বাংলাদেশ ০৪:১৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ০২ জুন ২০২৪, ১৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
নোটিশ :

সাংবাদিক নিয়োগ চলছে,, সাংবাদিক নিয়োগ চলছে,,০১৯৯৯-৯৫৩৯৭০, ০১৭১২-৪৪৬৩০৬,০১৭১১-০০৬২১৪ সম্পাদক

     
ব্রেকিং নিউজ ::
আগামিকাল সোমবার আগরপুরে স্বপনের নির্বাচনি জনসেবা। বিজিবিতে চাকুরী দেওয়ার নামে প্রতারণার দায়ে দুইজন প্রতারককে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব। চারঘাট উপজেলা পরিষদ নির্বাচন : জনপ্রিয়তার শীর্ষে কাজী মাহমুদুল হাসান ঠাকুরগাঁওয়ে কয়েক মিনিটের ঝড়ে লন্ডভন্ড দুইটি ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রাম, নিহত ১ পাপিয়া বেগমকে গলা কেটে হত্যা মামলার ৩জন আসামী গ্রেফতার। সিদ্ধান্তের দ্বিধাদ্বন্দ্বে নিশ্চুপ মির্জাগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের সাধারণ ভোটাররা শেখ হাসিনা ক্ষমতায় থাকলে দেশের উন্নয়ন সম্ভব – ইয়াকুব আলী এমপি  সাবেক এমপি প্রয়াত আওয়ামী লীগ নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট সিরাজুল ইসলামের ২৭ তম মুত্যু বার্ষিকী। পিরোজপুরে পাওনা টাকা চাওয়ায় ব্যবসায়ীকে মারধর: দোকান ভাংচুর কটিয়াদীতে অতিরিক্ত লোডশেডিংয়ের সাথে ভুতুরে বিদ্যুৎ বিলে অতিষ্ঠ জনগণ অনিয়মই যেখানে নিয়ম! সেবা প্রত্যাশীদের ভোগান্তি  যশোরে বিপুল পরিমাণ ইয়াবা ট্যাবলেটসহ দুই বোন আটক শুভ জন্মদিন কবি সুলতান আহমেদ সোনার পালন করেন বাংলাদেশ প্রেসক্লাব পীরগঞ্জ।  সাপ্তাহিক বাংলার বিবেকের বর্ণাঢ্য প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালিত স্ত্রীর সাথে বিরোধ, পেকুয়ায় ফাঁসিতে ঝুলে যুবকের আত্মহত্যা

তিস্তার গ্রাসে ভিটেমাটি নদী গর্ভে।

  • নিজস্ব সংবাদ :
  • আপডেট সময় ০২:৩৭:০১ অপরাহ্ন, সোমবার, ১ অগাস্ট ২০২২
  • ১৬৬৬ বার পড়া হয়েছে

তিস্তার গ্রাসে ভিটেমাটি নদী গর্ভে।

আবুল কালাম আজাদ। কুড়িগ্রাম জেলা প্রতিনিধি। কুড়িগ্রামের উলিপুরে উপজেলার বজরা ও থেতরাই ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি গ্রাম তিস্তা নদী ভাঙ্গনে বিলীন হয়ে গেছে। কোথাও কোন জায়গা না পেয়ে ঠাঁই হলো খোলা আকাশের নিচে। ভাঙন চলছে আরও বেশ কয়েকটি গ্রামে। এবছরই প্রায় পাঁচ শতাধিক বসতভিটা এরই মধ্যে চলে গেছে নদীগর্ভে। ভাঙ্গনে ঝুঁকিতে রয়েছে কমিউনিটি ক্লিনিক প্রাথমিক বিদ্যালয় মাদ্রাসা মসজিদ মন্দির ঈদগাহ মাঠ সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান।

সরেজমিনে সেখানে গিয়ে দেখা যায়, ভাঙ্গনকবলিত জনগণ তাদের বাড়িটা অন্যত্র সরিয়ে নিচ্ছেন। বসতভিটা হারিয়ে তাদের আহাজারিতে আকাশ বাতাস ভারি হয়ে উঠেছে। কোথায় যাবেন কি খাবেন সে চিন্তায় তাদের ঘুম হারাম হয়ে গিয়েছে। তারা কোন উপায় না পেয়ে খোলা আকাশের নিচে জীবন যাপন করছেন।
বিলীন হয়ে যাওয়া সাতালস্কর গ্রামের বাসিন্দা আবুল হোসেন, গোলাম হোসেন, আজিত, ওসমান গনি, মফিজল, নুরনবী, নজরুল, এরশাদ বলেন, ৭ দিনে ৮০ বসতভিটা ভাংছে। দুই বছরে বিলীন হয়ে গেলো গ্রামটা। কম করে হলেও হাজারখানেক বাড়িওয়ালার বাস ছিলো এখানে। সবারই বাড়ি ঘর ভেঙে গেছে। আমরা এখন খেয়ে না খেয়ে দিন কাটাইতেছি। কোথায় যায় কী খায় সেই চিন্তায় রয়েছি। জমিজমা তো সব গিয়েছে, যদি বাড়িভিটা কোনা থাকিল হয় এটাতে কাজ করি খেলাম হয়। সরকারের কাছে বিনীত অনুরোধ আমাদের এখানে একটা স্থায়ী পদক্ষেপ নিয়ে আমাদেরকে শান্তিতে থাকার ব্যবস্থা করে দিক।
নদী ভাঙনের শিকার পশ্চিম বজরার রুস্তম আলী, আতাউর রহমান, মাইদুল ইসলাম, মমিনুল ইসলাম, সাইফুল আজগার মোস্তফা ফজিয়াল শাহিবুল বলেন গত তিন বছর ধরে এইখানে তিস্তা নদী খুব ভাঙছে। এই বছরে প্রায় ১০০ খানিক বাড়ি ভেঙে গেল। পানি উন্নয়ন বোর্ড কোন ব্যবস্থা নেয় নাই। আবাদি জমি ঘরবাড়ি নদীতে যাওয়ায় খুব বিপদে আছি। একেবারে আশ্রয়হীন। মুচিরবাধ থেকে যদি টি বাঁধ পর্যন্ত একটি বাঁধ নির্মাণ করা যেত এবং কয়টি টি বাঁধ দেওয়া হতো তাহলে হয়তো এই এলাকাটা টিকে থাকত। আমরা খুব দুর্বিষহ অবস্থায় আছি।
সাদুয়া দামারহাট গ্রামের গো লাপ উদ্দিন ও শাহেদ আলী জানান, এই গ্রামের দুই শতাধিক বাড়িঘর ভেঙ্গে গেছে। যাই যেখানে পেয়েছে সেখানে আশ্রয় নিয়েছে। মসজিদের পাড়ে কিছু জিও ব্যাগ ফেলাইতেছে। কিন্তু তাতে কাজ হবে না। একটা ভালো ব্যবস্হা না নিলে আমরা যাবো কোথায়। নদী ভাঙ্গন রোধের স্থায়ী ভাবে ব্যাবস্থা নেয়ার কথা বলেন।
৬ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য এনামুল হক বলেন, আমার ওয়ার্ডের একটি ক্লিনিক, প্রাথমিক বিদ্যালয়, মসজিদ-মাদ্রাসা, মন্দিরসহ বসতভিটা, আবাদি জমি ভাঙনের ঝুঁকিতে আছে। যদি এখানে একটা কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া যেত বাঁধ নির্মাণ করা যেত তাহলে এই এলাকাটা রক্ষা করা যেত। এই ওয়ার্ডে প্রায় দুই আড়াই মাইল নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গিয়েছে এখন যদি কার্যকর পদক্ষেপ না নেয়া হয় তাহলে বাকিটুকুও নদীগর্ভে চলে যাবে।
বজরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল কাইয়ুম সরদার বলেন, আমার ইউনিয়ন নদী ভাঙন কবলিত একটি ইউনিয়ন। প্রতি বছর ভাঙনে নিঃস্ব হচ্ছে জনগণ। অনেক বলা কওয়ার পরেও এখানে ভাঙন রোধে তেমন কোন কাজ করা হয় নাই। অবহেলিত রয়ে গেছে। আমরা চাই এখানে নদী ভাঙন রোধে কার্যকর ব্যবস্হা নেয়া হোক। যাতে আমরা অন্তত শান্তিতে নিজের বাড়িতে ঘুমাইতে পারি।

তিস্তা নদী ভাঙ্গন রোধে কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন অধিদপ্তরের উপ-প্রকৌশলী জনাব নজরুল ইসলাম বলেন, তিস্তার খরা স্রোতে তিস্তার পাড় হুমকির পড়েছে। তিস্তার পাড়ের ভাঙ্গন এলাকা গুলোতে আমাদের জিও ব্যাগ ফেলা হয়েছে। তিব্র স্রোতের কারনে সেগুলো নদীতে চলে গেছে। এখন থেকে ব্যাংক পাইলিং ও জিও ব্যাগের মাধ্যমে কাজ শুরু করেছি। আশা করি ৩ থেকে ৪ দিনের মধ্যে কাজ সম্পন্ন করতে পারব।”

আপলোডকারীর তথ্য

Banglar Alo News

hello
জনপ্রিয় সংবাদ

আগামিকাল সোমবার আগরপুরে স্বপনের নির্বাচনি জনসেবা।

তিস্তার গ্রাসে ভিটেমাটি নদী গর্ভে।

আপডেট সময় ০২:৩৭:০১ অপরাহ্ন, সোমবার, ১ অগাস্ট ২০২২
আবুল কালাম আজাদ। কুড়িগ্রাম জেলা প্রতিনিধি। কুড়িগ্রামের উলিপুরে উপজেলার বজরা ও থেতরাই ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি গ্রাম তিস্তা নদী ভাঙ্গনে বিলীন হয়ে গেছে। কোথাও কোন জায়গা না পেয়ে ঠাঁই হলো খোলা আকাশের নিচে। ভাঙন চলছে আরও বেশ কয়েকটি গ্রামে। এবছরই প্রায় পাঁচ শতাধিক বসতভিটা এরই মধ্যে চলে গেছে নদীগর্ভে। ভাঙ্গনে ঝুঁকিতে রয়েছে কমিউনিটি ক্লিনিক প্রাথমিক বিদ্যালয় মাদ্রাসা মসজিদ মন্দির ঈদগাহ মাঠ সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান।

সরেজমিনে সেখানে গিয়ে দেখা যায়, ভাঙ্গনকবলিত জনগণ তাদের বাড়িটা অন্যত্র সরিয়ে নিচ্ছেন। বসতভিটা হারিয়ে তাদের আহাজারিতে আকাশ বাতাস ভারি হয়ে উঠেছে। কোথায় যাবেন কি খাবেন সে চিন্তায় তাদের ঘুম হারাম হয়ে গিয়েছে। তারা কোন উপায় না পেয়ে খোলা আকাশের নিচে জীবন যাপন করছেন।
বিলীন হয়ে যাওয়া সাতালস্কর গ্রামের বাসিন্দা আবুল হোসেন, গোলাম হোসেন, আজিত, ওসমান গনি, মফিজল, নুরনবী, নজরুল, এরশাদ বলেন, ৭ দিনে ৮০ বসতভিটা ভাংছে। দুই বছরে বিলীন হয়ে গেলো গ্রামটা। কম করে হলেও হাজারখানেক বাড়িওয়ালার বাস ছিলো এখানে। সবারই বাড়ি ঘর ভেঙে গেছে। আমরা এখন খেয়ে না খেয়ে দিন কাটাইতেছি। কোথায় যায় কী খায় সেই চিন্তায় রয়েছি। জমিজমা তো সব গিয়েছে, যদি বাড়িভিটা কোনা থাকিল হয় এটাতে কাজ করি খেলাম হয়। সরকারের কাছে বিনীত অনুরোধ আমাদের এখানে একটা স্থায়ী পদক্ষেপ নিয়ে আমাদেরকে শান্তিতে থাকার ব্যবস্থা করে দিক।
নদী ভাঙনের শিকার পশ্চিম বজরার রুস্তম আলী, আতাউর রহমান, মাইদুল ইসলাম, মমিনুল ইসলাম, সাইফুল আজগার মোস্তফা ফজিয়াল শাহিবুল বলেন গত তিন বছর ধরে এইখানে তিস্তা নদী খুব ভাঙছে। এই বছরে প্রায় ১০০ খানিক বাড়ি ভেঙে গেল। পানি উন্নয়ন বোর্ড কোন ব্যবস্থা নেয় নাই। আবাদি জমি ঘরবাড়ি নদীতে যাওয়ায় খুব বিপদে আছি। একেবারে আশ্রয়হীন। মুচিরবাধ থেকে যদি টি বাঁধ পর্যন্ত একটি বাঁধ নির্মাণ করা যেত এবং কয়টি টি বাঁধ দেওয়া হতো তাহলে হয়তো এই এলাকাটা টিকে থাকত। আমরা খুব দুর্বিষহ অবস্থায় আছি।
সাদুয়া দামারহাট গ্রামের গো লাপ উদ্দিন ও শাহেদ আলী জানান, এই গ্রামের দুই শতাধিক বাড়িঘর ভেঙ্গে গেছে। যাই যেখানে পেয়েছে সেখানে আশ্রয় নিয়েছে। মসজিদের পাড়ে কিছু জিও ব্যাগ ফেলাইতেছে। কিন্তু তাতে কাজ হবে না। একটা ভালো ব্যবস্হা না নিলে আমরা যাবো কোথায়। নদী ভাঙ্গন রোধের স্থায়ী ভাবে ব্যাবস্থা নেয়ার কথা বলেন।
৬ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য এনামুল হক বলেন, আমার ওয়ার্ডের একটি ক্লিনিক, প্রাথমিক বিদ্যালয়, মসজিদ-মাদ্রাসা, মন্দিরসহ বসতভিটা, আবাদি জমি ভাঙনের ঝুঁকিতে আছে। যদি এখানে একটা কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া যেত বাঁধ নির্মাণ করা যেত তাহলে এই এলাকাটা রক্ষা করা যেত। এই ওয়ার্ডে প্রায় দুই আড়াই মাইল নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গিয়েছে এখন যদি কার্যকর পদক্ষেপ না নেয়া হয় তাহলে বাকিটুকুও নদীগর্ভে চলে যাবে।
বজরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল কাইয়ুম সরদার বলেন, আমার ইউনিয়ন নদী ভাঙন কবলিত একটি ইউনিয়ন। প্রতি বছর ভাঙনে নিঃস্ব হচ্ছে জনগণ। অনেক বলা কওয়ার পরেও এখানে ভাঙন রোধে তেমন কোন কাজ করা হয় নাই। অবহেলিত রয়ে গেছে। আমরা চাই এখানে নদী ভাঙন রোধে কার্যকর ব্যবস্হা নেয়া হোক। যাতে আমরা অন্তত শান্তিতে নিজের বাড়িতে ঘুমাইতে পারি।

তিস্তা নদী ভাঙ্গন রোধে কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন অধিদপ্তরের উপ-প্রকৌশলী জনাব নজরুল ইসলাম বলেন, তিস্তার খরা স্রোতে তিস্তার পাড় হুমকির পড়েছে। তিস্তার পাড়ের ভাঙ্গন এলাকা গুলোতে আমাদের জিও ব্যাগ ফেলা হয়েছে। তিব্র স্রোতের কারনে সেগুলো নদীতে চলে গেছে। এখন থেকে ব্যাংক পাইলিং ও জিও ব্যাগের মাধ্যমে কাজ শুরু করেছি। আশা করি ৩ থেকে ৪ দিনের মধ্যে কাজ সম্পন্ন করতে পারব।”