বাংলাদেশ ১১:২০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
নোটিশ :

সাংবাদিক নিয়োগ চলছে,, সাংবাদিক নিয়োগ চলছে,,০১৯৯৯-৯৫৩৯৭০, ০১৭১২-৪৪৬৩০৬,০১৭১১-০০৬২১৪ সম্পাদক

     
ব্রেকিং নিউজ ::
মির্জাগঞ্জে বৃষ্টি কামনায় ইস্তিস্কার নামাজ আদায় শনিবারের ছুটি ও আমাদের অবস্থান মির্জাগঞ্জে বিনাদোষে দুই নারীকে মারধরের প্রতিবাদে মানববন্ধন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান হলেন যে নারী। নবীনগরে সড়ক ও খালের জায়গা দখলের চলছে মহোৎসব! চট্টগ্রামে সহ সারা দেশে সাংবাদিকের উপর হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে ‘সিইউজে’ সিংগাইরে সাংবাদিকের চাঁদাবাজি,দুই জন আটক দিনাজপুরে সজনের ডাটার বাম্পার ফলন সাংবাদিক হামলার মামলায় সুদেব মাষ্টার জেল হাজতে প্রেরণ চট্টগ্রাম টেকপাড়া ও এয়াকুব নগরে অগ্নিকান্ডে ক্ষতিগ্রস্থদের মাঝে নগদ অর্থ ও শাড়ি-লুঙ্গি বিতরণ পিরোজপুরের চরখালী ফেরীতে মেট্রোপলিটন পরিবহনের ধাক্কায় ফেরী থেকে একাধিক মোটরসাইকেল নদীতে কটিয়াদীতে সর্বজনীন পেনশন স্কিম অবহিতকরণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত সাত গ্রামের সমর্থিত চেয়ারম্যান প্রার্থী এড. রেজাউল করিম বালিয়াডাঙ্গীতে খাপড়া ওয়ার্ড দিবসে শহীদদের স্মরণে সিপিবির লাল পতাকা মিছিল ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত। স্কুলের জমি দখলের প্রতিবাদে এলাকাবাসীর মানববন্ধন 

শিল্প নীতি ছাড়াই ফসলী জমিতে শিল্প-কারখানা করা হচ্ছে সরকারি খালে স্থায়ী সেতু নির্মাণ।

  • নিজস্ব সংবাদ :
  • আপডেট সময় ০৮:৩৮:৩৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৮ মার্চ ২০২২
  • ১৭৬৯ বার পড়া হয়েছে

শিল্প নীতি ছাড়াই ফসলী জমিতে শিল্প-কারখানা করা হচ্ছে সরকারি খালে স্থায়ী সেতু নির্মাণ।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধিঃ
উপজেলা ভূমি অফিস জানে না, উপজেলা প্রশাসন জানে না, পরিবেশ অধিদপ্তর জানে না, বিএডিসি কর্তৃপক্ষ জানে না, ইউনিয়ন ভূমি অফিসও জানে না এমন কি জেলা প্রশাসকও জানেন না। তবে তারা বলছেন সবাই জানে এবং সবাইকে অবগত করেই আন্তর্জাতিক মানের এতো বড় ব্যাগের কারখানা নির্মাণ করছি। যদিও সমগ্র দেশের চিত্র একই রকম, তারমধ্যে ব্রাহ্মণবাড়িয়াও ব্যতিক্রম নয়।
 আন্তার্জাতিক মানের শিল্প-কারখানা নির্মাণ হচ্ছে দেশের বিভিন্ন জায়গায়। কেউ নিয়মনীতি মেনে নির্মাণ করছে, আবার কেউ বা ক্ষমতার জোর দেখিয়ে নির্মাণ করছে শিল্প-কারখানা। বিষয়গুলো উড়নচণ্ডির মত লাগলেও ঘটনা সত্য।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরাইল উপজেলার কুট্টাপাড়া নামক স্থানে ঢাকা সিলেট মহাসড়কের পাশে ২১০ শতাংশ ফসলী জমির উপর শিল্প-কারখানা নির্মাণ করা হচ্ছে যা শ্রেণি পরিবর্তনের কোন বালাই নেই এবং সেখানে মালামাল আনয়নের জন্য সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের বয়ে যাওয়া জাফর খালের উপর প্রায় ৬০ (ষাট) ফুট দৈর্ঘ্য ব্যক্তি মালিকানাধীন স্থায়ী সেতু নির্মাণ করা হচ্ছে যা ব্রাহ্মণবাড়িয়া সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর অবগত নয়। পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষ বলছে মালামাল আনয়নের জন্য অস্থায়ীভাবে কালভার্ট নির্মাণ করতে পারবে তবে তা এক বছরের জন্য। সড়ক ও জনপথ বলছে এটা পানি উন্নয়ন বোর্ডের জায়গা নয় যে, তারা এমন অনুমতি দিতে পারবে।
আর মালিকপক্ষ বলছে আমরা সংশ্লিষ্ট সকল দপ্তরের অনুমতি নিয়েই কারখানা নির্মাণ করছি। তাহলে ঘাটতি কোন জায়গায়? শভঙ্করের ফাঁকি নয় তো? এমন হাজারো প্রশ্ন পরিবেশবিদদের।
নদী ও প্রাণ-প্রকৃতি সুরক্ষা সামাজিক সংগঠন “নোঙর বাংলাদেশ” ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শাখার সভাপতি শামীম আহমেদ বলেন, আমাদের দেশে শিল্প-কারখানা নির্মাণ হবে তা অবশ্যই ইতিবাচক, তবে শিল্প-কারখানার নিয়ম-নীতি অনুস্মরণ করেই তা নির্মাণ করা উচিত। এখানে সড়ক ও জনপথ, পানি উন্নয়ন বোর্ড, ভূমি অফিস, পরিবেশ অধিদপ্তর, বিএডিসি, উপজেলা প্রশাসনসহ বেশ কয়েকটি দপ্তরের স্বার্থ জড়িত থাকা স্বত্ত্বেও বাঁধাহীনভাবে এতো বড় একটি সেতু নির্মাণ করলো তাও সরকারি খালের উপর!
তিনি আরো বলেন, বিভিন্ন সোর্স থেকে জানতে পেরেছি পানি উন্নয়ন বোর্ডের অনুমতি নিয়েই কাজ করছেন ভদ্রলোক! পানি উন্নয়ন বোর্ড কিভাবে অনুমতি দিয়েছে সেটাই আমাদের প্রশ্ন? এধরনের অনুমতি সরকারি খাল দখল ও ফসলী জমির শ্রেণি পরিবর্তনে সুযোগ করে দিচ্ছে বলে মনে করছি। এধরনের অবৈধ কার্যক্রম বন্ধ হওয়া উচিৎ বলে তিনি মনে করেন।
অন্যদিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা খেলাঘরের সাধারণ সম্পাদক নীহার রঞ্জন সরকার বলেন, দেশে শিল্পায়ন হোক, কর্মসংস্থান হোক আমিও চাই। তবে অকাতরে ফসলি জমি নষ্ট করে, পরিবেশের ক্ষতি করে, জীববৈচিত্র ধ্বংস করে কোন শিল্পায়ন নয়। ক্ষুদ্র লাভের জন্য বৃহৎ স্বার্থ জলাঞ্জলি দিয়ে দেশের উন্নয়ন হবে না। যারা শিল্প বা শিল্পায়ন করতে চান তারা যেন দেশের স্বার্থ ঠিক রেখে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের যথাযথ অনুমোদন নিয়ে কাজ করলে স্বাগত জানাই।
কর্তব্যরত সিকিউটি ইনচার্জ জানান, আমাদের মালিকপক্ষ সংশ্লিষ্ট সকল অনুমতি নিয়েই ব্যাগের কারখানা নির্মাণ করছেন। মালিকপক্ষের কারো সাথে যোগাযোগ করতে চাইলে তিনি জানান কর্তৃপক্ষের নিষেধ রয়েছে।
সরাইল উপজেলার পানিশ্বর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. আমজাদ হোসেন মালিক পক্ষের পরিচয় দিয়ে বলেন, আমরা এখানে ছয়জন মালিক রয়েছি। আমরা এখানে আন্তর্জাতিক মানের ব্যাগের কারখানা নির্মাণ করছি। এখানে বিদেশি ক্রেতারা আসবেন, আমরা অবৈধভাবে কোনকিছু করার কোন সুযোগ নেই।
 নির্মাণাধীন কারখানার ব্যবস্থাপনা পরিচালক মেহেদী হাসান বলেন, বাংলাদেশে ব্যাগের একমাত্র আমার কারখানাটিই দেশীয় মালিক।
বাকি যা রয়েছে সবই বিদেশি মালিকগণের। এই ব্যাগের কারখানা নির্মাণ হলে এখানে প্রায় দুই হাজার লোকের কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হবে। আমরাতো শ্রেণি পরিবর্তনের জন্য আবেদন করিনি। আর এ খালের উপর আমরা সেতু নির্মাণ করছি পানি উন্নয়ন বোর্ডের অনুমতি নিয়েই। পানি উন্নয়ন বোর্ড আপনাদের পূর্ণাঙ্গ অনুমোদন দেয়নি। আপনাদের কারখানা নির্মাণে খালের উপর দিয়ে মালামাল আনয়নে সুবিধায় এক বছরের জন্য অস্থায়ী সেতু নির্মাণে অনুমোদন দেয়া হয়েছে, সেখানে আপনারা স্থায়ী সেতু নির্মাণ করেছেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা ঢাকা পান্থপথস্থ পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রধান শাখা থেকে পূর্ণাঙ্গ অনুমোদনের জন্য আবেদন করেছি। পূর্ণাঙ্গ অনুমোদন না পেয়েই আপনারা স্থায়ী সেতু নির্মাণ কিভাবে করলেন? এমন প্রশ্ন করা হলে তিনি এড়িয়ে যান। ব্যাগের কারখানাটি বিসিকে করার কোন পরিবেশ নেই তাই খোলা যায়গায় করছি।
সরাইল সদর ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা মো. হুমায়ুন কবির জানান, আমরা বিষয়টি কোনভাবেই অবগত নই। তারা কিভাবে এতবড় কারখানা নির্মাণ করছে তা আমাদের জানা নেই। আমাদের উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) স্যার আমাকে নির্দেশ দিলে আমরা সেখানে গিয়ে কাজটি বন্ধ করে দেই এবং তাদের সকল কাগজপত্র নিয়ে অফিসে আসার জন্য বলে আসি।
 সরাইল উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) কর্মকর্তা ফারহানা নাসরিন জানান, আমরা সেখানে লোক পাঠিয়ে ড্রেজার বন্ধ করে দিয়েছি এবং তাদেরকে সকল কাগজপত্র নিয়ে অফিসে আসার জন্য নির্দেশ দিয়েছি। এ বিষয়ে আমাদের ইউএনও স্যার বিস্তারিত জানেন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রঞ্জন কুমার দাস বলেন, বিষয়টি আমার জানা আছে। তারা সেখানে ব্যাগের কারখানা নির্মঅণ করবে। আমাদের কাছে তারা আবেদন করেছে কারখানা নির্মাণে মালামাল আনয়ন করতে হবে, তাই এখানে যাতায়াতের জন্য একটি সেতু নির্মাণ প্রয়োজন। তার উপর ভিত্তি করে আমরা তাদেরকে মালামাল আনয়নের জন্য অস্থায়ীভাবে ব্যবস্থা করার অনুমতি দিয়েছি যেন, পানি প্রবাহে কোন ব্যাঘাত না ঘটে। তবে তা এক বছরের জন্য অনুমতি দিয়েছি। তারা যদি স্থায়ীভাবে কিছু নির্মাণ করে থাকে তাহলে তা সম্পূর্ণ অবৈধ।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী কর্মকর্তা পংকজ ভৌমিক জানান, এ জায়গা আমাদের। ঢাকা সিলেট মহাসড়ক চার লেনে উন্নীত করা হবে যা একনেকে পাশ হয়েছে এবং আগামী ছয় মাসে তা দরপত্র করা হবে। এখানে স্থায়ী সেতু নির্মাণ করার কোন সুযোগ নেই। এটা যারা করছে তারা অবৈধভাবে করেছে। সেতু নির্মাণে পানি উন্নয়ন বোর্ড কিভাবে অনুমতি দেয়? এটাতো তাদের জায়গা নয়। বিষয়টি আমার বোধগম্য নয়। পানি উন্নয়ন বোর্ডের অবগতির জন্য স্মারক নং নিঃপ্রঃ/বিবা/সি-৬/৯০৭ (২) উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী, সড়ক উপ-বিভাগ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া বরাবর অনুলিপি প্রদান করেছে সেটা কি আপনি গ্রহণ করেননি? এমন প্রশ্ন করা হলে তিনি নিশ্চুপ হয়ে যান।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া পরিবেশ অধিদপ্তরের উপসপরিচালক মো. নূরুল আমীন বলেন, এটা পরিবেশ অধিদপ্তরের কাজ নয়।
সরাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আরিফুল হক মৃদুল জানান, এখানে কে বা কারা ফসলী জমিতে কারখানা নির্মাণ করছে তা আমাদের জানা নেই। আমাদের নিকট এ পর্যন্ত কোন আবেদন করেনি। এটা জেলা প্রশাসক মহোদয়ের নিকট থেকে শ্রেণি পরিবর্তনের আবেদন করতে পারে। খালের উপর সেতু নির্মাণে আমাদের আদেশ নিষেধের কোন প্রয়োজন নেই। কেননা, খালটি পানি উন্নয়ন বোর্ড অথবা সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের। এটা সংশ্লিষ্ট বিভাগই ভাল বলতে পারবে, আমি বা আমরা এ বিষয়ে কিছুই জানি না।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) আশ্রাফ আহমেদ রাসেল প্রতিবেদককে বলেন, নাল জমি (ফসলী জমি) শ্রেণি পরিবর্তনের কোন বিধি নিষেধ নেই। যারা নাল জমির খাজনা দিচ্ছে তারা নাল জমি হিসেবেই খাজনা দিয়ে যাবে। নাল জমিকে বসতবাড়ি বা ভিটা দেখিয়ে খাজনা দেয়ার কোন সুযোগ নেই। যেহেতু সড়ক ও জনপথের জায়গা সেহেতু সেতু নির্মাণের বিষয়টি তারাই ভাল বলতে পারবেন।
জনপ্রিয় সংবাদ

মির্জাগঞ্জে বৃষ্টি কামনায় ইস্তিস্কার নামাজ আদায়

শিল্প নীতি ছাড়াই ফসলী জমিতে শিল্প-কারখানা করা হচ্ছে সরকারি খালে স্থায়ী সেতু নির্মাণ।

আপডেট সময় ০৮:৩৮:৩৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৮ মার্চ ২০২২
ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধিঃ
উপজেলা ভূমি অফিস জানে না, উপজেলা প্রশাসন জানে না, পরিবেশ অধিদপ্তর জানে না, বিএডিসি কর্তৃপক্ষ জানে না, ইউনিয়ন ভূমি অফিসও জানে না এমন কি জেলা প্রশাসকও জানেন না। তবে তারা বলছেন সবাই জানে এবং সবাইকে অবগত করেই আন্তর্জাতিক মানের এতো বড় ব্যাগের কারখানা নির্মাণ করছি। যদিও সমগ্র দেশের চিত্র একই রকম, তারমধ্যে ব্রাহ্মণবাড়িয়াও ব্যতিক্রম নয়।
 আন্তার্জাতিক মানের শিল্প-কারখানা নির্মাণ হচ্ছে দেশের বিভিন্ন জায়গায়। কেউ নিয়মনীতি মেনে নির্মাণ করছে, আবার কেউ বা ক্ষমতার জোর দেখিয়ে নির্মাণ করছে শিল্প-কারখানা। বিষয়গুলো উড়নচণ্ডির মত লাগলেও ঘটনা সত্য।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরাইল উপজেলার কুট্টাপাড়া নামক স্থানে ঢাকা সিলেট মহাসড়কের পাশে ২১০ শতাংশ ফসলী জমির উপর শিল্প-কারখানা নির্মাণ করা হচ্ছে যা শ্রেণি পরিবর্তনের কোন বালাই নেই এবং সেখানে মালামাল আনয়নের জন্য সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের বয়ে যাওয়া জাফর খালের উপর প্রায় ৬০ (ষাট) ফুট দৈর্ঘ্য ব্যক্তি মালিকানাধীন স্থায়ী সেতু নির্মাণ করা হচ্ছে যা ব্রাহ্মণবাড়িয়া সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর অবগত নয়। পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্তৃপক্ষ বলছে মালামাল আনয়নের জন্য অস্থায়ীভাবে কালভার্ট নির্মাণ করতে পারবে তবে তা এক বছরের জন্য। সড়ক ও জনপথ বলছে এটা পানি উন্নয়ন বোর্ডের জায়গা নয় যে, তারা এমন অনুমতি দিতে পারবে।
আর মালিকপক্ষ বলছে আমরা সংশ্লিষ্ট সকল দপ্তরের অনুমতি নিয়েই কারখানা নির্মাণ করছি। তাহলে ঘাটতি কোন জায়গায়? শভঙ্করের ফাঁকি নয় তো? এমন হাজারো প্রশ্ন পরিবেশবিদদের।
নদী ও প্রাণ-প্রকৃতি সুরক্ষা সামাজিক সংগঠন “নোঙর বাংলাদেশ” ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শাখার সভাপতি শামীম আহমেদ বলেন, আমাদের দেশে শিল্প-কারখানা নির্মাণ হবে তা অবশ্যই ইতিবাচক, তবে শিল্প-কারখানার নিয়ম-নীতি অনুস্মরণ করেই তা নির্মাণ করা উচিত। এখানে সড়ক ও জনপথ, পানি উন্নয়ন বোর্ড, ভূমি অফিস, পরিবেশ অধিদপ্তর, বিএডিসি, উপজেলা প্রশাসনসহ বেশ কয়েকটি দপ্তরের স্বার্থ জড়িত থাকা স্বত্ত্বেও বাঁধাহীনভাবে এতো বড় একটি সেতু নির্মাণ করলো তাও সরকারি খালের উপর!
তিনি আরো বলেন, বিভিন্ন সোর্স থেকে জানতে পেরেছি পানি উন্নয়ন বোর্ডের অনুমতি নিয়েই কাজ করছেন ভদ্রলোক! পানি উন্নয়ন বোর্ড কিভাবে অনুমতি দিয়েছে সেটাই আমাদের প্রশ্ন? এধরনের অনুমতি সরকারি খাল দখল ও ফসলী জমির শ্রেণি পরিবর্তনে সুযোগ করে দিচ্ছে বলে মনে করছি। এধরনের অবৈধ কার্যক্রম বন্ধ হওয়া উচিৎ বলে তিনি মনে করেন।
অন্যদিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা খেলাঘরের সাধারণ সম্পাদক নীহার রঞ্জন সরকার বলেন, দেশে শিল্পায়ন হোক, কর্মসংস্থান হোক আমিও চাই। তবে অকাতরে ফসলি জমি নষ্ট করে, পরিবেশের ক্ষতি করে, জীববৈচিত্র ধ্বংস করে কোন শিল্পায়ন নয়। ক্ষুদ্র লাভের জন্য বৃহৎ স্বার্থ জলাঞ্জলি দিয়ে দেশের উন্নয়ন হবে না। যারা শিল্প বা শিল্পায়ন করতে চান তারা যেন দেশের স্বার্থ ঠিক রেখে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের যথাযথ অনুমোদন নিয়ে কাজ করলে স্বাগত জানাই।
কর্তব্যরত সিকিউটি ইনচার্জ জানান, আমাদের মালিকপক্ষ সংশ্লিষ্ট সকল অনুমতি নিয়েই ব্যাগের কারখানা নির্মাণ করছেন। মালিকপক্ষের কারো সাথে যোগাযোগ করতে চাইলে তিনি জানান কর্তৃপক্ষের নিষেধ রয়েছে।
সরাইল উপজেলার পানিশ্বর ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. আমজাদ হোসেন মালিক পক্ষের পরিচয় দিয়ে বলেন, আমরা এখানে ছয়জন মালিক রয়েছি। আমরা এখানে আন্তর্জাতিক মানের ব্যাগের কারখানা নির্মাণ করছি। এখানে বিদেশি ক্রেতারা আসবেন, আমরা অবৈধভাবে কোনকিছু করার কোন সুযোগ নেই।
 নির্মাণাধীন কারখানার ব্যবস্থাপনা পরিচালক মেহেদী হাসান বলেন, বাংলাদেশে ব্যাগের একমাত্র আমার কারখানাটিই দেশীয় মালিক।
বাকি যা রয়েছে সবই বিদেশি মালিকগণের। এই ব্যাগের কারখানা নির্মাণ হলে এখানে প্রায় দুই হাজার লোকের কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হবে। আমরাতো শ্রেণি পরিবর্তনের জন্য আবেদন করিনি। আর এ খালের উপর আমরা সেতু নির্মাণ করছি পানি উন্নয়ন বোর্ডের অনুমতি নিয়েই। পানি উন্নয়ন বোর্ড আপনাদের পূর্ণাঙ্গ অনুমোদন দেয়নি। আপনাদের কারখানা নির্মাণে খালের উপর দিয়ে মালামাল আনয়নে সুবিধায় এক বছরের জন্য অস্থায়ী সেতু নির্মাণে অনুমোদন দেয়া হয়েছে, সেখানে আপনারা স্থায়ী সেতু নির্মাণ করেছেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা ঢাকা পান্থপথস্থ পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রধান শাখা থেকে পূর্ণাঙ্গ অনুমোদনের জন্য আবেদন করেছি। পূর্ণাঙ্গ অনুমোদন না পেয়েই আপনারা স্থায়ী সেতু নির্মাণ কিভাবে করলেন? এমন প্রশ্ন করা হলে তিনি এড়িয়ে যান। ব্যাগের কারখানাটি বিসিকে করার কোন পরিবেশ নেই তাই খোলা যায়গায় করছি।
সরাইল সদর ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা মো. হুমায়ুন কবির জানান, আমরা বিষয়টি কোনভাবেই অবগত নই। তারা কিভাবে এতবড় কারখানা নির্মাণ করছে তা আমাদের জানা নেই। আমাদের উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) স্যার আমাকে নির্দেশ দিলে আমরা সেখানে গিয়ে কাজটি বন্ধ করে দেই এবং তাদের সকল কাগজপত্র নিয়ে অফিসে আসার জন্য বলে আসি।
 সরাইল উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) কর্মকর্তা ফারহানা নাসরিন জানান, আমরা সেখানে লোক পাঠিয়ে ড্রেজার বন্ধ করে দিয়েছি এবং তাদেরকে সকল কাগজপত্র নিয়ে অফিসে আসার জন্য নির্দেশ দিয়েছি। এ বিষয়ে আমাদের ইউএনও স্যার বিস্তারিত জানেন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রঞ্জন কুমার দাস বলেন, বিষয়টি আমার জানা আছে। তারা সেখানে ব্যাগের কারখানা নির্মঅণ করবে। আমাদের কাছে তারা আবেদন করেছে কারখানা নির্মাণে মালামাল আনয়ন করতে হবে, তাই এখানে যাতায়াতের জন্য একটি সেতু নির্মাণ প্রয়োজন। তার উপর ভিত্তি করে আমরা তাদেরকে মালামাল আনয়নের জন্য অস্থায়ীভাবে ব্যবস্থা করার অনুমতি দিয়েছি যেন, পানি প্রবাহে কোন ব্যাঘাত না ঘটে। তবে তা এক বছরের জন্য অনুমতি দিয়েছি। তারা যদি স্থায়ীভাবে কিছু নির্মাণ করে থাকে তাহলে তা সম্পূর্ণ অবৈধ।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী কর্মকর্তা পংকজ ভৌমিক জানান, এ জায়গা আমাদের। ঢাকা সিলেট মহাসড়ক চার লেনে উন্নীত করা হবে যা একনেকে পাশ হয়েছে এবং আগামী ছয় মাসে তা দরপত্র করা হবে। এখানে স্থায়ী সেতু নির্মাণ করার কোন সুযোগ নেই। এটা যারা করছে তারা অবৈধভাবে করেছে। সেতু নির্মাণে পানি উন্নয়ন বোর্ড কিভাবে অনুমতি দেয়? এটাতো তাদের জায়গা নয়। বিষয়টি আমার বোধগম্য নয়। পানি উন্নয়ন বোর্ডের অবগতির জন্য স্মারক নং নিঃপ্রঃ/বিবা/সি-৬/৯০৭ (২) উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী, সড়ক উপ-বিভাগ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া বরাবর অনুলিপি প্রদান করেছে সেটা কি আপনি গ্রহণ করেননি? এমন প্রশ্ন করা হলে তিনি নিশ্চুপ হয়ে যান।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া পরিবেশ অধিদপ্তরের উপসপরিচালক মো. নূরুল আমীন বলেন, এটা পরিবেশ অধিদপ্তরের কাজ নয়।
সরাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আরিফুল হক মৃদুল জানান, এখানে কে বা কারা ফসলী জমিতে কারখানা নির্মাণ করছে তা আমাদের জানা নেই। আমাদের নিকট এ পর্যন্ত কোন আবেদন করেনি। এটা জেলা প্রশাসক মহোদয়ের নিকট থেকে শ্রেণি পরিবর্তনের আবেদন করতে পারে। খালের উপর সেতু নির্মাণে আমাদের আদেশ নিষেধের কোন প্রয়োজন নেই। কেননা, খালটি পানি উন্নয়ন বোর্ড অথবা সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের। এটা সংশ্লিষ্ট বিভাগই ভাল বলতে পারবে, আমি বা আমরা এ বিষয়ে কিছুই জানি না।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) আশ্রাফ আহমেদ রাসেল প্রতিবেদককে বলেন, নাল জমি (ফসলী জমি) শ্রেণি পরিবর্তনের কোন বিধি নিষেধ নেই। যারা নাল জমির খাজনা দিচ্ছে তারা নাল জমি হিসেবেই খাজনা দিয়ে যাবে। নাল জমিকে বসতবাড়ি বা ভিটা দেখিয়ে খাজনা দেয়ার কোন সুযোগ নেই। যেহেতু সড়ক ও জনপথের জায়গা সেহেতু সেতু নির্মাণের বিষয়টি তারাই ভাল বলতে পারবেন।