বাংলাদেশ ০২:১৭ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৪, ৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
নোটিশ :

সাংবাদিক নিয়োগ চলছে,, সাংবাদিক নিয়োগ চলছে,,০১৯৯৯-৯৫৩৯৭০, ০১৭১২-৪৪৬৩০৬,০১৭১১-০০৬২১৪ সম্পাদক

     
ব্রেকিং নিউজ ::
জেলা পরিষদের সদস্য ও বাইশারীর কৃতি সন্তানদের গণসংবর্ধনা চট্টগ্রামে আঞ্চলিক গানের কিংবদন্তি শিল্পী শেফালী ঘোষ সরকারি চাকুরির প্রলোভন দেখিয়ে টাকা আত্মসাৎকারি শীর্ষ প্রতারক হাবিবুল্লাহ হাবিব কারিকরকে গ্রেফতার করে র‌্যাব। জিয়া সেতুতে অবৈধ ডাম্প ট্রাক না চলার হুঁশিয়ারি ঘূর্ণিঝড় সিডর স্মরণে রাঙ্গাবালীতে মোমবাতি প্রজ্জ্বলন। কালুরঘাট সেতুর কাজ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হবে : সেতু উপদেষ্টা ব্রাহ্মণপাড়ায় বিপুল পরিমাণ মাদক ও অবৈধ ভারতীয় মালামাল জব্দ পীরগঞ্জে আবু সাঈদের কবর জেয়ারত করেছেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ও আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক। ইন্দুরকানিতে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল পিরোজপুরে জোড়া খুন এর মামলায় ২১ বছরের সাজাপ্রাপ্ত আসামী খাগড়াছড়ি থেকে গ্রেপ্তার বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস উপলক্ষে আলোচনা ও আপনজন সম্মাননা চাঁদা আদায়ের উদ্দেশ্যে অপহৃত মসজিদের ইমাম হাফেজ সোলাইমান কে উদ্ধার অপহরণকারী দাদনকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব। নাটোরে ভোরের চেতনা পত্রিকার ২৬ তম বর্ষপূর্তী উদযাপিত। বিস্ফোরক আইনে প্রধান শিক্ষক শফিক গ্রেফতার বিএনপি নেতা – কর্মীদের ওপর বোমা হামলার অভিযোগ

সেই কোন শৈশবে বাবার হাত ধরে ‘দৈনিক পাকিস্তান’ দিয়ে পত্রিকার হকারি জীবনের শুরু।

  • নিজস্ব সংবাদ :
  • আপডেট সময় ০২:৩৩:০৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ৪ এপ্রিল ২০২২
  • ১৭২০ বার পড়া হয়েছে

সেই কোন শৈশবে বাবার হাত ধরে ‘দৈনিক পাকিস্তান’ দিয়ে পত্রিকার হকারি জীবনের শুরু।

সাইফুর নিশাদ নরসিংদী প্রতিনিধি 
আজ ৫৭ বছর ধরে আছেন সেই একই পেশায়। সাইকেলে করে ঘুরে ঘুরে আগের মতোই পত্রিকা পৌঁছে দেন অফিসে অফিসে, মানুষের বাড়িতে বাড়িতে।
নরসিংদীর মনোহরদী পৌর এলাকার হাররদীয়া গ্রামের বাসিন্দা মতিউর রহমান। বয়স ৭০। স্থানীয়ভাবে সবাই তাকে হকার মতি হিসেবেই চেনেন।
আলাপকালে মতি ভাই জানান, বাবার হাত ধরে ‘দৈনিক পাকিস্তান’ ও ‘অবজারভার’ দিয়ে তার পত্রিকা ব্যবসার শুরু। মতি ভাইয়ের ভাষায়, পাক-ভারত যুদ্ধের সময় (৬৫ সাল) থেকে তিনি এ ব্যবসায় আছেন। তিনি তখন ১৩ কিলোমিটার দূরের শিবপুর থেকে সাইকেলে করে পত্রিকা আনতেন। আবার সাইকেলে করেই পাঠকদের বাড়ি ও অফিসে পৌঁছে দিতেন পত্রিকা। তার ব্যবসার গন্ডি একসময় মনোহরদী ছাড়িয়ে কাপাসিয়া উপজেলারও এক বিস্তীর্ণ গন্ডি পর্যন্ত ছড়িয়ে ছিলো।
গল্পে গল্পে মতি ভাই জানান, আগের দিনের পত্রিকা পরের দিন আসতো। তা’ও মাত্র ২০টি পত্রিকা। সেও আবার নিজের নামে নয়- শিবপুরের খালেক মাস্টারের নামে। সেখান থেকে পত্রিকা এনে বিক্রি করতেন তিনি। পরে নিজে এজেন্ট হন। পাশাপাশি ডাক বিভাগের রানার পদে চাকরি নেন।
১৩ কিলোমিটার দূরবর্তী শিবপুর থেকে সাইকেল চালিয়ে পত্রিকা আনতে যেতেন। সেইসঙ্গে আবার ডাক আনানেয়ার কাজও করতে হতো প্রতিদিন। এভাবে প্রত্যহ শিবপুর যাতায়াত করতে হতো তাকে। আবার সাইকেলে করে ঘুরে ঘুরে পত্রিকাও পৌঁছে দিতে হতো পাঠকদের হাতে হাতে। এ কাজে তাকে যেমন মনোহরদী সদরের এ বাড়ি- ও বাড়ি, এ অফিস- ও অফিস যেতে হতো, তেমনি কাপাসিয়া এলাকার খিরাটি, কামারগাঁও, চালা, ঘোরস্বাব ও আড়াল এলাকায়ও যাতায়াত করতে হতো। আর তা’ও মাঝেমধ্যে কিংবা কখনো-সখনো নয়, একেবারে নিয়মিত এবং প্রতিদিন।
মতিভাই জানান, এজন্য কম করে হলেও প্রতিদিন ৫০ থেকে ৬০ কিলোমিটার রাস্তা সাইকেল চালাতো হতো তাকে। পরে এ ব্যবসায় ছেলে আলমও সহায়তা করতো তাকে। এ কাজে রোদ-বৃষ্টি-ঝড় কোনটাকেই ভয় পেলে চলতো না তার।
মতি ভাই ডাক বিভাগের চাকরি থেকে অবসর নিয়েছেন সেও আজ প্রায় ১০ বছর। কিন্তু এখনো তিনি সাইকেলে করে পত্রিকা ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন আগের মতোই। এখনো এলাকাবাসীসহ মনোহরদীর সরকারি-বেসরকারি অধিকাংশ অফিসই আছে এ পুরনো সংবাত্রসেবীর দখলেই।
আলাপকালে মতি ভাই আরও জানান, কালের পরিবর্তনে এ ব্যবসায় অনেক পরিবর্তন এসেছে। খুব কম সংবাদপত্রসেবীই এখন আর আগের মতো সাইকেলে করে পত্রিকা বিতরণ করে থাকেন। এখন অধিকাংশেরই মোটরসাইকেল আছে। কিন্তু মতি ভাই আছেন আগের মতোই।
কিন্তু আর কতোদিন এভাবে চলবে তার- জানতে চাইলে তিনি বলেন, পরিশ্রম করে সারা জীবন গেছে। এখন আর বসে বসে খেতে ভালো লাগে না। যতোদিন শরীর-স্বাস্থ্যে কুলোয়, ততোদিনই এ ব্যবসা চালিয়ে যাবার ইচ্ছে। আর তা আগের মতোই সাইকেলে করে ঘুরে ঘুরেই।
জনপ্রিয় সংবাদ

জেলা পরিষদের সদস্য ও বাইশারীর কৃতি সন্তানদের গণসংবর্ধনা

সেই কোন শৈশবে বাবার হাত ধরে ‘দৈনিক পাকিস্তান’ দিয়ে পত্রিকার হকারি জীবনের শুরু।

আপডেট সময় ০২:৩৩:০৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ৪ এপ্রিল ২০২২
সাইফুর নিশাদ নরসিংদী প্রতিনিধি 
আজ ৫৭ বছর ধরে আছেন সেই একই পেশায়। সাইকেলে করে ঘুরে ঘুরে আগের মতোই পত্রিকা পৌঁছে দেন অফিসে অফিসে, মানুষের বাড়িতে বাড়িতে।
নরসিংদীর মনোহরদী পৌর এলাকার হাররদীয়া গ্রামের বাসিন্দা মতিউর রহমান। বয়স ৭০। স্থানীয়ভাবে সবাই তাকে হকার মতি হিসেবেই চেনেন।
আলাপকালে মতি ভাই জানান, বাবার হাত ধরে ‘দৈনিক পাকিস্তান’ ও ‘অবজারভার’ দিয়ে তার পত্রিকা ব্যবসার শুরু। মতি ভাইয়ের ভাষায়, পাক-ভারত যুদ্ধের সময় (৬৫ সাল) থেকে তিনি এ ব্যবসায় আছেন। তিনি তখন ১৩ কিলোমিটার দূরের শিবপুর থেকে সাইকেলে করে পত্রিকা আনতেন। আবার সাইকেলে করেই পাঠকদের বাড়ি ও অফিসে পৌঁছে দিতেন পত্রিকা। তার ব্যবসার গন্ডি একসময় মনোহরদী ছাড়িয়ে কাপাসিয়া উপজেলারও এক বিস্তীর্ণ গন্ডি পর্যন্ত ছড়িয়ে ছিলো।
গল্পে গল্পে মতি ভাই জানান, আগের দিনের পত্রিকা পরের দিন আসতো। তা’ও মাত্র ২০টি পত্রিকা। সেও আবার নিজের নামে নয়- শিবপুরের খালেক মাস্টারের নামে। সেখান থেকে পত্রিকা এনে বিক্রি করতেন তিনি। পরে নিজে এজেন্ট হন। পাশাপাশি ডাক বিভাগের রানার পদে চাকরি নেন।
১৩ কিলোমিটার দূরবর্তী শিবপুর থেকে সাইকেল চালিয়ে পত্রিকা আনতে যেতেন। সেইসঙ্গে আবার ডাক আনানেয়ার কাজও করতে হতো প্রতিদিন। এভাবে প্রত্যহ শিবপুর যাতায়াত করতে হতো তাকে। আবার সাইকেলে করে ঘুরে ঘুরে পত্রিকাও পৌঁছে দিতে হতো পাঠকদের হাতে হাতে। এ কাজে তাকে যেমন মনোহরদী সদরের এ বাড়ি- ও বাড়ি, এ অফিস- ও অফিস যেতে হতো, তেমনি কাপাসিয়া এলাকার খিরাটি, কামারগাঁও, চালা, ঘোরস্বাব ও আড়াল এলাকায়ও যাতায়াত করতে হতো। আর তা’ও মাঝেমধ্যে কিংবা কখনো-সখনো নয়, একেবারে নিয়মিত এবং প্রতিদিন।
মতিভাই জানান, এজন্য কম করে হলেও প্রতিদিন ৫০ থেকে ৬০ কিলোমিটার রাস্তা সাইকেল চালাতো হতো তাকে। পরে এ ব্যবসায় ছেলে আলমও সহায়তা করতো তাকে। এ কাজে রোদ-বৃষ্টি-ঝড় কোনটাকেই ভয় পেলে চলতো না তার।
মতি ভাই ডাক বিভাগের চাকরি থেকে অবসর নিয়েছেন সেও আজ প্রায় ১০ বছর। কিন্তু এখনো তিনি সাইকেলে করে পত্রিকা ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন আগের মতোই। এখনো এলাকাবাসীসহ মনোহরদীর সরকারি-বেসরকারি অধিকাংশ অফিসই আছে এ পুরনো সংবাত্রসেবীর দখলেই।
আলাপকালে মতি ভাই আরও জানান, কালের পরিবর্তনে এ ব্যবসায় অনেক পরিবর্তন এসেছে। খুব কম সংবাদপত্রসেবীই এখন আর আগের মতো সাইকেলে করে পত্রিকা বিতরণ করে থাকেন। এখন অধিকাংশেরই মোটরসাইকেল আছে। কিন্তু মতি ভাই আছেন আগের মতোই।
কিন্তু আর কতোদিন এভাবে চলবে তার- জানতে চাইলে তিনি বলেন, পরিশ্রম করে সারা জীবন গেছে। এখন আর বসে বসে খেতে ভালো লাগে না। যতোদিন শরীর-স্বাস্থ্যে কুলোয়, ততোদিনই এ ব্যবসা চালিয়ে যাবার ইচ্ছে। আর তা আগের মতোই সাইকেলে করে ঘুরে ঘুরেই।