বাংলাদেশ ০৫:৫১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
নোটিশ :

সাংবাদিক নিয়োগ চলছে,, সাংবাদিক নিয়োগ চলছে,,০১৯৯৯-৯৫৩৯৭০, ০১৭১২-৪৪৬৩০৬,০১৭১১-০০৬২১৪ সম্পাদক

     
ব্রেকিং নিউজ ::
মির্জাগঞ্জে বৃষ্টি কামনায় ইস্তিস্কার নামাজ আদায় শনিবারের ছুটি ও আমাদের অবস্থান মির্জাগঞ্জে বিনাদোষে দুই নারীকে মারধরের প্রতিবাদে মানববন্ধন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান হলেন যে নারী। নবীনগরে সড়ক ও খালের জায়গা দখলের চলছে মহোৎসব! চট্টগ্রামে সহ সারা দেশে সাংবাদিকের উপর হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে ‘সিইউজে’ সিংগাইরে সাংবাদিকের চাঁদাবাজি,দুই জন আটক দিনাজপুরে সজনের ডাটার বাম্পার ফলন সাংবাদিক হামলার মামলায় সুদেব মাষ্টার জেল হাজতে প্রেরণ চট্টগ্রাম টেকপাড়া ও এয়াকুব নগরে অগ্নিকান্ডে ক্ষতিগ্রস্থদের মাঝে নগদ অর্থ ও শাড়ি-লুঙ্গি বিতরণ পিরোজপুরের চরখালী ফেরীতে মেট্রোপলিটন পরিবহনের ধাক্কায় ফেরী থেকে একাধিক মোটরসাইকেল নদীতে কটিয়াদীতে সর্বজনীন পেনশন স্কিম অবহিতকরণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত সাত গ্রামের সমর্থিত চেয়ারম্যান প্রার্থী এড. রেজাউল করিম বালিয়াডাঙ্গীতে খাপড়া ওয়ার্ড দিবসে শহীদদের স্মরণে সিপিবির লাল পতাকা মিছিল ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত। স্কুলের জমি দখলের প্রতিবাদে এলাকাবাসীর মানববন্ধন 

হত্যা মামলার প্রধান আসামীসহ ০৪ জনকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-৪।

  • নিজস্ব সংবাদ :
  • আপডেট সময় ০৪:১৬:২৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৭ ফেব্রুয়ারী ২০২২
  • ১৬৯৩ বার পড়া হয়েছে

হত্যা মামলার প্রধান আসামীসহ ০৪ জনকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-৪।

 

 

 

 

 

প্রেস বিজ্ঞপ্তি

 

রাজধানীর পল্লবীর চাঞ্চল্যকর জাহিদ হত্যা মামলার প্রধান আসামীসহ ০৪ জনকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-৪।

 

 

র‌্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন, র‌্যাব এলিট ফোর্স হিসেবে আত্মপ্রকাশের সূচনালগ্ন থেকেই বিভিন্ন ধরনের অপরাধ নির্মূলের লক্ষ্যে অত্যন্ত আন্তরিকতা ও নিষ্ঠার সাথে কাজ করে আসছে। সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ নির্মূল ও মাদকবিরোধী অভিযানের পাশাপাশি খুন, চাঁদাবাজি, চুরি, ডাকাতি ও ছিনতাই চক্রের সাথে জড়িত বিভিন্ন সংঘবদ্ধ ও সক্রিয় সন্ত্রাসী বাহিনীর সদস্যদের গ্রেফতার করে সাধারণ জনগণের শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বিনির্মাণের লক্ষ্যে র‌্যাবের জোড়ালো তৎপরতা অব্যাহত আছে। এছাড়াও সাম্প্রতিক সময়ে বেশ কয়েকটি ক্লু-লেস হত্যা কান্ডের রহস্য উন্মোচনপূর্বক হত্যাকারীদেরকে গ্রেফতার করে দেশের সর্বস্তরের মানুষের কাছে সুনাম অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে।

https://youtu.be/LL5Qg6AAiRY

 

গত ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২২ তারিখ রাত ১০.১০ ঘটিকার সময় পল্লবী থানাধীন বক্ল- সি, কাঁচা বাজার পেঁয়াজ পট্টি এলাকায় একটি নৃশংস হত্যা কান্ড সংঘটিত হয়। উক্ত হত্যা কান্ডে নিহত জাহিদ হাসান এর বাবা হানিফ খাঁন বাদী হয়ে পল্লবী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করে। ঘটনাটি প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক্স মিডিয়াসহ এলাকায় ব্যপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। যার ফলশ্রুতিতে র‌্যাব-৪ এর একটি গোয়েন্দা দল পুলিশের পাশাপাশি ছায়া তদন্ত শুরু করে।

 

 

এরই ধারাবাহিকতায় র‌্যাব গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে গত ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ইং তারিখ রাত হতে অদ্য ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২২ তারিখ ০৭.৪৫ ঘটিকা পর্যন্ত র‌্যাব-৪ এর একটি চৌকস আভিযানিক দল রাজধানীর পল্লবী, নারায়নগঞ্জ জেলার সিদ্ধিরগঞ্জ এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর থানাধীন এলাকায় সাঁড়াশি অভিযান পরিচালনা করে উক্ত চাঞ্চল্যকর হত্যার রহস্য উদঘাটনপূর্বক নিম্নোক্ত ০৪ জন হত্যাকারী’কে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়ঃ (ক) মোঃ ইফরান @ ডামরু (২৪), জেলা- ঢাকা। (খ) মোঃ ডলার হোসেন @ ডলার (২৫), জেলা- ঢাকা। (গ) মোঃ রাজা হোসেন (২২), জেলা- ঢাকা। (ঘ) মোঃ কোরবান (২৫), জেলা- ঢাকা।

 

প্রাথমিক অনুসন্ধানে জানা যায়, ভিকটিম জাহিদ হাসান (২৫) পল্লবী থানাধীন বেনারশী পট্টি এলাকায় স্বপরিবারে বসবাস করতো। সে মূলত পেশায় একজন বাস চালক ছিলো, তবে করোনা পরিস্থিতির কারণে যানবাহন চলাচল সীমিত হওয়ায় পেশা পরিবর্তন করে মাছ ব্যবসা শুরু করে। ব্যক্তিগত জীবনে সে বিবাহিত এবং এক কন্যা সন্তানের জনক।

 

 

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ধৃত আসামীগন জানায় যে, নিহত জাহিদ ও গ্রেফতারকৃত ব্যক্তিরা একই এলাকার বাসিন্দা। এলাকাটি ননবাঙ্গালী বিহারী ক্যাম্প (জল্লা ক্যাম্প, মুসলিম ক্যাম্প ও মিল্লাত ক্যাম্প) এর আওতাধীন। উক্ত এলাকায় মাদকের অপব্যবহার সহ গ্যাং কালচারের প্রবনতা রয়েছে। উক্ত এলাকায় সিনিয়র গ্রুপ ও জুনিয়র গ্রুপ নামে দুইটি গ্রুপ রয়েছে যারা এলাকায় চুরি-ছিনতাই, চাঁদাবাজিসহ মাদক সেবন ও মাদক ব্যবসায় লিপ্ত থাকে।

 

 

উক্ত গ্রুপ দুইটি এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সার্বক্ষনিক দাঙ্গা হাঙ্গামায় লিপ্ত থাকে। নিহত জাহিদ জুনিয়র গ্রুপের অর্ন্তভুক্ত ছিল এবং গ্রেফতারকৃত আসামীগন সিনিয়র গ্রুপের সদস্য। ঘটনার দিন সন্ধ্যায় প্রথমে জুনিয়র গ্রুপ সিনিয়র গ্রুপের ইমরান আলীর সাথে মাদক সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে বাকবিতন্ডা হলে জুনিয়র গ্রুপের ৫/৬ জন সদস্য ইমরান আলীকে চর-থাপ্পর মারে।

 

 

উক্ত সংবাদটি জানতে পেরে সিনিয়র গ্রুপের প্রধান মোঃ ইফরান @ ডামরু ও মোঃ ডলার হোসেন @ ডলার নেতৃত্বে একই দিন রাত ১০.০০ ঘটিকার দিকে সিনিয়র গ্রুপের ১৫/১৬ জন সদস্য দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র (ছুরি, সুইস গিয়ার, হকি স্টিক, এসএস পাইপ, লোহার রড) নিয়ে কাঁচা বাজার পেঁয়াজ পট্টি এলাকায় অবস্থানরত জুনিয়র গ্রুপের ৫/৬ জনের উপর অতর্কিত আক্রমণ করে।

 

 

সেসময় উক্ত মামলার এজাহারনামীয় আসামী মিঠুন, কামরান, ডলার, রাজা ও কোরবানসহ আরো কয়েক জন হকি স্টিক, এসএস পাইপ এবং রড দিয়ে ভিকটিম জাহিদসহ অন্যান্যদের উপর আক্রমন করে। মিঠুন, ডলার ও কামরানের এলোপাতাড়ি আঘাতে ভিকটিম জাহিদ ভারসাম্য হারিয়ে ফেললে মামলার প্রধান আসামী মোঃ ইফরান @ ডামরু তার হাতে থাকা ধারালো সুইস গিয়ার (চাকু) দিয়ে ভিকটিমের পেটে ছুরিকাঘাত করলে সে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে এবং নারীভুড়ি বের হয়ে প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়।

 

 

 

ঘটনাস্থলে ভিকটিম জাহিদ ছাড়াও জুনিয়র গ্রুপের সদস্য মোঃ কামরান (২২) এবং হাসান (২৩) গুরুতর আহত হয়। পরবর্তীতে স্থানীয় লোকজন ভিকটিম জাহিদসহ আহতদেরকে নিকটস্থ হাসপাতালে নিয়ে যায়। আহতদের মধ্যে ভিকটিম জাহিদের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাকে পরবর্তীতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে প্রেরণ করা হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক জাহিদকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। গ্রেফতারকৃত ব্যক্তিরা সকলেই উক্ত হত্যা কান্ডের সাথে জড়িত মর্মে স্বীকার করে।

 

 

 

গ্রেফতারকৃত প্রধান আসামী মোঃ ইফরান @ ডামরু (২৪), রাজধানীর পল্লবী থানাধীন জল্লাক্যাম্পে বসবাস করে। সে জুতার কারখানায় কাজ করলেও এলাকায় সিনিয়র গ্রুপের নেতৃত্বস্থানীয় সদস্য হিসেবে প্রকাশ্যে চুরি-ছিনতাই এবং মাদক ব্যবসার সাথে জড়িত আছে বলে জানা যায়।

 

 

সে নিজেও একজন নিয়মিত মাদকসেবী। মূলত মাদকের অর্থ যোগানের জন্য নানাবিধ অপকর্মে লিপ্ত। গ্রেফতারকৃত মোঃ ডলার হোসেন @ ডলার (২৫), রাজধানীর পল্লবী থানাধীন জল্লাক্যাম্পে বসবাস করে। সে স্থানীয় একটি স্কুল হতে ৫ম শ্রেণী পর্যন্ত পড়াশোনা করেছে এবং পরবর্তীতে একটি ডিমের দোকানের কর্মচারী হিসেবে কাজ করে। সে সিনিয়র গ্রুপের একজন সক্রিয় সদস্য এবং বিভিন্ন মাদকদ্রব্য সেবন করে থাকে।

 

 

গ্রেফতারকৃত মোঃ রাজা হোসেন (২২), রাজধানীর পল্লবী থানাধীন মুসলিম ক্যাম্পে বসবাস করে। সে স্থানীয় একটি কলেজ হতে ২০১৯ সালে বিএ পাশ করে একটি এনজিওতে মাঠকর্মী হিসেবে চাকুরি করে। সে সিনিয়র গ্রুপের একজন সক্রিয় সদস্য। গ্রেফতারকৃত মোঃ কোরবান (২৫), রাজধানীর পল্লবী থানাধীন জল্লাক্যাম্পে বসবাস করে। সে মিষ্টির দোকানে কাজ করলেও এলাকায় সিনিয়র গ্রুপের সক্রিয় সদস্য এবং চুরি-ছিনতাই, এবং মাদক ব্যবসার সাথে জড়িত আছে বলে জানা যায়। সে নিজেও একজন নিয়মিত মাদকসেবী। মূলত মাদকের অর্থ যোগানের জন্য বিভিন্ন অপকর্মে লিপ্ত।

 

 

গ্রেফতারকৃত আসামীদের বিরুদ্ধে রাজধানীর বিভিন্ন থানায় বিস্ফোরক, মাদক, চুরি-ছিনতাই ও মারামারির একাধিক মামলা রয়েছে। গ্রেফতারকৃত আসামীদের’কে প্রয়োজনীয় আইনানুগ কার্যক্রমের জন্য পল্লবী থানায় হস্তান্তর কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন। এছাড়াও উক্ত হত্যা কান্ডের সাথে জড়িত অন্যান্য পলাতক আসামীদেরকে গ্রেফতাররের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। জুনিয়র গ্রুপের বিষয়েও অনুসন্ধান চলমান রয়েছে।

 

 

উভয় গ্রুপের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান চলমান কোন অভিযোগ পাওয়া গেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। এই ধরনের নৃশংস অপরাধীদের বিরুদ্ধে র‌্যাবের জোড়ালো অভিযান অব্যাহত থাকবে। (মোঃ জিয়াউর রহমান চৌধুরী) সহকারী পুলিশ সুপার সহকারী পরিচালক (মিডিয়া অফিসার) পক্ষে পরিচালক

 

 

 

 

জনপ্রিয় সংবাদ

মির্জাগঞ্জে বৃষ্টি কামনায় ইস্তিস্কার নামাজ আদায়

হত্যা মামলার প্রধান আসামীসহ ০৪ জনকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-৪।

আপডেট সময় ০৪:১৬:২৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৭ ফেব্রুয়ারী ২০২২

 

 

 

 

 

প্রেস বিজ্ঞপ্তি

 

রাজধানীর পল্লবীর চাঞ্চল্যকর জাহিদ হত্যা মামলার প্রধান আসামীসহ ০৪ জনকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-৪।

 

 

র‌্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন, র‌্যাব এলিট ফোর্স হিসেবে আত্মপ্রকাশের সূচনালগ্ন থেকেই বিভিন্ন ধরনের অপরাধ নির্মূলের লক্ষ্যে অত্যন্ত আন্তরিকতা ও নিষ্ঠার সাথে কাজ করে আসছে। সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ নির্মূল ও মাদকবিরোধী অভিযানের পাশাপাশি খুন, চাঁদাবাজি, চুরি, ডাকাতি ও ছিনতাই চক্রের সাথে জড়িত বিভিন্ন সংঘবদ্ধ ও সক্রিয় সন্ত্রাসী বাহিনীর সদস্যদের গ্রেফতার করে সাধারণ জনগণের শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বিনির্মাণের লক্ষ্যে র‌্যাবের জোড়ালো তৎপরতা অব্যাহত আছে। এছাড়াও সাম্প্রতিক সময়ে বেশ কয়েকটি ক্লু-লেস হত্যা কান্ডের রহস্য উন্মোচনপূর্বক হত্যাকারীদেরকে গ্রেফতার করে দেশের সর্বস্তরের মানুষের কাছে সুনাম অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে।

https://youtu.be/LL5Qg6AAiRY

 

গত ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২২ তারিখ রাত ১০.১০ ঘটিকার সময় পল্লবী থানাধীন বক্ল- সি, কাঁচা বাজার পেঁয়াজ পট্টি এলাকায় একটি নৃশংস হত্যা কান্ড সংঘটিত হয়। উক্ত হত্যা কান্ডে নিহত জাহিদ হাসান এর বাবা হানিফ খাঁন বাদী হয়ে পল্লবী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করে। ঘটনাটি প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক্স মিডিয়াসহ এলাকায় ব্যপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। যার ফলশ্রুতিতে র‌্যাব-৪ এর একটি গোয়েন্দা দল পুলিশের পাশাপাশি ছায়া তদন্ত শুরু করে।

 

 

এরই ধারাবাহিকতায় র‌্যাব গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে গত ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ইং তারিখ রাত হতে অদ্য ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২২ তারিখ ০৭.৪৫ ঘটিকা পর্যন্ত র‌্যাব-৪ এর একটি চৌকস আভিযানিক দল রাজধানীর পল্লবী, নারায়নগঞ্জ জেলার সিদ্ধিরগঞ্জ এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর থানাধীন এলাকায় সাঁড়াশি অভিযান পরিচালনা করে উক্ত চাঞ্চল্যকর হত্যার রহস্য উদঘাটনপূর্বক নিম্নোক্ত ০৪ জন হত্যাকারী’কে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়ঃ (ক) মোঃ ইফরান @ ডামরু (২৪), জেলা- ঢাকা। (খ) মোঃ ডলার হোসেন @ ডলার (২৫), জেলা- ঢাকা। (গ) মোঃ রাজা হোসেন (২২), জেলা- ঢাকা। (ঘ) মোঃ কোরবান (২৫), জেলা- ঢাকা।

 

প্রাথমিক অনুসন্ধানে জানা যায়, ভিকটিম জাহিদ হাসান (২৫) পল্লবী থানাধীন বেনারশী পট্টি এলাকায় স্বপরিবারে বসবাস করতো। সে মূলত পেশায় একজন বাস চালক ছিলো, তবে করোনা পরিস্থিতির কারণে যানবাহন চলাচল সীমিত হওয়ায় পেশা পরিবর্তন করে মাছ ব্যবসা শুরু করে। ব্যক্তিগত জীবনে সে বিবাহিত এবং এক কন্যা সন্তানের জনক।

 

 

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ধৃত আসামীগন জানায় যে, নিহত জাহিদ ও গ্রেফতারকৃত ব্যক্তিরা একই এলাকার বাসিন্দা। এলাকাটি ননবাঙ্গালী বিহারী ক্যাম্প (জল্লা ক্যাম্প, মুসলিম ক্যাম্প ও মিল্লাত ক্যাম্প) এর আওতাধীন। উক্ত এলাকায় মাদকের অপব্যবহার সহ গ্যাং কালচারের প্রবনতা রয়েছে। উক্ত এলাকায় সিনিয়র গ্রুপ ও জুনিয়র গ্রুপ নামে দুইটি গ্রুপ রয়েছে যারা এলাকায় চুরি-ছিনতাই, চাঁদাবাজিসহ মাদক সেবন ও মাদক ব্যবসায় লিপ্ত থাকে।

 

 

উক্ত গ্রুপ দুইটি এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে সার্বক্ষনিক দাঙ্গা হাঙ্গামায় লিপ্ত থাকে। নিহত জাহিদ জুনিয়র গ্রুপের অর্ন্তভুক্ত ছিল এবং গ্রেফতারকৃত আসামীগন সিনিয়র গ্রুপের সদস্য। ঘটনার দিন সন্ধ্যায় প্রথমে জুনিয়র গ্রুপ সিনিয়র গ্রুপের ইমরান আলীর সাথে মাদক সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে বাকবিতন্ডা হলে জুনিয়র গ্রুপের ৫/৬ জন সদস্য ইমরান আলীকে চর-থাপ্পর মারে।

 

 

উক্ত সংবাদটি জানতে পেরে সিনিয়র গ্রুপের প্রধান মোঃ ইফরান @ ডামরু ও মোঃ ডলার হোসেন @ ডলার নেতৃত্বে একই দিন রাত ১০.০০ ঘটিকার দিকে সিনিয়র গ্রুপের ১৫/১৬ জন সদস্য দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র (ছুরি, সুইস গিয়ার, হকি স্টিক, এসএস পাইপ, লোহার রড) নিয়ে কাঁচা বাজার পেঁয়াজ পট্টি এলাকায় অবস্থানরত জুনিয়র গ্রুপের ৫/৬ জনের উপর অতর্কিত আক্রমণ করে।

 

 

সেসময় উক্ত মামলার এজাহারনামীয় আসামী মিঠুন, কামরান, ডলার, রাজা ও কোরবানসহ আরো কয়েক জন হকি স্টিক, এসএস পাইপ এবং রড দিয়ে ভিকটিম জাহিদসহ অন্যান্যদের উপর আক্রমন করে। মিঠুন, ডলার ও কামরানের এলোপাতাড়ি আঘাতে ভিকটিম জাহিদ ভারসাম্য হারিয়ে ফেললে মামলার প্রধান আসামী মোঃ ইফরান @ ডামরু তার হাতে থাকা ধারালো সুইস গিয়ার (চাকু) দিয়ে ভিকটিমের পেটে ছুরিকাঘাত করলে সে মাটিতে লুটিয়ে পড়ে এবং নারীভুড়ি বের হয়ে প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়।

 

 

 

ঘটনাস্থলে ভিকটিম জাহিদ ছাড়াও জুনিয়র গ্রুপের সদস্য মোঃ কামরান (২২) এবং হাসান (২৩) গুরুতর আহত হয়। পরবর্তীতে স্থানীয় লোকজন ভিকটিম জাহিদসহ আহতদেরকে নিকটস্থ হাসপাতালে নিয়ে যায়। আহতদের মধ্যে ভিকটিম জাহিদের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাকে পরবর্তীতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে প্রেরণ করা হয়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক জাহিদকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। গ্রেফতারকৃত ব্যক্তিরা সকলেই উক্ত হত্যা কান্ডের সাথে জড়িত মর্মে স্বীকার করে।

 

 

 

গ্রেফতারকৃত প্রধান আসামী মোঃ ইফরান @ ডামরু (২৪), রাজধানীর পল্লবী থানাধীন জল্লাক্যাম্পে বসবাস করে। সে জুতার কারখানায় কাজ করলেও এলাকায় সিনিয়র গ্রুপের নেতৃত্বস্থানীয় সদস্য হিসেবে প্রকাশ্যে চুরি-ছিনতাই এবং মাদক ব্যবসার সাথে জড়িত আছে বলে জানা যায়।

 

 

সে নিজেও একজন নিয়মিত মাদকসেবী। মূলত মাদকের অর্থ যোগানের জন্য নানাবিধ অপকর্মে লিপ্ত। গ্রেফতারকৃত মোঃ ডলার হোসেন @ ডলার (২৫), রাজধানীর পল্লবী থানাধীন জল্লাক্যাম্পে বসবাস করে। সে স্থানীয় একটি স্কুল হতে ৫ম শ্রেণী পর্যন্ত পড়াশোনা করেছে এবং পরবর্তীতে একটি ডিমের দোকানের কর্মচারী হিসেবে কাজ করে। সে সিনিয়র গ্রুপের একজন সক্রিয় সদস্য এবং বিভিন্ন মাদকদ্রব্য সেবন করে থাকে।

 

 

গ্রেফতারকৃত মোঃ রাজা হোসেন (২২), রাজধানীর পল্লবী থানাধীন মুসলিম ক্যাম্পে বসবাস করে। সে স্থানীয় একটি কলেজ হতে ২০১৯ সালে বিএ পাশ করে একটি এনজিওতে মাঠকর্মী হিসেবে চাকুরি করে। সে সিনিয়র গ্রুপের একজন সক্রিয় সদস্য। গ্রেফতারকৃত মোঃ কোরবান (২৫), রাজধানীর পল্লবী থানাধীন জল্লাক্যাম্পে বসবাস করে। সে মিষ্টির দোকানে কাজ করলেও এলাকায় সিনিয়র গ্রুপের সক্রিয় সদস্য এবং চুরি-ছিনতাই, এবং মাদক ব্যবসার সাথে জড়িত আছে বলে জানা যায়। সে নিজেও একজন নিয়মিত মাদকসেবী। মূলত মাদকের অর্থ যোগানের জন্য বিভিন্ন অপকর্মে লিপ্ত।

 

 

গ্রেফতারকৃত আসামীদের বিরুদ্ধে রাজধানীর বিভিন্ন থানায় বিস্ফোরক, মাদক, চুরি-ছিনতাই ও মারামারির একাধিক মামলা রয়েছে। গ্রেফতারকৃত আসামীদের’কে প্রয়োজনীয় আইনানুগ কার্যক্রমের জন্য পল্লবী থানায় হস্তান্তর কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন। এছাড়াও উক্ত হত্যা কান্ডের সাথে জড়িত অন্যান্য পলাতক আসামীদেরকে গ্রেফতাররের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। জুনিয়র গ্রুপের বিষয়েও অনুসন্ধান চলমান রয়েছে।

 

 

উভয় গ্রুপের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান চলমান কোন অভিযোগ পাওয়া গেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। এই ধরনের নৃশংস অপরাধীদের বিরুদ্ধে র‌্যাবের জোড়ালো অভিযান অব্যাহত থাকবে। (মোঃ জিয়াউর রহমান চৌধুরী) সহকারী পুলিশ সুপার সহকারী পরিচালক (মিডিয়া অফিসার) পক্ষে পরিচালক