রুবেল হোসাইন সংগ্রাম-
মিঠাপুকুর উপজেলার ৩ নং পায়রাবন্দ ইউনিয়নে নারী জাগরণের অগ্রদূত মহিয়সি নারী বেগম রোকেয়ার জন্মস্হান। কিন্তু সেই পায়রাবন্দ ইউনিয়নের অভিরামনুরপুর, লহনী, লহনী কোনাপাড়া এমনকি বলদীপুকুর বাসষ্টান্ডে আজ অবধি কোন প্রাথমিক বিদ্যালয় কিংবা মাধ্যমিক বিদ্যালয় গড়ে উঠেনি।অত্র পায়রাবন্দ ইউনিয়নের ০৪ নং ওয়ার্ডে কোন স্কুল নেই। একটি মাত্র স্কুলের অভাবে ০৩ কিঃমিঃ পাড়ি দিয়ে বিদ্যালয় যেতে হয় কোমলমতি শিক্ষার্থীদের। উক্ত গ্রামগুলো থেকে জায়গীর বাসষ্টান্ড এবং বলদীপুকুর হাইস্কুল বা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দুরত্ব ৩ কিঃমিঃ উপরে।
দুর-দুরান্তরে বাচ্চাদের স্কুলে পাঠিয়ে অভিভাবকদের থাকতে হয় নানান সংশয়ে। বিদ্যালয় না থাকায় নেই কোন খেলার মাঠ কিংবা বিনোদন কেন্দ্র। স্কুল কলেজ না থাকায় এই তিন গ্রামের লোক শিক্ষার সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। নব্বই দশকে স্কুল না থাকায় সবাই কৃষি কাজে মনোনিবেশন করতেন এবং তার ধারাবাহিকতায় এখনো অনেক লোক অশিক্ষিত। ১৯৯৮ সাল অবধি এই গ্রামে মসফিকুল ইসলাম নামে একজন মাত্র বি,এ পাশ লোক ছিলো বলে জানা যায়। মসফিকুল ইসলামের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, আমরা হেঁটে জায়গীরহাট গিয়েছিলাম, প্রায় ৫ কিঃমিঃ হবে। এখন তো অনেক স্কুল কিন্তু এই ওয়ার্ড বা তিন গ্রামে স্কুল নেই। শিক্ষিত লোক না থাকায় কেউ উদ্যোগ নেয়নি।
কয়েকজন কিন্ডার গার্টেন পড়ুয়া বাচ্চাদের সঙ্গে কয়েকটি স্কুলে দেখা হলে তারা জানান, তাদের বাবা মায়েরা সকালে স্কুলে রেখে যান। এবং স্কুল ছুটি হলে নিয়ে যান। রাদিকা হোসাইন রাকা নামে প্লে-পড়ুয়া এক শিশু জানান, বাড়ির সামনে ভ্যানে তুলে দেয় তার মা। বেশীর ভাগ সময় ভ্যান পাওয়া না গেলে বাড়িতে ফিরে যেতে হয়। তার বাসা থেকে স্কুলের দুরত্ব অনেক দুর। বাড়ি সংলগ্ন স্কুল থাকলে সেখানেই পড়তেন। বলদিপুকুর প্রি-ক্যাডেট স্কুলের পরিচালক আবু ফরহাদ মাসুদ জানান, পায়রাবন্দ ইউনিয়নের বেশীর ভাগ বাচ্চা আমাদের স্কুলে আসে। তাদের যাতায়াত এবং নিরাপত্তা নিয়ে আমাদের ও ভাবতে হয়।
মিঠাপুকুর থানায় মোট প্রাথমিক বিদ্যালয় ২৬৮ টি, নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয় ২০টি, মাধ্যমিক বিদ্যালয় ৮৫, মাদ্রাসা ৫২, কারিগরি ৫ টি সহ ব্রাক পরিচালিত ৩৩ টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। উপজেলার সব ইউনিয়নে ওয়ার্ড ভিক্তিক কয়েকটি স্কুল থাকলেও বলদিপুকুর বাসষ্টান্ড তথা অভিরামনুরপুর, লহনী কোনাপাড়ায় নেই।ব্যঙ্গের ছাতার মতো বেসরকারি স্কুল থাকলেও এসব জায়গায় কোন স্কুল নেই।
এ বিষয় ইউপি চেয়ারম্যান ফঁয়জার রহমান খাঁন বলেন,জমিদাতার অভাবে স্কুল গড়া সম্ভব হয়নি। আমি কয়েকবার বিষয়টি নিয়ে জমি দাতাদের সঙ্গে কথা বলেছি। কেউ জমি দেয়নি।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ফাতেমা-তুজ জোহরার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বিষয়টি সম্পর্কে কথা বলবেন বলে জানান। এলাকাবাসীসহ কোমলমতি শিক্ষার্থীদের আকুল আবেদন অত্র ওয়ার্ডে একটি স্কুল নির্মান করা হউক।