প্রেস বিজ্ঞপ্তিঃ
ঢাকা জেলার সাভারে “জেনিথ ইসলামিক লাইফ ইন্সুরেন্স” নামক বীমা প্রতিষ্ঠানের আড়ালে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে চাকরি প্রদানের নামে প্রতারণার মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎকারী প্রতারক চক্রের ০৪ জন মূলহোতাসহ ১১ জনকে গ্রেফতার করেছে র্যাব-৪।
এলিট ফোর্স হিসেবে র্যাব আতœপ্রকাশের সূচনালগ্ন থেকেই আইনের শাসন সমুন্নত রেখে দেশের সকল নাগরিকের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার লক্ষ্যে অপরাধ চিহ্নিতকরণ, প্রতিরোধ, শান্তি ও জনশৃংখলা রক্ষায় কাজ করে আসছে।
সাম্প্রতিককালে প্রতারণার নতুন নতুন কৌশল ব্যবহার করে সাধারণ জনগনের কাছ থেকে প্রতারণার মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে এক শ্রেণীর প্রতারক চক্র। জঙ্গীবাদ, খুন, ধর্ষণ, নাশকতা এবং অন্যান্য অপরাধের পাশাপাশি সাম্প্রতিক এসব প্রতারক চক্রের সাথে সম্পৃক্ত অপরাধীদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় নিয়ে আসার জন্য র্যাব সদা তৎপর।
প্রাপ্ত সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে জানা যায় যে, “জেনিথ ইসলামী লাইফ ইন্সুরেন্স কোম্পানি” নামে একটি ভূয়া রেজিষ্ট্রেশনবিহীন আর্থিক কোম্পানী ব্যবসার আড়ালে বিভিন্ন ব্যক্তিকে কোম্পানিতে চাকুরী দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে।
এরই ধারাবাহিকতায় ০৬ নভেম্বর ২০২২ তারিখ গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র্যাব-৪ এর একটি অভিযানিক দল ঢাকা জেলার সাভার মডেল থানাধীন “জেনিথ ইসলামী লাইফ ইন্সুরেন্স লিমিটেড” এ অভিযান পরিচালনা করে ল্যাপটপ, রেজিস্টার, মোবাইল, সীম কার্ড, সীল, ভিজিটিং কার্ড, আইডি কার্ড ও অন্যান্য প্রতারণার সরঞ্জামাদিসহ প্রতারক চক্রের ০৪ জন মূলহোতাসহ প্রতারক চক্রের নিম্নোক্ত ১১ জন’কে গ্রেফতার করতে সমর্থ হয়ঃ (ক) মোঃ রবিউল আলম (৩৯), জেলা-যশোর। (খ) মোঃ মাহমুদুর হাসান (২১), জেলা-রংপুর। (গ) মোঃ নাঈম হোসেন (১৯), জেলা-সাতক্ষীরা। (ঘ) মোঃ আশ্রাফ আল মুন্না (২০), জেলা-কিশোরগঞ্জ। (ঙ) মিঠুন হাজং (২৫), জেলা-নেত্রকোনা। (চ) মোঃ আসাদ প্রামাণিক (২০), জেলা-পাবনা। (ছ) মোঃ আনিসুর রহমান (২১), জেলা-কুড়িগ্রাম। (জ) মোঃ সাগর সরকার (২১), জেলা-গাইবান্ধা। (ঝ) মোঃ আব্দুল হাকিম (২৪), জেলা-চাঁপাইনবাবগঞ্জ। (ঞ) জনি হোসেন (২১), জেলা-পাবনা। (ত) আলি আহম্মদ (২০), জেলা-ভোলা।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ধৃত আসামীরা এ ধরনের প্রতারণার কথা স্বীকার করে এবং চাকুরী প্রত্যাশী, বেকার, অসহায় ও নিরীহ লোকজনদের নিকট হতে চাকুরী দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে বিপুল পরিমান নগদ অর্থ প্রতারণামূলক ভাবে আত্মসাৎ করে আসছে।
প্রতারণার কৌশলঃ এই প্রতারক চক্র জেনিথ ইসলামী লাইফ ইন্সুরেন্স কোম্পানিতে বিভিন্ন পদে ফুল-টাইম, পার্ট-টাইম চাকুরীর বিজ্ঞাপন দিয়ে আসছে।
বিজ্ঞাপন দেখে চাকুরী প্রত্যাশী শতশত যুবক- যুবতী ও ছাত্র-ছাত্রীরা তাদের এমন বিজ্ঞাপন সরলমনে বিশ্বাস করে। প্রথমে চাকুরী প্রত্যাশীদের কাছ থেকে রেজিষ্টেশন ফি হিসেবে প্রত্যেকের কাছ থেকে ৫০০ টাকা করে নিতো।
পরে চাকুরীর নিশ্চয়তা ও মোটা অংকের বেতনের প্রলোভন দেখিয়ে ১০/২০ হাজার টাকা নিয়ে ইন্সুরেন্স কোম্পানিতে পলিসি খুলতে বাধ্য করতো। ইউনিট ম্যানেজার, ব্রাাঞ্চ ম্যানেজার, এ্যাসিস্ট্যান্ট ম্যানেজার প্রভৃতি পদে ১৮ হাজার ৫০০ হতে ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত বেতনের প্রলোভন দেখিয়ে ইন্সুরেন্স করাতে প্রলুব্ধ করত।
চাকুরী পাওয়ার পর মাসের পর মাস অফিসে আসা যাওয়া করে বেতন না পেয়ে প্রতারণার বিষয়টি বুঝতে পেরে অনেকে প্রদেয় টাকা ফেরত চাইলে তাদেরকে বিভিন্ন প্রকার ভয়-ভীতি, মারধর এমনকি প্রাণ নাশের হুমকি প্রদান করত।
উল্লেখ্য যে, এই প্রতারক চক্র এর আগেও প্রতারণার দায়ে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে একাধিকবার আটক হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে উক্ত প্রতারণার দায়ে ঢাকা জেলার বিভিন্ন থানায় একাধিক মামলা রয়েছে।
উল্লেখ্য যে, তারা তাদের ক্লাইন্টদের থেকে বীমা করার জন্য যে পরিমাণ টাকা নিতো সেই পরিমাণ টাকা তাদের বীমা একাউন্টে যোগ করত না বরং কোম্পানির লোকজন তা আত্মসাৎ করত।
জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃত আসামীরা উক্ত প্রতরণার সত্যতা স্বীকার করেছে এবং এ বিষয়ে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।
মোঃ জিয়াউর রহমান চৌধুরী
সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার
সহকারী পরিচালক (মিডিয়া অফিসার)
পক্ষে পরিচালক