মো. আজিজার রহমান, খানসামা (দিনাজপুর) প্রতিনিধি: দিনাজপুরের খানসামায় চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র (প্রেসক্রিপশন) অনুযায়ী মাকে দেওয়া ইনজেকশন নবজাতকের শরীরে পুশ করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। মমতাজ (প্রাঃ) ক্লিনিক এন্ড কনসালটেন্ট বিরুদ্ধে।
জানা যায়, উপজেলার আঙ্গারপাড়া ইউনিয়নের ছাতিয়নগর গ্রামের অমল সরকারের স্ত্রী শিউলী সরকার গত বুধবার (৩০ অক্টোবর) সন্ধ্যা ৫ টা ৪৫ মিনিটে উপজেলার পাকেরহাট সরকারী কলেজের উত্তরে সবুজবাগ এলাকায় মমতাজ (প্রাইভেট) ক্লিনিক ও কনসালটেন্ট সেন্টারে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে ছেলে সন্তান প্রসব করেন।
চিকিৎসক প্রসূতিকে দেওয়া ব্যবস্থাপত্রে বিভিন্ন ওষুধের পাশাপাশি ইনজেকশন লিখে দেন। বৃহস্পতিবার (৩১ অক্টোবর) রাত ১১ টা ৪০ মিনিটে ওই হাসপাতালের নার্স সুমনা একটি ইনজেকশন মায়ের বদলে নবজাতকের শরীরে পুশ করেন।
কিছুক্ষণের মধ্যে অর্থাৎ শুক্রবার (১ নভেম্বর) ভোর ৫ টার দিকে শিশুটির শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়। পরে তাকে পার্শ্ববর্তী নীলফামারী ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক অবস্থা অবনতি দেখে শিশুটিকে আইসিইউতে রাখে। এরপর শিশুটির অবস্থার আরো অবনতি হলে রংপুরের প্রাইম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক জানান শিশুটির অবস্থা গুরুতর।
নবজাতকের বাবা অমল সরকার জানান, আমি তাঁদেরকে বললাম আমার বাচ্চা সুস্থ আছে। আমি কেন ইনজেকশন দিব? তারা বলে, এই ইনজেকশন না দিলে বাচ্চা চাকুলা, রক্তশূন্যসহ অনেক ধরনের কথা বলছে। তা বলার বাইরে। বাবা হয়ে এসব শুনতে অনেক খারাপ লাগল।
পরবর্তীতে আমাদের অভিভাবকদের ভুলভাল বুঝিয়ে বাধ্য হয়ে ওই ইনজেকশন নীলফামারী থেকে ৩৫০০ টাকা দিয়ে নিয়ে আসি। এরপর আমার স্ত্রীর বদলে আমার সন্তানকে ইনজেকশন দেয়।
মমতাজ (প্রাইভেট) ক্লিনিক ও কনসালটেন্ট সেন্টারের স্বত্বাধিকারী মোছাব্বের হোসেন সবুজ বিষয়টি ভুল হয়েছে বলে স্বীকার করেন।
তবে ওই নবজাতক এখন ভালো আছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, তার দেখভাল করার সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। অভিযুক্ত নার্সের বিরুদ্ধে হাসপাতালের পক্ষ থেকে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. তাজ উদ্দিন বলেন, বিষয়টি শুনেছি। খুবই দুঃখজনক ঘটনা। আমরা নবজাতকের সুস্থতা কামনা করি। ঘটনা তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
উল্লেখ্য, অনিবন্ধিত ও অব্যবস্থাপনায় ক্লিনিক পরিচালনা করার অপরাধে এর আগেও জরিমানা করা হয় প্রতিষ্ঠানটিকে।