মোঃ শহিদুল ইসলাম, টাঙ্গাইল জেলা প্রতিনিধিঃ
জন্মের পর থেকেই দুই বোনের একসঙ্গে বেড়া ওঠা। পড়ালেখায়ও সমান মেধাবী দু’জন। প্রাথমিক থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পর্যন্ত পরীক্ষায় প্রায় সমান নম্বর পেয়েছেন। সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ে গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষায়ও কাছাকাছি নম্বর পেয়ে টাঙ্গাইলের মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (মাভাবিপ্রবি) অর্থনীতি বিভাগে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন প্রিয় ও স্বপ্ন নামের দুই যমজ বোন।
টাঙ্গাইল পৌরসভার আকুরটাকুর পাড়ার ঠিকাদার বাবা এনামুল হক তালুকদার ও গৃহিণী মা আফরিনা বেগম দম্পতির মেয়ে ইসরাত জাহান প্রিয় ও নুসরাত জাহান স্বপ্ন। ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষে গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষায় প্রিয় ৪৩ এবং স্বপ্ন ৪২.৫ নম্বর পান।
জানা গেছে, এনামুল-আফরিনা দম্পতির ঘরে ২০০২ সালের ২১ জুলাই জন্ম নেয় যমজ সন্তান ইসরাত জাহান প্রিয় ও নুসরাত জাহান স্বপ্ন। ২০১৬ সালে বিন্দুবাসিনী সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞান বিভাগে দু’জনে জিপিএ-৫ পেয়ে এসএসসি এবং ২০১৮ সালে কুমুদিনী সরকারি কলেজের বিজ্ঞান বিভাগ থেকে এইচএসসি পরীক্ষায় প্রিয় জিপিএ-৪.২৫ ও স্বপ্ন ৪.১৭ পেয়ে উত্তীর্ণ হন।
জন্মের সময় ও চেহারায় মিল থাকা এবং স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ফলাফলে মিল থাকায় নিজেরাও অবাক বলে জানান প্রিয় ও স্বপ্ন।
ইসরাত জাহান প্রিয় বলেন, দুই বোনের একসঙ্গে এক জায়গায় পড়ার সুযোগ হয়েছে, এতে বাবা-মা বেশি খুশি হয়েছেন। তারা এমনটা চাইতেন সব সময়। ছোটবেলা থেকেই প্রায় একই রকমভাবে বড় হয়েছি। মাঝেমধ্যে ঝগড়া হলেও পরে মিলে গেছি তাড়াতাড়ি।
নুসরাত জাহান স্বপ্ন বলেন, দুই বোনের স্কুল, কলেজ এমনকি বিশ্ববিদ্যালয় এক হওয়াটা খুব স্বাভাবিক মনে হলেও একই বিশ্ববিদ্যালয়ের একই বিভাগে দুই বোনের চান্স হবে, তা কখনো ভাবিনি। এই বিষয়টা আমাদের কাছেও অবিশ্বাস্য মনে হয়। প্রয়োজনীয় সবকিছুই আমাদের দুই বোনের একই হয়। সর্বশেষ বিশ্ববিদ্যালয় ও বিভাগটিও একই হলো। একই বিশ্ববিদ্যালয়ের একই বিভাগে চান্স পাওয়ায় আমরা ভীষণ খুশি।
মা আফরিনা বেগম বলেন, আমাদের যমজ দুই মেয়ে স্কুল, কলেজের পর এবার একই বিশ্ববিদ্যালয়ের একই বিভাগে চান্স পেয়েছে, এতে আমি ভীষণ খুশি হয়েছি। তারা ছোটবেলা থেকে খুবই মেধাবী ছিল। আশা রাখি সামনের দিনে তারা একসঙ্গে সফল হবে।
মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের চেয়ারম্যান ড. মোঃ নাজমুস সাদেকীন বলেন, যমজ দুই বোন কাছাকাছি ফল পেয়ে একই বিভাগে ভর্তি হয়েছে। এটা আনন্দের বিষয়, খুশির খবর। এর আগেও বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগে যমজ দু’জনের ভর্তি হওয়ার ঘটনা ছিল। তবে একসঙ্গে একই বিভাগে এত মিল নিয়ে যমজ বোনের ভর্তি হওয়াটা আনন্দের খবর। তাদের সফলতা কামনা করি।