদাবাজী।। মহাসচিবের কাছে অভিযোগ।

বরগুনায় গণহত্যা দিবস ২৯ ও ৩০শে মে 

আপডেট সময় ১১:২০:০৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৮ মে ২০২২
মোঃরনি মল্লিক বরগুনা জেলা প্রতিনিধি:
২৯ ও ৩০ মে বরগুনা গণহত্যা দিবস। ১৯৭১ সালের এ দু’দিনে সংগঠিত হয়েছিলো বরগুনার ইতিহাসের সবচেয়ে বর্বরোচিত কালো ঘটনা। মানুষের জন্য নিরাপদ স্থান বলে বিবেচিত বরগুনা জেলখানায় ৭৬ জন স্বাধীনতাকামী নিরপরাধ বাঙালিকে গুলি করে হত্যা করে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী। পাক হানাদার বাহিনীর মেজর নাদের পারভেজের নেতৃত্বে স্থানীয় শান্তি বাহিনীর প্রধান এমএলএ আ. আজিজ মাস্টারের সহযোগিতায় এ নৃশংস গণহত্যা সংঘটিত হয়।
উল্লেখ্য, মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে ২৭ মে মেজর নাদের পারভেজের নেতৃত্বে পাক হানাদার বাহিনী বরগুনায় প্রবেশ করে। তৎকালীন গণপূর্ত ডাকবাংলোয় অবস্থান নেয় বর্বর এ বাহিনীর সদস্যরা। ওইদিনই তারা বরগুনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেন এবং মুসলিম লীগের নেতাদের সাথে বৈঠক করে একটি নিখুঁত গণহত্যার পরিকল্পনা করেন। তাদের সহায়তা করে দেশীয় রাজাকার আলবদর বাহিনীর সদস্যরা। সেই পরিকল্পনা অনুযায়ী তারা মুক্তিকামী পরিবারে হানা দিয়ে দিয়ে পুরুষ মহিলাদের হাত পেছন মোড়া করে বেঁধে নিয়ে আসে ক্যাম্পে।
সেখান থেকে যুবতী এবং মহিলাদের পাঠানো হয় ডাকবাংলোয় আর পুরুষদের পাঠানো হয় জেলখানায়। পৈশাচিক নির্যাতন শেষে মেয়েদের পরের দিন ছেড়ে দেয়া হয়। জানানো হয় পুরুষদের দু’দিন পরে ছাড়া হবে। কিন্তু তাঁদের আর দেখা পায়নি পরিবারের সদস্যরা। ২৯ ও ৩০ মে মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম জঘন্য এক ঘটনা ঘটে বরগুনার জেলখানায়। কারা অভ্যন্তরে ২৯ মে সকালে সারিবদ্ধ দাঁড় করিয়ে গুলি করা হয় ৪২ জন মুক্তিকামী জনতাকে।
পরের দিন সকালে একইভাবে আরও ৩৪ জনকে হত্যা করা হয়। এই শহীদদের লাশও স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়নি। জেলখানার পশ্চিম পাশে গণকবরে মাটি চাপা দেয়া হয় তাদের। গুলি খেয়েও যারা সৌভাগ্যক্রমে বেঁচে গিয়েছিলেন তাঁদের বেয়নেট দিয়ে খুঁচিয়ে ও কোদাল দিয়ে পিটিয়ে হত্যা নিশ্চিত করা হয়। মুক্তিযুদ্ধে অনেক নারকীয় ঘটনা ঘটেছে তবে জেলখানার অভ্যন্তরে গণহত্যার ঘটনা বিরল।
বরগুনা-১ আসনের ৫ বারের জননন্দিত সাংসদ এবং মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি অ্যাডভোকেট ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভুর বাবা ধৈর্য্যধর দেবনাথ ছিলেন সেই মহান শহীদদের ভেতরে অন্যতম প্রধান। তাঁকে হত্যা করা হয়েছিলো ৩০ মে। সেদিন জেলাখানার হত্যাকাণ্ড থেকে ভাগ্যগুণে রক্ষা পেয়েছিলেন এমন কয়েকজনের সাথে কথা বলে জানা যায়, জেলখানা থেকে অনেক লোককে ছেড়ে দেয়া হলেও তখনকার তুখোড় ছাত্রনেতা শম্ভু মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন বলে এবং বরগুনা শহরে তাদের বাড়িটি থেকে মুক্তিযুদ্ধের বিভিন্ন কর্মকাণ্ড পরিচালিত হওয়ায় তাঁর বাবাকে ছাড়া হয় নি।
এ কারণে সেসময়ে পটুয়াখালী জেলার সামরিক আইন প্রশাসক হিসেবে দায়িত্বপ্রাপ্ত, ৬ পাঞ্জাব রেজিমেন্টের মেজর নাদের পারভেজ প্রকাশ্য জনসভায় তখনকার প্রখ্যাত ছাত্রনেতা শম্ভুসহ ১২ জন ছাত্রনেতা এবং মুক্তিযোদ্ধার মাথার মূল্য এক সের স্বর্ণ ঘোষণা করেছিলেন। কিন্তু বেশ কয়েকবারের চেষ্টাতেও ছাত্রনেতা শম্ভুকে ধরতে না পেরে তাঁর বাবাকে ধরে নিয়ে যাওয়া হয়েছিলো। পাক বাহিনীর মেজর নাদের পারভেজ এবং ক্যাপ্টেন শাখাওয়াতের পক্ষ থেকে শর্ত দেয়া হয়েছিলো, শম্ভুকে আমাদের হাতে তুলে দিন অথবা তাঁর খোঁজ দিন, আমরা আপনাকে ছেড়ে দেবো।
একজন মুক্তিযোদ্ধা সন্তানের পিতা হয়ে সেই শর্ত মেনে নিতে রাজি হন নি তিনি। মৃত্যুর মুখোমুখি দাঁড়িয়ে জীবনের সবচেয়ে কঠিন পরীক্ষায় তিনি সফলভাবে উত্তীর্ণ হয়েছিলেন। তখন এক দিকে ছিলো দেশ আর নিজের সন্তান অন্য দিকে মৃত্যু। সেই সংকটময় মূহুর্তে দেশ আর নিজের সন্তানকে নিঃশঙ্ক চিত্তে উপরে তুলে ধরে তিনি মেনে নিয়েছিলেন মৃত্যুর নিষ্ঠুরতম নিয়তিকে। অমানুষিক নির্যাতন শেষে হায়েনারা দুটো গুলি করেছিলো তাঁকে। প্রথম গুলিতে মৃত্যু না হওয়ায় দ্বিতীয় গুলিটি করে নিশ্চিত করা হয়েছিলো মৃত্যু।
এ প্রসঙ্গে বরগুনা সেক্টর কমান্ডারস ফোরাম, মুক্তিযুদ্ধ একাত্তর বরগুনা জেলা কমিটির আহ্বায়ক আনোয়ার হোসেন মনোয়ার বলেন, মুক্তিযুদ্ধের সময়ে বরগুনা-১ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভুর বরগুনার বাড়িটি মুক্তিযোদ্ধাদের অস্ত্রাগার হিসেবে ব্যবহৃত হতো। এ কারণে ধরে নেওয়া সব বয়স্ক মানুষকে ছেড়ে দেওয়া হলেও সংসদ সদস্যের বাবাকে ছাড়া হয় নি। তিনি তাঁর সন্তানের খোঁজ পাক হানাদার বাহিনীকে দেন নি।
এ বরগুনা-১ আসনের সাংসদ ও মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি অ্যাডভোকেট ধীরেন্দ্র দেবনাথ শম্ভু বলেন, ১৯৭১ সালের ২৯ ও ৩০ মে বরগুনার ইতিহাসের সবচেয়ে বর্বরতম কালো অধ্যায় রচিত হয়েছিলো। মুক্তিকামী সাধারণ জনগণকে ধরে নিয়ে এনে তাঁদেরকে গুলি করে মেরে ফেলা হয়, গুলির পরেও যাঁরা মারা যায়নি তাঁদেরকে কোদাল ও কুড়াল দিয়ে কুপিয়ে কুপিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করা হয়েছিলো।
সেদিনের সে মহান শহীদদের ভেতরে আমার বাবাও ছিলেন। তিনি আমাকে বাঁচাতে এবং দেশের স্বাধীনতার প্রশ্নে নির্ভীক চিত্তে নিজের জীবনকে উৎসর্গ করেছিলেন। এটা আমার জন্য যেমন অত্যন্ত গর্বের এবং তেমনি কষ্টের। সেদিন আমার বাবাসহ দেশের স্বাধীনতা আন্দোলনে যাঁরা আত্মত্যাগ করেছেন তাঁদের প্রতি আমি বিনম্র শ্রদ্ধা জানাই।
তিনি আরও বলেন, বরগুনা বধ্যভূমির সংস্কার ও উন্নয়নের লক্ষ্য ইতিমধ্যেই আমাদের সরকার প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিয়েছে এবং এখন পর্যন্ত ৫০ লক্ষ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। সেখানে প্রয়োজনীয় সংস্কারের জন্য ভবিষ্যতেও আমি যথাযপদক্ষেপ নেবো।