বাংলাদেশ ০৫:৫১ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১১ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
নোটিশ :

সাংবাদিক নিয়োগ চলছে,, সাংবাদিক নিয়োগ চলছে,,০১৯৯৯-৯৫৩৯৭০, ০১৭১২-৪৪৬৩০৬,০১৭১১-০০৬২১৪ সম্পাদক

     
ব্রেকিং নিউজ ::
মুন্সীগঞ্জ সদর ইউএনওর চরডুমুরিয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিদর্শন সন্ধ্যার মধ্যে উপাচার্য, শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বাসভবন ছাড়ার আল্টিমেটাম কুবি শিক্ষার্থীদের রাবিতে জড়ো হওয়া আন্দোলনকারীদের পুলিশ-বিজিবির ধাওয়া মেহেন্দিগঞ্জে অজ্ঞাতনামা নারীর অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার। মুন্সীগঞ্জে গায়েবানা জানাযা থেকে ঈমাম ও বিএনপি নেতাকে ধরে নিয়ে গেলো পুলিশ কোটা আন্দোলনের পক্ষে সংহতি জানিয়ে ফেনী ইউনিভার্সিটির বর্তমান ও প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের বিবৃতি চলমান পরিস্থিতিতে রাবি ক্যাম্পাসে ছাত্র রাজনীতি আপাতত স্থগিত: উপাচার্য বিদেশের পাঠানো টাকা চাইতে গিয়ে বিপাকে প্রবাসী স্বামী রাজশাহীতে ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে পবিত্র আশুরা পালিত চট্রগ্রামের কোটা সংস্কার আন্দোলনে নিহত ওয়াসিমের জানাজায় মানুষের ঢল পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া পৌরসভার রাস্তায় সমবায় সমিতি ভবনের ট্যাংকির ময়লা: জনদুর্ভোগ মুন্সীগঞ্জে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের উপর হামলা, আহত ৫ হরিপুরে, প্রগতি লাইফ ইন্স্যুরেন্স লিমিটেড এর পক্ষ থেকে কর্মী মিটিং ও গ্রাহক সমাবেশ অনুষ্ঠিত। গৌরীপুরে উদীচী কার্য়ালয়ে হামলা ও ভাংচুর স্ত্রীর যৌতুক মামলায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক কারাগারে

রামগঞ্জ মানহীন ভেজাল হীরা ধান চাষে কৃষকের সর্বনাশ!!

  • নিজস্ব সংবাদ :
  • আপডেট সময় ০৮:৩৩:৩৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩১ মার্চ ২০২২
  • ১৬৯৯ বার পড়া হয়েছে

রামগঞ্জ মানহীন ভেজাল হীরা ধান চাষে কৃষকের সর্বনাশ!!

 

 

 

মোঃ ছায়েদ হোসেন, রামগঞ্জ (লক্ষ্মীপুর) সংবাদদাতাঃ

 

 

লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ উপজেলায় হীরা-২ হাইব্রিড ধান চাষ করে কপাল পুড়েছে কৃষকদের। সুপ্রীম সীড কোম্পানীর এ ধান গাছের অসম আকৃতি ও আগাম ধানের শীষ দেখা যাচ্ছে। এছাড়াও বিভিন্নস্থানে গাছের শাখা-প্রশাখা গজায়নি। সরেজমিন তদন্তেও অভিযোগের প্রমাণ পেয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। কৃষকরা বলছেন, এ বছর তাঁরা চকচকে ‘মানহীনথ এ ভেজাল ধান চাষ করে হতাশ। এজন্য কোম্পানীর কাছে তাঁরা ক্ষতিপূরণ দাবি করছেন।

 

এদিকে অভিযোগের প্রেক্ষিতে গত ৭ ও ৮ মার্চ একটি কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদ রোগতত্ত্ব ও কীটতত্ত্ব বিভাগের দুইজন প্রফেসর এবং ধান বীজ সরবরাহকারী কোম্পানীর প্রতিনিধিরা সরেজমিনে ক্ষতিগ্রস্থ ক্ষেত পরিদর্শন করেছেন। তাঁরা ধানের বিভিন্ন নমুনা সংগ্রহ করে কৃষক ও বীজ ডিলারসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলেছেন।

 

অন্যদিকে ১৪ মার্চ কোম্পানীর বরাবর প্রতিবেদন দেন মাঠ পরিদর্শন করা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদ রোগতত্ত্ব বিভাগের প্রফেসর ড. মো. আবু আশরাফ খান ও কীটতত্ত্ব বিভাগের প্রফেসর ড. মো. রুহুল আমিন। এতে বলা হয়, সুপ্রীম সীড হীরা ধানের জাতে গোছাগুলি খর্বাকৃতিতে কুশীর সংখ্যার স্বলতা, পাতা মোড়ানো ও ক্ষেত্র বিশেষ হলুদ বর্ণের দেখা গেছে। গাছগুলো যথাযথ বৃদ্ধি পায়নি, কোন-কোনটি বাদামী আকার ধারণ করেছে। ভাইরাস সংক্রমন বা বিশেষ পুষ্টি উপাদানের ঘাটতির কারণে ধানগাছগুলো এমন হতে পারে বলে ধারণা করছেন। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, লক্ষ্মীপুর, নোয়াখালী ও আশপাশ এলাকাগুলোতে কয়েক বছর ধরে কৃষকরা হীরা-২ হাইব্রিড ধান চাষ করছেন।

 

 

এ বছর শুধু রামগঞ্জেই ৫ শতাধিক কৃষক এ ধান চাষ করেছেন। বাজারে ৪০ কেজি বস্তা ১২ হাজার ও এক কেজির প্যাকেট বিক্রি হয় ৩০০ টাকা দরে। বাজারে এ ধান বীজের চাহিদাও রয়েছে। এ বীজের বিষয়ে ভাটরা ইউনিয়নের নান্দিয়ারা গ্রামের কৃষক নুরনবী, নোয়াগাঁও ইউনিয়নের দক্ষিন নোয়াগাঁও গ্রামের কৃষক মিহীর চন্দ্র দেবনাথ, ভোলাকোট ইউনিয়নের দেহলা গ্রামের কৃষক সিরাজ মিয়া ও দরবেশপুর গ্রামের হারুনসহ অন্তত ৮ জন কৃষকের সঙ্গে প্রতিবেদকের কথা হয়। তাঁদের অভিযোগ, সঠিক পরিচর্চার পরও ধানগাছ কোনোটি ছোট, কোনোটি লম্বা আকার ধারণ করেছে। কিছু গাছে আগাম শিষ এসেছে।

 

 

আবার অনেকগুলোর শাখা-প্রশাখাও গজায়নি। অথচ পাশের জমিতে অন্যজাতের বোনা ধান বীজের গাছগুলো স্বাভাবিক রয়েছে। এ বছর মানহীন বীজের কারণেই এমনটি হয়েছে বলে তাঁরা জানিয়েছেন। ২নং ভাদুর ইউনিয়নের সমেষপুর গ্রামের কৃষক বাবুল মিয়া বলেন, আমি হীরা ধানের বীজ কিনে ৪৫ শতাংশ জমিতে রোপণ করছি। সময়মতো পরিচর্যাও করেছি। এখন ক্ষেত দেখে আমার মরণদশা। শুধু আমার না, শত-শত কৃষকের একই অবস্থা। কৃষক আবদুল মান্নান বলেন, বেশী ফলনের আশায় ৬০ শতাংশ জমিতে ধারদেনা করে ৪০ হাজার টাকা খরচ করে এ ধান চাষ করেছি। ক্ষেতের অবস্থা দেখে এখন রাতে ঘুমও হয় না।

 

 

আমরা বীজ কোম্পানীর কাছে ক্ষতিপূরণ চাই। রামগঞ্জের বাবুল বীজ ভান্ডারের স্বত্তাধিকারী বাবুল মিয়া জানান, প্রতিদিনই কৃষকরা অভিযোগ নিয়ে আসছেন। হয়তো বাজারে হীরা ধানবীজের অতিরিক্ত চাহিদার কারণে এবার গুণগতমান ঠিক রাখতে পারেনি। সুপ্রীম সীড কোম্পানী মার্কেটিং অফিসার মো. ইসমাইল হোসেন জানান, রামগঞ্জে এ বছর তাঁদের ৪৪ টন ধান বীজ বিক্রি করা হয়েছে। কৃষকরা চলমান সমস্যার কথা জানিয়েছেন। বিষয়টি কোম্পানীকে জানানোর পর সরেজমিনে পর্যবেক্ষন টিম পাঠিয়েছে।

 

 

ভাইরাস বা আবহাওয়াজনিত কারণে এমনটি হতে পারে বলে তাঁরা ধারণা করছেন। ভাদুর ইউনিয়নের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা তুহিন চন্দ্র অধিকারী বলেন, এবার হীরা ধান চাষ করায় গাছগুলো খর্বাকৃতি, কুশির সংখ্যা স্বলতা ও বাদামী বর্ণের হয়ে যাচ্ছে। বিষয়টি উধ্র্ধসঢ়;ভতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। জানতে চাইলে রামগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সৈয়দ রায়হানুল হায়দার বলেন, বীজে ভেজাল থাকার কারণে এমনটি হতে পারে। বিষয়টি উপজেলা সার ও বীজ মনিটরিং কমিটির সভায় আলোচনা হয়েছে। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে।

 

 

 

জনপ্রিয় সংবাদ

মুন্সীগঞ্জ সদর ইউএনওর চরডুমুরিয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিদর্শন

রামগঞ্জ মানহীন ভেজাল হীরা ধান চাষে কৃষকের সর্বনাশ!!

আপডেট সময় ০৮:৩৩:৩৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩১ মার্চ ২০২২

 

 

 

মোঃ ছায়েদ হোসেন, রামগঞ্জ (লক্ষ্মীপুর) সংবাদদাতাঃ

 

 

লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ উপজেলায় হীরা-২ হাইব্রিড ধান চাষ করে কপাল পুড়েছে কৃষকদের। সুপ্রীম সীড কোম্পানীর এ ধান গাছের অসম আকৃতি ও আগাম ধানের শীষ দেখা যাচ্ছে। এছাড়াও বিভিন্নস্থানে গাছের শাখা-প্রশাখা গজায়নি। সরেজমিন তদন্তেও অভিযোগের প্রমাণ পেয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। কৃষকরা বলছেন, এ বছর তাঁরা চকচকে ‘মানহীনথ এ ভেজাল ধান চাষ করে হতাশ। এজন্য কোম্পানীর কাছে তাঁরা ক্ষতিপূরণ দাবি করছেন।

 

এদিকে অভিযোগের প্রেক্ষিতে গত ৭ ও ৮ মার্চ একটি কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদ রোগতত্ত্ব ও কীটতত্ত্ব বিভাগের দুইজন প্রফেসর এবং ধান বীজ সরবরাহকারী কোম্পানীর প্রতিনিধিরা সরেজমিনে ক্ষতিগ্রস্থ ক্ষেত পরিদর্শন করেছেন। তাঁরা ধানের বিভিন্ন নমুনা সংগ্রহ করে কৃষক ও বীজ ডিলারসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলেছেন।

 

অন্যদিকে ১৪ মার্চ কোম্পানীর বরাবর প্রতিবেদন দেন মাঠ পরিদর্শন করা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদ রোগতত্ত্ব বিভাগের প্রফেসর ড. মো. আবু আশরাফ খান ও কীটতত্ত্ব বিভাগের প্রফেসর ড. মো. রুহুল আমিন। এতে বলা হয়, সুপ্রীম সীড হীরা ধানের জাতে গোছাগুলি খর্বাকৃতিতে কুশীর সংখ্যার স্বলতা, পাতা মোড়ানো ও ক্ষেত্র বিশেষ হলুদ বর্ণের দেখা গেছে। গাছগুলো যথাযথ বৃদ্ধি পায়নি, কোন-কোনটি বাদামী আকার ধারণ করেছে। ভাইরাস সংক্রমন বা বিশেষ পুষ্টি উপাদানের ঘাটতির কারণে ধানগাছগুলো এমন হতে পারে বলে ধারণা করছেন। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, লক্ষ্মীপুর, নোয়াখালী ও আশপাশ এলাকাগুলোতে কয়েক বছর ধরে কৃষকরা হীরা-২ হাইব্রিড ধান চাষ করছেন।

 

 

এ বছর শুধু রামগঞ্জেই ৫ শতাধিক কৃষক এ ধান চাষ করেছেন। বাজারে ৪০ কেজি বস্তা ১২ হাজার ও এক কেজির প্যাকেট বিক্রি হয় ৩০০ টাকা দরে। বাজারে এ ধান বীজের চাহিদাও রয়েছে। এ বীজের বিষয়ে ভাটরা ইউনিয়নের নান্দিয়ারা গ্রামের কৃষক নুরনবী, নোয়াগাঁও ইউনিয়নের দক্ষিন নোয়াগাঁও গ্রামের কৃষক মিহীর চন্দ্র দেবনাথ, ভোলাকোট ইউনিয়নের দেহলা গ্রামের কৃষক সিরাজ মিয়া ও দরবেশপুর গ্রামের হারুনসহ অন্তত ৮ জন কৃষকের সঙ্গে প্রতিবেদকের কথা হয়। তাঁদের অভিযোগ, সঠিক পরিচর্চার পরও ধানগাছ কোনোটি ছোট, কোনোটি লম্বা আকার ধারণ করেছে। কিছু গাছে আগাম শিষ এসেছে।

 

 

আবার অনেকগুলোর শাখা-প্রশাখাও গজায়নি। অথচ পাশের জমিতে অন্যজাতের বোনা ধান বীজের গাছগুলো স্বাভাবিক রয়েছে। এ বছর মানহীন বীজের কারণেই এমনটি হয়েছে বলে তাঁরা জানিয়েছেন। ২নং ভাদুর ইউনিয়নের সমেষপুর গ্রামের কৃষক বাবুল মিয়া বলেন, আমি হীরা ধানের বীজ কিনে ৪৫ শতাংশ জমিতে রোপণ করছি। সময়মতো পরিচর্যাও করেছি। এখন ক্ষেত দেখে আমার মরণদশা। শুধু আমার না, শত-শত কৃষকের একই অবস্থা। কৃষক আবদুল মান্নান বলেন, বেশী ফলনের আশায় ৬০ শতাংশ জমিতে ধারদেনা করে ৪০ হাজার টাকা খরচ করে এ ধান চাষ করেছি। ক্ষেতের অবস্থা দেখে এখন রাতে ঘুমও হয় না।

 

 

আমরা বীজ কোম্পানীর কাছে ক্ষতিপূরণ চাই। রামগঞ্জের বাবুল বীজ ভান্ডারের স্বত্তাধিকারী বাবুল মিয়া জানান, প্রতিদিনই কৃষকরা অভিযোগ নিয়ে আসছেন। হয়তো বাজারে হীরা ধানবীজের অতিরিক্ত চাহিদার কারণে এবার গুণগতমান ঠিক রাখতে পারেনি। সুপ্রীম সীড কোম্পানী মার্কেটিং অফিসার মো. ইসমাইল হোসেন জানান, রামগঞ্জে এ বছর তাঁদের ৪৪ টন ধান বীজ বিক্রি করা হয়েছে। কৃষকরা চলমান সমস্যার কথা জানিয়েছেন। বিষয়টি কোম্পানীকে জানানোর পর সরেজমিনে পর্যবেক্ষন টিম পাঠিয়েছে।

 

 

ভাইরাস বা আবহাওয়াজনিত কারণে এমনটি হতে পারে বলে তাঁরা ধারণা করছেন। ভাদুর ইউনিয়নের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা তুহিন চন্দ্র অধিকারী বলেন, এবার হীরা ধান চাষ করায় গাছগুলো খর্বাকৃতি, কুশির সংখ্যা স্বলতা ও বাদামী বর্ণের হয়ে যাচ্ছে। বিষয়টি উধ্র্ধসঢ়;ভতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। জানতে চাইলে রামগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সৈয়দ রায়হানুল হায়দার বলেন, বীজে ভেজাল থাকার কারণে এমনটি হতে পারে। বিষয়টি উপজেলা সার ও বীজ মনিটরিং কমিটির সভায় আলোচনা হয়েছে। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে।