বাংলাদেশ ১১:০৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
নোটিশ :

সাংবাদিক নিয়োগ চলছে,, সাংবাদিক নিয়োগ চলছে,,০১৯৯৯-৯৫৩৯৭০, ০১৭১২-৪৪৬৩০৬,০১৭১১-০০৬২১৪ সম্পাদক

     
ব্রেকিং নিউজ ::
চট্টগ্রামে সহ সারা দেশে সাংবাদিকের উপর হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে ‘সিইউজে’ সিংগাইরে সাংবাদিকের চাঁদাবাজি,দুই জন আটক দিনাজপুরে সজনের ডাটার বাম্পার ফলন সাংবাদিক হামলার মামলায় সুদেব মাষ্টার জেল হাজতে প্রেরণ চট্টগ্রাম টেকপাড়া ও এয়াকুব নগরে অগ্নিকান্ডে ক্ষতিগ্রস্থদের মাঝে নগদ অর্থ ও শাড়ি-লুঙ্গি বিতরণ পিরোজপুরের চরখালী ফেরীতে মেট্রোপলিটন পরিবহনের ধাক্কায় ফেরী থেকে একাধিক মোটরসাইকেল নদীতে কটিয়াদীতে সর্বজনীন পেনশন স্কিম অবহিতকরণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত সাত গ্রামের সমর্থিত চেয়ারম্যান প্রার্থী এড. রেজাউল করিম বালিয়াডাঙ্গীতে খাপড়া ওয়ার্ড দিবসে শহীদদের স্মরণে সিপিবির লাল পতাকা মিছিল ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত। স্কুলের জমি দখলের প্রতিবাদে এলাকাবাসীর মানববন্ধন  ঢাকা থেকে ইয়াবা ব্যবসা করতে এসে পীরগঞ্জে আটক চকরিয়ায় নদীতে মাছ ধরতে নেমে নিখোঁজ দুই যুবকের মরদেহ উদ্ধার ঠাকুরগাঁওয়ে সিডিয়ের জনসমাবেশ ও প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি ব্রাহ্মণপাড়ায় বোরো ধান কাটায় ব্যস্ত কৃষকরা  ঠাকুরগাঁওয়ে পুলিশের গাড়ির ধাক্কায় শিশু আহত

অস্তিত্ব সংকটে নদ-নদী ও খাল-বিল!

  • নিজস্ব সংবাদ :
  • আপডেট সময় ০৫:৪৮:২৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৮ মার্চ ২০২২
  • ১৭৪১ বার পড়া হয়েছে

অস্তিত্ব সংকটে নদ-নদী ও খাল-বিল!

মোঃ শহিদুল ইসলাম, টাঙ্গাইল প্রতিনিধিঃ

টাঙ্গাইলে দখল, দূষণ ও অবৈধভাবে ড্রেজিংয়ের কারণে এক সময়ের খরস্রোতা নদ-নদীগুলো এখন সরু খালে পরিণত হয়েছে। “নদী চর খাল বিল গজারির বন, টাঙ্গাইলের শাড়ি তার গরবের ধন” – এই প্রবাদেই পরিচয় মেলে এক সময়ের টান-আইল তথা টাঙ্গাইলের। কিন্তু কালের আবর্তনে এই প্রবাদটি হারিয়ে যেতে বসেছে। সেই নদী, চর, খাল ও বিল এখন আর তেমন একটা চোখে পড়ে না। ক্রমাগত দখল, দূষণ আর মাটি ভরাটের কারণে টাঙ্গাইল জেলা দিয়ে প্রবাহিত নদী, শাখা নদী ও খাল-বিলগুলো অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে। বঙ্গবন্ধু সেতুর নিচ দিয়ে এখন চর জেগে উঠেছে। জেলার নদী, খাল ও বিল দিয়ে এখন আর পাল তুলে নৌকা চলতে দেখা যায় না।

জানা যায়, টাঙ্গাইল জেলা দিয়ে বয়ে যাওয়া ১০টি বড় নদীর মধ্যে শুধুমাত্র যমুনা এখনও তার অস্তিত্ব ধরে রেখেছে। ধলেশ্বরী, বংশাই, লৌহজং, খিরু, যুগনী, ফটিকজানি, এলেংজানি, লাঙ্গুলিয়া ও ঝিনাই এবং শাখা নদীগুলো দখল-দূষণে খালে পরিণত হচ্ছে।

বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, বংশী বা বংশাই নদী পুরাতন ব্রহ্মপুত্রের শাখা নদী। এটির দৈর্ঘ্য মোট ২৩৮ কিলোমিটার। নদীটি জামালপুর জেলার শরীফপুর ইউনিয়ন অংশে প্রবাহিত পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদ থেকে উৎপন্ন হয়ে দক্ষিণে টাঙ্গাইল ও গাজীপুর জেলা অতিক্রম করে সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধের পাশ দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। এ নদী চারটি জেলা যথাক্রমে জামালপুর, টাঙ্গাইল, গাজীপুর ও ঢাকা এবং ১০টি উপজেলা যথাক্রমে জামালপুর সদর, মধুপুর, ঘাটাইল, কালিহাতী, বাসাইল, মির্জাপুর, সখিপুর, কালিয়াকৈর, ধামরাই, সাভার এবং ৩২১টি মৌজার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে।

ঝিনাই নদী বাংলাদেশের উত্তর-কেন্দ্রীয় অঞ্চলের শেরপুর, জামালপুর এবং টাঙ্গাইল জেলার একটি নদী। নদীটির দৈর্ঘ্য ১৩৩ কিলোমিটার, গড় প্রস্থ ৭৬ মিটার এবং নদীটির প্রকৃতি সর্পিলাকার। বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) প্রদত্ত পরিচিতি নম্বর উত্তর-কেন্দ্রীয় অঞ্চলের নদী নং-২১। ঝিনাই নদী জামালপুরের বাউশী থেকে দুটি ভাগে ভাগ হয়ে একটি শাখা ডানদিকে বেঁকে যমুনার পূর্ব পাশ দিয়ে ভূঞাপুর উপজেলার ৭ কি.মি. দক্ষিণ-পশ্চিমে কালিহাতী উপজেলার জোকার চরে ধলেশ্বরীর উৎসমুখের কাছে মিলিত হয়েছে। অপর শাখা দক্ষিণ-পূর্বমূখী হয়ে বাসাইল উপজেলার ফুলকী হয়ে বংশাই নদীতে পতিত হয়েছে। অন্য অংশ দক্ষিণমুখী হয়ে বাসাইলের ফুলকী-আইসড়া, দেউলী, দাপনাজোর, নথখোলা হয়ে দক্ষিণমুখী হয়েছে।

মির্জাপুরের হাটুভাঙ্গা এলাকায় নদী দখল করে ১০-১৫টি ইটভাটা স্থাপন করা হয়েছে। বাসাইলের উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া বংশাই নদীর দুই পারে গড়ে উঠেছে ইটভাটা ও রাইসমিল। লাঙ্গুলিয়া নদী পাড়ের বিশাল এলাকা জুড়ে বানানো হয়েছে অসংখ্য ঘরবাড়ি। অনেক জায়গায় বাঁধ দিয়ে চলছে মাছ চাষ। কালিহাতীর বংশাই, সাপাই, ঝিনাই, ফটিকজানি, লাঙ্গুলিয়া ও নাংলাই নদীর দু’পাড় দখল করে নির্মাণ করা হয়েছে ঘর-বাড়ি, মিল-কারখানা ইত্যাদি।

গোপালপুর উপজেলা সদরের বৈরান নদীর অস্তিত্ব এখন আর নেই বললেই চলে। শুস্ক মৌসুমে নদীর তলদেশে পুরোটাই বোরোর আবাদ হয়। গোপালপুর পৌরসভার অংশে নদীর উভয় পাড় দখল করে বসতবাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছে ভূমিদস্যুরা।

ভূঞাপুর ও বাসাইল উপজেলার উপর দিয়ে বয়ে গেছে ঝিনাই ও বংশাই নদী। বাসাইলের লাঙ্গুলিয়া নদী, মধুপুরের টোকনদী, গোপালপুরের বৈরান নদী, কালিহাতীর নিউ ধলেশ্বরী, এলেংজানি, ফটিকজানি, মির্জাপুরের বংশাই এক সময় ছিল খরশ্রোতা। প্রমত্তা এসব নদী দিয়ে মহাজনী নৌকা চলাচল করতো। নদী পাড়ের জেলেসহ অনেকেই মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করতেন। এসব নদীর অধিকাংশই পলি পড়ে ভরাট হয়ে গেছে। সংস্কারের কোনো উদ্যোগ নেই।

ভূঞাপুর উপজেলা খানুরবাড়ী এলাকায় কয়েকজন জেলের সাথে কথা হয়। তারা জানান, আগে যমুনাসহ আশপাশের বিভিন্ন খাল-বিলে প্রচুর মাছ ছিলো। কিন্তু এখন আর তেমন একটা মাছ পাই না। ফলে আমাদের অনেকই এ পেশা ছেড়ে দিয়ে অন্য পেশায় কাজ করে। আগে বর্ষা মৌসুম ছাড়াও যমুনা নদীতে পানি থাকতো। কিন্তু এখন নদীর মাঝ দিয়ে বেশ কয়েকটি চর জেগে গেছে। যদি পানির প্রবাহ ঠিক থাকতো  তাহলে নদী, খাল-বিলে প্রচুর মাছ পাওয়া যেত।

ভূঞাপুর উপজেলার গোবিন্দাসী এলাকার কয়েকজন বলেন, আগে এই যমুনা নদী পার হতে গিয়ে আমাদের ভয় করতো। এ নদীর যে ডাক ছিলো তা এখন আর শোনা যায় না। এ নদী দিয়ে কত বড় বড় নৌকা, লঞ্চ ও স্টিমার চলতো। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তা শেষ হয়ে গেছে। আগের যমুনা আর এই সময়ের যমুনা অনেক পার্থক্য। বর্তমানে এ নদীতে তো পানিই থাকে না। নদীর অধিকাংশ এলাকায় এখন চর জেগে রয়েছে।

টাঙ্গাইল পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শাজাহান সিরাজ জানান, টাঙ্গাইল জেলার বিভিন্ন স্থানে অনেক নদী ও খাল-বিল রয়েছে। বাসযোগ্য পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় নদী, খাল ও বিল অপরিসীম ভূমিকা রাখে। ধলেশ্বরী, নিউ ধলেশ্বরী, লৌহজং, এলেংজানি, ঝিনাই নদীতে প্রতিবছর পলি জমে। ওই পলি কেটে নেয়া এবং অপরিকল্পিতভাবে মাটি-বালু উত্তোলনের ফলে নদীগুলোর গতিপথ পরিবর্তন হয়। তিনি জানান, নিউ ধলেশ্বরী থেকে বুড়িগঙ্গা পর্যন্ত অবাধ পানি প্রবাহ নিশ্চিত করতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অগ্রাধিকার ভিত্তিক ‘বুড়িগঙ্গা নদী খনন প্রকল্প’ কার্যক্রম শুরু হয়েছে।

জনপ্রিয় সংবাদ

চট্টগ্রামে সহ সারা দেশে সাংবাদিকের উপর হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে ‘সিইউজে’

অস্তিত্ব সংকটে নদ-নদী ও খাল-বিল!

আপডেট সময় ০৫:৪৮:২৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৮ মার্চ ২০২২

মোঃ শহিদুল ইসলাম, টাঙ্গাইল প্রতিনিধিঃ

টাঙ্গাইলে দখল, দূষণ ও অবৈধভাবে ড্রেজিংয়ের কারণে এক সময়ের খরস্রোতা নদ-নদীগুলো এখন সরু খালে পরিণত হয়েছে। “নদী চর খাল বিল গজারির বন, টাঙ্গাইলের শাড়ি তার গরবের ধন” – এই প্রবাদেই পরিচয় মেলে এক সময়ের টান-আইল তথা টাঙ্গাইলের। কিন্তু কালের আবর্তনে এই প্রবাদটি হারিয়ে যেতে বসেছে। সেই নদী, চর, খাল ও বিল এখন আর তেমন একটা চোখে পড়ে না। ক্রমাগত দখল, দূষণ আর মাটি ভরাটের কারণে টাঙ্গাইল জেলা দিয়ে প্রবাহিত নদী, শাখা নদী ও খাল-বিলগুলো অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে। বঙ্গবন্ধু সেতুর নিচ দিয়ে এখন চর জেগে উঠেছে। জেলার নদী, খাল ও বিল দিয়ে এখন আর পাল তুলে নৌকা চলতে দেখা যায় না।

জানা যায়, টাঙ্গাইল জেলা দিয়ে বয়ে যাওয়া ১০টি বড় নদীর মধ্যে শুধুমাত্র যমুনা এখনও তার অস্তিত্ব ধরে রেখেছে। ধলেশ্বরী, বংশাই, লৌহজং, খিরু, যুগনী, ফটিকজানি, এলেংজানি, লাঙ্গুলিয়া ও ঝিনাই এবং শাখা নদীগুলো দখল-দূষণে খালে পরিণত হচ্ছে।

বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, বংশী বা বংশাই নদী পুরাতন ব্রহ্মপুত্রের শাখা নদী। এটির দৈর্ঘ্য মোট ২৩৮ কিলোমিটার। নদীটি জামালপুর জেলার শরীফপুর ইউনিয়ন অংশে প্রবাহিত পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদ থেকে উৎপন্ন হয়ে দক্ষিণে টাঙ্গাইল ও গাজীপুর জেলা অতিক্রম করে সাভারের জাতীয় স্মৃতিসৌধের পাশ দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। এ নদী চারটি জেলা যথাক্রমে জামালপুর, টাঙ্গাইল, গাজীপুর ও ঢাকা এবং ১০টি উপজেলা যথাক্রমে জামালপুর সদর, মধুপুর, ঘাটাইল, কালিহাতী, বাসাইল, মির্জাপুর, সখিপুর, কালিয়াকৈর, ধামরাই, সাভার এবং ৩২১টি মৌজার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে।

ঝিনাই নদী বাংলাদেশের উত্তর-কেন্দ্রীয় অঞ্চলের শেরপুর, জামালপুর এবং টাঙ্গাইল জেলার একটি নদী। নদীটির দৈর্ঘ্য ১৩৩ কিলোমিটার, গড় প্রস্থ ৭৬ মিটার এবং নদীটির প্রকৃতি সর্পিলাকার। বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) প্রদত্ত পরিচিতি নম্বর উত্তর-কেন্দ্রীয় অঞ্চলের নদী নং-২১। ঝিনাই নদী জামালপুরের বাউশী থেকে দুটি ভাগে ভাগ হয়ে একটি শাখা ডানদিকে বেঁকে যমুনার পূর্ব পাশ দিয়ে ভূঞাপুর উপজেলার ৭ কি.মি. দক্ষিণ-পশ্চিমে কালিহাতী উপজেলার জোকার চরে ধলেশ্বরীর উৎসমুখের কাছে মিলিত হয়েছে। অপর শাখা দক্ষিণ-পূর্বমূখী হয়ে বাসাইল উপজেলার ফুলকী হয়ে বংশাই নদীতে পতিত হয়েছে। অন্য অংশ দক্ষিণমুখী হয়ে বাসাইলের ফুলকী-আইসড়া, দেউলী, দাপনাজোর, নথখোলা হয়ে দক্ষিণমুখী হয়েছে।

মির্জাপুরের হাটুভাঙ্গা এলাকায় নদী দখল করে ১০-১৫টি ইটভাটা স্থাপন করা হয়েছে। বাসাইলের উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া বংশাই নদীর দুই পারে গড়ে উঠেছে ইটভাটা ও রাইসমিল। লাঙ্গুলিয়া নদী পাড়ের বিশাল এলাকা জুড়ে বানানো হয়েছে অসংখ্য ঘরবাড়ি। অনেক জায়গায় বাঁধ দিয়ে চলছে মাছ চাষ। কালিহাতীর বংশাই, সাপাই, ঝিনাই, ফটিকজানি, লাঙ্গুলিয়া ও নাংলাই নদীর দু’পাড় দখল করে নির্মাণ করা হয়েছে ঘর-বাড়ি, মিল-কারখানা ইত্যাদি।

গোপালপুর উপজেলা সদরের বৈরান নদীর অস্তিত্ব এখন আর নেই বললেই চলে। শুস্ক মৌসুমে নদীর তলদেশে পুরোটাই বোরোর আবাদ হয়। গোপালপুর পৌরসভার অংশে নদীর উভয় পাড় দখল করে বসতবাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছে ভূমিদস্যুরা।

ভূঞাপুর ও বাসাইল উপজেলার উপর দিয়ে বয়ে গেছে ঝিনাই ও বংশাই নদী। বাসাইলের লাঙ্গুলিয়া নদী, মধুপুরের টোকনদী, গোপালপুরের বৈরান নদী, কালিহাতীর নিউ ধলেশ্বরী, এলেংজানি, ফটিকজানি, মির্জাপুরের বংশাই এক সময় ছিল খরশ্রোতা। প্রমত্তা এসব নদী দিয়ে মহাজনী নৌকা চলাচল করতো। নদী পাড়ের জেলেসহ অনেকেই মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করতেন। এসব নদীর অধিকাংশই পলি পড়ে ভরাট হয়ে গেছে। সংস্কারের কোনো উদ্যোগ নেই।

ভূঞাপুর উপজেলা খানুরবাড়ী এলাকায় কয়েকজন জেলের সাথে কথা হয়। তারা জানান, আগে যমুনাসহ আশপাশের বিভিন্ন খাল-বিলে প্রচুর মাছ ছিলো। কিন্তু এখন আর তেমন একটা মাছ পাই না। ফলে আমাদের অনেকই এ পেশা ছেড়ে দিয়ে অন্য পেশায় কাজ করে। আগে বর্ষা মৌসুম ছাড়াও যমুনা নদীতে পানি থাকতো। কিন্তু এখন নদীর মাঝ দিয়ে বেশ কয়েকটি চর জেগে গেছে। যদি পানির প্রবাহ ঠিক থাকতো  তাহলে নদী, খাল-বিলে প্রচুর মাছ পাওয়া যেত।

ভূঞাপুর উপজেলার গোবিন্দাসী এলাকার কয়েকজন বলেন, আগে এই যমুনা নদী পার হতে গিয়ে আমাদের ভয় করতো। এ নদীর যে ডাক ছিলো তা এখন আর শোনা যায় না। এ নদী দিয়ে কত বড় বড় নৌকা, লঞ্চ ও স্টিমার চলতো। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তা শেষ হয়ে গেছে। আগের যমুনা আর এই সময়ের যমুনা অনেক পার্থক্য। বর্তমানে এ নদীতে তো পানিই থাকে না। নদীর অধিকাংশ এলাকায় এখন চর জেগে রয়েছে।

টাঙ্গাইল পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী শাজাহান সিরাজ জানান, টাঙ্গাইল জেলার বিভিন্ন স্থানে অনেক নদী ও খাল-বিল রয়েছে। বাসযোগ্য পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় নদী, খাল ও বিল অপরিসীম ভূমিকা রাখে। ধলেশ্বরী, নিউ ধলেশ্বরী, লৌহজং, এলেংজানি, ঝিনাই নদীতে প্রতিবছর পলি জমে। ওই পলি কেটে নেয়া এবং অপরিকল্পিতভাবে মাটি-বালু উত্তোলনের ফলে নদীগুলোর গতিপথ পরিবর্তন হয়। তিনি জানান, নিউ ধলেশ্বরী থেকে বুড়িগঙ্গা পর্যন্ত অবাধ পানি প্রবাহ নিশ্চিত করতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের অগ্রাধিকার ভিত্তিক ‘বুড়িগঙ্গা নদী খনন প্রকল্প’ কার্যক্রম শুরু হয়েছে।