বাংলাদেশ ১২:৩৮ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২২ জুলাই ২০২৪, ৬ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
নোটিশ :

সাংবাদিক নিয়োগ চলছে,, সাংবাদিক নিয়োগ চলছে,,০১৯৯৯-৯৫৩৯৭০, ০১৭১২-৪৪৬৩০৬,০১৭১১-০০৬২১৪ সম্পাদক

     
ব্রেকিং নিউজ ::
মুন্সীগঞ্জ সদর ইউএনওর চরডুমুরিয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিদর্শন সন্ধ্যার মধ্যে উপাচার্য, শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বাসভবন ছাড়ার আল্টিমেটাম কুবি শিক্ষার্থীদের রাবিতে জড়ো হওয়া আন্দোলনকারীদের পুলিশ-বিজিবির ধাওয়া মেহেন্দিগঞ্জে অজ্ঞাতনামা নারীর অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার। মুন্সীগঞ্জে গায়েবানা জানাযা থেকে ঈমাম ও বিএনপি নেতাকে ধরে নিয়ে গেলো পুলিশ কোটা আন্দোলনের পক্ষে সংহতি জানিয়ে ফেনী ইউনিভার্সিটির বর্তমান ও প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের বিবৃতি চলমান পরিস্থিতিতে রাবি ক্যাম্পাসে ছাত্র রাজনীতি আপাতত স্থগিত: উপাচার্য বিদেশের পাঠানো টাকা চাইতে গিয়ে বিপাকে প্রবাসী স্বামী রাজশাহীতে ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে পবিত্র আশুরা পালিত চট্রগ্রামের কোটা সংস্কার আন্দোলনে নিহত ওয়াসিমের জানাজায় মানুষের ঢল পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া পৌরসভার রাস্তায় সমবায় সমিতি ভবনের ট্যাংকির ময়লা: জনদুর্ভোগ মুন্সীগঞ্জে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের উপর হামলা, আহত ৫ হরিপুরে, প্রগতি লাইফ ইন্স্যুরেন্স লিমিটেড এর পক্ষ থেকে কর্মী মিটিং ও গ্রাহক সমাবেশ অনুষ্ঠিত। গৌরীপুরে উদীচী কার্য়ালয়ে হামলা ও ভাংচুর স্ত্রীর যৌতুক মামলায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক কারাগারে

ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের বহির্বিভাগীয় রোগীর জাল টিকেট তৈরীর অভিযোগ 

  • নিজস্ব সংবাদ :
  • আপডেট সময় ০২:১৫:৪৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ২১ ফেব্রুয়ারী ২০২২
  • ১৭৪৩ বার পড়া হয়েছে

ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের বহির্বিভাগীয় রোগীর জাল টিকেট তৈরীর অভিযোগ 

মোঃ আবুল হাসান ঝিনাইদহ।
ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের সরকারী ওষুধ হরিলুট হচ্ছে। যে যেভাবে পারছে সরকারী দামি দামি ওষুধ তুলে নিচ্ছে। ফলে দুর দুরান্ত থেকে আসা গ্রামের হতদরিদ্র রোগীরা হাসপাতালের সরকারী ওষুধ পাচ্ছে না। হাসপাতালের আশপাশে গড়ে ওঠা ক্লিনিক ও প্যাথলজির কর্মচারি এবং দালাল চক্র এই অপকর্মের সঙ্গে জড়িত বলে অভিযোগ উঠেছে।
এছাড়াও রয়েছে মুখচেনা কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি, হাসপাতালের আশেপাশে বসবাসরত প্রতিবেশি, কতিপয় মুক্তিযোদ্ধা ও ইন্টার্নি করতে আসা শিক্ষার্থীরা। দুপুর পার হতেই আসতে শুরু করে এই সুবিধাভোগী চক্রটি। তারা একাধিক স্লিপ নিয়ে ব্যাগ ভর্তি সরকারী ওষুধ তুলে নিয়ে যাচ্ছে। এই চিত্র প্রতিদিনের হলেও কোন প্রতিকার নেই। এদিকে এ ভাবে জাল বহির্বিভাগীয় রোগীর টিকেট তৈরী করে বিপুল পরিমান ওষুধ উত্তোলনের সময় ধরা পড়েছেন সাদ্দাম হোসেন ও রাতুল নামে দুই যুবক। ধরাপড়ার পর তাদের হাসপাতালের তত্বাবধায়ক সৈয়দ রেজাউল ইসলামের দপ্তরে নিয়ে যাওয়া হয়। মুচলেকা নিয়ে তাদের ছেড়ে দেন তত্বাবধায়ক।
রোববার ঘড়ির কাটায় ঠিক দুপুর ১২.৪০টা। ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের ঔষাধাগারের সামনে জটলা। হাসপাতালে মাস্টার রোলে কর্মরত মুস্তাক আহম্মেদ তার স্ত্রীর জন্য কিলম্যাক্স নামে একটি ওষুধ নিতে যান। তার নজরে পড়ে দুই যুবক একাধিক বহির্বিভাগীয় রোগীর টিকেট নিয়ে ব্যাগে করে ওষুধ ভরছেন। বিষয়টি তার সন্দেহ হলে তিনি সাদ্দাম ও রাতুলকে ডেকে নিয়ে যান তত্বাবধায়কের দপ্তরে। তাদের কাছে পাওয়া যায় ডাঃ মারুফ সাক্ষরিত একাধিক টিকেট। মাষ্টার রোলের কর্মচারী মুস্তাক আহম্মেদ সন্দেহ দুর করতে ডাঃ মারুফের কাছে ফোন দিলে তিনি ওই যুবকদের চেনেন না বলে জানিয়ে দেন।
ওষুধসহ ধরাপড়ার পর সাদ্দাম হোসেন জানান, তিনি হাসপাতালের সামনে মেডিকেট নামে একটি বেসরকারী ক্লিনিকে চাকরী করেন। আর রাতুল ছাত্র। তাদের বাড়ি যশোরের চৌগাছায়। পরীক্ষা করে দেখা গেছে তাদের কাছে থাকা চারটি বহির্বিভাগীয় রোগীর টিকেট জাল। এই চক্রটি  আলিম, বুলবুলি ও অহনার নামে জাল টিকেট তৈরী করে তাতে মুলবান ওষুধ লিখে নেন। একটি টিকেট ছিল রাতুলের নামে। তথ্য নিয়ে জানা গেছে, ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের আশেপাশে থাকা ক্লিনিকে প্রতিনিয়ত রোগীর অপারেশন হচ্ছে। এই কাজে ১৫/২০ জন দালাল হাসপাতাল থেকে রোগী ভাগিয়ে নেওয়ার কাজে লিপ্ত।
ঝিনাইদহ আইএইচটি, ম্যাটস ও নার্সিং ইন্সটিটিউটের শিক্ষার্থীরা এসব ক্লিনিকে খন্ডকালীন চাকরী করেন। তারা ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের চিকিৎসকদের সঙ্গে ডিউটি করার কারণে অনেকে আবার চিকিৎসকদের সাক্ষর নকল করতে পারেন। অনেক সময় চিকিৎসকরা ইন্টার্নিরত শিক্ষার্থীদের আবদারে একাধিক বহির্বিভাগীয় রোগীর টিকেট নাম্বার দিয়ে ওষুধের স্লিপ দেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হাসপাতালের একাধিক কর্মচারী জানান, প্রতিদিন যে ভাবে হাসপাতালের সরকারী ওষুধ লুটপাট হচ্ছে তা রোধ না করতে পারলে গ্রামের দরদ্রি রোগীরা মাসব্যাপী ওষুধ পাওয়া থেকে বঞ্চিত হবে।
বিষয়টি নিয়ে হাসপাতালের ঔষাধাগারের ইনচার্জ রুহুল আমিন জানান, প্রতিদিন রোগীর যে চাপ থাকে তাতে আমার একার পক্ষে টিকেট যাচাই বাছাই করা সম্ভব হয় না। তিনি বলেন, ঔষাধাগারে চারটি পদের মধ্যে তিনটিই খালি। তাই রোগীর ভীড়ে আসল নকল যাচাই করা কষ্টকর হয়ে পড়ে। তাছাড়া সমাজের এমন কিছু মানুষ এসে এমন চাপ সৃষ্টি করেন তাতে আমরা অসহায় হয়ে পড়ি। ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের তত্বাবধায়ক ডাঃ সৈয়দ রেজাউল ইসলাম জানান, আমি নতুন যোগদান করেছি। সাদ্দাম আর রাতুল নামে যে দুইজন জাল টিকেট নিয়ে ধরা পড়েছিল তারা ছাত্র।
এই কারণে তাদের সহানুভুতির দৃষ্টিতে দেখা হলো। তিনি বলেন বিষয়টি আমি পর্যবেক্ষন করছি, ভবিষ্যতে যাতে এমনটি না হয় সে জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ঝিনাইদহের সনাক সভাপতি অধ্যক্ষ সাইদুল আলম জানান, জাল বহির্বিভাগীয় রোগীর টিকেটে ওষুধ নেওয়ার প্রবণতা রোধে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকেই কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। গ্রামের হতদরিদ্র মানুষ যাতে চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র অনুযায়ী ওষুধ পায় সেটা নিশ্চিত করতে হবে।
জনপ্রিয় সংবাদ

মুন্সীগঞ্জ সদর ইউএনওর চরডুমুরিয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিদর্শন

ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের বহির্বিভাগীয় রোগীর জাল টিকেট তৈরীর অভিযোগ 

আপডেট সময় ০২:১৫:৪৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ২১ ফেব্রুয়ারী ২০২২
মোঃ আবুল হাসান ঝিনাইদহ।
ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের সরকারী ওষুধ হরিলুট হচ্ছে। যে যেভাবে পারছে সরকারী দামি দামি ওষুধ তুলে নিচ্ছে। ফলে দুর দুরান্ত থেকে আসা গ্রামের হতদরিদ্র রোগীরা হাসপাতালের সরকারী ওষুধ পাচ্ছে না। হাসপাতালের আশপাশে গড়ে ওঠা ক্লিনিক ও প্যাথলজির কর্মচারি এবং দালাল চক্র এই অপকর্মের সঙ্গে জড়িত বলে অভিযোগ উঠেছে।
এছাড়াও রয়েছে মুখচেনা কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি, হাসপাতালের আশেপাশে বসবাসরত প্রতিবেশি, কতিপয় মুক্তিযোদ্ধা ও ইন্টার্নি করতে আসা শিক্ষার্থীরা। দুপুর পার হতেই আসতে শুরু করে এই সুবিধাভোগী চক্রটি। তারা একাধিক স্লিপ নিয়ে ব্যাগ ভর্তি সরকারী ওষুধ তুলে নিয়ে যাচ্ছে। এই চিত্র প্রতিদিনের হলেও কোন প্রতিকার নেই। এদিকে এ ভাবে জাল বহির্বিভাগীয় রোগীর টিকেট তৈরী করে বিপুল পরিমান ওষুধ উত্তোলনের সময় ধরা পড়েছেন সাদ্দাম হোসেন ও রাতুল নামে দুই যুবক। ধরাপড়ার পর তাদের হাসপাতালের তত্বাবধায়ক সৈয়দ রেজাউল ইসলামের দপ্তরে নিয়ে যাওয়া হয়। মুচলেকা নিয়ে তাদের ছেড়ে দেন তত্বাবধায়ক।
রোববার ঘড়ির কাটায় ঠিক দুপুর ১২.৪০টা। ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের ঔষাধাগারের সামনে জটলা। হাসপাতালে মাস্টার রোলে কর্মরত মুস্তাক আহম্মেদ তার স্ত্রীর জন্য কিলম্যাক্স নামে একটি ওষুধ নিতে যান। তার নজরে পড়ে দুই যুবক একাধিক বহির্বিভাগীয় রোগীর টিকেট নিয়ে ব্যাগে করে ওষুধ ভরছেন। বিষয়টি তার সন্দেহ হলে তিনি সাদ্দাম ও রাতুলকে ডেকে নিয়ে যান তত্বাবধায়কের দপ্তরে। তাদের কাছে পাওয়া যায় ডাঃ মারুফ সাক্ষরিত একাধিক টিকেট। মাষ্টার রোলের কর্মচারী মুস্তাক আহম্মেদ সন্দেহ দুর করতে ডাঃ মারুফের কাছে ফোন দিলে তিনি ওই যুবকদের চেনেন না বলে জানিয়ে দেন।
ওষুধসহ ধরাপড়ার পর সাদ্দাম হোসেন জানান, তিনি হাসপাতালের সামনে মেডিকেট নামে একটি বেসরকারী ক্লিনিকে চাকরী করেন। আর রাতুল ছাত্র। তাদের বাড়ি যশোরের চৌগাছায়। পরীক্ষা করে দেখা গেছে তাদের কাছে থাকা চারটি বহির্বিভাগীয় রোগীর টিকেট জাল। এই চক্রটি  আলিম, বুলবুলি ও অহনার নামে জাল টিকেট তৈরী করে তাতে মুলবান ওষুধ লিখে নেন। একটি টিকেট ছিল রাতুলের নামে। তথ্য নিয়ে জানা গেছে, ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের আশেপাশে থাকা ক্লিনিকে প্রতিনিয়ত রোগীর অপারেশন হচ্ছে। এই কাজে ১৫/২০ জন দালাল হাসপাতাল থেকে রোগী ভাগিয়ে নেওয়ার কাজে লিপ্ত।
ঝিনাইদহ আইএইচটি, ম্যাটস ও নার্সিং ইন্সটিটিউটের শিক্ষার্থীরা এসব ক্লিনিকে খন্ডকালীন চাকরী করেন। তারা ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের চিকিৎসকদের সঙ্গে ডিউটি করার কারণে অনেকে আবার চিকিৎসকদের সাক্ষর নকল করতে পারেন। অনেক সময় চিকিৎসকরা ইন্টার্নিরত শিক্ষার্থীদের আবদারে একাধিক বহির্বিভাগীয় রোগীর টিকেট নাম্বার দিয়ে ওষুধের স্লিপ দেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হাসপাতালের একাধিক কর্মচারী জানান, প্রতিদিন যে ভাবে হাসপাতালের সরকারী ওষুধ লুটপাট হচ্ছে তা রোধ না করতে পারলে গ্রামের দরদ্রি রোগীরা মাসব্যাপী ওষুধ পাওয়া থেকে বঞ্চিত হবে।
বিষয়টি নিয়ে হাসপাতালের ঔষাধাগারের ইনচার্জ রুহুল আমিন জানান, প্রতিদিন রোগীর যে চাপ থাকে তাতে আমার একার পক্ষে টিকেট যাচাই বাছাই করা সম্ভব হয় না। তিনি বলেন, ঔষাধাগারে চারটি পদের মধ্যে তিনটিই খালি। তাই রোগীর ভীড়ে আসল নকল যাচাই করা কষ্টকর হয়ে পড়ে। তাছাড়া সমাজের এমন কিছু মানুষ এসে এমন চাপ সৃষ্টি করেন তাতে আমরা অসহায় হয়ে পড়ি। ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের তত্বাবধায়ক ডাঃ সৈয়দ রেজাউল ইসলাম জানান, আমি নতুন যোগদান করেছি। সাদ্দাম আর রাতুল নামে যে দুইজন জাল টিকেট নিয়ে ধরা পড়েছিল তারা ছাত্র।
এই কারণে তাদের সহানুভুতির দৃষ্টিতে দেখা হলো। তিনি বলেন বিষয়টি আমি পর্যবেক্ষন করছি, ভবিষ্যতে যাতে এমনটি না হয় সে জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ঝিনাইদহের সনাক সভাপতি অধ্যক্ষ সাইদুল আলম জানান, জাল বহির্বিভাগীয় রোগীর টিকেটে ওষুধ নেওয়ার প্রবণতা রোধে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকেই কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। গ্রামের হতদরিদ্র মানুষ যাতে চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র অনুযায়ী ওষুধ পায় সেটা নিশ্চিত করতে হবে।