![](https://banglaralonews.com/wp-content/plugins/print-bangla-news/assest/img/print-news.png)
কুড়িগ্রাম জেলা প্রতিনিধি:
কুড়িগ্রামের উলিপুরে চিকিৎসাধীন এক শিক্ষার্থী হাসপাতাল থেকে গিয়ে দাখিল পরীক্ষায় অংশ নিয়ে হাসপাতালে ফিরে এসে মৃত্যুর কোলে ঢোলে পড়লেন। ঘটনাটি ঘটেছে, বুধবার (২৪ মে) দুপুরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। শিক্ষার্থীর মৃত্যুর ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
নিহতের স্বজন সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ধামশ্রেনী ইউনিয়নের বড়াইবাড়ি এলাকার আনিছুর রহমানের ছেলে আরাফাত হোসেন (১৭) চলতি দাখিল পরীক্ষায় অংশগ্রহন করেন। বুধবার সকাল থেকে আরাফাত অসুস্থ্যবোধ করলে তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। একইদিনে ওই শিক্ষার্থীর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ে পরীক্ষা থাকায় তার কেন্দ্র উলিপুর বহুমূখী আলিম মাদ্রাসায় অসুস্থ্য অবস্থায় পরীক্ষায় অংশ নেন। পরীক্ষা শেষে পুনরায় তাকে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসলে তার অবস্থার অবনতি হয়ে প্রচন্ড বমি শুরু হয় এবং এক পর্যায়ে তার মৃত্যু হয়। নিহত আরাফাত হোসেন যাদুপোদ্দার ইসলামিয়া দাখিল মাদ্রাসার মানবিক বিভাগের শিক্ষার্থী ছিল। চলতি দাখিল পরীক্ষায় তার রোল নম্বর ১৭১২৬২।
নিহতের নানা আরমান মিয়া বলেন, আরাফাতের ২ মাস পূর্বে লিভারের সমস্যা ধরা পড়ে। তার চিকিৎসা চলছিল। সে সুস্থ্য ছিল। বুধবার সকালে হঠাৎ করে অসুস্থ্য হয়ে পড়লে তাকে হাসপাতালে নিয়ে আসি। চিকিৎসক তাকে কুড়িগ্রামে রেফার্ড করেন। এ সময় আরাফাত কিছুটা সুস্থ্যবোধ করলে পরীক্ষায় অংশগ্রহন করতে চাইলে আমরা তাকে কেন্দ্রে নিয়ে গিয়ে পরীক্ষা দেওয়াই। কিন্তু তারপরেই সে গুরুত্বর অসুস্থ্য হয়ে পড়ে। পুনরায় তাকে হাসপাতালে নিয়ে আসলে প্রচন্ড বমি শুরু হয় এবং এক পর্যায়ে তার মৃত্যু হয়।
বুধবার বিকালে নিহতের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে চলছে শোকের মাতম। নিহত আরাফাতের মা আঞ্জুআরা বেগম ছেলের শোকে বার বার মুর্ছা যাচ্ছিলেন। ছেলেকে ফিরে পাওয়ার আকুতি ছিল তার। এ সময় শত শত নারী পুরুষ আরাফাতকে শেষ বারের মত দেখার জন্য ছুটে আসেন। ধামশ্রেনী ইউনিয়ন পরিষদের ২নং ওয়ার্ডে সদস্য রঞ্জু মিয়া মিয়া ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
উলিপুর বহুমূখী আলিম মাদ্রাসার অধ্যক্ষ ও কেন্দ্র সচিব মাও. শফিকুর রহমান জানান, আরাফাত অসুস্থ্য অবস্থায় পরীক্ষা দিতে আসেন। পরীক্ষা শেষে স্বজনদের সহযোগিতায় ফিরে যান। পরে তার মৃত্যুর খবর শুনে আমি মর্মাহত। স্থগিত হওয়া আর একটি মাত্র পরীক্ষা বাকী ছিল আরাফাতের। তা আর দেয়া হলো না।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার মেহেরুল ইসলাম জানান, আরাফাতের স্বজনরা গুরুত্বর অসুস্থ্য অবস্থায় তাকে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসেন। তার অবস্থা আশঙ্খাজনক হওয়ায় তাকে কুড়িগ্রাম সদর হাসপাতালে রেফার্ড করি। কিন্তু তার স্বজনরা দাখিল পরীক্ষা শেষে তাকে নিয়ে যেতে চেয়েছিল। এ কারনে পরীক্ষায় অংশগ্রহন করতে তাকে নিয়ে যান। পরীক্ষার হলেই গুরুত্বর অসুস্থ্য হয়ে পড়লে পুনরায় তাকে হাসপাতালে নিয়ে আসেন। এ সময় তার প্রচন্ড বমি শুরু হয়। তার লিভার নষ্ট হয়ে গিয়েছিল। জন্ডিসসহ নানা রোগে আক্রান্ত হয়ে তার মৃত্যু হয়।