বাংলাদেশ ১১:৫২ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
নোটিশ :

সাংবাদিক নিয়োগ চলছে,, সাংবাদিক নিয়োগ চলছে,,০১৯৯৯-৯৫৩৯৭০, ০১৭১২-৪৪৬৩০৬,০১৭১১-০০৬২১৪ সম্পাদক

     
ব্রেকিং নিউজ ::
জেলা পরিষদের সদস্য ও বাইশারীর কৃতি সন্তানদের গণসংবর্ধনা চট্টগ্রামে আঞ্চলিক গানের কিংবদন্তি শিল্পী শেফালী ঘোষ সরকারি চাকুরির প্রলোভন দেখিয়ে টাকা আত্মসাৎকারি শীর্ষ প্রতারক হাবিবুল্লাহ হাবিব কারিকরকে গ্রেফতার করে র‌্যাব। জিয়া সেতুতে অবৈধ ডাম্প ট্রাক না চলার হুঁশিয়ারি ঘূর্ণিঝড় সিডর স্মরণে রাঙ্গাবালীতে মোমবাতি প্রজ্জ্বলন। কালুরঘাট সেতুর কাজ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হবে : সেতু উপদেষ্টা ব্রাহ্মণপাড়ায় বিপুল পরিমাণ মাদক ও অবৈধ ভারতীয় মালামাল জব্দ পীরগঞ্জে আবু সাঈদের কবর জেয়ারত করেছেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ও আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক। ইন্দুরকানিতে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল পিরোজপুরে জোড়া খুন এর মামলায় ২১ বছরের সাজাপ্রাপ্ত আসামী খাগড়াছড়ি থেকে গ্রেপ্তার বিশ্ব ডায়াবেটিস দিবস উপলক্ষে আলোচনা ও আপনজন সম্মাননা চাঁদা আদায়ের উদ্দেশ্যে অপহৃত মসজিদের ইমাম হাফেজ সোলাইমান কে উদ্ধার অপহরণকারী দাদনকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব। নাটোরে ভোরের চেতনা পত্রিকার ২৬ তম বর্ষপূর্তী উদযাপিত। বিস্ফোরক আইনে প্রধান শিক্ষক শফিক গ্রেফতার বিএনপি নেতা – কর্মীদের ওপর বোমা হামলার অভিযোগ

বিজ্ঞান শিক্ষক কারাগারে কেন?

  • নিজস্ব সংবাদ :
  • আপডেট সময় ০১:৪৭:৩৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৭ এপ্রিল ২০২২
  • ২০৪৭ বার পড়া হয়েছে

বিজ্ঞান শিক্ষক কারাগারে কেন?

 

 

লেখকঃ জাফর হোসেন জাকির শিক্ষার্থী, গণিত বিভাগ, নীলফামারী সরকারি কলেজ ও কলাম লেখক

আমরা পৃথিবীতে বাস করি। প্রশ্ন হচ্ছে পৃথিবী কি? পৃথিবী হলো সৌরজগতের সদস্য। সৌরজগত আবার কি? পৃথিবী যেমন একটি গ্রহ এইরকম আটটি গ্রহ নিয়ে সৌরজগতের পরিবার। সেগুলো হচ্ছে-বুধ, শুক্র, পৃথিবী, মঙ্গল, বৃহস্পতি, শনি, ইউরেনাস ও নেপচুন।এসব গ্রহের মাঝখানে সূর্যের অবস্থান। সূর্য কি? সূর্য একটি নক্ষত্র। সূর্যের নিজস্ব আলো আছে। যেখানে আলো সেখানে তাপও বিদ্যমান। সূর্যের আলোর জন্য পৃথিবীসহ অন্যান্য গ্রহগুলো আলোকিত। দিন রাত হয় কেন? আহ্নিক গতির কারণে। আহ্নিক গতি কি? পৃথিবী সূর্যকে কেন্দ্র করে নিজ অক্ষে ২৩ ঘণ্টা ৫৬ মিনিট ৪ সেকেন্ড বা ২৪ ঘণ্টা সময়ে অনবরত পশ্চিম থেকে পূর্ব দিকে আবর্তন করছে।

 

 

এই সময়কে সৌরদিন এবং আবর্তনকে আহ্নিক গতি বা দৈনিক গতি বলে। আহ্নিক গতির সংজ্ঞা থেকে পরিষ্কার সূর্য নয় পৃথিবী ঘুরে অর্থাৎ পৃথিবীর সারাক্ষণ ঘূর্ণয়মান। ফলে এখন যদি যে কাউকে জিজ্ঞেস করা হয় পৃথিবী ঘুরে না-কি সূর্য? নির্ভাবনায় উত্তর আসবে সূর্য। ভাবনামুক্ত উত্তর কি একদিনে এবং এমনি এমনি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে? না হয়নি। প্রতিষ্ঠিত হয়ে সঠিক যুক্তির পরেও মধ্যযুগীয় নির্যাতন, গ্রেপ্তার আর জীবনত্যাগের  মধ্যদিয়ে।  মুন্সীগঞ্জে বিজ্ঞান ক্লাস চলাকালে ধর্ম অবমানার অভিযোগের কারণে বিনোদপুর রাজকুমার উচ্চ বিদ্যালয়ের বিজ্ঞান শিক্ষক হৃদয় চন্দ্র মন্ডলকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

কোপার্নিকাস-জিওদার্নো ব্রুনো-গ্যালিলিও এই মহান বিজ্ঞানীদেরকে ধর্ম অবমাননা, বাইবেল অবমাননার দায়ে কারাভোগ করতে হয়েছিল এমন কি ব্রুনোকে আগুনে পুড়িয়ে মারা হয়েছিলো। ধর্ম অবমাননা কিভাবে?

বিজ্ঞানী কোপার্নিকাস প্রথম বলেছিলেন সূর্য স্থির পৃথিবী ঘুরে। এই বিষয় নিয়ে তিনি একটি বই লিখেছিলেন। ব্রুনো এই চিন্তা প্রচার করেছিলেন আর গ্যালিলিও টেলিস্কোপ আবিষ্কারের মাধ্যমে   প্রমান করে সারা পৃথিবীর সামনে উন্মোচন করেছিলেন যে পৃথিবী সূর্যকে কেন্দ্র করে ঘুরছে। এই ছিল অপরাধ। কেন না বাইবেলে লেখা ছিলোনা সূর্য স্থির পৃথিবীসহ অন্যান্য গ্রহ সূর্যকে কেন্দ্র করে ঘোরে। লেখা ছিলো নাকি উল্টো। পৃথিবী স্থির সূর্যসহ সবকিছু পৃথিবীকে কেন্দ্র করে ঘুরে।

বাবা বিজ্ঞানমনষ্ক হওয়ায় বিজ্ঞানের নানান বিষয়ে প্রায় মানুষের সঙ্গে আলাপ আলোচনা করতেন। বিজ্ঞান নিয়ে আলোচনা হচ্ছে বুঝতে পারলেই  পাশে গিয়ে দাঁড়াতাম সেই বয়সে বিজ্ঞানের আলোচনা ঠিক মতো ধরতে না পারলেও শুনতে ভালো লাগতো। কথা প্রসঙ্গে আলোচনা করছিলেন সূর্য ঘুরে না-কি পৃথিবী। বাবার গল্পসঙ্গী লোকটা বলল, যদি পৃথিবী ঘুরে তাহলে আমাদের মাথা ঘুরছে না কেন বা আমরা  নিচে পরে যাচ্ছি না কেন? উত্তর দেওয়ার জন্য বাবা হাতে একটা বল নিলেন আর মাটি থেকে তুলে ছোট্টো একটা পিঁপড়া বলের উপর ছেড়ে দিয়ে বল আস্তে আস্তে ঘুরাতে থাকলেন এবং উত্তর বুঝাতে থাকলেন।

বিজ্ঞান বিষয়টি এমনই।  পরিক্ষিত প্রমান কখনো মিথ্যা বা ভুল হয় না। যে শিক্ষক বিজ্ঞান পড়াবেন তার যদি ভুলও হয়ে থাকে তাহলে সেটা পরিক্ষা নিরীক্ষা করার ব্যবস্থা করা হোক। গ্রেপ্তার কেন?

একজন বিজ্ঞান শিক্ষক ক্লাসে বিজ্ঞান পড়াবেন, এটাই স্বাভাবিক বিষয়। জীবন ও জগতের নিয়ম জানা ও শেখানো বিজ্ঞান শিক্ষকের কাজ। বিজ্ঞান শিক্ষার প্রসারের মধ্য দিয়েই যুক্তিবাদী মন গড়ে তুলে মানুষের মধ্যে সাম্প্রদায়িক-কুপমণ্ডক ধ্যান ধারণার অবসান ঘটানো সম্ভব। কেবলমাত্র এভাবেই শিক্ষার্থীদের মধ্যে সত্যানুসন্ধানী মন এবং যুক্তি গ্রহণ ও ভুল চিন্তা বর্জন করে আধুনিক মনন গড়ে তোলা যেতে পারে। কিন্তু আমাদের বর্তমান শিক্ষা ব্যবস্থা মোটেও সেই উদ্দেশ্যে পরিচালিত হচ্ছে না। ক্রমেই পাঠ্যপুস্তকের সাম্প্রদায়িকীকরণ হচ্ছে, বাদ দেওয়া হচ্ছে অসাম্প্রদায়িক চেতনাসম্পন্ন সকল লেখকের লেখা। তারই ফলাফল আজ আমরা দেখতে পাচ্ছি। শুধুমাত্র বিজ্ঞানের নানা বিষয় খোলা মনে পড়ানোর জন্য একজন বিজ্ঞান শিক্ষককে গ্রেফতার করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এটা বাংলাদেশে বিজ্ঞান শিক্ষা ও বিজ্ঞানমনস্ক মানুষ গড়ে তোলার পথে একটি অশনী সংকেত।

 

মুন্সিগঞ্জে বিজ্ঞান শিক্ষক ও ছাত্রদের মাঝে হওয়া কথোপকথন মনোযোগসহকারে লক্ষ্য করে দেখবেন, বিজ্ঞান শিক্ষক হৃদয় চন্দ্র মন্ডল নতুন কিছু বলেননি। বিজ্ঞান ও ধর্ম সম্পর্কে খুব সাধারণ ও মৌলিক কথা এগুলো। আমরা জানি এসব এবং প্রায়শ বলি। এসব জেনেও  মানুষের ধর্ম পালন করতে কোনো অসুবিধা হয় না। ধর্ম ও বিজ্ঞান বিষয়ে এর চেয়ে গুরতর বলে গেছেন দার্শনিক আরজ আলী মাতুব্বর। তাকে আমরা এখন গুরুত্বসহকারে পাঠ করি। কারণ কি? কারণ ধর্ম চলে বিশ্বাসে আর বিজ্ঞান চলে তর্ক, যুক্তি, প্রমাণে।

 

বিজ্ঞান শিক্ষার প্রসারের পরিবর্তে বিজ্ঞান শিক্ষকের উপর যে পরিকল্পিত আক্রমণ নামিয়ে আনা হচ্ছে আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থার মাধ্যমে, সর্বপরি রাষ্ট্রব্যবস্থার মাধ্যমে, তার বিরুদ্ধে অসাম্প্রদায়িক ও বিজ্ঞানমনস্ক সকল মহলকে সরব অবস্থান নেওয়ার আহ্বান।

 

 

 

 

 

জনপ্রিয় সংবাদ

জেলা পরিষদের সদস্য ও বাইশারীর কৃতি সন্তানদের গণসংবর্ধনা

বিজ্ঞান শিক্ষক কারাগারে কেন?

আপডেট সময় ০১:৪৭:৩৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৭ এপ্রিল ২০২২

 

 

লেখকঃ জাফর হোসেন জাকির শিক্ষার্থী, গণিত বিভাগ, নীলফামারী সরকারি কলেজ ও কলাম লেখক

আমরা পৃথিবীতে বাস করি। প্রশ্ন হচ্ছে পৃথিবী কি? পৃথিবী হলো সৌরজগতের সদস্য। সৌরজগত আবার কি? পৃথিবী যেমন একটি গ্রহ এইরকম আটটি গ্রহ নিয়ে সৌরজগতের পরিবার। সেগুলো হচ্ছে-বুধ, শুক্র, পৃথিবী, মঙ্গল, বৃহস্পতি, শনি, ইউরেনাস ও নেপচুন।এসব গ্রহের মাঝখানে সূর্যের অবস্থান। সূর্য কি? সূর্য একটি নক্ষত্র। সূর্যের নিজস্ব আলো আছে। যেখানে আলো সেখানে তাপও বিদ্যমান। সূর্যের আলোর জন্য পৃথিবীসহ অন্যান্য গ্রহগুলো আলোকিত। দিন রাত হয় কেন? আহ্নিক গতির কারণে। আহ্নিক গতি কি? পৃথিবী সূর্যকে কেন্দ্র করে নিজ অক্ষে ২৩ ঘণ্টা ৫৬ মিনিট ৪ সেকেন্ড বা ২৪ ঘণ্টা সময়ে অনবরত পশ্চিম থেকে পূর্ব দিকে আবর্তন করছে।

 

 

এই সময়কে সৌরদিন এবং আবর্তনকে আহ্নিক গতি বা দৈনিক গতি বলে। আহ্নিক গতির সংজ্ঞা থেকে পরিষ্কার সূর্য নয় পৃথিবী ঘুরে অর্থাৎ পৃথিবীর সারাক্ষণ ঘূর্ণয়মান। ফলে এখন যদি যে কাউকে জিজ্ঞেস করা হয় পৃথিবী ঘুরে না-কি সূর্য? নির্ভাবনায় উত্তর আসবে সূর্য। ভাবনামুক্ত উত্তর কি একদিনে এবং এমনি এমনি প্রতিষ্ঠিত হয়েছে? না হয়নি। প্রতিষ্ঠিত হয়ে সঠিক যুক্তির পরেও মধ্যযুগীয় নির্যাতন, গ্রেপ্তার আর জীবনত্যাগের  মধ্যদিয়ে।  মুন্সীগঞ্জে বিজ্ঞান ক্লাস চলাকালে ধর্ম অবমানার অভিযোগের কারণে বিনোদপুর রাজকুমার উচ্চ বিদ্যালয়ের বিজ্ঞান শিক্ষক হৃদয় চন্দ্র মন্ডলকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

কোপার্নিকাস-জিওদার্নো ব্রুনো-গ্যালিলিও এই মহান বিজ্ঞানীদেরকে ধর্ম অবমাননা, বাইবেল অবমাননার দায়ে কারাভোগ করতে হয়েছিল এমন কি ব্রুনোকে আগুনে পুড়িয়ে মারা হয়েছিলো। ধর্ম অবমাননা কিভাবে?

বিজ্ঞানী কোপার্নিকাস প্রথম বলেছিলেন সূর্য স্থির পৃথিবী ঘুরে। এই বিষয় নিয়ে তিনি একটি বই লিখেছিলেন। ব্রুনো এই চিন্তা প্রচার করেছিলেন আর গ্যালিলিও টেলিস্কোপ আবিষ্কারের মাধ্যমে   প্রমান করে সারা পৃথিবীর সামনে উন্মোচন করেছিলেন যে পৃথিবী সূর্যকে কেন্দ্র করে ঘুরছে। এই ছিল অপরাধ। কেন না বাইবেলে লেখা ছিলোনা সূর্য স্থির পৃথিবীসহ অন্যান্য গ্রহ সূর্যকে কেন্দ্র করে ঘোরে। লেখা ছিলো নাকি উল্টো। পৃথিবী স্থির সূর্যসহ সবকিছু পৃথিবীকে কেন্দ্র করে ঘুরে।

বাবা বিজ্ঞানমনষ্ক হওয়ায় বিজ্ঞানের নানান বিষয়ে প্রায় মানুষের সঙ্গে আলাপ আলোচনা করতেন। বিজ্ঞান নিয়ে আলোচনা হচ্ছে বুঝতে পারলেই  পাশে গিয়ে দাঁড়াতাম সেই বয়সে বিজ্ঞানের আলোচনা ঠিক মতো ধরতে না পারলেও শুনতে ভালো লাগতো। কথা প্রসঙ্গে আলোচনা করছিলেন সূর্য ঘুরে না-কি পৃথিবী। বাবার গল্পসঙ্গী লোকটা বলল, যদি পৃথিবী ঘুরে তাহলে আমাদের মাথা ঘুরছে না কেন বা আমরা  নিচে পরে যাচ্ছি না কেন? উত্তর দেওয়ার জন্য বাবা হাতে একটা বল নিলেন আর মাটি থেকে তুলে ছোট্টো একটা পিঁপড়া বলের উপর ছেড়ে দিয়ে বল আস্তে আস্তে ঘুরাতে থাকলেন এবং উত্তর বুঝাতে থাকলেন।

বিজ্ঞান বিষয়টি এমনই।  পরিক্ষিত প্রমান কখনো মিথ্যা বা ভুল হয় না। যে শিক্ষক বিজ্ঞান পড়াবেন তার যদি ভুলও হয়ে থাকে তাহলে সেটা পরিক্ষা নিরীক্ষা করার ব্যবস্থা করা হোক। গ্রেপ্তার কেন?

একজন বিজ্ঞান শিক্ষক ক্লাসে বিজ্ঞান পড়াবেন, এটাই স্বাভাবিক বিষয়। জীবন ও জগতের নিয়ম জানা ও শেখানো বিজ্ঞান শিক্ষকের কাজ। বিজ্ঞান শিক্ষার প্রসারের মধ্য দিয়েই যুক্তিবাদী মন গড়ে তুলে মানুষের মধ্যে সাম্প্রদায়িক-কুপমণ্ডক ধ্যান ধারণার অবসান ঘটানো সম্ভব। কেবলমাত্র এভাবেই শিক্ষার্থীদের মধ্যে সত্যানুসন্ধানী মন এবং যুক্তি গ্রহণ ও ভুল চিন্তা বর্জন করে আধুনিক মনন গড়ে তোলা যেতে পারে। কিন্তু আমাদের বর্তমান শিক্ষা ব্যবস্থা মোটেও সেই উদ্দেশ্যে পরিচালিত হচ্ছে না। ক্রমেই পাঠ্যপুস্তকের সাম্প্রদায়িকীকরণ হচ্ছে, বাদ দেওয়া হচ্ছে অসাম্প্রদায়িক চেতনাসম্পন্ন সকল লেখকের লেখা। তারই ফলাফল আজ আমরা দেখতে পাচ্ছি। শুধুমাত্র বিজ্ঞানের নানা বিষয় খোলা মনে পড়ানোর জন্য একজন বিজ্ঞান শিক্ষককে গ্রেফতার করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এটা বাংলাদেশে বিজ্ঞান শিক্ষা ও বিজ্ঞানমনস্ক মানুষ গড়ে তোলার পথে একটি অশনী সংকেত।

 

মুন্সিগঞ্জে বিজ্ঞান শিক্ষক ও ছাত্রদের মাঝে হওয়া কথোপকথন মনোযোগসহকারে লক্ষ্য করে দেখবেন, বিজ্ঞান শিক্ষক হৃদয় চন্দ্র মন্ডল নতুন কিছু বলেননি। বিজ্ঞান ও ধর্ম সম্পর্কে খুব সাধারণ ও মৌলিক কথা এগুলো। আমরা জানি এসব এবং প্রায়শ বলি। এসব জেনেও  মানুষের ধর্ম পালন করতে কোনো অসুবিধা হয় না। ধর্ম ও বিজ্ঞান বিষয়ে এর চেয়ে গুরতর বলে গেছেন দার্শনিক আরজ আলী মাতুব্বর। তাকে আমরা এখন গুরুত্বসহকারে পাঠ করি। কারণ কি? কারণ ধর্ম চলে বিশ্বাসে আর বিজ্ঞান চলে তর্ক, যুক্তি, প্রমাণে।

 

বিজ্ঞান শিক্ষার প্রসারের পরিবর্তে বিজ্ঞান শিক্ষকের উপর যে পরিকল্পিত আক্রমণ নামিয়ে আনা হচ্ছে আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থার মাধ্যমে, সর্বপরি রাষ্ট্রব্যবস্থার মাধ্যমে, তার বিরুদ্ধে অসাম্প্রদায়িক ও বিজ্ঞানমনস্ক সকল মহলকে সরব অবস্থান নেওয়ার আহ্বান।