নিজস্ব সংবাদ : 
সংবাদ বিজ্ঞপ্তি
সিলেটে চাঞ্চল্যকর গণধর্ষণ মামলার প্রধান আসামীকে গ্রেফতার করেছে র্যাব-৯, সিলেট।
র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ান, র্যাব এলিট ফোর্স হিসেবে আত্মপ্রকাশের সূচনালগ্ন থেকেই বিভিন্ন ধরনের নৃশংস ও ঘৃণ্যতম অপরাধ বিশেষ করে ধর্ষণ, মানবপাচার, হত্যা মামলা, সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ, জঙ্গি দমন, অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার, মাদক ও ছিনতাইকারীসহ বিভিন্ন অপরাধীদের গ্রেপ্তারে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে আসছে। যেকোন ধরনের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় র্যাবের প্রতিটি সদস্য প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হয়ে জনসাধারণের জন্য একটি নিরাপদ বাসযোগ্য সমাজ তথা দেশ বিনির্মাণে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
সিলেটে কিছুদিন আগে ভালো কোম্পানীতে চাকুরী ও বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে এক তরুনীকে দীর্ঘদিন আটকে রেখে গণধর্ষণের ঘটনা ঘটে। চাঞ্চল্যকর এ ঘটনাটি মিডিয়ার মাধ্যমে সিলেটসহ দেশব্যাপী ব্যাপক আলোচিত হয়।
উক্ত ঘটনায় এসএমপি-সিলেট এর কোতোয়ালী থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন-২০০০ (সংশোধনী-২০০৩) অনুযায়ী গণধর্ষণের মামলা হয়। এরই প্রেক্ষিতে আসামীদের আইনের আওতায় আনতে র্যাব-৯, সিলেট চাঞ্চল্যকর এই ঘটনার ছায়া তদন্ত শুরু করে এবং গোয়েন্দা নজরদারী বৃদ্ধি করে।
মামলার এজাহার হতে জানা যায়, ভিকটিম (১৮) সিলেটের শেখঘাটের একটি বোতল ফ্যাক্টরীতে কাজ করতেন। গত ০৭ জানুয়ারি ২০২৪ খ্রিঃ তারিখ পরিবারের সদস্যরা ভিকটিমকে বাসায় রেখে গ্রামের বাড়িতে বেড়াতে গেলে একই এলাকার আসামী রেখা বেগম (৩০) তাকে ভালো কাজ পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে ধৃত আসামী আব্দুস সালাম (৪০) এর বাসায় নিয়ে যায়।
পরে আসামী আব্দুস সালাম তার বাসায় ভিকটিমকে আটকে রেখে টানা ২২ দিন জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। ভিকটিমের পরিবারের সদস্যরা গ্রাম থেকে সিলেটের বাসায় এসে সম্ভাব্য সব স্থানে খোঁজ করে ভিকটিমকে না পেয়ে থানায় জিডি করতে চাইলে আসামী আব্দুস সালাম তাদের জিডি করতে নিষেধ করে এবং মেয়েকে খুঁজে দিবে বলে আশ^স্ত করে।
পরবর্তীতে আব্দুস সালাম ভিকটিমের পরিবারকে জানায় তাদের মেয়েকে এক লন্ডন প্রবাসীর বাসা থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। কিন্তু ভিকটিম পরিবারের কাছে আব্দুস সালাম কর্তৃক ধর্ষিত হওয়ার বিষয়টি জানালে আসামী ভিকটিমকে বিয়ে এবং ভালো কোম্পানীতে চাকুরীর প্রলোভন দেখায়।
উদ্ধারের তিনদিন পর আসামী ভালো কোম্পানীতে চাকুরী ও বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ভিকটিমকে বাসা থেকে বের করে নিয়ে যায় এবং অপর আসামী আব্দুল মনাফ (৩০) এর মাধ্যমে তাকে হবিগঞ্জের বাহুবলে পাঠিয়ে দেয়।
সেখানে আনুমানিক ০২ মাস ভিকটিমকে আটকে রেখে আব্দুস সালাম ও তার অন্যান্য সহযোগীরা তাকে ভিন্ন ভিন্ন তারিখ ও সময়ে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। সেখান থেকে গত ২৬ মার্চ ২০২৪ খ্রিঃ তারিখ এক আত্বীয়ের মাধ্যমে ভিকটিমকে উদ্ধার করে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় সিলেট এম.এ.জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
এই ঘটনায় ভিকটিমের মা বাদী হয়ে ০৩ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা ২/৩ জনের নামে এসএমপি-সিলেট এর কোতোয়ালী থানায় একটি গণধর্ষণ মামলা দায়ের করেন (মামলা নং-৫৭/১৭৫, তারিখঃ- ২৯/০৩/২০২৪ খ্রিঃ)।
এরই ধারাবাহিকতায় প্রাপ্ত গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র্যাব-৯, সিলেট এর একটি আভিযানিক দল অদ্য ০২ এপ্রিল ২০২৪ খ্রিঃ তারিখ রাত আনুমানিক ০২.১৫ ঘটিকার সময় সিলেট জেলার গোলাপগঞ্জ থানাধীন এলাকায় বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে চাঞ্চল্যকর এই গণধর্ষণ মামলার প্রধান আসামী আব্দুস সালাম (৪০) কে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। গ্রেফতারকৃত ব্যক্তি এসএমপি-সিলেট এর কোতোয়ালী থানাধীন লালদিঘীরপাড় এলাকার বাসিন্দা।
পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা গ্রহণসহ মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে গ্রেফতারকৃত আসামীকে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। ঘটনায় জড়িত অন্যান্য পলাতক আসামীদের গ্রেফতারের লক্ষ্যে র্যাব-৯ এর গোয়েন্দা তৎপরতা ও চলমান অভিযান অব্যাহত থাকবে।
