প্রেস বিজ্ঞপ্তি
রাজধানীর উত্তরা এলাকায় চাঞ্চল্যকর কাভার্ডভ্যানের চাপায় ‘‘এক নারীসহ তিনজন মোটরসাইকেল আরোহী’’ হত্যাকান্ডের প্রধান অভিযুক্ত ঘাতক ড্রাইভার মোঃ বশির (২৬)’কে গ্রেফতার করেছে র্যাব-১।
র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে সবসময় বিভিন্ন ধরণের অপরাধীদের গ্রেফতারের ক্ষেত্রে অত্যন্ত অগ্রণী ভূমিকা পালন করে আসছে। র্যাবের সৃষ্টিকাল থেকে এ পর্যন্ত হত্যাকারী, অপহরণকারী, সন্ত্রাসী, এজাহারনামীয় আসামী, ছিনতাইকারী, চাঁদাবাজ, প্রতারকচক্র, ধর্ষণকারী, পর্ণোগ্রাফি বিস্তারকারী, চোরাকারবারীদের গ্রেফতার করে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। বিশেষত সাম্প্রতিক সময়ে অনেকগুলো ক্লুলেস ও চাঞ্চল্যকর হত্যা ঘটনার দ্রুততম সময়ে নিষ্পত্তি করে র্যাব সাধারণ জনগণের মনে আস্থা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে।
গত ১৪ এপ্রিল ২০২২ ইং তারিখ আনুমানিক ০৪০০ ঘটিকার সময় ভিকটিম এনামুল হক (৪৫), হনুফা (৪৫) এবং অনিক (১৮) রাজধানীর হাজারীবাগ থানাধীন রায়েরবাজার এলাকা হতে উত্তরা আসার সময় ঐদিনই আনুমানিক ০৫২০ ঘটিকায়, উত্তরা ০৩ নং সেক্টরস্থ রবীন্দ্র স্বরণী রোডের আমির কমপ্লেক্স এর উত্তর পাশে পাকা রাস্তার উপর পৌঁছালে পিছন দিক হতে আসা ঢাকা মেট্রো-ঠ-১৮-৯৫৯৩ কাভার্ডভ্যান ভিকটিম এনামুল হক (৪৫) এর বাইকের পিছনে স-জোরে ধাক্কা মারায় ভিকটিম এনামুল হক (৪৫), হনুফা (৪৫) ও অনিক (১৮) বাইক হতে ছিটকে সামনে পড়ে যায়। সেসময় বর্ণিত কাভার্ডভ্যানের চাকায় পৃষ্ট হয়ে ভিকটিম এনামুল হক (৪৫) ও হনুফা (৪৫) ঘটনাস্থলেই মৃত্যুবরণ করে। অপর ভিকটিম অনিক (১৮) গুরুত্বর আহত হওয়ায় তাকে প্রথমে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করে। পরবর্তীতে অনিক (১৮) ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করে।
উক্ত নির্মম হত্যাকান্ডের ঘটনাটি সারাদেশে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে এবং বিভিন্ন টেলিভিশন ও সংবাদ মাধ্যমে গুরুত্বের সাথে প্রচারিত হয়। বর্ণিত হত্যাকান্ডের প্রেক্ষিতে র্যাব-১ তাৎক্ষনিকভাবে মূলহত্যাকারীকে খুঁজে বের করে আইনের আওতায় নিয়ে আনতে দ্রুততার সাথে ছায়া তদন্ত শুরু করে এবং গোয়েন্দা নজরদারী বৃদ্ধি করে।
এরই ধারাবাহিকতায় গত ১৫ এপ্রিল ২০২২ ইং তারিখ আনুমানিক ০৪০০ ঘটিকায় র্যাব সদর দপ্তর গোয়েন্দা শাখার প্রত্যক্ষ সহযোগীতায় র্যাব-১ ও র্যাব-৮ এর একটি যৌথ আভিযানিক দল গোপন সংবাদের ভিত্তিতে ভোলা জেলার লালমোহন থানাধীন বালচুর এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে আসামী মোঃ বশির (২৫), পিতা- মোঃ নাছির, জেলা- ভোলা’কে গ্রেফতার করে। এসময় গ্রেফতারকৃত আসামীর নিকট হতে ০১ টি ড্রাইভিং লাইসেন্স, ০১ টি মোবাইল ফোন, নগদ ১৭৫০/- টাকা এবং ০১ টি ম্যানিব্যাগ উদ্ধার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ধৃত আসামী বর্ণিত ঘটনার সাথে সম্পৃক্ততা স্বীকার করে।
ধৃত আসামীকে আরো জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, ঘাতক ড্রাইভার মোঃ বশির এর ব্যবহৃত ড্রাইভিং লাইসেন্স হালকা যান (মোটরসাইকেল/প্রাইভেটকার) এর জন্য প্রযোজ্য, উপরন্তু ড্রাইভিং লাইসেন্সের মেয়াদ ২০২১ সালে শেষ হয়ে যায়। ভারী যানবাহনের লাইসেন্স ব্যতিত ধৃত আসামী মোঃ বশির বিগত ০৪ বছর যাবত কাভার্ডভ্যানটি চালনা করে আসছিল।
ধৃত আসামীর দেয়া তথ্যমতে জানা যায়, বর্ণিত কাভার্ডভ্যানটির মালিক মোঃ জাকির, জেলা- ভোলা তেজগাঁও ট্রাকস্ট্যান্ডের একজন দালাল। সে বিভিন্ন গাড়ীর কাগজ এবং ড্রাইভিং লাইসেন্স এর কাজ করিয়ে দেওয়ার জন্য সুপরিচিত। ঘটনার পর হতে মোঃ জাকির পলাতক রয়েছে।
গ্রেফতারকৃত আসামীর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন। স্বাক্ষরিত/- নোমান আহমদ সহকারী পুলিশ সুপার ০৩ বৈশাখ ১৪২৯ বঙ্গাব্দ। ১৬ এপ্রিল ২০২২ খ্রিঃ। সহকারী পরিচালক (অপস্ধসঢ়; অফিসার) অধিনায়কের পক্ষে মোবাঃ ০১৭৭৭৭১০১০৩।