ঢাকা ০২:০০ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৩১ মার্চ ২০২৩, ১৬ চৈত্র ১৪২৯ বঙ্গাব্দ
নোটিশ :
সাংবাদিক নিয়োগ চলছে,, সাংবাদিক নিয়োগ চলছে,, যোগাযোগ: মোবাইল : 01712-446306, 01999-953970
ব্রেকিং নিউজ ::
জেলা বিএনপিতে পাপলুর স্থগিত, দলীয় কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকার নির্দেশ লালপুরে কৃষি বীজ, চেক ও সেলাই মেশিন বিতরণ ভেজাল ও মেয়াদোত্তীর্ণ সেমাই এবং অনুমোদনহীন ও নকল বৈদ্যুতিক তার উৎপাদন, মজুদ ও বিক্রি করায় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানকে র‌্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালতে জরিমানা অভিনব কায়দায় ০২ টি প্রাইভেটকারের গ্যাস সিলিন্ডারের মধ্যে ইয়াবা পাচারকালে ইয়াবাসহ ০৬ জনকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-১ কুমিল্লায় র‌্যাব সদস্যের সহযোগিতায় প্রাণ বাঁচলো ছোট শিশু ইসরাতের র‌্যাব-১ এর ভ্রাম্যমাণ অভিযানে ০২ টি খাবার তৈরী প্রতিষ্ঠান এবং ০২ টি আয়রন রড, শীট বিক্রয় প্রতিষ্ঠান’কে জরিমানা ভান্ডারিয়ায় ইসলামী ব্যাংকের ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত রাজশাহীতে এসআইয়ের ওপর মাদক কারবারির হামলা পুর্বের কমিটি বিলুপ্ত করে ৩১ সদস্য বিশিষ্ট পীরগঞ্জ উপজেলা বিএনপি’র আহবায়ক কমিটি গঠিত হয়েছে যশোরে দুটি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বৈকালিক চেম্বার উদ্বোধন বঙ্গবন্ধু স্মৃতি যাদুঘরে ডিফেন্স ফাইন্যান্স ডিপার্টমেন্টের কন্ট্রোলারের শ্রদ্ধা মুলাদীতে সিনিয়র আইনজীবি মজিবুর রহমান দুলালের মৃত্যুতে বিভিন্ন জনের শোক॥ মুলাদীতে সর্বজনীন কল্যানে ইসলামী ব্যাংকিং শীর্ষক আলোচনা ও ইফতার মাহফিল॥ প্রথম আলো’র সম্পাদকের উপর মামলার ঘটনায় সিলেট জেলা বিএনপির নিন্দা জামালগঞ্জে ব্যানার ফেস্টুন ছেড়ার হিড়িক থানায় জিডি দায়ের

৯৪ বছর যাবৎ কোরআন তেলাওয়াত হচ্ছে যে মসজিদে!

  • নিজস্ব সংবাদ :
  • আপডেট সময় ১০:৩৭:৫৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ৬ মার্চ ২০২২
  • ১৭১৫ বার পড়া হয়েছে

মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে ভিডিও প্রতিযোগিতা: বিস্তারিত ফেইসবুক পেইজে

মোঃ শহিদুল ইসলাম, টাঙ্গাইল প্রতিনিধিঃ

গত ৯৪ বছরে কতকিছুই না ঘটে গেছে দেশে। এসেছে দুর্ভিক্ষ, মহামারি, প্রাকৃতিক দুর্যোগ, হয়েছে মুক্তিযুদ্ধ। কিন্তু পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ব্যতীত এসবের কোনো কিছুই এক মুহূর্তের জন্যও থামাতে পারেনি ৭০০ বছরের পুরোনো নওয়াব শাহি মসজিদের কোরআন তেলাওয়াত।

টাঙ্গাইলের ধনবাড়ী উপজেলায় অবস্থিত এই মসজিদ এখন মানুষের কৌতূহলের কেন্দ্রবিন্দু।

মসজিদের খতিব ও ইমাম হাফেজ মাওলানা ইদ্রিস হুসাইন জানান, বিরামহীন কোরআন তেলাওয়াত চালিয়ে নিতে মসজিদটিতে সার্বক্ষণিক নিযুক্ত থাকেন পাঁচজন হাফেজ। পালাক্রমে কোরআন তেলাওয়াত করেন তারা।

সেলজুক তুর্কি বংশের ইসপিঞ্জার খাঁ ও মনোয়ার খাঁ নামে দুই ভাই ষোড়শ শতকে এক কক্ষবিশিষ্ট এই মসজিদটি নির্মাণ করেছিলেন। পরে নবাব সৈয়দ নওয়াব আলী চৌধুরী ১১৫ বছর আগে ১০ কাঠা জমির ওপর এটি সম্প্রসারণ করে আধুনিক রূপ দেন।

সংস্কারের আগে মসজিদটির দৈর্ঘ্য ছিল ১৩ দশমিক ৭২ মিটার এবং প্রস্থ ৪ দশমিক ৫৭ মিটার। সংস্কারের মাধ্যমে এটিকে বর্গাকৃতির করা হয়। আর মোগল স্থাপত্য রীতির সঙ্গে মিল রেখে এতে নানা নকশা ও তিনটি বড় গম্বুজ যুক্ত করা হয়।

ছোট-বড় মিলিয়ে মসজিদটিতে মোট গম্বুজের সংখ্যা ৩৪। আর কারুকার্য খচিত বড় মিনার আছে ১০টি। প্রতিটি মিনারের উচ্চতা ছাদ থেকে প্রায় ৩০ ফুট। মাথায় বসানো তামা দিয়ে তৈরি চাঁদ মিনারগুলোর সৌন্দর্য আরো বাড়িয়েছে।

মসজিদের মেঝে আর দেয়ালে কাচের টুকরো দিয়ে নকশাদার মোজাইক করা। মেঝেতে মার্বেল পাথরে খোদাই করা নিপুণ কারুকার্যও নজর কাড়ে। ভেতরের সব জায়গাতেই চীনামাটির টুকরো দিয়ে মোজাইকের মতো করা হয়েছে ফুলেল নকশা।

মসজিদটির ভিত্তিভূমিতে প্রবেশের জন্য চারদিক থেকে চারটি পথ রয়েছে। আর মসজিদের ভেতরে ঢুকতে পূর্ব দিকের বহু খাঁজে চিত্রিত তিনটিসহ উত্তর ও দক্ষিণে একটি করে মোট পাঁচটি প্রবেশপথ রয়েছে। পূর্ব দিকের তিনটি প্রবেশপথ বরাবর মসজিদের পশ্চিমের দেয়ালে তিনটি মিহরাব রয়েছে।

মসজিদে সংরক্ষিত আছে ১৮টি হাঁড়িবাতি। শুরুর দিকে এগুলোয় নারকেল তেলের মাধ্যমে আলো জ্বালানোর ব্যবস্থা করা হতো। একসঙ্গে অন্তত ২০০ মুসল্লি নামাজ আদায় করতে পারেন এই মসজিদে।

সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, পিরের নির্দেশে কবরের আজাব থেকে মুক্তি পেতে ১৯২৭ সালে এই মসজিদে সার্বক্ষণিক কোরআন তেলাওয়াতের ব্যবস্থা করেছিলেন সৈয়দ নওয়াব আলী চৌধুরী। ১৯২৯ সালে মারা যান তিনি।

মসজিদের পাশেই রয়েছে শান বাঁধানো ঘাট ও কবরস্থান। সেখানেই দাফন করা হয়েছে এই নবাব বাহাদুরকে। তার ওয়াকফ করা সম্পদের আয় দিয়েই মসজিদ, পার্শ্ববর্তী মাদ্রাসা ও ঈদগাহ পরিচালিত হয়।

প্রতিদিনই দূর-দূরান্ত থেকে দর্শনার্থীরা ভিড় জমান এই মসজিদটি দেখতে। তারা মসজিদের সৌন্দর্য উপভোগের পাশাপাশি গভীর মনোযোগে কোরআন তেলাওয়াত শোনেন।

ধনবাড়ী উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মোহাম্মদ আসলাম হোসাইন জানান, ঐতিহ্যবাহী এই মসজিদে সব ধরনের সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেবে তার প্রশাসন। আর মসজিদ এলাকায় পর্যটকরা যেন সহজেই যেতে পারেন, সে বিষয়েও নজর দেয়া হবে।

 

 

 

জনপ্রিয় সংবাদ

জেলা বিএনপিতে পাপলুর স্থগিত, দলীয় কর্মকাণ্ড থেকে বিরত থাকার নির্দেশ

৯৪ বছর যাবৎ কোরআন তেলাওয়াত হচ্ছে যে মসজিদে!

আপডেট সময় ১০:৩৭:৫৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ৬ মার্চ ২০২২

মোঃ শহিদুল ইসলাম, টাঙ্গাইল প্রতিনিধিঃ

গত ৯৪ বছরে কতকিছুই না ঘটে গেছে দেশে। এসেছে দুর্ভিক্ষ, মহামারি, প্রাকৃতিক দুর্যোগ, হয়েছে মুক্তিযুদ্ধ। কিন্তু পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ব্যতীত এসবের কোনো কিছুই এক মুহূর্তের জন্যও থামাতে পারেনি ৭০০ বছরের পুরোনো নওয়াব শাহি মসজিদের কোরআন তেলাওয়াত।

টাঙ্গাইলের ধনবাড়ী উপজেলায় অবস্থিত এই মসজিদ এখন মানুষের কৌতূহলের কেন্দ্রবিন্দু।

মসজিদের খতিব ও ইমাম হাফেজ মাওলানা ইদ্রিস হুসাইন জানান, বিরামহীন কোরআন তেলাওয়াত চালিয়ে নিতে মসজিদটিতে সার্বক্ষণিক নিযুক্ত থাকেন পাঁচজন হাফেজ। পালাক্রমে কোরআন তেলাওয়াত করেন তারা।

সেলজুক তুর্কি বংশের ইসপিঞ্জার খাঁ ও মনোয়ার খাঁ নামে দুই ভাই ষোড়শ শতকে এক কক্ষবিশিষ্ট এই মসজিদটি নির্মাণ করেছিলেন। পরে নবাব সৈয়দ নওয়াব আলী চৌধুরী ১১৫ বছর আগে ১০ কাঠা জমির ওপর এটি সম্প্রসারণ করে আধুনিক রূপ দেন।

সংস্কারের আগে মসজিদটির দৈর্ঘ্য ছিল ১৩ দশমিক ৭২ মিটার এবং প্রস্থ ৪ দশমিক ৫৭ মিটার। সংস্কারের মাধ্যমে এটিকে বর্গাকৃতির করা হয়। আর মোগল স্থাপত্য রীতির সঙ্গে মিল রেখে এতে নানা নকশা ও তিনটি বড় গম্বুজ যুক্ত করা হয়।

ছোট-বড় মিলিয়ে মসজিদটিতে মোট গম্বুজের সংখ্যা ৩৪। আর কারুকার্য খচিত বড় মিনার আছে ১০টি। প্রতিটি মিনারের উচ্চতা ছাদ থেকে প্রায় ৩০ ফুট। মাথায় বসানো তামা দিয়ে তৈরি চাঁদ মিনারগুলোর সৌন্দর্য আরো বাড়িয়েছে।

মসজিদের মেঝে আর দেয়ালে কাচের টুকরো দিয়ে নকশাদার মোজাইক করা। মেঝেতে মার্বেল পাথরে খোদাই করা নিপুণ কারুকার্যও নজর কাড়ে। ভেতরের সব জায়গাতেই চীনামাটির টুকরো দিয়ে মোজাইকের মতো করা হয়েছে ফুলেল নকশা।

মসজিদটির ভিত্তিভূমিতে প্রবেশের জন্য চারদিক থেকে চারটি পথ রয়েছে। আর মসজিদের ভেতরে ঢুকতে পূর্ব দিকের বহু খাঁজে চিত্রিত তিনটিসহ উত্তর ও দক্ষিণে একটি করে মোট পাঁচটি প্রবেশপথ রয়েছে। পূর্ব দিকের তিনটি প্রবেশপথ বরাবর মসজিদের পশ্চিমের দেয়ালে তিনটি মিহরাব রয়েছে।

মসজিদে সংরক্ষিত আছে ১৮টি হাঁড়িবাতি। শুরুর দিকে এগুলোয় নারকেল তেলের মাধ্যমে আলো জ্বালানোর ব্যবস্থা করা হতো। একসঙ্গে অন্তত ২০০ মুসল্লি নামাজ আদায় করতে পারেন এই মসজিদে।

সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, পিরের নির্দেশে কবরের আজাব থেকে মুক্তি পেতে ১৯২৭ সালে এই মসজিদে সার্বক্ষণিক কোরআন তেলাওয়াতের ব্যবস্থা করেছিলেন সৈয়দ নওয়াব আলী চৌধুরী। ১৯২৯ সালে মারা যান তিনি।

মসজিদের পাশেই রয়েছে শান বাঁধানো ঘাট ও কবরস্থান। সেখানেই দাফন করা হয়েছে এই নবাব বাহাদুরকে। তার ওয়াকফ করা সম্পদের আয় দিয়েই মসজিদ, পার্শ্ববর্তী মাদ্রাসা ও ঈদগাহ পরিচালিত হয়।

প্রতিদিনই দূর-দূরান্ত থেকে দর্শনার্থীরা ভিড় জমান এই মসজিদটি দেখতে। তারা মসজিদের সৌন্দর্য উপভোগের পাশাপাশি গভীর মনোযোগে কোরআন তেলাওয়াত শোনেন।

ধনবাড়ী উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মোহাম্মদ আসলাম হোসাইন জানান, ঐতিহ্যবাহী এই মসজিদে সব ধরনের সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেবে তার প্রশাসন। আর মসজিদ এলাকায় পর্যটকরা যেন সহজেই যেতে পারেন, সে বিষয়েও নজর দেয়া হবে।