ওসমানীগর প্রতিনিধি::
সিলেটের ওসমানীনগরে অনিয়মন্ত্রান্তিক ভাবে উপজেলা বিএনপির মনগড়া কমিটি গঠনের অভিযোগে অবশেষে আদালতে মামলা দায়ের করা হয়েছে। রবিবার সিলেট সিনিয়র সহকারী জজ বালাগঞ্জ আদালতে মামলাটি দায়ের করেন ওসমানীনগর উপজেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির সদস্য সিনিয়র সহসভাপতি প্রার্থী সৈয়দ এনামুল হক এনাম পীর। সিন্ডিকেটের মাধ্যমে গঠিত কমিটির অভিযোগে দায়েরকৃত মামলা আদালত আমলে নিয়ে সিলেট জেলা ও ওসমানীনগর উপজেলা বিএনপির ৯ নেতার বিরুদ্ধে সমন জারি করে করেছেন।
আদালত কর্তৃক সমনপ্রাপ্ত বিএনপি নেতা হলেন, সিলেট জেলা বিএনপির আহবায়ক কামরুল হুদা জায়গিদার, সাবেক সহ -সভাপতি ওসমানীনগর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ময়নূল হক চৌধুরী, জেলা বিএনপি নেতা ফখরুল ইসলাম ফারুক, উপজেলা বিএনপির আহবায়ক জরিদ আহমদ, অনিয়মে অভিযুক্ত ওসমানীনগর উপজেলা বিএনপির নবঘোষিত কমিটির সভাপতি দয়ামীর ইউপি চেয়ারম্যান এসটিএম ফখর উদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ মিসবাহ, সিনিয়র সহ-সভাপতি মোজাহিদুল ইসলাম, সহ-সম্পাদক কয়েছে চৌধুরী, সাংগঠনিক সম্পাদক রায়হান আহমদ।
এর আগে শনিবার দলের ত্যাগী নেতাদের কৌশলে বঞ্চিত করে ওসমানীনগর উপজেলা বিএনপির কাউন্সিল সম্পন্ন করে উপজেলা বিএনপির কমিটি গঠনের অভিযোগে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদি দল বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ও সিলেট বিভাগের দ্বায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় বিএনপির ভাইস পেসিডেন্ট ডাঃ এ জাহিদ হোসেন এর কাছেও লিখিত অভিযোগ দেয়া হয়।
মামলা ও দলীয় সূত্রে জানা গেছে, ব্যাক্তিগত স্বার্থ হাসিলের উদ্দেশ্যে দলের নীতি আদর্শ ভুলে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে মনগড়া দলীয় কার্যক্রম পরিচালনার পাশাপাশি উপজেলা বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনকে ধ্ধংস করার হীন উদ্দেশ্যে মেতে উঠেছেন কতিপয় বিএনপি নেতারা।
যার ধারাবাহিকতায় দীর্ঘ ছয় বছর পর গত ২৮ ফেব্রুয়ারী গোপন ভোটের মাধ্যমে উপজেলা বিএনপির কাউন্সিল সম্মন্ন করার জন্য পূর্ব থেকে সব রখমের প্রস্তুতি নেয়া হলেও সম্মেলনের দিন কতিপয় নেতাদের কুটকৌশলে গোপন ভোট না করে মনগড়াভাবে নিজ বলয়কে শক্তিশালী করতে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে পকেট কমিটি গঠনের চেষ্ঠায় গোপন ব্যালটে নির্বাচন না করে মৌখিকভাবে ভোট গ্রহণ করে ইচ্ছে মতো ফলাফল ঘোষণা করেন সংশ্লিষ্টরা।
বিষয়টি বিএনপি‘র দলীয় আদর্শ ও গঠনতন্ত্র পরিপন্থি হওয়ায় স্বচ্ছ ব্যালট পেপারের মাধ্যমে ভোটগ্রহণের দাবি জানালেও তা কর্নপাত না করে কতিপয় নেতারা প্রকাশ্যে ইন্দন জুগিয়ে ৪০ জন কাউন্সিলরের মৌখিক ভোট গ্রহণ করেন। তাদের নিজস্ব বলয়ের ব্যাক্তিবর্গদের সভাপতি সিনিয়র সহ-সভাপতি সাধারণ সম্পাদক, সহ সাধারণ সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদকের নাম ঘোষনা করেন। এমতাবস্থায় ভোটাররা সিনিয়র নেতৃবৃন্দ দ্বারা প্রভাবিত হওয়ার অভিযোগসহ স্বচ্চ প্রক্রিয়ায় কমিটি গঠনের দাবি জানিয়ে উপজেলার বিএনপির ত্যাগী নেতারা সম্মেলনস্থ ত্যাগ করে চলে আসেন।
উপজেলা বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের একাধিক নেতারা অভিযোগ করে বলেন, বিগত উপজেলা নির্বাচনে দলের মনোনিত হয়ে উপজেলা বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের অক্লান্ত প্ররিশ্রমে ময়নূলহক চৌধুরী উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে দলীয় কর্মকান্ড থেকে নিজেকে আড়াল রাখার পাশাপাশি বিএনপির তথা জিয়াউর রহমানের নীতি আদর্শ ভুলে তিনি হয়ে উঠেন দিনের আওয়ামী লীগ ও রাতের বিএনপি।
এ ক্ষেত্রে দিনের বেলা সরকারী বা সামাজিক অনুষ্টনের দোয়াই দিয়ে আওয়ামী লীগের সাথে আতাঁতের রাজনীতি চালিয়ে গেলেও রাতে ইলিয়াস পতœী লুনার সাথে যোগাযোগ করে বিএনপি বনে বিগত পাঁচ বছর কাঠিয়ে দিলেও আগামী উপজেলা নির্বাচনকে সামনে রেখে দলীয় সমর্থন পাওয়ার জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছেন। এ ক্ষেত্রে তাঁর নিজস্ব সিন্ডিকেট দিয়ে উপজেলা বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতা-কর্মীদের হুমকি-ধামকি অব্যাহত রাখছেন। নিজ বলয়কে শক্তিশালী করতে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে পকেট কমিটি গঠনে কলকাটি নাড়ছেন।
মমলার বাদি উপজেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির সদস্য সৈয়দ এনামুল হক পীর এনাম বলেন, বিএনপি’র গঠনতন্ত্র ভুলে নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ ও তালিকা প্রণয়ণ না করে উপজেলা বিএনপির কাউন্সিলে কতিপয় নেতৃবৃন্দরা সারি বেধে প্রকাশ্য টেবিলে বসে ভোটারদের প্রভাবিত করার মাধ্যমে নির্বাচনের নামে প্রহসন করেছেন। উপজেলা চেয়ারম্যান ময়নূল হক চৌধুরীসহ গোটিকয়েক নেতাদের নিজ স্বার্থ হাছিলে দলের গঠনতন্তের বৃদ্ধঙ্গুলি দেখিয়ে অবৈধ আহবায়ক কমিটির মাধ্যমে পকেট কমিটি ঘোষনা দিয়ে বিএনপির ঘাটি খ্যাত ওসমানীনগরে বিএনপিকে ধংস্স করার পায়তারা করেছেন।
ঘোষিত কমিটি বাতিলসহ জড়িত কতিপয় ব্যাক্তিত্বে বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য উপজেলা বিএনপির পক্ষ থেকে দলের হাইকমান্ডে আবেদন নিবেদন করে কোনা সূরাহ না পাওয়ায় অবশেষে শহিদ জিয়ার আদর্শ ও নীতির সুষ্ট বাস্থবায়নের জন্য আদালতের সরনাপূর্ন হয়েছি। আদালতে ন্যায় বিচারের ব্যাপারে আশাবাদি তিনি।
মামলা বাদি পক্ষের আইনজীবি মাসউদ আহমদ চৌধুরী মহসির আদালতে মামলা দায়েরের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে বিবাদিদের বিরুদ্ধে সমন জারি করেছেন। ঘোষিত কমিটির দ্বায়িত্বপ্রাপ্তদের দলীয় সকল কার্যক্রম স্থগিতা আদেশের দায়েরকৃত পৃথক আবেদনটি শুনানির জন্য রাখা হয়েছে।