বাংলাদেশ ১০:২৮ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
নোটিশ :

সাংবাদিক নিয়োগ চলছে,, সাংবাদিক নিয়োগ চলছে,,০১৯৯৯-৯৫৩৯৭০, ০১৭১২-৪৪৬৩০৬,০১৭১১-০০৬২১৪ সম্পাদক

     
ব্রেকিং নিউজ ::
মুন্সীগঞ্জ সদর ইউএনওর চরডুমুরিয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিদর্শন সন্ধ্যার মধ্যে উপাচার্য, শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বাসভবন ছাড়ার আল্টিমেটাম কুবি শিক্ষার্থীদের রাবিতে জড়ো হওয়া আন্দোলনকারীদের পুলিশ-বিজিবির ধাওয়া মেহেন্দিগঞ্জে অজ্ঞাতনামা নারীর অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার। মুন্সীগঞ্জে গায়েবানা জানাযা থেকে ঈমাম ও বিএনপি নেতাকে ধরে নিয়ে গেলো পুলিশ কোটা আন্দোলনের পক্ষে সংহতি জানিয়ে ফেনী ইউনিভার্সিটির বর্তমান ও প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের বিবৃতি চলমান পরিস্থিতিতে রাবি ক্যাম্পাসে ছাত্র রাজনীতি আপাতত স্থগিত: উপাচার্য বিদেশের পাঠানো টাকা চাইতে গিয়ে বিপাকে প্রবাসী স্বামী রাজশাহীতে ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে পবিত্র আশুরা পালিত চট্রগ্রামের কোটা সংস্কার আন্দোলনে নিহত ওয়াসিমের জানাজায় মানুষের ঢল পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া পৌরসভার রাস্তায় সমবায় সমিতি ভবনের ট্যাংকির ময়লা: জনদুর্ভোগ মুন্সীগঞ্জে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের উপর হামলা, আহত ৫ হরিপুরে, প্রগতি লাইফ ইন্স্যুরেন্স লিমিটেড এর পক্ষ থেকে কর্মী মিটিং ও গ্রাহক সমাবেশ অনুষ্ঠিত। গৌরীপুরে উদীচী কার্য়ালয়ে হামলা ও ভাংচুর স্ত্রীর যৌতুক মামলায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক কারাগারে

বেবুদ রাজার দিঘি কৌতুহলময় রহস্যে ঘেরা।

  • নিজস্ব সংবাদ :
  • আপডেট সময় ০৪:৪৯:১১ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৬ ফেব্রুয়ারী ২০২২
  • ১৭৯৭ বার পড়া হয়েছে

বেবুদ রাজার দিঘি কৌতুহলময় রহস্যে ঘেরা।

মাহফুজ রাজা, কিশোরগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি ;
বার ভূঁইয়াখ্যাত ঈশাখাঁর বীরত্বপূর্ণ ইতিহাসের অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জ উপজেলার জঙ্গলবাড়ির সঙ্গে পাকুন্দিয়া উপজেলার এগারসিন্দুরের নামটিও সমভাবে উচ্চারিত হয়ে আসছে। পাকুন্দিয়া উপজেলা সদর থেকে প্রায় আট কিলোমিটার দূরে এগারসিন্দুর। গ্রামের নামেই পাকুন্দিয়ার এই ইউনিয়নের নাম।
এখানে রয়েছে এগারসিন্দুর দুর্গ যেটি দখল করে কৌশলগত অবস্থান নিয়ে বীর ঈশাখাঁ মোগলদের সঙ্গে যুদ্ধবিগ্রহ করেছিলেন। লাল মাটি, সবুজ গাছগাছালি আর ঐতিহাসিক নিদর্শনে সমৃদ্ধ এগারসিন্দুর। এটি ছিল ঈশা খাঁর শক্ত ঘাঁটি।
জনশ্রুতি রয়েছে, ১১টি নদীর মোহনায় ব্রহ্মপুত্র নদের তীরে উঁচু শক্ত এঁটেল লাল মাটির এলাকা ব্যবসা বাণিজ্য ও বসবাসের স্থান হিসেবে উৎকৃষ্ট বিবেচিত হওয়ায় গঞ্জের হাট নামে এটি প্রসিদ্ধ ছিল। হাটটি ১১টি নদীর সংগমস্থলে হওয়ায় স্থানীয়রা ১১টি নদীকে সিন্দু আখ্যায়িত করে গঞ্জের হাট থেকে স্থানটির নামকরণ করেন এগারসিন্দুর।
সেখানে ষোড়শ শতাব্দীতে বেবুদ নামে এক কোচ উপজাতি প্রধান এগারসিন্দুর দুর্গ নির্মাণ করেন। ঈশা খাঁ বেবুদ রাজার কাছ থেকে দুর্গটি দখল করেন এবং একে শক্তিশালী সামরিক ঘাঁটিতে পরিণত করেন।
১৮৯২ সালের ভূমিকম্পে দুর্গটি ধ্বংস হয়ে গেলেও আজো কিছুকিছু নিদর্শন আছে যা দেখে আন্দাজ করা যায় দুর্গটির অবস্থান। দুর্গটি ছিল বিশাল আকারের।
দুর্গ এলাকায় এখনো খুঁজে পাওয়া যায় জাফরি ইট, অজানা সুরঙ্গ, মৃৎপাত্রের ভগ্নাংশ। এটি ছিল ঈশাখাঁর শক্ত ঘাঁটি। মোগলরা বারবার আক্রমণ করেও এ দুর্গের পতন ঘটাতে পারেনি।
এখনো দুর্গের ভিতরে উঁচু একটি টিলার মতো ঢিবি দাঁড়িয়ে আছে যেখান থেকে প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে কামান দাগানো হতো। এটিই বর্তমানে দুর্গের একমাত্র আকর্ষণ।
দুর্গের পাশেই রয়েছে বিশালায়তনের বেবুদ রাজার দীঘি এবং প্রাচীন দু’টি মসজিদ। বেবুদ রাজা প্রজাদের জলকষ্ট দূর করতে ৫০ একর জমির ওপর একটি দীঘি করেছিলেন। এর পানি এখনো খুব স্বচ্ছ।
এর তিন পাশে সবুজ গাছাগাছালির কারণে রহস্যঘেরা পুকুরটিকে আরো সুন্দর দেখায়। এর স্বচ্ছ জলে যখন গাছের ছায়া পড়ে তখন আশপাশ যেন আরো সুন্দর হয়ে ফুটে থাকে।
এগারসিন্দুরের সামান্তরাজ রাজা আজাহাবাকে এক যুদ্ধে পরাস্ত করে অপর একজন কোচ সামন্ত বেবুদ রাজা নগর হাজরাদী এলাকা তার করায়ত্বে আনার পর এগারসিন্দুর নামক এলাকাকে তার রাজত্বের রাজধানী করে এগারসিন্দুরের ব্যপক উন্নতি সাধন করেন।
যতদূর জানা যায়, তিনি তার রাজপ্রাসাদের সন্নিকটে একটি বিশাল আকারের পুকুর খনন করেন। এই পুকুর খনন নিয়ে কিংবদন্তি চালু রয়েছে।
প্রচলিত কিংবদন্তিটি হচ্ছে, বেবুদ রাজা বিশাল আয়তনের পুকুরটি খনন করলেও পুকুর থেকে পানি উঠে নি। বেবুদ রাজার স্ত্রী একদিন স্বপ্নে দেখতে পান যে, গঙ্গাদেবী রাণীকে তার কাছে আহ্বান জানিয়ে বলছেন যে, “তুমি আমার কথা মত চিরতরে আমার কাছে চলে আসার জন্য জলশূন্য পুকুরে কলসি কাঁখে নিয়ে এসে পুকুরের তলদেশে তোমার পদস্পর্শ করলে পুকুরে পানি উঠবে।”
রাণী তখন জিজ্ঞাসা করেন, “আমি চলে গেলে আমার শিশু বাচ্চাকে দুধ খাওয়াবে কে?”
উত্তরে গঙ্গাদেবী জানান, “তোমার বাম হাতের তর্জনীতে থাকা সোনার আংটি জল স্পর্শ করে তোমাকে ডাকলে, তুমি মানব আকৃতিতে তোমার সন্তানকে দুধ খাওয়ানো সহ তাকে আদর সেবা করতে পারবে।”
পরদিন রাণী তার স্বপ্নের কথা রাজাকে জানালে রাজা স্বপ্নের বর্ণনানুযায়ী পুকুরের ঘাটে এসে রাণীর বাম তর্জনীর আংটিটি রাজার হাতে দিয়ে কলসি কাঁখে পুকুরের তলায় পদস্পর্শ করার সাথে সাথেই পুকুরে পানি উঠে ভরে যায়- আর সেই সাথে রাণী নিখোঁজ হয়ে যান।
স্বপ্নের বর্ণানুযায়ী যখনই রাজার সন্তান খাবারের জন্য কান্না করত তখন রাজা ওই আংটিটি হাতে নিয়ে ঘাটে এসে জল স্পর্শ করে ডাক দিলেই রাণী মানব আকৃতিতেই উঠে আসতেন এবং তার সন্তানকে দুধ খাইয়ে আবার চলে যেতেন।
বেবুদ রাজার এক ঘনিষ্ট সহচর বন্ধু ছিল; যার কাছে তিনি আত্মবিশ্বাস্যের সাথে তার প্রকাশ্য-গোপন সকল কথা বলে মনটাকে হালকা করতেন।
রাণীর পানিতে অন্তর্ধান ও তার আংটির রহস্যময় জাদুকরি কর্মের কথা তার কাছে বললে সে বাস্তবে তার প্রমাণ দেখতে চায়। রাজা সরলভাবে পূর্ব নিয়মে রাণীকে পানি থেকে স্ব-শরীরে উঠে আনার ঘটনা প্রত্যক্ষ করালে সহচর কুমতলবে রাজার হাত থেকে কৌশলে আংটিটি চুরি করে নিয়ে যায়।
কিন্তু আংটি চুরি করে ওই সহচর বেশি দূর যেতে পারে নি। অল্প কিছু দূর যাওয়ার পর আংটিটি তার হাত থেকে পড়ে যায় এবং পূর্বরূপে এই এলাকা মাটি সরে গিয়ে গর্তের সৃষ্টি হয় এবং পানিতে একাকার হয়ে যায়।
আংটি চুরির ফলে সৃষ্ট এ জলাশয়টিই হল আংটি চুরার বিল। আংটি হারিয়ে রাজা আর পুকুর ঘাটে এসে রাণীকে শত ডেকেও আর রাণীর দেখা পাননি। রাণীকে হারিয়ে রাজা একাকিত্বে দুঃখ কষ্টে ক্রমেই দুর্বল হয়ে পড়েন।
সে সময় ঈশা খাঁ বেবুদ রাজার কাছ থেকে দুর্গটি দখল করেন এবং একে শক্তিশালী সামরিক ঘাঁটিতে পরিণত করেন। গায়েবীভাবে পুকুরে পানি উঠার কারণে আজো রহস্যঘেরা বেবুদ রাজার পুকুর পাড়ে গিয়ে কি যেন এক অজানা ভয়ে শিউরে উঠে মানুষ।
জনপ্রিয় সংবাদ

মুন্সীগঞ্জ সদর ইউএনওর চরডুমুরিয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিদর্শন

বেবুদ রাজার দিঘি কৌতুহলময় রহস্যে ঘেরা।

আপডেট সময় ০৪:৪৯:১১ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৬ ফেব্রুয়ারী ২০২২
মাহফুজ রাজা, কিশোরগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি ;
বার ভূঁইয়াখ্যাত ঈশাখাঁর বীরত্বপূর্ণ ইতিহাসের অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসেবে কিশোরগঞ্জের করিমগঞ্জ উপজেলার জঙ্গলবাড়ির সঙ্গে পাকুন্দিয়া উপজেলার এগারসিন্দুরের নামটিও সমভাবে উচ্চারিত হয়ে আসছে। পাকুন্দিয়া উপজেলা সদর থেকে প্রায় আট কিলোমিটার দূরে এগারসিন্দুর। গ্রামের নামেই পাকুন্দিয়ার এই ইউনিয়নের নাম।
এখানে রয়েছে এগারসিন্দুর দুর্গ যেটি দখল করে কৌশলগত অবস্থান নিয়ে বীর ঈশাখাঁ মোগলদের সঙ্গে যুদ্ধবিগ্রহ করেছিলেন। লাল মাটি, সবুজ গাছগাছালি আর ঐতিহাসিক নিদর্শনে সমৃদ্ধ এগারসিন্দুর। এটি ছিল ঈশা খাঁর শক্ত ঘাঁটি।
জনশ্রুতি রয়েছে, ১১টি নদীর মোহনায় ব্রহ্মপুত্র নদের তীরে উঁচু শক্ত এঁটেল লাল মাটির এলাকা ব্যবসা বাণিজ্য ও বসবাসের স্থান হিসেবে উৎকৃষ্ট বিবেচিত হওয়ায় গঞ্জের হাট নামে এটি প্রসিদ্ধ ছিল। হাটটি ১১টি নদীর সংগমস্থলে হওয়ায় স্থানীয়রা ১১টি নদীকে সিন্দু আখ্যায়িত করে গঞ্জের হাট থেকে স্থানটির নামকরণ করেন এগারসিন্দুর।
সেখানে ষোড়শ শতাব্দীতে বেবুদ নামে এক কোচ উপজাতি প্রধান এগারসিন্দুর দুর্গ নির্মাণ করেন। ঈশা খাঁ বেবুদ রাজার কাছ থেকে দুর্গটি দখল করেন এবং একে শক্তিশালী সামরিক ঘাঁটিতে পরিণত করেন।
১৮৯২ সালের ভূমিকম্পে দুর্গটি ধ্বংস হয়ে গেলেও আজো কিছুকিছু নিদর্শন আছে যা দেখে আন্দাজ করা যায় দুর্গটির অবস্থান। দুর্গটি ছিল বিশাল আকারের।
দুর্গ এলাকায় এখনো খুঁজে পাওয়া যায় জাফরি ইট, অজানা সুরঙ্গ, মৃৎপাত্রের ভগ্নাংশ। এটি ছিল ঈশাখাঁর শক্ত ঘাঁটি। মোগলরা বারবার আক্রমণ করেও এ দুর্গের পতন ঘটাতে পারেনি।
এখনো দুর্গের ভিতরে উঁচু একটি টিলার মতো ঢিবি দাঁড়িয়ে আছে যেখান থেকে প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে কামান দাগানো হতো। এটিই বর্তমানে দুর্গের একমাত্র আকর্ষণ।
দুর্গের পাশেই রয়েছে বিশালায়তনের বেবুদ রাজার দীঘি এবং প্রাচীন দু’টি মসজিদ। বেবুদ রাজা প্রজাদের জলকষ্ট দূর করতে ৫০ একর জমির ওপর একটি দীঘি করেছিলেন। এর পানি এখনো খুব স্বচ্ছ।
এর তিন পাশে সবুজ গাছাগাছালির কারণে রহস্যঘেরা পুকুরটিকে আরো সুন্দর দেখায়। এর স্বচ্ছ জলে যখন গাছের ছায়া পড়ে তখন আশপাশ যেন আরো সুন্দর হয়ে ফুটে থাকে।
এগারসিন্দুরের সামান্তরাজ রাজা আজাহাবাকে এক যুদ্ধে পরাস্ত করে অপর একজন কোচ সামন্ত বেবুদ রাজা নগর হাজরাদী এলাকা তার করায়ত্বে আনার পর এগারসিন্দুর নামক এলাকাকে তার রাজত্বের রাজধানী করে এগারসিন্দুরের ব্যপক উন্নতি সাধন করেন।
যতদূর জানা যায়, তিনি তার রাজপ্রাসাদের সন্নিকটে একটি বিশাল আকারের পুকুর খনন করেন। এই পুকুর খনন নিয়ে কিংবদন্তি চালু রয়েছে।
প্রচলিত কিংবদন্তিটি হচ্ছে, বেবুদ রাজা বিশাল আয়তনের পুকুরটি খনন করলেও পুকুর থেকে পানি উঠে নি। বেবুদ রাজার স্ত্রী একদিন স্বপ্নে দেখতে পান যে, গঙ্গাদেবী রাণীকে তার কাছে আহ্বান জানিয়ে বলছেন যে, “তুমি আমার কথা মত চিরতরে আমার কাছে চলে আসার জন্য জলশূন্য পুকুরে কলসি কাঁখে নিয়ে এসে পুকুরের তলদেশে তোমার পদস্পর্শ করলে পুকুরে পানি উঠবে।”
রাণী তখন জিজ্ঞাসা করেন, “আমি চলে গেলে আমার শিশু বাচ্চাকে দুধ খাওয়াবে কে?”
উত্তরে গঙ্গাদেবী জানান, “তোমার বাম হাতের তর্জনীতে থাকা সোনার আংটি জল স্পর্শ করে তোমাকে ডাকলে, তুমি মানব আকৃতিতে তোমার সন্তানকে দুধ খাওয়ানো সহ তাকে আদর সেবা করতে পারবে।”
পরদিন রাণী তার স্বপ্নের কথা রাজাকে জানালে রাজা স্বপ্নের বর্ণনানুযায়ী পুকুরের ঘাটে এসে রাণীর বাম তর্জনীর আংটিটি রাজার হাতে দিয়ে কলসি কাঁখে পুকুরের তলায় পদস্পর্শ করার সাথে সাথেই পুকুরে পানি উঠে ভরে যায়- আর সেই সাথে রাণী নিখোঁজ হয়ে যান।
স্বপ্নের বর্ণানুযায়ী যখনই রাজার সন্তান খাবারের জন্য কান্না করত তখন রাজা ওই আংটিটি হাতে নিয়ে ঘাটে এসে জল স্পর্শ করে ডাক দিলেই রাণী মানব আকৃতিতেই উঠে আসতেন এবং তার সন্তানকে দুধ খাইয়ে আবার চলে যেতেন।
বেবুদ রাজার এক ঘনিষ্ট সহচর বন্ধু ছিল; যার কাছে তিনি আত্মবিশ্বাস্যের সাথে তার প্রকাশ্য-গোপন সকল কথা বলে মনটাকে হালকা করতেন।
রাণীর পানিতে অন্তর্ধান ও তার আংটির রহস্যময় জাদুকরি কর্মের কথা তার কাছে বললে সে বাস্তবে তার প্রমাণ দেখতে চায়। রাজা সরলভাবে পূর্ব নিয়মে রাণীকে পানি থেকে স্ব-শরীরে উঠে আনার ঘটনা প্রত্যক্ষ করালে সহচর কুমতলবে রাজার হাত থেকে কৌশলে আংটিটি চুরি করে নিয়ে যায়।
কিন্তু আংটি চুরি করে ওই সহচর বেশি দূর যেতে পারে নি। অল্প কিছু দূর যাওয়ার পর আংটিটি তার হাত থেকে পড়ে যায় এবং পূর্বরূপে এই এলাকা মাটি সরে গিয়ে গর্তের সৃষ্টি হয় এবং পানিতে একাকার হয়ে যায়।
আংটি চুরির ফলে সৃষ্ট এ জলাশয়টিই হল আংটি চুরার বিল। আংটি হারিয়ে রাজা আর পুকুর ঘাটে এসে রাণীকে শত ডেকেও আর রাণীর দেখা পাননি। রাণীকে হারিয়ে রাজা একাকিত্বে দুঃখ কষ্টে ক্রমেই দুর্বল হয়ে পড়েন।
সে সময় ঈশা খাঁ বেবুদ রাজার কাছ থেকে দুর্গটি দখল করেন এবং একে শক্তিশালী সামরিক ঘাঁটিতে পরিণত করেন। গায়েবীভাবে পুকুরে পানি উঠার কারণে আজো রহস্যঘেরা বেবুদ রাজার পুকুর পাড়ে গিয়ে কি যেন এক অজানা ভয়ে শিউরে উঠে মানুষ।