হবিগঞ্জ জেলা স্টাফ রিপোর্টারঃ হবিগঞ্জের চুনারুঘাটে কিশোরীকে ফুসলিয়ে ৩ হাজার টাকায় বিক্রি করে দেওয়া হয়। পরে ওই কিশোরীকে (১৫) রাতভর গণধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। ধর্ষণের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে এক নারীসহ দুজনকে আটক করেছে পুলিশ।
শনিবার বিকালে ভিকটিম ওই কিশোরীকে চুনারুঘাট উপজেলার বাল্লা সীমান্তের দুধপাতিল গ্রাম থেকে উদ্ধার করে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
ভিকটিম, পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, উপজেলার ডেউয়াতলী গ্রামের তৌফিক মিয়ার স্ত্রী আয়েশা খাতুন (৪৮) ৩ হাজার টাকার চুক্তিতে আব্দুল হান্নানের নিকট বুঝিয়ে দেয় ওই কিশোরীকে। আব্দুল হান্নান তার পূর্ব পরিচিত দুধপাতিল কামরুলের বাড়িতে নিয়ে যায় তাকে।
দুধপাতিল থেকে স্থানীয় টমটমচালক আব্দুর রহমানের মাধ্যমে দুধপাতিল গ্রামের পূর্বদিকে ছড়ারপাড়ে নিয়ে কামরুল (২৫), আব্দুল হান্নান (৩২), আব্দুর রহমান (৪২), নাসিরসহ (২২), অজ্ঞাতনামা আরও দুইজন জোরপূর্বক গণধর্ষণ করে বলে ভিকটিম ও স্বজনরা জানান।
শুক্রবার সকালে স্থানীয় লোকজন কিশোরীকে কান্নাকাটি করতে দেখে পুলিশকে খবর দেন। খবর পেয়ে চুনারুঘাট থানা পুলিশ ভিকটিমকে উদ্ধার করে। এ ঘটনায় শুক্রবার রাতে কিশোরীর মা বাদী হয়ে কামরুলকে প্রধান আসামি করে চুনারুঘাট থানায় ৫ জনের নাম উল্লেখ করে থানায় মামলা দায়ের করেন।
রাতেই চুনারুঘাট থানার ওসি মো. আলী আশরাফের নেতৃত্বে পরিদর্শক (তদন্ত) চম্পক দামসহ একদল পুলিশ অভিযান চালিয়ে প্রধান অভিযুক্ত কামরুলকে গ্রেফতার করেন।
কামরুল উপজেলার দুধপাতিল এলাকার আব্দুস সামাদ ওরফে লুদাই মিয়ার ছেলে।
আসামি কামরুলের দেওয়া তথ্যমতে শনিবার সকালে পাচারকারী নারী আয়েশা খাতুনকে (৪৮) শায়েস্তাঞ্জের পুরানবাজার ভাড়াটিয়া বাসা থেকে গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করেন মামলার তদন্ত কারী কর্মকর্তা ইন্সপেক্টর তদন্ত চম্পক দাম।
দুপুরে হবিগঞ্জের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ফারুক আহমেদ এর আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি প্রদান করে প্রধান আসামি কামরুল। বিচারক তার জবানবন্দি রেকর্ড করে শনিবার বিকাল সাড়ে ৫টায় কামরুলকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
পরিদর্শক (তদন্ত) চম্পক দাম জানান, কিশোরীকে দলবেঁধে ধর্ষণের অভিযোগ পেয়ে পুলিশ ভিকটিমকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠায়। ধর্ষণে জড়িত থাকার অভিযোগে নারীসহ দুইজনকে আটক করা হয়েছে এবং আসামি কামরুল আদালতে জবানবন্দি দিয়েছে।
তিনি আরও বলেন, কিশোরী অভিমান করে বাড়ি থেকে বের হয়ে আশ্রয় নেয় আয়েশার কাছে। আয়েশা এ সুযোগে কিশোরীকে আটকে রেখে পতিতাবৃত্তিতে বাধ্য করায়। বেশ কিছু দিন ধরে আয়েশা শায়েস্তাগঞ্জ পুরান বাজার এলাকায় একটি ভাড়া বাসা করে কিশোরীকে কাজ দেয়ার কথা বলে কাজে না দিয়ে নিজ বাসায় রেখে পতিতাবৃত্তিতে বাধ্য করে। এমনকি বিভিন্ন স্থানে অর্থের বিনিময়ে কিশোরীকে রাতভর চুক্তিভিত্তিক বিক্রি করে অর্থ হাতিয়ে নেয়।
চম্পক দাম জানান, আয়েশার বিরুদ্ধে এলাকায় অনৈতিক কাজ করার নানা অভিযোগ রয়েছে। আয়েশা শায়েস্তাগঞ্জের পুরান বাজারে বাসা ভাড়া করে বিভিন্ন তরুণী ও কিশোরীদের দিয়ে তাদের সরলতার সুযোগ নিয়ে পতিতাবৃত্তি করে আসছে। আয়েশা উপজেলার ডেউয়াতলী এলাকার তৌফিক মিয়ার স্ত্রী।