![](https://banglaralonews.com/wp-content/plugins/print-bangla-news/assest/img/print-news.png)
বশেমুরবিপ্রবি প্রতিনিধিঃ শারমিন আক্তার,
গোপালগঞ্জে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বশেমুরবিপ্রবি) শিক্ষার্থীকে সংঘবন্ধ ধর্ষণের ঘটনায় আন্দোলনরত শিক্ষার্থী ও স্থানীয়দের মাঝে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ আহত হয়েছেন অর্ধশতাধিক। আহতদের গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় ঘোনাপাড়ায় ঢাকা-খুলনা মহাসড়ক অবরোধকালে স্থানীয়রা আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের উপর হামলা করে। পরে আরেক দফায় বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে এসে হামলা চালায় স্হানীয়রা।
এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের গাড়ি, প্রক্টরের গাড়ি, অ্যাম্বুলেন্সসহ দোকান ভাংচুর করেছে তারা।
বৃহস্পতিবার বেলা ১০ টায় গোপালগঞ্জের ঘোনাপাড়া মোরে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ঢাকা-খুলনা মহাসড়ক ও পিরোজপুর -গোপালগঞ্জ সড়কের মিলিতস্থান ঘোনাপাড়া মোড়ে কয়েক হাজার বিক্ষুদ্ধ শিক্ষার্থী অবস্থান নিয়ে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ প্রদর্শন করছে।
এ সময় তারা ধর্ষণের প্রতিবাদে বঙ্গবন্ধুর বাংলায় ধর্ষকের ঠাই নাই, একটা একটা ধর্ষক ধর ধরে ধরে জবাই কর, আমার বোন ধর্ষণ কেন প্রশাসন জবাব দে’ সহ বিভিন্ন ধরণের স্লোগান দিতে থাকে। এছাড়া ধর্ষকদের আইনের আওতায় এনে বিচারের দাবি জানান। ধর্ষকদের গ্রেফতার না হওয়া পর্যন্ত তারা এ বিক্ষোভ চালিয়ে যাবেন বলেন ঘোষণা দেন।
বেলা ৩ টায় গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসক শাহিদা সুলতানা ও পুলিশ সুপার আয়শা সিদ্দিকা ঘোনাপাড়া মোড় গিয়ে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে।
এ সময় জেলা প্রশাসক শাহিদা সুলতানা বলেন, আজ তোমার যে আন্দোলন করছে সেটা যৌক্তিক, একটা ঘটনা ঘটলে দুই ধরণের সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে। একটা হলে এটা থেকে কি ভাবে পরিত্রান পেতে পারি, এ ঘটনার পুনরাবৃত্তি না ঘটে। আমরা তোমাদের কথা দিচ্ছে আগামী তিন দিনের মধ্যে ধর্ষকদের শনাক্ত করা হবে। তোমরা এবার হলে ফিরে যাও। এ সময় জেলা প্রশাসক শিক্ষার্থীদের তিন দিনের আল্টিমেটাম দিলে তারা প্রত্যাখ্যান করে ২৪ ঘন্টার আল্টিমেটাম দেন।
পুলিশ সুপার আয়শা সিদ্দিকা বলেন, শিক্ষার্থীদের দেওয়া ২৪ ঘন্টার মধ্যে ধর্ষকদের শনাক্ত করা হবে বলে আশ্বাস দেন। কিন্তু শিক্ষার্থীরা সময় সীমা বেধে দিয়ে আন্দোলন চালিয়ে যায়। পরে স্থানীয় লোক আন্দোলনকারীদের ফিরে যেতে বলার এক পর্যায় দু’পক্ষের মধ্যে বাকবিতন্ডায় জড়িয়ে পড়ে। পরে উভয় পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়।
প্রসঙ্গত, বুধবার রাত ৯.৩০ টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের দ্বিতীয় বর্ষের এক ছাত্রী তার এক বন্ধুর সাথে গোপালগঞ্জ শহরের হেলিপ্যাড থেকে নবীনবাগের তার মেসে ফিরছিলেন। এ সময় কয়েকজন দুর্বৃত্ত তাদের গতিরোধ করে এবং বন্ধুকে মারপিট করে ওই ছাত্রীকে পার্শ্ববর্তী নবনির্মিত জেলা প্রশাসন স্কুল ও কলেজ ভবনের মধ্যে নিয়ে পালাক্রমে ধর্ষণ করে। বুধবার রাতে ছাত্রী ধর্ষণের খবর ক্যাম্পাসে পৌছালে বিক্ষুদ্ধ শিক্ষার্থী গোপালগঞ্জ থানা ঘেরাও করে পরে সকাল ছয়টা ঘোনাপাড়ায় মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করে। এ ঘটনায় সন্দেহভাজন তিনজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।