
নিজস্ব প্রতিবেদক
সিলেটের এয়ারপোর্ট ও কোম্পানীগঞ্জ থেকে পৃথক অভিযানে ২২৪ বোতল ফেনসিডিলসহ ০৯ জন মাদক ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করেছে র্যাব-৯।
র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) এলিট ফোর্স হিসেবে আত্মপ্রকাশের সূচনালগ্ন থেকেই বিভিন্ন ধরনের নৃশংস ও ঘৃণ্যতম অপরাধ বিশেষ করে মাদক উদ্ধার, হত্যা মামলা, সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ, জঙ্গি দমন, অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার ও ছিনতাইকারীসহ বিভিন্ন অপরাধীদের গ্রেফতারে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে আসছে।
এছাড়াও, যে কোন ধরনের সহিংসতা প্রতিরোধে র্যাবের প্রতিটি সদস্য প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হয়ে জনসাধারণের জন্য একটি নিরাপদ বাসযোগ্য সমাজ তথা দেশ বিনির্মাণে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে।
এরই ধারাবাহিকতায় র্যাব-৯, সদর কোম্পানী, সিলেট এর একটি আভিযানিক দল গত ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ইং তারিখ আনুমানিক রাত ২২:৪০ ঘটিকায় মাদকদ্রব্য উদ্ধারের নিমিত্তে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করা কালে সিলেট এর এয়ারপোর্ট থানাধীন এয়ারপোর্ট বাইপাস এলাকায় অবস্থান কালে গোপন সূত্রে সংবাদ পায় যে, সিলেট জেলার সীমান্তবর্তী এলাকা সাদাপাথর হতে কতিপয় ব্যক্তি একটি হায়েস গাড়িতে অবৈধ মাদকদ্রব্য নিয়ে সিলেট শহরের উদ্দেশ্যে রওনা করেছে।
উক্ত সংবাদ পেয়ে আভিযানিক দলটি ঘটনাস্থল এসএমপি, সিলেট এর এয়ারপোর্ট থানাধীন এয়ারপোর্ট গেইট এর সামনে পাঁকা রাস্তার উপর পৌঁছে চেকপোষ্ট কার্যক্রম পরিচালনা করে আনুমানিক রাত ২৩.০৫ ঘটিকার সময় সিলেটগামী একটি সাদা রংয়ের হায়েসকে থামানোর সংকেত দিলে হায়েসটিকে ঘটনাস্থলে থামিয়ে ০৬ জন ব্যক্তি কৌশলে পালানোর চেষ্টাকালে তাদের ধৃত করা হয়। ধৃত ব্যক্তিদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে কোন সন্তোষজনক জবাব দিতে পারেনি।
পরবর্তীতে অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদে তাদের হেফাজতে মাদকদ্রব্য ফেনসিডিল আছে মর্মে স্বীকার করে এবং তাদের দেখানো ও নিজ হাতে বাহির করে দেয়া মতে তাদের হেফাজতে থাকা হায়েস গাড়ীর পিছনের সিটের উপরে থাকা ০২টি প্লাস্টিকের বস্তার ভিতরে রক্ষিত অবস্থায় ১৮৩ বোতল ভারতীয় নেশা জাতীয় ফেনসিডিল উদ্ধার করা হয়।
ধৃত ব্যক্তিদের ব্যাপকভাবে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, তারা পরস্পর যোগসাজসে সিলেট জেলার সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে মাদক সংগ্রহ করে বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে নিজেদের হেফাজতে রেখেছে। পরবর্তীতে উল্লেখিত মাদক ও হায়েস গাড়িসহ তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারকৃত ব্যক্তিরা হলেন হলেন- ১। বিজয় হোসেন (৩০), পিতা- মোঃ বাদল, সাং- বাউনিয়া, থানা- তুরাগ, ডিএমপি- ঢাকা, ২। মিজানুর রহমান (৩১), পিতা- আকরম আলী, সাং- মিত্রি মহল, থানা- গোয়াইনঘাট, জেলা- সিলেট, ৩। আব্দুর রব (৪৫), পিতা- মৃত শহীদ উল্লা ভুঁইয়া, সাং- গংগাপুর, থানা- ল²ীপুর সদর, জেলা- ল²ীপুর, ৪। মোঃ পারভেজ আলী (২৫), পিতা- মোঃ আবু সাঈদ, সাং- আংগারগাড়া, থানা- ভালুকা, জেলা- ময়মনসিংহ, ৫। মোঃ হুমায়ুন কবির (৪৬), পিতা- মৃত আহির উদ্দীন, সাং- রানীপুর, থানা- চিরিবন্দর, জেলা- দিনাজপুর এবং ৬। মোঃ আমির হোসেন (৪৩), পিতা- মৃত আব্দুল মালেক, সাং- কাকুয়ার পাড়, থানা- এয়ারপোর্ট, এসএমপি- সিলেট।
এছাড়াও, অপর একটি অভিযানে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র্যাব-৯, সদর কোম্পানী, সিলেট এর একটি আভিযানিক দল অদ্য ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ইং তারিখ রাত আনুমানিক ০৩:০৫ ঘটিকায় সিলেট জেলার কোম্পানীগঞ্জ থানাধীন ভোলাগঞ্জ বাজারের বিসমিল্লাহ রেস্ট হাউজ এ মাদক বিরোধী অভিযান পরিচালনা করে ২০ বোতল ফেনসিডিল উদ্ধারপূর্বক ০২ জনকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়।
গ্রেফতারকৃত ব্যক্তিদ্বয়- ১। মোঃ রবিউল ইসলাম (৪৩), পিতা- মোঃ কদম আলী হাওলাদার, সাং- বরপা, থানা- রূপগঞ্জ, জেলা- নারায়ণগঞ্জ এবং রেবেকা আক্তার লিপি (৩৬), পিতা- মৃত হেরমত আলী, সাং- বাদেড়ী, থানা- কালীগঞ্জ, জেলা- ঝিনাইদহ।
এ সময় ধৃত আসামীদ্বয়কে ব্যপক জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানায় যে, তাদের অপর ০১ জন সহযোগী মাদকদ্রব্য ফেনসিডিল সহ সিলেট জেলার কোম্পানীগঞ্জ থানাধীন টুকের বাজারে অবস্থান করছে। উক্ত আসামীদ্বয়ের দেওয়া তথ্যমতে ১৮/০৯/২০২৫ ইং তারিখ আনুমানিক সকাল ০৬.১০ ঘটিকার সময় সিলেট জেলার কোম্পানীগঞ্জ থানাধীন টুকের বাজারে মাদক বিরোধী অভিযান পরিচালনা করে ২১ বোতল ফেনসিডিলসহ আরো ০১ জনকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। গ্রেফতারকৃত ব্যক্তি- মোঃ গোলাপ মিয়া (২৩), পিতা- মোঃ মঙ্গল মিয়া, সাং- ইসলামপুর, থানা- কোম্পানীগঞ্জ, জেলা- সিলেট।
পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের লক্ষ্যে গ্রেফতারকৃত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইন, ২০১৮ খ্রিঃ এর সংশ্লিষ্ট ধারায় মামলা দায়ের পূর্বক গ্রেফতারকৃত ব্যক্তিদের ও জব্দকৃত আলামত সিলেট জেলার সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। এছাড়াও মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি বাস্তবায়নে র্যাব-৯ এর গোয়েন্দা তৎপরতা এবং চলমান অভিযান অব্যাহত থাকবে।