ঢাকা ০২:৫৮ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৩১ মার্চ ২০২৩, ১৬ চৈত্র ১৪২৯ বঙ্গাব্দ
নোটিশ :
সাংবাদিক নিয়োগ চলছে,, সাংবাদিক নিয়োগ চলছে,, যোগাযোগ: মোবাইল : 01712-446306, 01999-953970
ব্রেকিং নিউজ ::
জেলা বিএনপিতে পাপলুর স্থগিত, দলীয় কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকার নির্দেশ লালপুরে কৃষি বীজ, চেক ও সেলাই মেশিন বিতরণ ভেজাল ও মেয়াদোত্তীর্ণ সেমাই এবং অনুমোদনহীন ও নকল বৈদ্যুতিক তার উৎপাদন, মজুদ ও বিক্রি করায় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে র‌্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালতে জরিমানা অভিনব কায়দায় ০২ টি প্রাইভেটকারের গ্যাস সিলিন্ডারের মধ্যে ইয়াবা পাচারকালে ইয়াবাসহ ০৬ জনকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-১ কুমিল্লায় র‌্যাব সদস্যের সহযোগিতায় প্রাণ বাঁচলো ছোট শিশু ইসরাতের র‌্যাব-১ এর ভ্রাম্যমাণ অভিযানে ০২ টি খাবার তৈরী প্রতিষ্ঠান এবং ০২ টি আয়রন রড, শীট বিক্রয় প্রতিষ্ঠান’কে জরিমানা ভান্ডারিয়ায় ইসলামী ব্যাংকের ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত রাজশাহীতে এসআইয়ের ওপর মাদক কারবারির হামলা পুর্বের কমিটি বিলুপ্ত করে ৩১ সদস্য বিশিষ্ট পীরগঞ্জ উপজেলা বিএনপি’র আহবায়ক কমিটি গঠিত হয়েছে যশোরে দুটি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বৈকালিক চেম্বার উদ্বোধন বঙ্গবন্ধু স্মৃতি যাদুঘরে ডিফেন্স ফাইন্যান্স ডিপার্টমেন্টের কন্ট্রোলারের শ্রদ্ধা মুলাদীতে সিনিয়র আইনজীবি মজিবুর রহমান দুলালের মৃত্যুতে বিভিন্ন জনের শোক॥ মুলাদীতে সর্বজনীন কল্যানে ইসলামী ব্যাংকিং শীর্ষক আলোচনা ও ইফতার মাহফিল॥ প্রথম আলো’র সম্পাদকের উপর মামলার ঘটনায় সিলেট জেলা বিএনপির নিন্দা জামালগঞ্জে ব্যানার ফেস্টুন ছেড়ার হিড়িক থানায় জিডি দায়ের

গাছে গাছে দেখা যায় না নিপুণ বাসা তৈরির কারিগর পাখি টুনটুনি 

  • নিজস্ব সংবাদ :
  • আপডেট সময় ০৬:২৪:৪৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১১ মার্চ ২০২২
  • ১৬৮০ বার পড়া হয়েছে

গাছে গাছে দেখা যায় না নিপুণ বাসা তৈরির কারিগর পাখি টুনটুনি 

মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে ভিডিও প্রতিযোগিতা: বিস্তারিত ফেইসবুক পেইজে

হেলাল উদ্দিন ফুলবাড়ী, কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি: ১১/০৩/২২
গাছের পাতা একসঙ্গে সেলাই করে বাসা তৈরী করার জন্য এই পাখি খুবই জনপ্রিয়। এই চড়ই জাতীয় পাখিকে বৈশিষ্ট্যমুলকভাবে দেখা যায় খোলা খামার জমিতে, ঝোপঝাড়, বন ও বাদারে।
দর্জি পাখি নামটা এসেছে বাসা গড়ার ঢং থেকে। অাগে গ্রামবাংলার অানাচে-কানাচে ঝোপঝাড়, বনজঙ্গল ও বাদারে দেখতে পাওয়া যেত কিন্তু এখন অার অাগের মত তেমনটা চোখে পড়ে না। পরাগায়নে সাহায্য করে এই পাখি। ফুলের মধু খেয়ে বিভিন্ন ধরনের ফুলে ফুলে ঘুরে পরাগায়নেও সাহায্য করে থাকে।
ফসলের ক্ষতিকারক পোকা-মাকড় খেয়ে পরিবেশ সুন্দর রাখতে সাহায্য করে।
হরেক নামে ডাকা হয় টুনটুনি পাখিকে তার হিসাব করা মুশকিল। অঞ্চলভেদে বিভিন্ন নামে ডাকা হয় এই টুনটুনি পাখিকে যেমন -টুনি, মধুচুষকি, দুগাটুনটুনি, বেগুন টুনটুনি, মৌটুসি, নীলটুনটুনি, দর্জি, মৌটুসকিসহ অারও কত যে নামে ডাকে।
এখন বিলুপ্ত প্রায় সেই ছোট নিপুণ বাসা তৈরির কারিগর পাখি টুনটুনি। যদিও পাখিদের মধ্যে বাবুই  পাখিকে (arcitect) স্থপতি  পাখি বলা হলেও এই ছোট পাখি টুনটুনির নির্মাণ শৈলী সম্পুর্নভাবে অালাদা। অাকারে এই ছোট পাখিটাকে যতটা অামরা চালাক ভাবিনা কেন প্রকৃত পক্ষে ততটা চালাক নয় একটু বোকা প্রকৃতির এরা। সব সময় মানুষের খুব কাছাকাছি থাকতে ভালবাসে।
এরা চঞ্চল প্রকৃতির পাখি। এরা এক জায়গায়  স্থির থাকতে চায় না। দুরন্ত বালকের মত ছুটে চলে। সব সময় গাছের ডালে লাফা-লাফি করে ওড়ে বেড়ায়।  ডাল-ডালে ওড়ে বেড়ার সময় পিঠের উপরের লেজ নাড়িয়ে টুনটুন শব্দ করে ওড়ে বেড়ায়। চোখে না দেখলে এই টুনটুনি পাখির ডাক শুনে মনেই করতে পারবেননা যে এরা অাকারে এতই ছোট। গ্রামগঞ্জের মানুষেরা খুব অাদর করে একে দর্জি পাখি বলে ডেকে থাকেন। এই দর্জি পাখির ডাক খুবই তীব্র ও অনেক দুর থেকে ডাক শোনা য়ায়। এই দর্জি পাখিটি ঠোঁট দিয়ে গাছের পাতা সেলাই করে  অত্যন্ত দক্ষতার সাথে খুবই মজবুত সুন্দর বাসা তৈরি করে থাকে। এরা সাধারণত ঝোপঝাড় জাতীয় গাছ বা ছোট মাঝারী  উঁচু গাছের পাতায় বাসা বাধঁতে খুব পছন্দ করে-যেমন খোকশা গাছ, লেবু, ডুমুর, সূর্যমুখী, কাঠবাদাম ইত্যাদি। তবে এরা সবচেয়ে বেশী বাসা বাধঁতে পছন্দ করে খোকশা গাছে।
স্ত্রী ও পুরুষ উভয় মিলে গাছের ১-২টি পাতা দিয়ে সেলাই করে বাসা তৈরি করে থাকে। ১টি বাসা তৈরি করতে স্ত্রী ও পুরুষ টুনটুনির প্রায় ৪-৫ দিন পর্যন্ত সময় লাগে। এরা তুলা, সুতা, লতা-পাতা, গরু, ঘোড়া, মহিশের লেজের চুল, পালক মিশিয়ে দৃষ্টনন্দন বাসা তৈরি করে থাকে।
টুনটুনি পাখির বাসা তৈরি ও প্রজনন মৌসুম মাঘ মাসের শেষের দিকে এবং ফাল্গুন – অাশ্বিন মাসের মধ্যে বাসা বাধাঁ শেষ হলেই ৪-৫টি ডিম পাড়ে। স্ত্রী ও পুরুষ উভয়েই ডিমে তা দিয়ে ১০দিনের মধ্যে বাচ্চা ফুটানোর পরে বাচ্চাসহ বাসা পরির্বতন করে।
বছরের প্রজনন মৌসুমে স্ত্রী টুনটুনি ২-৩ বার ডিম দিয়ে বাচ্চা ফুটায়। এ সময় কেউ টুনটুনির বাসার কাছে অাসলে স্ত্রী ও পুরুষ মিলে এক সঙ্গে ওড়া ও ওড়ি এবং টুনটুন শব্দ করে ডিম ও তাদের বাসা রক্ষা করার জন্য। অনেক সময় বাসাসহ পাতা ঝড়ে পড়ে ডিম ও বাচ্চা নষ্ট হয়ে যায়।
গ্রামের ছোট ছোট ছেলে মেয়েদের টুনটুনির বাসার প্রতি প্রবল অাকর্ষন থাকে। অাবার অনেক সময় গ্রামের ছেলে মেয়েরা টুনটুনি পাখির বাসা, ডিম বা বাচ্চা নষ্ট করে। অাজকাল টুনটুনি পাখির দৃষ্টকাড়া বাসাও খুব তেমনটা চোখে পড়ে না। বন উজাড় মনোভাবের কারণে অনেক পাখিই ধীরে ধীরে বিলুপ্তির পথে।প্রকৃতিও হুমকির মুখে সবুজ বনায়নের অভাবে।
জনপ্রিয় সংবাদ

জেলা বিএনপিতে পাপলুর স্থগিত, দলীয় কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকার নির্দেশ

গাছে গাছে দেখা যায় না নিপুণ বাসা তৈরির কারিগর পাখি টুনটুনি 

আপডেট সময় ০৬:২৪:৪৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১১ মার্চ ২০২২
হেলাল উদ্দিন ফুলবাড়ী, কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি: ১১/০৩/২২
গাছের পাতা একসঙ্গে সেলাই করে বাসা তৈরী করার জন্য এই পাখি খুবই জনপ্রিয়। এই চড়ই জাতীয় পাখিকে বৈশিষ্ট্যমুলকভাবে দেখা যায় খোলা খামার জমিতে, ঝোপঝাড়, বন ও বাদারে।
দর্জি পাখি নামটা এসেছে বাসা গড়ার ঢং থেকে। অাগে গ্রামবাংলার অানাচে-কানাচে ঝোপঝাড়, বনজঙ্গল ও বাদারে দেখতে পাওয়া যেত কিন্তু এখন অার অাগের মত তেমনটা চোখে পড়ে না। পরাগায়নে সাহায্য করে এই পাখি। ফুলের মধু খেয়ে বিভিন্ন ধরনের ফুলে ফুলে ঘুরে পরাগায়নেও সাহায্য করে থাকে।
ফসলের ক্ষতিকারক পোকা-মাকড় খেয়ে পরিবেশ সুন্দর রাখতে সাহায্য করে।
হরেক নামে ডাকা হয় টুনটুনি পাখিকে তার হিসাব করা মুশকিল। অঞ্চলভেদে বিভিন্ন নামে ডাকা হয় এই টুনটুনি পাখিকে যেমন -টুনি, মধুচুষকি, দুগাটুনটুনি, বেগুন টুনটুনি, মৌটুসি, নীলটুনটুনি, দর্জি, মৌটুসকিসহ অারও কত যে নামে ডাকে।
এখন বিলুপ্ত প্রায় সেই ছোট নিপুণ বাসা তৈরির কারিগর পাখি টুনটুনি। যদিও পাখিদের মধ্যে বাবুই  পাখিকে (arcitect) স্থপতি  পাখি বলা হলেও এই ছোট পাখি টুনটুনির নির্মাণ শৈলী সম্পুর্নভাবে অালাদা। অাকারে এই ছোট পাখিটাকে যতটা অামরা চালাক ভাবিনা কেন প্রকৃত পক্ষে ততটা চালাক নয় একটু বোকা প্রকৃতির এরা। সব সময় মানুষের খুব কাছাকাছি থাকতে ভালবাসে।
এরা চঞ্চল প্রকৃতির পাখি। এরা এক জায়গায়  স্থির থাকতে চায় না। দুরন্ত বালকের মত ছুটে চলে। সব সময় গাছের ডালে লাফা-লাফি করে ওড়ে বেড়ায়।  ডাল-ডালে ওড়ে বেড়ার সময় পিঠের উপরের লেজ নাড়িয়ে টুনটুন শব্দ করে ওড়ে বেড়ায়। চোখে না দেখলে এই টুনটুনি পাখির ডাক শুনে মনেই করতে পারবেননা যে এরা অাকারে এতই ছোট। গ্রামগঞ্জের মানুষেরা খুব অাদর করে একে দর্জি পাখি বলে ডেকে থাকেন। এই দর্জি পাখির ডাক খুবই তীব্র ও অনেক দুর থেকে ডাক শোনা য়ায়। এই দর্জি পাখিটি ঠোঁট দিয়ে গাছের পাতা সেলাই করে  অত্যন্ত দক্ষতার সাথে খুবই মজবুত সুন্দর বাসা তৈরি করে থাকে। এরা সাধারণত ঝোপঝাড় জাতীয় গাছ বা ছোট মাঝারী  উঁচু গাছের পাতায় বাসা বাধঁতে খুব পছন্দ করে-যেমন খোকশা গাছ, লেবু, ডুমুর, সূর্যমুখী, কাঠবাদাম ইত্যাদি। তবে এরা সবচেয়ে বেশী বাসা বাধঁতে পছন্দ করে খোকশা গাছে।
স্ত্রী ও পুরুষ উভয় মিলে গাছের ১-২টি পাতা দিয়ে সেলাই করে বাসা তৈরি করে থাকে। ১টি বাসা তৈরি করতে স্ত্রী ও পুরুষ টুনটুনির প্রায় ৪-৫ দিন পর্যন্ত সময় লাগে। এরা তুলা, সুতা, লতা-পাতা, গরু, ঘোড়া, মহিশের লেজের চুল, পালক মিশিয়ে দৃষ্টনন্দন বাসা তৈরি করে থাকে।
টুনটুনি পাখির বাসা তৈরি ও প্রজনন মৌসুম মাঘ মাসের শেষের দিকে এবং ফাল্গুন – অাশ্বিন মাসের মধ্যে বাসা বাধাঁ শেষ হলেই ৪-৫টি ডিম পাড়ে। স্ত্রী ও পুরুষ উভয়েই ডিমে তা দিয়ে ১০দিনের মধ্যে বাচ্চা ফুটানোর পরে বাচ্চাসহ বাসা পরির্বতন করে।
বছরের প্রজনন মৌসুমে স্ত্রী টুনটুনি ২-৩ বার ডিম দিয়ে বাচ্চা ফুটায়। এ সময় কেউ টুনটুনির বাসার কাছে অাসলে স্ত্রী ও পুরুষ মিলে এক সঙ্গে ওড়া ও ওড়ি এবং টুনটুন শব্দ করে ডিম ও তাদের বাসা রক্ষা করার জন্য। অনেক সময় বাসাসহ পাতা ঝড়ে পড়ে ডিম ও বাচ্চা নষ্ট হয়ে যায়।
গ্রামের ছোট ছোট ছেলে মেয়েদের টুনটুনির বাসার প্রতি প্রবল অাকর্ষন থাকে। অাবার অনেক সময় গ্রামের ছেলে মেয়েরা টুনটুনি পাখির বাসা, ডিম বা বাচ্চা নষ্ট করে। অাজকাল টুনটুনি পাখির দৃষ্টকাড়া বাসাও খুব তেমনটা চোখে পড়ে না। বন উজাড় মনোভাবের কারণে অনেক পাখিই ধীরে ধীরে বিলুপ্তির পথে।প্রকৃতিও হুমকির মুখে সবুজ বনায়নের অভাবে।