রাজশাহী প্রতিনিধিঃ
রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে চলছে চিরুণী অভিযান। ধারাবাহিক এই অভিযানে ইতোমধ্যে ধরা পড়ছে মোবাইল, সিম কার্ড, নগদ টাকা, গাঁজা, হিরোইন, ইয়াবা ইত্যাদি।
সরবরাহকারী কারারক্ষী মারুফকে করা হয়েছে সাসপেন্ড। উদ্ধার হওয়া গাঁজা ও কয়েদিকে দেওয়া হয়েছে জেলকোড আইনে মামলা।
জানা যায়, গত ১৬ এপ্রিল বাবু চালির কয়েদি আলমগীরের নিকট থেকে হাফ কেজি গাঁজা উদ্ধার করেন কারারক্ষীরা। জেল কোড আইনে ব্যবস্থা নেওয়া হয় আলমগীরের বিরুদ্ধে। গাঁজা সরবরাহের দায়ে সাময়িক বরখাস্ত করা হয় কারারক্ষী মারুফকে। তবে ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি অন্য সহযোগী কারারক্ষী মুকুলের।
এছাড়াও বিগত দিনে ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি শামীম এর কাছ থেকে তিনটি মোবাইল দশটি সিমকার্ড উদ্ধার করা হয়। পরবর্তীতে যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামী কোয়েলের কাছ থেকে একটি মোবাইল সিম কার্ড সহ নগদ টাকা উদ্ধার করে কারা প্রশাসন। তাদের বিরুদ্ধেও নেওয়া হয় যথাযথ ব্যবস্থা।
কারা প্রশাসন সুত্র বলছে, আগের চেয়ে ভাল অবস্থানে আছে কারাগার। কারা ক্যান্টিনে কোন জিনিস পত্রের দাম বেশি নেওয়া হয় না। যেখানে আগে নানা অনিয়ম ছিলো।
একটি সুত্র নিশ্চিত করেন, কারা প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে কতিপয় অসাধু সদস্য এখনও কারাগারে দুর্নীতি অনিয়ম চলমান রেখেছেন। কারা ক্যান্টিনে খাবার মান নিম্নমানে নেওয়া হয় নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে অধিক দামে। অনিয়মে যুক্ত আছেন মুক্তি শাখার যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত কয়েদি নাজমুল। আসামিদের ২০ বছর সাজা খাটা হলে তাদের মুক্তির আবেদন পাঠানো হয়। এই আবেদন পাঠানোর জন্য কয়েদিদের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা দাবি করেন তিনি। দাবি পূরণ হলেই মেলে আবেদনের সুযোগ। অন্যথায় দাবি পূরণ না হলে নানা রকম তালবাহানা করেন তিনি । একাধিক মামলার হাজতবাস ধরে দেয়ার কোনো নিয়ম নেই। সে টাকার বিনিময়ে সেটাও করে দেয় আর পিটি করার সময় ও মোটা অঙ্কের টাকা দাবি করে থাকে সে। দীর্ঘদিন আগে তার কাছ থেকে একটি অবৈধ মোবাইল উদ্ধার করা হয়েছিল। যেটা তার কেস টিকেটে উল্লেখ করা আছে। তবে এ সকল বিষয়ে কঠোর নজরদারি বৃদ্ধিসহ চলছে অভিযান।
এদিকে নাজমুলের বিরুদ্ধে আরো অভিযোগ উঠেছে সে নাপিত চালির যাবজ্জীবন দন্ডপ্রাপ্ত আসামী মেছের
এর কাছ থেকে ২০০০ টাকা নিয়েছে অপরদিকে মোড়া চালির নজরুলের কাছ থেকে ৫০০ টাকা নিয়েছেন তিনি। এছাড়াও জয়পুরহাটের মামুন মাস্টার এর কাছ থেকে টাকা নেয় সে। ডি আর লেখার জন্য নাপিত চালির কয়েদি বন্দীর কাছ থেকে টাকা নেন তিনি। তবে প্রতিটি অনিয়ম বন্ধে বদ্ধপরিকর জেল প্রশাসন। সম্প্রতি তাদের তৎপরতায় এখন অনিয়ম দুর্নীতি অনেক অংশেই কমে এসেছে। এ ধারাবাহিকতায় উদ্ধার হয়েছে মোবাইল ফোন, নগদ টাকা, গাঁজা। মেডিকেল রাইটার রুবেল এখন গাঁজার অন্যতম সিন্ডিকেট বলে নিশ্চিত করেন কারাগারে একটি বিশ্বাস্থ সুত্র।
এ বিষয়ে কথা বললে জেল সুপার সুব্রত কুমার বালা জানান, আমরা প্রতিনিয়ত অনিয়ম দুর্নীতি বন্ধে কাজ করছি। আমরা কাজ করছি বলে গাঁজা, মোবাইল, টাকা উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছি। জেল প্রশাসন তৎপর আছে। অচিরেই সব বন্ধ করতে সক্ষম হবো। ইতোমধ্যে গাঁজা উদ্ধারের ঘটনায় এক কারারক্ষীকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। আগের তুলনায় জেলখানা এখন কঠোর নিরাপত্তার বলায়ের মধ্যে রাখা আছে।