বাংলাদেশ ০৪:৪৩ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪, ১৮ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
নোটিশ :

সাংবাদিক নিয়োগ চলছে,, সাংবাদিক নিয়োগ চলছে,,০১৯৯৯-৯৫৩৯৭০, ০১৭১২-৪৪৬৩০৬,০১৭১১-০০৬২১৪ সম্পাদক

     
ব্রেকিং নিউজ ::
মে দিবসের এবারের প্রতিপাদ্য- ‘শ্রমিক-মালিক ঐক্য গড়ি, স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলি’। পঞ্চগড়ে ভারত থেকে আসা বিলুপ্ত প্রজাতির মদনটাক পাখি উদ্ধার শিকল অবমুক্তের সময় ৭ সাংবাদিকের বিরুদ্ধে সাইবার ট্রাইব্যুনালে মামলা, প্রত্যাহারের দাবিতে পাথরঘাটায় মানববন্ধন পরবর্তী নির্দেশনা না দেয়া পর্যন্ত বন্ধ কুবি ধনবাড়ীতে মাটিবাহী ট্রাক ও অটোর মুখোমুখি সংঘর্ষে নিহত ২ পটুয়াখালীতে ১৬ বছরেও সেনাপল্লীর প্লট বরাদ্দ বুঝে পায়ইনি ৪৬৭ জন অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তারা। ঐক্যবদ্ধ থাকলে কোনো অপশক্তি যড়যন্ত্র করে সফল হতে পারবে না- এমপি হিরো নরসিংদীতে গুলি করে ৬০ লাখ টাকা ছিনতাই হওয়ার ঘটনায় টাকাসহ আটক-৩ পাথরঘাটায় ৩ দিন ধরে মাদরাসা ছাত্র নিখোঁজ প্রজাতন্ত্রের অন্যান্য বিভাগের ন্যায় শিক্ষা বিভাগে কর্মরত শিক্ষক ও কর্মচারীদের ছুটি ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধার মধ্যে সমতা থাকা বাঞ্ছনীয় কুবিতে প্রশাসনিক পদ থেকে পদত্যাগ করলো তিন শিক্ষক হত্যা মামলার ১২ আসামিকে গ্রেপ্তার করল র‌্যাব। সুরমা টাওয়ার থেকে এক যুবকের মৃতদেহ উদ্ধার! শাহ পরান এলাকায় একজন মুয়াজ্জিনের আত্মহত্যা

ইসলামে প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলায় করণীয়

  • নিজস্ব সংবাদ :
  • আপডেট সময় ০৮:৩৫:৪৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৮ অক্টোবর ২০২২
  • ১৭১১ বার পড়া হয়েছে

 

 

 

 

 

 

 

গাজী মুহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম জাবির

মহান আল্লাহ এই সুন্দর বসুন্ধরা সাজিয়েছেন অপরূপ মায়াবী কারুকার্যে। যাবতীয় প্রয়োজনীয় বস্তু সামগ্রী দিয়েই মানুষকে পাঠিয়েছেন পৃথিবীর বুকে। এই প্রকৃতি মহান আল্লাহ কর্তৃক সৃষ্ট ও পরিচালিত। তবে মাঝে মধ্যে প্রকৃতি বিরূপ রূপ ধারণ করে। আমাদের উপর আঘাত হানে ঘূর্ণিঝড়, কালবৈশাখী ঝড়, শিলাবৃষ্টি, অনাবৃষ্টি, জলোচ্ছ্বাস ভারী বর্ষণ, বন্যা, খরা, দাবানল, শৈত্যপ্রবাহ; দুর্ভিক্ষ, মহামারি, ভূমিকম্প, সুনামি এবং সম্প্রতি চিত্রাংয়ের মত ভয়াবহ তান্ডবসহ এসব প্রাকৃতিক দুর্যোগ (বিপদ) থেকে বাঁচার জন্য মহান আল্লাহর কাছে আমাদের সাহায্য চাইতে হবে এবং আল্লাহ ছাড়া কোন উপায় নেই।

 

 

 

 

দুর্যোগে রাসূলের কেমন অবস্থা হতোঃ
কোনো প্রাকৃতিক বিপর্যয় দেখা দিলে রাসূলুল্লাহ (সা.) বিচলিত হয়ে পড়তেন। আল্লাহর শাস্তির ভয় করতেন। বেশি বেশি তওবা-ইস্তেগফার করতেন এবং অন্যদেরকেও তা করার নির্দেশ দিতেন। ঝড়-তুফান শুরু হলে তিনি মসজিদে চলে যেতেন। নফল নামাজে দাঁড়িয়ে আল্লাহর দরবারে প্রার্থনা জানাতেন। রাসূলুল্লাহ (সা.) এর এ আমল দ্বারা প্রাকৃতিক দুর্যোগের মুহূর্তে আমাদের করণীয় কী তা জানতে পারি।হাদিসে এসেছে- রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, মুমিনের বিষয়টি সত্যিই আশ্চর্যের! তার প্রতিটি কাজই কল্যাণকর। যদি তারা (মুমিন বান্দা) সুখে থাকে তবে শুকরিয়া আদায় করে, যার ফলে তা তার জন্য কল্যাণকর হয়। আর সে বিপদে পড়লে ধৈর্য ধরে, তাও তার জন্য মঙ্গলজনক হয়। (মুসলিম)

 

 

 

 

প্রাকৃতিক দুর্যোগে ধৈর্য ধারণ করাঃ
মহান আল্লাহ তায়ালা মানুষকে বিভিন্ন বিপদাপদ দিয়ে পরীক্ষা ও সতর্ক করে থাকেন। আল্লাহ তায়ালা বলেন: ‘আর আমি অবশ্যই তোমাদেরকে পরীক্ষা করব কিছু ভয়, ক্ষুধা এবং জান, মাল ও ফলফলাদির ক্ষতির মাধ্যমে। আর তুমি ধৈর্যশীলদের সুসংবাদ দাও। যারা, নিজেদের বিপদ-মুসিবতের সময় বলে, নিশ্চয় আমরা আল্লাহর জন্য এবং নিশ্চয় আমরা আল্লাহরই দিকে প্রত্যাবর্তনকারী, তাদের ওপরই রয়েছে তাদের রবের পক্ষ থেকে মাগফিরাত ও রহমত এবং তারাই হিদায়াতপ্রাপ্ত। (সুরা বাকারা, ১৫৫-১৫৭; পারা: ২)।

 

 

 

 

 

দুর্যোগের সময় পালনীয় সুন্নত আমলঃ
প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় কিছু সুন্নত আমল করার মাধ্যমে ক্ষয়ক্ষতি থেকে বাঁচার চেষ্টা করতে হবে। হাদিস শরিফে এসেছে, যখন কোথাও ভূমিকম্প সংঘটিত হয় অথবা সূর্যগ্রহণ হয়, ঝোড়ো বাতাস বা বন্যা হয়, তখন সবার উচিত মহান আল্লাহর কাছে তওবা করা, তার কাছে নিরাপত্তার জন্য দোয়া করা, মহান আল্লাহকে স্মরণ করা এবং ক্ষমা প্রার্থনা করা।

 

 

 

 

এ ক্ষেত্রে রাসূলুল্লাহ (সা.) নির্দেশ দিয়ে বলেছেন, দ্রুততার সঙ্গে মহান আল্লাহর জিকির করো, তার নিকট তওবা করো। (বুখারি ২/৩০; মুসলিম ২/৬২৮)।

 

 

 

 

 

আল্লাহর জিকিরের সর্বোত্তম উপায় হচ্ছে নামাজ পড়া, কোরআন তিলাওয়াত বা দোয়া-দরুদ পাঠ করা। দুর্যোগের সময় জিকিরের আরও উপায় হতে পারে ইস্তিগফার, তসবি পাঠ ইত্যাদি। হাদিস শরিফে বর্ণিত আছে, প্রচন্ড ঝোড়ো হাওয়া বইলে রাসূলুল্লাহ (সা.) মসজিদে যেতেন এবং নামাজে মশগুল হতেন। (মিশকাত শরিফ: ৬৯৬)। সাহাবিদের জীবনে আমরা দেখি, বিপদে-মুসিবতে তারা নামাজে দাঁড়াতেন ও ধৈর্য ধারণ করতেন। (মিশকাতুল মাসাবিহ: ৫৩৪৫)। ঝড়-তুফানের প্রাদুর্ভাব ঘটলে তাকবির (আল্লাহু আকবার,আল্লাহ মহান) বলা ও আজান দেয়া সুন্নত। (তবে এই আজানে ‘হাইয়া আলাছ ছলাহ’ [নামাজের জন্য আসো] ও ‘হাইয়া আলাল ফালাহ’ [সফলতার জন্য আসো] বাক্যদ্বয় বলার প্রয়োজন নেই)।

 

 

 

 

 

বৃষ্টি-বাদলের সময় যে দোয়া পড়া সুন্নাতঃ
আম্মাজান হজরত আয়িশা সিদ্দিকা (রা.) বর্ণনা করেন, বৃষ্টি হলে রাসূলুল্লাহ (সা.) এই দোয়া পড়তেন: ‘আল্লাহুম্মা ছয়্যিবান নাফিআ’ (হে আল্লাহ! এই বৃষ্টি যেন আমাদের জন্য উপকারী ও কল্যাণকর হয়)। (বুখারি শরিফ ও মুসলিম শরিফ)। হযরত যায়িদ ইবনে ছাবিত (রা.) বর্ণনা করেন, বৃষ্টির পর রাসূলুল্লাহ (সা.) বলতেন: আল্লাহ তায়ালার দয়া ও অনুগ্রহে আমরা বৃষ্টিস্নাত হয়েছি। (বুখারি শরিফ ও মুসলিম শরিফ)।

 

 

 

 

 

অতিবৃষ্টির সময় সুন্নাত দোয়া পড়াঃ
হযরত আনাস ইবনে মালিক (রা.) বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) অধিক বৃষ্টি ও ভারী বর্ষণের সময় এই দোয়া পড়তেন, হে আল্লাহ! এই ঝড়, তুফান ও ভারী বর্ষণ আমাদের আশপাশ থেকে সরিয়ে নিন, দয়া করে আমাদের ওপর ঝড়, তুফান ও ভারী বর্ষণ দেবেন না। হে আল্লাহ, এই ভারী বর্ষণ দিন টিলা-পর্বতে, উঁচু ভূমিতে, উপত্যকায়, বনভূমি ও চারণ ভূমিতে। (বুখারি শরিফ ও মুসলিম শরিফ)।

 

 

 

 

 

ঝড়-তুফানের সময় পড়ার সুন্নত দোয়াঃ
হযরত আয়িশা সিদ্দিকা (রা.) বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) ঝড়-তুফানের সময় এর ক্ষয়ক্ষতি থেকে রক্ষা পেতে এই দোয়া পড়তেন, হে আল্লাহ! আমি আপনার নিকট প্রার্থনা করি এই ঝড়ের কল্যাণ, এর মধ্যস্থিত কল্যাণ, এর সঙ্গে প্রেরিত কল্যাণ। আমি আপনার নিকট পানাহ চাই এই ঝড়ের অনিষ্ট থেকে, এর মধ্যস্থিত অনিষ্ট থেকে, এর সঙ্গে প্রেরিত অনিষ্ট থেকে। (বুখারি শরিফ ও মুসলিম শরিফ)।

 

 

 

 

বজ্রপাত, ঝড়-তুফান ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে বাঁচার বিশেষ দোয়াঃ
প্রাকৃতিক দুর্যোগের ভয়াবহ করুণ এক রূপ হলো বজ্রপাত, যা মহান রাব্বুল আলামিনের শক্তিমত্তা ও ক্রোধের বহিঃপ্রকাশ। এ সম্পর্কে কোরআন মজিদে রয়েছে: ‘বজ্রধ্বনি তার প্রশংসা, মহিমা ও পবিত্রতা ঘোষণা করে, ফেরেশতাগণও তাকে ভয় করে (প্রশংসা ও পবিত্রতা বর্ণনা করে)। তিনি বজ্রপাত ঘটান এবং যাকে ইচ্ছা তা দ্বারা আঘাত করেন। আর তারা আল্লাহ সম্পর্কে বিতণ্ডা করে, অথচ তিনি মহা শক্তিশালী। (সুরা-১৩ [৯৬] রাআদ, রুকু: ২, আয়াত: ১৩; পারা: ১৩)।

 

 

 

 

হযরত আবদুল্লাহ ইবনে উমর (রা.) বর্ণনা করেন, বজ্রপাত ও বিজলি চমকানোর সময় এর ক্ষয়ক্ষতি থেকে রক্ষা পেতে রাসূলুল্লাহ (সা.) এই দোয়া পড়তেন, হে আল্লাহ! গজব দিয়ে আমাদের নিঃশেষ করবেন না, আজাব দিয়ে আমাদের ধ্বংস করবেন না; এর পূর্বেই আমাদের ক্ষমা করে দিন)। (মিশকাত শরিফ: ১৫২১; সুনানে তিরমিজি শরিফ: ৩৪৫০; নাসাই শরিফ: ৯২৭; মুসনাদে আহমাদ: খন্ড-২, পৃষ্ঠা ১০০, হাদিস: ৫৭৬৩; আদাবুল মুফরাদ বুখারি: ৭২১

 

 

 

 

 

আপলোডকারীর তথ্য

Banglar Alo News

hello

মে দিবসের এবারের প্রতিপাদ্য- ‘শ্রমিক-মালিক ঐক্য গড়ি, স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলি’।

ইসলামে প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলায় করণীয়

আপডেট সময় ০৮:৩৫:৪৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৮ অক্টোবর ২০২২

 

 

 

 

 

 

 

গাজী মুহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম জাবির

মহান আল্লাহ এই সুন্দর বসুন্ধরা সাজিয়েছেন অপরূপ মায়াবী কারুকার্যে। যাবতীয় প্রয়োজনীয় বস্তু সামগ্রী দিয়েই মানুষকে পাঠিয়েছেন পৃথিবীর বুকে। এই প্রকৃতি মহান আল্লাহ কর্তৃক সৃষ্ট ও পরিচালিত। তবে মাঝে মধ্যে প্রকৃতি বিরূপ রূপ ধারণ করে। আমাদের উপর আঘাত হানে ঘূর্ণিঝড়, কালবৈশাখী ঝড়, শিলাবৃষ্টি, অনাবৃষ্টি, জলোচ্ছ্বাস ভারী বর্ষণ, বন্যা, খরা, দাবানল, শৈত্যপ্রবাহ; দুর্ভিক্ষ, মহামারি, ভূমিকম্প, সুনামি এবং সম্প্রতি চিত্রাংয়ের মত ভয়াবহ তান্ডবসহ এসব প্রাকৃতিক দুর্যোগ (বিপদ) থেকে বাঁচার জন্য মহান আল্লাহর কাছে আমাদের সাহায্য চাইতে হবে এবং আল্লাহ ছাড়া কোন উপায় নেই।

 

 

 

 

দুর্যোগে রাসূলের কেমন অবস্থা হতোঃ
কোনো প্রাকৃতিক বিপর্যয় দেখা দিলে রাসূলুল্লাহ (সা.) বিচলিত হয়ে পড়তেন। আল্লাহর শাস্তির ভয় করতেন। বেশি বেশি তওবা-ইস্তেগফার করতেন এবং অন্যদেরকেও তা করার নির্দেশ দিতেন। ঝড়-তুফান শুরু হলে তিনি মসজিদে চলে যেতেন। নফল নামাজে দাঁড়িয়ে আল্লাহর দরবারে প্রার্থনা জানাতেন। রাসূলুল্লাহ (সা.) এর এ আমল দ্বারা প্রাকৃতিক দুর্যোগের মুহূর্তে আমাদের করণীয় কী তা জানতে পারি।হাদিসে এসেছে- রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেন, মুমিনের বিষয়টি সত্যিই আশ্চর্যের! তার প্রতিটি কাজই কল্যাণকর। যদি তারা (মুমিন বান্দা) সুখে থাকে তবে শুকরিয়া আদায় করে, যার ফলে তা তার জন্য কল্যাণকর হয়। আর সে বিপদে পড়লে ধৈর্য ধরে, তাও তার জন্য মঙ্গলজনক হয়। (মুসলিম)

 

 

 

 

প্রাকৃতিক দুর্যোগে ধৈর্য ধারণ করাঃ
মহান আল্লাহ তায়ালা মানুষকে বিভিন্ন বিপদাপদ দিয়ে পরীক্ষা ও সতর্ক করে থাকেন। আল্লাহ তায়ালা বলেন: ‘আর আমি অবশ্যই তোমাদেরকে পরীক্ষা করব কিছু ভয়, ক্ষুধা এবং জান, মাল ও ফলফলাদির ক্ষতির মাধ্যমে। আর তুমি ধৈর্যশীলদের সুসংবাদ দাও। যারা, নিজেদের বিপদ-মুসিবতের সময় বলে, নিশ্চয় আমরা আল্লাহর জন্য এবং নিশ্চয় আমরা আল্লাহরই দিকে প্রত্যাবর্তনকারী, তাদের ওপরই রয়েছে তাদের রবের পক্ষ থেকে মাগফিরাত ও রহমত এবং তারাই হিদায়াতপ্রাপ্ত। (সুরা বাকারা, ১৫৫-১৫৭; পারা: ২)।

 

 

 

 

 

দুর্যোগের সময় পালনীয় সুন্নত আমলঃ
প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় কিছু সুন্নত আমল করার মাধ্যমে ক্ষয়ক্ষতি থেকে বাঁচার চেষ্টা করতে হবে। হাদিস শরিফে এসেছে, যখন কোথাও ভূমিকম্প সংঘটিত হয় অথবা সূর্যগ্রহণ হয়, ঝোড়ো বাতাস বা বন্যা হয়, তখন সবার উচিত মহান আল্লাহর কাছে তওবা করা, তার কাছে নিরাপত্তার জন্য দোয়া করা, মহান আল্লাহকে স্মরণ করা এবং ক্ষমা প্রার্থনা করা।

 

 

 

 

এ ক্ষেত্রে রাসূলুল্লাহ (সা.) নির্দেশ দিয়ে বলেছেন, দ্রুততার সঙ্গে মহান আল্লাহর জিকির করো, তার নিকট তওবা করো। (বুখারি ২/৩০; মুসলিম ২/৬২৮)।

 

 

 

 

 

আল্লাহর জিকিরের সর্বোত্তম উপায় হচ্ছে নামাজ পড়া, কোরআন তিলাওয়াত বা দোয়া-দরুদ পাঠ করা। দুর্যোগের সময় জিকিরের আরও উপায় হতে পারে ইস্তিগফার, তসবি পাঠ ইত্যাদি। হাদিস শরিফে বর্ণিত আছে, প্রচন্ড ঝোড়ো হাওয়া বইলে রাসূলুল্লাহ (সা.) মসজিদে যেতেন এবং নামাজে মশগুল হতেন। (মিশকাত শরিফ: ৬৯৬)। সাহাবিদের জীবনে আমরা দেখি, বিপদে-মুসিবতে তারা নামাজে দাঁড়াতেন ও ধৈর্য ধারণ করতেন। (মিশকাতুল মাসাবিহ: ৫৩৪৫)। ঝড়-তুফানের প্রাদুর্ভাব ঘটলে তাকবির (আল্লাহু আকবার,আল্লাহ মহান) বলা ও আজান দেয়া সুন্নত। (তবে এই আজানে ‘হাইয়া আলাছ ছলাহ’ [নামাজের জন্য আসো] ও ‘হাইয়া আলাল ফালাহ’ [সফলতার জন্য আসো] বাক্যদ্বয় বলার প্রয়োজন নেই)।

 

 

 

 

 

বৃষ্টি-বাদলের সময় যে দোয়া পড়া সুন্নাতঃ
আম্মাজান হজরত আয়িশা সিদ্দিকা (রা.) বর্ণনা করেন, বৃষ্টি হলে রাসূলুল্লাহ (সা.) এই দোয়া পড়তেন: ‘আল্লাহুম্মা ছয়্যিবান নাফিআ’ (হে আল্লাহ! এই বৃষ্টি যেন আমাদের জন্য উপকারী ও কল্যাণকর হয়)। (বুখারি শরিফ ও মুসলিম শরিফ)। হযরত যায়িদ ইবনে ছাবিত (রা.) বর্ণনা করেন, বৃষ্টির পর রাসূলুল্লাহ (সা.) বলতেন: আল্লাহ তায়ালার দয়া ও অনুগ্রহে আমরা বৃষ্টিস্নাত হয়েছি। (বুখারি শরিফ ও মুসলিম শরিফ)।

 

 

 

 

 

অতিবৃষ্টির সময় সুন্নাত দোয়া পড়াঃ
হযরত আনাস ইবনে মালিক (রা.) বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) অধিক বৃষ্টি ও ভারী বর্ষণের সময় এই দোয়া পড়তেন, হে আল্লাহ! এই ঝড়, তুফান ও ভারী বর্ষণ আমাদের আশপাশ থেকে সরিয়ে নিন, দয়া করে আমাদের ওপর ঝড়, তুফান ও ভারী বর্ষণ দেবেন না। হে আল্লাহ, এই ভারী বর্ষণ দিন টিলা-পর্বতে, উঁচু ভূমিতে, উপত্যকায়, বনভূমি ও চারণ ভূমিতে। (বুখারি শরিফ ও মুসলিম শরিফ)।

 

 

 

 

 

ঝড়-তুফানের সময় পড়ার সুন্নত দোয়াঃ
হযরত আয়িশা সিদ্দিকা (রা.) বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ (সা.) ঝড়-তুফানের সময় এর ক্ষয়ক্ষতি থেকে রক্ষা পেতে এই দোয়া পড়তেন, হে আল্লাহ! আমি আপনার নিকট প্রার্থনা করি এই ঝড়ের কল্যাণ, এর মধ্যস্থিত কল্যাণ, এর সঙ্গে প্রেরিত কল্যাণ। আমি আপনার নিকট পানাহ চাই এই ঝড়ের অনিষ্ট থেকে, এর মধ্যস্থিত অনিষ্ট থেকে, এর সঙ্গে প্রেরিত অনিষ্ট থেকে। (বুখারি শরিফ ও মুসলিম শরিফ)।

 

 

 

 

বজ্রপাত, ঝড়-তুফান ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে বাঁচার বিশেষ দোয়াঃ
প্রাকৃতিক দুর্যোগের ভয়াবহ করুণ এক রূপ হলো বজ্রপাত, যা মহান রাব্বুল আলামিনের শক্তিমত্তা ও ক্রোধের বহিঃপ্রকাশ। এ সম্পর্কে কোরআন মজিদে রয়েছে: ‘বজ্রধ্বনি তার প্রশংসা, মহিমা ও পবিত্রতা ঘোষণা করে, ফেরেশতাগণও তাকে ভয় করে (প্রশংসা ও পবিত্রতা বর্ণনা করে)। তিনি বজ্রপাত ঘটান এবং যাকে ইচ্ছা তা দ্বারা আঘাত করেন। আর তারা আল্লাহ সম্পর্কে বিতণ্ডা করে, অথচ তিনি মহা শক্তিশালী। (সুরা-১৩ [৯৬] রাআদ, রুকু: ২, আয়াত: ১৩; পারা: ১৩)।

 

 

 

 

হযরত আবদুল্লাহ ইবনে উমর (রা.) বর্ণনা করেন, বজ্রপাত ও বিজলি চমকানোর সময় এর ক্ষয়ক্ষতি থেকে রক্ষা পেতে রাসূলুল্লাহ (সা.) এই দোয়া পড়তেন, হে আল্লাহ! গজব দিয়ে আমাদের নিঃশেষ করবেন না, আজাব দিয়ে আমাদের ধ্বংস করবেন না; এর পূর্বেই আমাদের ক্ষমা করে দিন)। (মিশকাত শরিফ: ১৫২১; সুনানে তিরমিজি শরিফ: ৩৪৫০; নাসাই শরিফ: ৯২৭; মুসনাদে আহমাদ: খন্ড-২, পৃষ্ঠা ১০০, হাদিস: ৫৭৬৩; আদাবুল মুফরাদ বুখারি: ৭২১