স্টাফ রিপোর্টার-
নওগাঁয় তাঁত বস্ত্র ও কুটির শিল্প মেলায় লটারীর নামে প্রকাশ্য জুয়া বন্ধ ও ডিস কেবল নেটওয়ার্ক লাইনে প্রচার বন্ধের দাবীতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
৮ জুন (বুধবার) সকাল ১১ টায় নওগাঁ জেলা প্রশাসক অফিস চত্বরে সর্বশ্রেণি মানুষের উপস্থিতিতে এ মানববন্ধনটি অনুষ্ঠিত হয়।
মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন ইসমাইল হোসেন -সভাপতি বাউল ঐক্য পরিষদ। আরাফাত রহমান হিমেল, সভাপতি স্বপ্ন সারথি পাবলিক লাইব্রেরি। রামিম দেওয়ান, সাবেক সদস্য সচিব নওগাঁ জেলা সাংবাদিক ইউনিয়ন। সাইফুল ওয়াদুদ, আহবায়ক, নওগাঁ জেলা শিশু কিশোর খেলাঘর।মিজানুর রহমান, সভাপতি নওগা শহর ছাত্রফ্রন্ট।
এ সময় বক্তারা বলেন, ১০ টাকার সিগারের থেকে যেমন পর্যায়ক্রমে একজন মাদক সেবি হয়ে উঠে ঠিক তেমনি বর্তমানে ছাত্র, কিশোর, যুবক সহ নানান শ্রেণির মানুষদের ২০ টাকার লটারী মাধ্যমে আশক্ত করা হচ্ছে যা পরবর্তী প্রজন্মকে ক্যাসিনো জুয়ার দিকে ধাবিত করবে। তাছাড়া দ্রুত এ লটারী নামে জুয়া বন্ধের দাবী জানান বক্তারা।
জানা যায়, নওগাঁ জেলা সদরের পার নওগাঁ (ফায়ার সার্ভিস এর পেছনে) মাসব্যাপী তাঁত বস্ত্র ও কুটির শিল্প মেলায় লটারীর নামে প্রকাশ্য জুয়া চলছে গত ১৪ দিন ধরে। বর্তমানে সিএনজি অটো রিকশা, ৮-১০ টি পালসার সহ নানান ব্রান্ডের মোটর সাইকেল, সোনার গহনা সহ নানান লোভনীয় পুরষ্কারের সমাহারে নওগাঁয় ডিস কেবল নেটওয়ার্কে সরাসরি লটারী খেলার ড্রঃ প্রচারের মাধ্যমে জনসাধারণকে টিকেট কাটতে উৎসাহিত করা হচ্ছে। পরবর্তীতে প্রতি গাড়িতে ১০০০ (এক হাজার) টিকেট সহ সর্বমোট ৩৫০ টি ভ্রাম্যমান গাড়িতে জেলার বিভিন্ন উপজেলার আনাচে কানাচে টিকিট বিক্রয় করে লক্ষ লক্ষ টাকা উঠিয়ে নেওয়া হচ্ছে। সারাদিনের উপার্জিত প্রায় সকটুকু টাকা দিয়ে লটারির টিকেট কেটে ফাঁকা পকেটে বাড়ি ফিরছের জেলার এক শ্রেণির মানুষ। দিন শেষে লটারীতে বিজয়ী না হতে পেরে নতুন স্বপ্নে আগামী দিনে পুরষ্কার পাবার আশায় উপার্জিত টাকা দিয়ে পুনরায় টিকেট কাটছেন মানুষ।
নওগাঁ জেলা সদরের রিকশা চালক মোরশেদ হোসেন এর সাথে কথা হলে তিনি জানান, গতকাল ৪৩৫ টাকা ইনকাম করেছি যার মধ্যে টিকেট কিনেছি ১৮ টি, ৩৬০ টাকার। আজ ১০ টি কাটবো।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক যুবক জানান, মোটর সাইকেল এর আশায় আমি প্রতিদিন ৫-৭ টা করে টিকেট কাটি কিন্তু একদিনও পাইনী। তাছাড়া আমার পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা প্রতিদিন টিকেট ক্রয় করে।
বর্তমান বাংলাদেশে দ্রব্যমূল্য দিন দিন বেড়েই চলেছে, দ্রব্যমূল্যের এ ঊর্ধ্বগতি ঠেকাতে ইতমধ্যে সরকার নানান পদক্ষেপ হাতে নিয়েছে। এমন সময়ে এই লটারী নামে জুয়াতে মানুষ প্রতিদিন লক্ষ লক্ষ টাকা ঢালছে, যার ফলে নওগাঁ জেলা কিছুদিনের মধ্যেই ব্যাপক অর্থনৈতিক ক্ষতির সম্মুখে পরবে বলে মনে করছেন সচেতন মহল।