কুড়িগ্রাম জেলা প্রতিনিধি।
কুড়িগ্রামের উলিপুরে গরুচোর সন্দেহে গণপিটুনিতে রহমান ওরফে রহম আলী (৬৫) নামের এক বৃদ্ধ মারা গেছেন।
বুধবার গভীর রাতে ব্রহ্মপুত্র নদবেষ্টিত দূর্গম চরাঞ্চল চরগুজিমারী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। গণপিটুনির শিকার ব্যক্তিকে বৃহস্পতিবার দুপুরে মুমূর্ষ অবস্থায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, বুধবার গভীর রাতে তিন ব্যক্তি নৌকাযোগে হাতিয়া ইউনিয়নের দুর্গম চরাঞ্চল চরগুজিমারী এলাকার বজরু মুন্সির পুত্র মকবুল হোসেনের বসতবাড়ির গোয়াল ঘরে গরু চুরি করতে প্রবেশ করেন। ওই সময় মকবুল হোসেন বোরো ক্ষেতে সেচের পানি নিয়ে বাড়িতে ফিরছিলেন।
এ সময় তিনি গোয়াল ঘরের দরজা খোলা দেখতে পেয়ে টর্চ লাইটের আলো গোয়াল ঘরের দিকে ফেললে দুজন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তি দৌড়ে পালিয়ে যান। এ সময় তিনি চোর চোর করে চিৎকার করে গোয়াল ঘরে গিয়ে আরো একজনকে দেখতে পান। তার কাছে গরু চুরির রশি, ব্লেড ও গরুর মুখের ৫টি টোপা পান। মকবুলের চিৎকারে আশপাশের লোকজন ছুটে আসেন।
গোয়াল ঘরে আটক রহমান ওরফে রহম আলীকে রেখে মকবুল ও স্থানীয় লোকজন পালিয়ে যাওয়া ব্যক্তিদের পিছু নেন। পরে ফিরে এসে দেখতে পান স্থানীয় লোকজন রহম আলীকে গণপিটুনি দিয়ে গুরুত্বর আহত করেছেন। দুর্গম চরাঞ্চল হওয়ায় রাতেই তাকে হাসপাতালে নেওয়া সম্ভব হয়নি। বৃহস্পতিবার দুপুরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
পরে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। নিহত রহমান ওরফে রহম আলী গাইবান্ধা জেলার ফুলছড়ি উপজেলার টেংরাকান্দি গ্রামের মুছা শেখের পুত্র বলে জানা গেছে।
হাতিয়া ইউনিয়ন পরিষদের ৯নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য বারেক মিয়া ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সুভাষ চন্দ্র সরকার জানান, হাসপাতালে নেওয়ার আগেই ওই ব্যক্তির মৃত্যু হয়।
উলিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইমতিয়াজ কবির বলেন, হাসপাতাল থেকে মরদেহ উদ্ধার করে থানায় নেওয়া হয়েছে। মকবুল হোসেনসহ ৩ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। নিহতের স্বজনদের খবর দেওয়া হয়েছে। গণপিটুনিতে একজনের মৃত্যু হওয়ায় তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।