![](https://banglaralonews.com/wp-content/plugins/print-bangla-news/assest/img/print-news.png)
সাইফুর নিশাদ
নরসিংদী প্রতিনিধি
নরসিংদির মনোহরদী উপজেলার খিদিরপুর ইউনিয়নের ২ নং ওয়ার্ডের মরহুম মোহাম্মদ মস্তুফা পুত্র মোহাম্মদ মামুন (১৮) সৌদি আরবে নিদ্রারত অবস্থায় ব্রেন স্ট্রোকে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
বয়স তার মাত্র ১৮! এই বয়সে অনেকে এক এলাকা থেকে অন্য এলাকায়, মাঠ থেকে মার্কেটে দাপিয়ে বেড়ায় বাইকে চড়ে। কেউ সুশিক্ষিত সুনাগরিক হতে শিক্ষাঙ্গনের বারান্দায়। এই বয়সের সকল তরুনদের চোখে থাকে রঙ্গিন চশমার পর্দা। যেদিকে তাকায় সেদিকটাই রঙ্গিন লাগে। চিন্তাভাবনাহীন রাজ্যে আধিপত্য বিস্তার করে। ঠিক এই সময়ে মামুন পরিবারে হাল ধরনে প্রবাসে পাড়ি জমান। চাইলে সেও তার সহপাঠীদের ন্যায় বিন্দাস লাইফ কাটাতে পারতো। তা করেনি সে!
কেননা অল্প বয়সেই বাবা হারান মামুন।বছর খানেক আগে তার পিতা ধনুষ্টংকার রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়লোকে পাড়ি জমান। পায়ে লোহা বিধলে চিকিৎসা করতে বিলম্ব করায় ধনুষ্টংকার রোগ বাসা বাধলে চিরন্তন সত্য মরনকে বরন করে নিতে হয় তাকে।
মামুন ছিলো অত্যান্ত নম্র,ভদ্র ও শান্ত প্রকৃতির টগবগে এক তরুন। পড়ালেখায় খুব একটা সুবিধে করতে না পারায় মায়ের অন্ন ধ্বংশ না করে রোজগারের আশায় প্রবাসে পাড়ি জমান। মাস তিনেক হলো প্রবাস জীবন। এখনো হয়তবা তার প্রবাসের আবহাওয়া সম্পর্কেই ধারনা জন্মায়নি। তার আগেই চলে আসতে হবে সাদা কাফনের মোড়কে বাক্সবন্দী লাশ হয়ে।
ঘটনাটি ঘটে বাংলাদেশ সময় সকাল ১০ টায়। মামুন তার ডিউটি শেষ করে বাসায় এসে ঘুমিয়ে পড়েন। ধকল কাটিয়ে পতিশ্রমের পড় নিজেকে সতেজ করতে বিশ্রামের বিকল্প নেই। মামুনও তাই করলেন। কিন্তু মামুনও কি জানতো সে পরলোকে গমন করতে যাচ্ছে? এটায় হতে যাচ্ছে তার এই দুনিয়ার শেষ বিশ্রাম কিংবা ঘুম।
মামুন ঘুমের ঘোরে থাকাকালীন সকাল ১০ টায় তার রুমের অন্যান্য সদস্যগন মামুনকে খাবার গ্রহনের জন্য ডাকলে মামুন কোন সাড়া দেয় নি! সাড়া না পেয়ে রুমের সবাই যখন ব্যাকুল হয়ে মামুনকে ডাকাডাকি শুরু করলো কিন্তু অবস্থার কোন পরিবর্তন ঘটলো না। উপায়ন্তর না দেখে তার রুমের সদস্যরা হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত ডাক্তার মামুনকে মৃত ঘোষণা করে।
প্রবাসে থাকা মামুনের নিকটস্থ এক আত্বীয়(বিয়াই) জানান মামুনকে ডাকাডাকি করার পর সাড়া না পেয়ে হসপিটালে নিলে ডাক্তার ব্রেন স্ট্রোকের ফলে মৃত্যু হয় বলে জানান তাদের।
তারপর বিকাল ৩ ঘটিকার দিকে মামুনের আত্বীয় (বিয়াই) তার বাড়িতে ঘটনাটি জানান। ঘটনাটি জানার পর মামুনের মা ভেঙ্গে পড়েন ও ২/১ বার অজ্ঞান হয়ে পড়েন। তাকে সামলাচ্ছেন এখন পাড়াপ্রতিবেশি ও নিকট আত্বীয় স্বজনরা।
মামুনের বড় ভাই প্রবাসী মোশাররফ (২৫) ভাইয়ের মৃত্যুর সংবাদ পেয়ে মায়ের ও ছোট দুটি বোনের করুন পরিনতি শুনে তাৎক্ষনিক বাংলাদেশে আসার ব্যাবস্থা করেন। আগামীকাল ( ২৫) তিনি দেশে ফেরত আসবেন।
এদিকে মামুনের লাশ দেশে ফেরত পাঠানোর ব্যবস্থা সম্পর্কে জানতে চাইলে, প্রবাসে থাকা মামুনের বিয়াই জানান, মামুনের কর্মস্থলের কোম্পানির মালিক সকল ব্যবস্থা নিচ্ছেন। খুব শীঘ্রই তার নিথর দেহ দেশে পাঠাবেন।