আবদুল্লাহ আল মামুন, যশোর জেলা প্রতিনিধি:
যশোরের মণিরামপুর পৌরসভা থেকে ওয়ারিশ কায়েম সনদ প্রদানে ব্যাপক দুর্নীতি ও জালজালিয়াতির অভিযোগ উঠেছে ৩নং ওয়ার্ড কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে। তাঁর স্বাক্ষরিত এক সনদে দেখা যায় তিনি ছেলেকে মেয়ে বানিয়ে প্রশ্ন বিদ্ধ করেছেন। একই সাথে বাদ দিয়েছেন প্রকৃত ওয়রিশদের নাম। এব্যাপারে ওই কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে আলাদলতে মামলা দয়ের হয়েছে। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে পি বি আই কে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানায়, মণিরামপুর পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ডের স্থায়ী বাসিন্দা মো: শহিদুল ইসলাম মহলদার ২ স্ত্রী, ১পুত্র ও ৩ কন্যা রেখে ২০২০ সালে ২১ মে মৃত্যুবরণ করেন। গত ২০ ফেব্রুয়ারি কাউন্সিলর বাবুলাল চৌধুরীর দেয়া সনদে দেখা যায় শহিদুল ইসলামের দ্বিতীয় স্ত্রী রুমিছা বেগমের নাম বাদ দেয়া হয়েছে এবং তাদের একমাত্র পুত্র মোঃ শাহাজান শাকিলের নামের আগে মোছাঃ বসিয়ে লিখেছেন মোছাঃ:শাহাজান আলী। যার স্মারক নং মণিঃ/পৌরঃ ওয়ারিশ-(৩৭৫)/৪-৩৬/২০২২- ১৭৪।
জানা যায়, মৃত শহিদুল ইসলামের ঔরসে ১ম স্ত্রী মরিয়ম বেগমের ১ কন্যা রূপালী বেগম এবং ২য় স্ত্রী মোছাঃ রুমিছা বেগমের ১ পূত্র ও ২ কন্যা সন্তান রয়েছে। তারা হলেন,মোঃ শাহাজান শাকিল,মোছাঃ শিউলী বেগম ও মোছাঃ শিল্পী খাতুন। সরকারী বিধি অনুযায়ী ওয়ারিশ সনদ নিতে গেলে ওয়ারিশ গনের ভোটার আইর্ডি কার্ড অথবা জন্ম নিবন্ধনের সাথে মিল করে নাম, ঠিকানা সহ আইডি কার্ডের নাম্বার দিয়ে ওয়ারেশ সনদ দিতে হয়।
এসব নিয়ম নীতি তোয়াক্কা না করেই কাউন্সিলর বাবুলাল চৌধুরী জাল জালিয়াতি করে ভুয়া ওয়ারিশ সনদ প্রদান করেন। প্রদানকৃত ওয়ারিশ সনদে দেখা যায়,১ম স্ত্রী, ১পুত্র ও ৩ কন্যার নাম। ২য় স্ত্রীর নাম বাদ দেয়া হয়েছে। অথচ মণিরামপুর পৌরসভা কর্তৃক প্রদত্ত মো:শহিদুল ইসলামের মৃত্যু সনদে দেখা যায় দুই স্ত্রীর নাম।
জানা যায়, ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ইং তারিখ সকালে মৃত শহিদুল ইসলামের ২য় স্ত্রী মোছা:রুমিছা বেগমকে বাদ দিয়ে ওয়ারিশ সনদ দেওয়ার জন্য কাউন্সিলরের বাড়িতে বসে ১ম স্ত্রী মরিয়ম বেগম ও কন্যা রূপালী বেগমের কাছ থেকে মোটা অংকের অর্থ নেন তিন নাম্বার ওয়ার্ড কাউন্সিলর বাবুলাল চৌধুরী বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কাউন্সিলের এক সহযোগী।
এ বিষয়ে শহিদুল ইসলামের পুত্র শাহাজান শাকিলের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, কাউন্সিলর বাবুলাল চৌধুরী বিষয়টি ভালভাবে যাচাই বাছাই তদন্ত বাদেই টাকা খেয়ে এই ভুয়া ওয়ারিশ সনদ দিয়েছেন ,আমার কাছে কোন কিছুই জানতে বা জিজ্ঞাসা করেননি, এছাড়াও ওয়ারিশ সনদে আমার নামের আগে মোছাঃ লাগিয়ে দিয়েছেন এবং নামের শেষে আলী ,আমার নাম মো:শাহাজান শাকিল আর ওয়ারিশ সনদে দিয়েছেন মোছা:শাহাজান আলী। আমার নামটাই পরিবর্তন করে দিয়ে আমাকে মেয়ে বানোনোর চেষ্টা করেছেন কাউন্সিলর।
এ বিষয়ে ৩নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর বাবুলাল চৌধুরী বলেন, আমার জানা মতে আমি কোন ওয়ারিশ কায়েম দেয়নি।ওয়ারিশ কায়েমের ঝামেলা চলছিলো এই নিয়ে মেয়র সাহেবের সাথে বসাবসি হয়েছে আর নামের যদি কোন ভুল থাকে তারাই নিজেরা লিখেছে তারাই ভুল লিখেছে আমার জানা মতে আমি কারো ওয়ারিশ দেয়নি। প্রথমে অস্বীকার করলেও ওয়ারিশ সনদে আপনার স্বাক্ষর আছে এমন প্রশ্নে কাউন্সিলর বলেন, দেখতে হবে ওয়ারিশ কায়েম দিয়েছি কিনা দেখতে হবে, আর যদি দিয়ে থাকি (মো: শাহাজান শাকিলের) মা বাদ ছিল। আমি এলাকায় খোঁজ খবর নিয়েছিলাম শাহাজানের মা নাকি তালাক প্রাপ্ত ছিল, যদিও দিয়ে থাকি তবে কবে কখন দিয়েছি মনে করতে পারছি না।
এবিষয়ে কাউন্সিলর ও প্যানেল মেয়ের–১ মো:কামরুজ্জামানের ০১৭১৯-৯১৫০০৮ এই নাম্বারে একাধিক ফোন করলেও রিসিভ করেন নি। এ বিষয়ে মণিরামপুর পৌরসভার মেয়র কাজী মাহমুদুল হাসান বলেন, ফাইল দেখতে হবে, ফাইল না দেখে কিছু বলতে পারবো না।ফাইল দেখে সঠিক তথ্য টা দিতে পারবো।