লিটন পাঠান, হবিগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি:
হবিগঞ্জের বাহুবলে পান চাষ করে জীবিকা নির্বাহ করছেন অর্ধ শতাধিক পরিববার। সংসারে খরচ যোগাতে অনেক পরিবার শত বছর ধরে এই পেশার সাথে জড়িত রয়েছেন। তবে বাজারে পান চাষের উপকরণের দাম বাড়ায় অনেক চাষিরা এবার লোকসানে পড়েছেন। এতে আগ্রহ হারাচ্ছেন পান অনেকেই।
সরেজমিনে বাহুবলের নন্দনপুর, ভাতকাটিয়া, ফরিদপুর, বাড়ি গাও, বরিকান্দি ও চৈতনপুরসহ কয়েকটি গ্রাম ঘুরে দেখা যায়, চারদিকে শুধু পানের বরজ। খড় দিয়ে মোড়ানো এসব বরজে প্রবেশ করলে দেখা যায় এ যেন সবুজের সমারোহ। অন্যদিকে, পান পরিচর্যায় ব্যস্ত চাষিরা। বাঁশ ও কাশিয়া দিয়ে পড়ে যাওয়ার পানের গাছ বাঁধার কাজ করছেন। আবার অনেকেই নতুন বরজের খৈল ব্যবহার ও আগাছা পরিস্কার করছেন চাষিদের সাথে আলাপ করে জানা যায়।
কেউ শত বছর, আবার কেউ কেউ অর্ধশত বছর ধরে বাড়ির পাশে তৈরী করে আসছেন পানের বরজ। তারা পান চাষ করে জীবিকা নির্বাহ করছেন যুগের পর যুগ। স্থানীয় হাট বাজারসহ জেলার বিভিন্ন এলাকায় প্রতি সপ্তাহে দুই পান সরবরাহ করেন তারা আর এসব পান বিক্রির উপার্জিত অর্থ দিয়ে চলে তাদের সংসার। তবে স¤প্রতি বাজারে বেড়েছে উপকরণের দাম। বাঁশ, কাশিয়া ও খৈলের দাম বৃদ্ধির কারনে পান চাষে দেখা দিয়েছে বাড়তি খরচ। আয়ের পরিবর্তে অনেক সময় দেখা দেয় লোকসান। যে কারনে পান চাষে আগ্রহ হারাচ্ছেন বলেও জানান পান চাষিরা।
ফরিদপুর গ্রামের নলীনি কান্ত দত্ত বলেন, ১ বিঘা জমিতে ২টি পানের বরজ তৈরী করেছি। আমাদের পূর্ব পুরুষ থেকে প্রায় ১ বছর ধরে এই পেশায় জড়িত আমরা।
বাজারে পান বিক্রি করে আমাদের পারিবারিক খরচ যোগান দিয়ে থাকি বাড়ি গাও গ্রামের মর্তুজ আলী বলেন, আমার ২ বিঘা জমিতে ৩টি পানের বরজ রয়েছে আমি এ গুলোতে প্রতিদিন কাজ করি। মাঝে মধ্যে শ্রমিক দিয়ে করাতে হয়। আগের তুলনায় পান চাষে খরচে বেড়েছে তাই তেমন লাভবান হয়না।
যমুনাবাদের আজম আলী বলেন, সপ্তাহে দুই দিন বাজারে পান বিক্রি করা হয়। এতে যে টাকা আসে সংসারের খরচ বহন করা যায়। বাশঁ ও খৈলের দাম বাড়ায় এখন খরচ বেশি হয়। এতে অনেকেই এখন পান চাষ করছেন না। তবে আমি এ পেশাটি ধরে রাখার চেষ্টা করছি
জেলা কৃষি সম্প্রসার অধিদপ্তরের প্রশিক্ষন কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোঃ আশেক পারভেজ জানান, অন্যান্য ফসল আবাদের তুলনায় পান চাষ অনেকটাই লাভজনক। কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে চাষিদের উৎসাহ ও আর্থিক সহযোগিতা দেয়া হয়।