নোয়াখালী প্রতিনিধি:
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নোয়াখালী-৪ (সদর-সুবর্ণচর) আসনে জাতীয় নেতা আবদুল মালেক উকিলের ভাতুষ্পুত্র জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহসভাপতি ও সদর উপজেলা পরিষদের সাবেক দুইবারের চেয়ারম্যান এডভোকেট শিহাব উদ্দিন শাহিন আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী হিসেবে জেলার সুবর্ণচরে গণসংযোগ শুরু করেছেন। গণসংযোগের প্রথম দিনেই নোয়াখালী-৪ আসনে দলীয় প্রার্থীর পরিবর্তন চেয়ে শাহিনের পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন নেতাকর্মীরা।
সোমবার (০৮ মে) বিকালে উপজেলার চর জুবলী ইউনিয়নের হারিছ চৌধুরী বাজার, চর মহিন উদ্দিন, পন্ডিতের হাট, চর জিয়া উদ্দিন, সুইজ গেট, পাঙ্খার বাজার, একরাম নগর, সমিতির বাজারসহ গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় গণসংযোগ করেন শিহাব উদ্দিন শাহিন।
এসময় শিহাব উদ্দিন শাহিন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাহসী নেতৃত্বের গুণাবলী তুলে ধরে বলেন, একসময় বাংলাদেশ তলাবিহীন ঝুড়ি হিসেবে আখ্যায়িত ছিলো। বর্তমানে জাতির পিতার সুযোগ্য কন্যা আমাদের মাতৃতুল্য নেত্রী শেখ হাসিনার সাহসী নেতৃত্বে স্বল্পোন্নত দেশ থেকে এখন উন্নয়নশীল দেশের কাতারে ওঠে এসেছে বাংলাদেশ। আজকের বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে জননেত্রী শেখ হাসিনা বিশ্ব দরবারেও প্রশংসিত।
শাহিন বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পর বাংলাদেশের অনেক প্রধানমন্ত্রীকে যুক্তরাজ্যসহ বিশে^র ক্ষমতাধর দেশের প্রধানমন্ত্রীরা পাত্তাও দিতেন না। জননেত্রী শেখ হাসিনা সরকার গঠনের পর বাংলাদেশের গণতন্ত্র সুমোন্নত রেখে দেশের সার্বিক উন্নয়ন সমানতালে এগিয়ে নিচ্ছেন। তাঁর নেতৃত্ব বিশ্ব নেতাদের কাছে গ্রহণযোগ্য বলেই যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বলেছেন- আপনি আমাদের জন্য বড় অনুপ্রেরণা। এটি আমাদের গর্বের বিষয়। আমরা আশাবাদি আমাদের নেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বেই গড়ে ওঠবে আগামীর স্মার্ট বাংলাদেশ।
বর্তমান সংসদ সদস্য একরামুল করিম চৌধুরীর কঠোর সমালোচনা করে শিহাব উদ্দিন শাহিন বলেন, নোয়াখালী-৪ আসনে এখন যিনি এমপি হিসেবে কাজ করছেন, তিনি আমাদের দলের মনোনীত এমপি হলেও গত ১৪ বছরে এখানে দলের ত্যাগী নেতাকর্মীরা তাঁর কাছে অবমূল্যায়িত হয়েছেন। ব্যক্তি স্বার্থে তিনি নিজস্ব বলয় তৈরীতে অনুপ্রেবেশকারীদের অর্থে-বিত্তে বলিয়ান করেছেন। তাঁর বলয়ের বাহিরে গিয়ে যারাই দলের হয়ে কথা বলেছেন, তিনি তাদের নিপিড়নে সর্বোচ্চ শক্তি প্রয়োগ করেছেন। গত সপ্তাহে এই সুবর্ণচরের যুবলীগ কর্মী ইমাম হোসেন তাঁর অপরাজনীতির বিরুদ্ধে কথা বলায় তাকে পুলিশ দিয়ে আটক করিয়েছেন এই সাংসদ। একরামুল করিম চৌধুরী গত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে গিয়ে আনারস প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থীর পক্ষে প্রকাশ্যে ভোট করেছেন। শুধু তাই নয়, একরামুল করিম চৌধুরী আমাদের নেত্রী শেখ হাসিনা ও প্রিয় নেতা ওবায়দুল কাদেরকে পিছ কাটিয়ে নিজে ৩০০ আসনের মধ্যে সবচে জনপ্রিয় এমপি দাবি করেছেন। তাঁর এসব অপরাজনীতির কারণে আজকে দলীয় নেতাকর্মীরা তার বিরুদ্ধে ফুঁষে ওঠেছে। তারা এই আসনে বহিরাগত ব্যক্তির পরিবর্তন চেয়ে সদর-সুবর্ণচরের স্থানীয় নেতৃত্ব থেকে মনোনয়ন দাবি করছেন।
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নোয়াখালী-৪ আসনে নিজেকে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী ঘোষণা দিয়ে এডভোকেট শিহাব উদ্দিন শাহীন বলেন, আমি আমার মাতৃতুল্য নেত্রী শেখ হাসিনা এবং নোয়াখালীর ঠিকানা আমাদের অভিভাবক ওবায়দুল কাদেরের কাছে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন চাইব। আমাকে যদি দলীয় মনোনয়ন দেয়া হয়, তাহলে অতীতের সকল রেকর্ড ভেঙে এই আসনে বিপুল ভোটে নৌকার বিজয় সুনিশ্চিত হবে। আর যদি কোন কারণে আমাকে মনোনয়ন না দিয়ে অন্য কাউকে মনোনয়ন দেয়া হয়, তাহলেও আমি দলের পক্ষে সবাইকে নিয়ে কাজ করবো।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ একটি বৃহৎ-প্রাচীন রাজনৈতিক দল। এখানে এমপি হওয়ার মতো অনেক যোগ্য লোক রয়েছে। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাতীয় সংসদে জনগণের পক্ষে কথা বলতে পারবে এমন যোগ্যতা সম্পন্ন ব্যক্তিকে মনোনয়ন দিলে দল এবং দেশের মানুষের পাশাপাশি তৃণমূলের কর্মীরা মূল্যায়িত হবে।
গণসংযোগকালে এডভোকেট শিহাব উদ্দিন শাহিনের সঙ্গে সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুস জাহের, সুবর্ণচর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান ফরহাদ হোসেন বাহার চৌধুরী, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা গোলাম হোসেন বাবলু, সুবর্ণচর উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা ইকবাল মাহমুদ সোহেল, মাকসুদুর রহমান, সবুর খান, বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, যুবলীগ, ছাত্রলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতৃবৃন্দসহ কয়েক হাজার দলীয় নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।