বাংলাদেশ ০৬:৩৩ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
নোটিশ :

সাংবাদিক নিয়োগ চলছে,, সাংবাদিক নিয়োগ চলছে,,০১৯৯৯-৯৫৩৯৭০, ০১৭১২-৪৪৬৩০৬,০১৭১১-০০৬২১৪ সম্পাদক

     
ব্রেকিং নিউজ ::
শনিবারের ছুটি ও আমাদের অবস্থান মির্জাগঞ্জে বিনাদোষে দুই নারীকে মারধরের প্রতিবাদে মানববন্ধন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান হলেন যে নারী। নবীনগরে সড়ক ও খালের জায়গা দখলের চলছে মহোৎসব! চট্টগ্রামে সহ সারা দেশে সাংবাদিকের উপর হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে ‘সিইউজে’ সিংগাইরে সাংবাদিকের চাঁদাবাজি,দুই জন আটক দিনাজপুরে সজনের ডাটার বাম্পার ফলন সাংবাদিক হামলার মামলায় সুদেব মাষ্টার জেল হাজতে প্রেরণ চট্টগ্রাম টেকপাড়া ও এয়াকুব নগরে অগ্নিকান্ডে ক্ষতিগ্রস্থদের মাঝে নগদ অর্থ ও শাড়ি-লুঙ্গি বিতরণ পিরোজপুরের চরখালী ফেরীতে মেট্রোপলিটন পরিবহনের ধাক্কায় ফেরী থেকে একাধিক মোটরসাইকেল নদীতে কটিয়াদীতে সর্বজনীন পেনশন স্কিম অবহিতকরণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত সাত গ্রামের সমর্থিত চেয়ারম্যান প্রার্থী এড. রেজাউল করিম বালিয়াডাঙ্গীতে খাপড়া ওয়ার্ড দিবসে শহীদদের স্মরণে সিপিবির লাল পতাকা মিছিল ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত। স্কুলের জমি দখলের প্রতিবাদে এলাকাবাসীর মানববন্ধন  ঢাকা থেকে ইয়াবা ব্যবসা করতে এসে পীরগঞ্জে আটক

৯৪ বছর যাবৎ কোরআন তেলাওয়াত হচ্ছে যে মসজিদে!

  • নিজস্ব সংবাদ :
  • আপডেট সময় ১০:৩৭:৫৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ৬ মার্চ ২০২২
  • ১৮০৪ বার পড়া হয়েছে

মোঃ শহিদুল ইসলাম, টাঙ্গাইল প্রতিনিধিঃ

গত ৯৪ বছরে কতকিছুই না ঘটে গেছে দেশে। এসেছে দুর্ভিক্ষ, মহামারি, প্রাকৃতিক দুর্যোগ, হয়েছে মুক্তিযুদ্ধ। কিন্তু পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ব্যতীত এসবের কোনো কিছুই এক মুহূর্তের জন্যও থামাতে পারেনি ৭০০ বছরের পুরোনো নওয়াব শাহি মসজিদের কোরআন তেলাওয়াত।

টাঙ্গাইলের ধনবাড়ী উপজেলায় অবস্থিত এই মসজিদ এখন মানুষের কৌতূহলের কেন্দ্রবিন্দু।

মসজিদের খতিব ও ইমাম হাফেজ মাওলানা ইদ্রিস হুসাইন জানান, বিরামহীন কোরআন তেলাওয়াত চালিয়ে নিতে মসজিদটিতে সার্বক্ষণিক নিযুক্ত থাকেন পাঁচজন হাফেজ। পালাক্রমে কোরআন তেলাওয়াত করেন তারা।

সেলজুক তুর্কি বংশের ইসপিঞ্জার খাঁ ও মনোয়ার খাঁ নামে দুই ভাই ষোড়শ শতকে এক কক্ষবিশিষ্ট এই মসজিদটি নির্মাণ করেছিলেন। পরে নবাব সৈয়দ নওয়াব আলী চৌধুরী ১১৫ বছর আগে ১০ কাঠা জমির ওপর এটি সম্প্রসারণ করে আধুনিক রূপ দেন।

সংস্কারের আগে মসজিদটির দৈর্ঘ্য ছিল ১৩ দশমিক ৭২ মিটার এবং প্রস্থ ৪ দশমিক ৫৭ মিটার। সংস্কারের মাধ্যমে এটিকে বর্গাকৃতির করা হয়। আর মোগল স্থাপত্য রীতির সঙ্গে মিল রেখে এতে নানা নকশা ও তিনটি বড় গম্বুজ যুক্ত করা হয়।

ছোট-বড় মিলিয়ে মসজিদটিতে মোট গম্বুজের সংখ্যা ৩৪। আর কারুকার্য খচিত বড় মিনার আছে ১০টি। প্রতিটি মিনারের উচ্চতা ছাদ থেকে প্রায় ৩০ ফুট। মাথায় বসানো তামা দিয়ে তৈরি চাঁদ মিনারগুলোর সৌন্দর্য আরো বাড়িয়েছে।

মসজিদের মেঝে আর দেয়ালে কাচের টুকরো দিয়ে নকশাদার মোজাইক করা। মেঝেতে মার্বেল পাথরে খোদাই করা নিপুণ কারুকার্যও নজর কাড়ে। ভেতরের সব জায়গাতেই চীনামাটির টুকরো দিয়ে মোজাইকের মতো করা হয়েছে ফুলেল নকশা।

মসজিদটির ভিত্তিভূমিতে প্রবেশের জন্য চারদিক থেকে চারটি পথ রয়েছে। আর মসজিদের ভেতরে ঢুকতে পূর্ব দিকের বহু খাঁজে চিত্রিত তিনটিসহ উত্তর ও দক্ষিণে একটি করে মোট পাঁচটি প্রবেশপথ রয়েছে। পূর্ব দিকের তিনটি প্রবেশপথ বরাবর মসজিদের পশ্চিমের দেয়ালে তিনটি মিহরাব রয়েছে।

মসজিদে সংরক্ষিত আছে ১৮টি হাঁড়িবাতি। শুরুর দিকে এগুলোয় নারকেল তেলের মাধ্যমে আলো জ্বালানোর ব্যবস্থা করা হতো। একসঙ্গে অন্তত ২০০ মুসল্লি নামাজ আদায় করতে পারেন এই মসজিদে।

সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, পিরের নির্দেশে কবরের আজাব থেকে মুক্তি পেতে ১৯২৭ সালে এই মসজিদে সার্বক্ষণিক কোরআন তেলাওয়াতের ব্যবস্থা করেছিলেন সৈয়দ নওয়াব আলী চৌধুরী। ১৯২৯ সালে মারা যান তিনি।

মসজিদের পাশেই রয়েছে শান বাঁধানো ঘাট ও কবরস্থান। সেখানেই দাফন করা হয়েছে এই নবাব বাহাদুরকে। তার ওয়াকফ করা সম্পদের আয় দিয়েই মসজিদ, পার্শ্ববর্তী মাদ্রাসা ও ঈদগাহ পরিচালিত হয়।

প্রতিদিনই দূর-দূরান্ত থেকে দর্শনার্থীরা ভিড় জমান এই মসজিদটি দেখতে। তারা মসজিদের সৌন্দর্য উপভোগের পাশাপাশি গভীর মনোযোগে কোরআন তেলাওয়াত শোনেন।

ধনবাড়ী উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মোহাম্মদ আসলাম হোসাইন জানান, ঐতিহ্যবাহী এই মসজিদে সব ধরনের সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেবে তার প্রশাসন। আর মসজিদ এলাকায় পর্যটকরা যেন সহজেই যেতে পারেন, সে বিষয়েও নজর দেয়া হবে।

 

 

 

জনপ্রিয় সংবাদ

শনিবারের ছুটি ও আমাদের অবস্থান

৯৪ বছর যাবৎ কোরআন তেলাওয়াত হচ্ছে যে মসজিদে!

আপডেট সময় ১০:৩৭:৫৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ৬ মার্চ ২০২২

মোঃ শহিদুল ইসলাম, টাঙ্গাইল প্রতিনিধিঃ

গত ৯৪ বছরে কতকিছুই না ঘটে গেছে দেশে। এসেছে দুর্ভিক্ষ, মহামারি, প্রাকৃতিক দুর্যোগ, হয়েছে মুক্তিযুদ্ধ। কিন্তু পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ব্যতীত এসবের কোনো কিছুই এক মুহূর্তের জন্যও থামাতে পারেনি ৭০০ বছরের পুরোনো নওয়াব শাহি মসজিদের কোরআন তেলাওয়াত।

টাঙ্গাইলের ধনবাড়ী উপজেলায় অবস্থিত এই মসজিদ এখন মানুষের কৌতূহলের কেন্দ্রবিন্দু।

মসজিদের খতিব ও ইমাম হাফেজ মাওলানা ইদ্রিস হুসাইন জানান, বিরামহীন কোরআন তেলাওয়াত চালিয়ে নিতে মসজিদটিতে সার্বক্ষণিক নিযুক্ত থাকেন পাঁচজন হাফেজ। পালাক্রমে কোরআন তেলাওয়াত করেন তারা।

সেলজুক তুর্কি বংশের ইসপিঞ্জার খাঁ ও মনোয়ার খাঁ নামে দুই ভাই ষোড়শ শতকে এক কক্ষবিশিষ্ট এই মসজিদটি নির্মাণ করেছিলেন। পরে নবাব সৈয়দ নওয়াব আলী চৌধুরী ১১৫ বছর আগে ১০ কাঠা জমির ওপর এটি সম্প্রসারণ করে আধুনিক রূপ দেন।

সংস্কারের আগে মসজিদটির দৈর্ঘ্য ছিল ১৩ দশমিক ৭২ মিটার এবং প্রস্থ ৪ দশমিক ৫৭ মিটার। সংস্কারের মাধ্যমে এটিকে বর্গাকৃতির করা হয়। আর মোগল স্থাপত্য রীতির সঙ্গে মিল রেখে এতে নানা নকশা ও তিনটি বড় গম্বুজ যুক্ত করা হয়।

ছোট-বড় মিলিয়ে মসজিদটিতে মোট গম্বুজের সংখ্যা ৩৪। আর কারুকার্য খচিত বড় মিনার আছে ১০টি। প্রতিটি মিনারের উচ্চতা ছাদ থেকে প্রায় ৩০ ফুট। মাথায় বসানো তামা দিয়ে তৈরি চাঁদ মিনারগুলোর সৌন্দর্য আরো বাড়িয়েছে।

মসজিদের মেঝে আর দেয়ালে কাচের টুকরো দিয়ে নকশাদার মোজাইক করা। মেঝেতে মার্বেল পাথরে খোদাই করা নিপুণ কারুকার্যও নজর কাড়ে। ভেতরের সব জায়গাতেই চীনামাটির টুকরো দিয়ে মোজাইকের মতো করা হয়েছে ফুলেল নকশা।

মসজিদটির ভিত্তিভূমিতে প্রবেশের জন্য চারদিক থেকে চারটি পথ রয়েছে। আর মসজিদের ভেতরে ঢুকতে পূর্ব দিকের বহু খাঁজে চিত্রিত তিনটিসহ উত্তর ও দক্ষিণে একটি করে মোট পাঁচটি প্রবেশপথ রয়েছে। পূর্ব দিকের তিনটি প্রবেশপথ বরাবর মসজিদের পশ্চিমের দেয়ালে তিনটি মিহরাব রয়েছে।

মসজিদে সংরক্ষিত আছে ১৮টি হাঁড়িবাতি। শুরুর দিকে এগুলোয় নারকেল তেলের মাধ্যমে আলো জ্বালানোর ব্যবস্থা করা হতো। একসঙ্গে অন্তত ২০০ মুসল্লি নামাজ আদায় করতে পারেন এই মসজিদে।

সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, পিরের নির্দেশে কবরের আজাব থেকে মুক্তি পেতে ১৯২৭ সালে এই মসজিদে সার্বক্ষণিক কোরআন তেলাওয়াতের ব্যবস্থা করেছিলেন সৈয়দ নওয়াব আলী চৌধুরী। ১৯২৯ সালে মারা যান তিনি।

মসজিদের পাশেই রয়েছে শান বাঁধানো ঘাট ও কবরস্থান। সেখানেই দাফন করা হয়েছে এই নবাব বাহাদুরকে। তার ওয়াকফ করা সম্পদের আয় দিয়েই মসজিদ, পার্শ্ববর্তী মাদ্রাসা ও ঈদগাহ পরিচালিত হয়।

প্রতিদিনই দূর-দূরান্ত থেকে দর্শনার্থীরা ভিড় জমান এই মসজিদটি দেখতে। তারা মসজিদের সৌন্দর্য উপভোগের পাশাপাশি গভীর মনোযোগে কোরআন তেলাওয়াত শোনেন।

ধনবাড়ী উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মোহাম্মদ আসলাম হোসাইন জানান, ঐতিহ্যবাহী এই মসজিদে সব ধরনের সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেবে তার প্রশাসন। আর মসজিদ এলাকায় পর্যটকরা যেন সহজেই যেতে পারেন, সে বিষয়েও নজর দেয়া হবে।