শিক্ষা ক্যাডারে নিয়োগ তালিকায় ট্যুরিজম এন্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট যুক্ত করার প্রয়োজনীয়তা, ড. মোহাম্মদ জাহিদ হোসেন।

আপলোড সময় : ১৮-০৯-২০২৫ ০৮:৫২:৩০ অপরাহ্ন , আপডেট সময় : ১৮-০৯-২০২৫ ০৮:৫২:৩০ অপরাহ্ন


মোসাঃ মিতু খাতুন, রাজশাহী:

সাধারণত দেখা যায়,
বিসিএস শিক্ষা ক্যাডারে যেসব বিষয়ে শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হয়, সেখানে প্রচলিত বিষয়গুলো (বাংলা, ইংরেজি, অর্থনীতি, হিসাববিজ্ঞান, রাষ্ট্রবিজ্ঞান, মার্কেটিং ইত্যাদি রাখা হয়েছে। কিন্তু ট্যুরিজম এন্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট যেহেতু তুলনামূলকভাবে নতুন এবং বিশেষায়িত একটি বিষয়, তাই এটি এখনও আলাদাভাবে শিক্ষা ক্যাডারের নিয়োগ তালিকায় আসেনি।

কয়েকদিন আগে ম্যানেজমেন্ট সাবজেক্ট এর আওতায় ট্যুরিজম এর শিক্ষা ক্যাডার চালু করার কথা উঠেছিল কিন্তু পরে বাতিল করা হয়েছে। বর্তমানে ৭টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় যেখানে ট্যুরিজম এন্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগ আছে যেমন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, রাঙামাটি বিজ্ঞান ও পযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চটঝঞ)।

ট্যুরিজম শুনলেই আমাদের দেশের মানুষ মনে করেন, হোটেল এ চাকরি কিন্তু হোটেল ছাড়াও যে আরো বিস্তৃত ক্ষেত্র রয়েছে তা গুরুত্ব দেয় না। পাঠ্যক্রমে স্বীকৃতি থাকলেও চাকরির কাঠামোতে নেই বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজে ট্যুরিজম পড়ানো হচ্ছে। কিন্তু বিসিএস শিক্ষা ক্যাডারে আলাদা পদ নেই। প্রচলিত বিষয়কে অগ্রাধিকার এখনো মূলত সাধারণ বিষয়ের প্রার্থীদের নিয়োগ দেওয়া হয়। বিষয়ের নবীনতা ট্যুরিজমকে অনেকেই এখনো প্রফেশনাল বা ভোকেশনাল বিষয় হিসেবে দেখেন, একাডেমিক মেইনস্ট্রিমের অংশ হিসেবে কম গুরুত্ব দেওয়া হয়। নীতি নির্ধারণে অগ্রাহ্যতা শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও পাবলিক সার্ভিস কমিশনের কাঠামোগত নীতিমালায় ট্যুরিজমকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি।

ফলে যারা ট্যুরিজমে পড়াশোনা করছেন, তারা বিসিএস শিক্ষা ক্যাডারের সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। যোগ্য স্নাতকরা বাধ্য হয়ে অন্য ক্যাডার (প্রশাসন, ট্যুরিজম বোর্ড বা প্রাইভেট সেক্টর) খুঁজে নিচ্ছেন। এতে বিষয়টির প্রতি শিক্ষার্থীদের আগ্রহ কমে যাচ্ছে। অভিভাবক সহ বেশিরভাগ মানুষ মনে করেন ট্যুরিজম পড়ে কোনো চাকরি নেই। এটা শেষের দিকের বিষয় এবং কম মেধাবী শিক্ষার্থীরা এই বিষয়ে পড়াশোনা করবে যা সম্পূর্ণ ভুল ধারণা। কারণ ট্যুরিজম এন্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিদেশে টপ ১০ বিষয়ের মধ্যে একটি কিন্তু আমাদের দেশে সে স্থান এখনও পাই নি। এর পেছনে মূল কারণ হচ্ছে নতুন বিষয় আমাদের জন্য। 

বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (টএঈ), শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও ইচঝঈ-এর সমন্বয়ে নতুন পদ সৃষ্টির উদ্যোগ নিতে হবে। ট্যুরিজম বাংলাদেশের অর্থনীতির সম্ভাবনাময় খাত। তাই দক্ষ শিক্ষক তৈরি ও বিসিএস শিক্ষা ক্যাডারে অন্তর্ভুক্তি জরুরি। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্যুরিজম এন্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগের সভাপতি ড. মোহাম্মদ জাহিদ হোসেন।

তিনি তাঁর বক্তব্যে বলেন, ইতিমধ্যে তার বিভাগ থেকে পাশ করে শিক্ষার্থীরা সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, হোটেল, এবং বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান এ কর্মরত রয়েছেন।

তিনি আরও বলেন, যদি শিক্ষা ক্যাডার এ ট্যুরিজম বিষয়টাকে অন্তর্ভুক্ত করা হয় তাহলে এই বিষয়ের ওপর বিবিএ এবং এমবিএ করা শিক্ষার্থী একদম যোগ্য শিক্ষক হতে পারবে এবং সঠিক পাঠদান সম্ভব হবে এবং বিভাগের শিক্ষার্থীরা মনে করেন, ট্যুরিজম এর অন্তর্গত প্রতিষ্ঠান যেমন বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ড, হোটেল, মোটেল এয়ারলাইন্স, ট্রাভেলএজেন্সি ইত্যাদি এসবের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা নির্বাচন করা হোক, ট্যুরিজম এর উপর যারা বিবিএ এবং এমবিএ করেছে তাদের থেকে (বিসিএস এর মাধ্যমে)।

বিভাগের সভাপতি এ বিষয়ে সহমত পোষণ করে বলেন, ট্যুরিজম বিষয়টির উপর যারা বিবিএ এবং এমবিএ করছে তাদেরকে প্রতিষ্ঠান গুলো নিয়োগ দিলে যোগ্য মানবসম্পদ পাবে। কারণ বর্তমান এ যারা ট্যুরিজম এর বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান এ কর্মরত আছেন তারা বেশিরভাগ এই বিষয় সম্পর্কে সম্পূর্ণ অবগত নহে। ভবিষ্যতে যদি এইসব মেধাবী শিক্ষার্থীদের কাজে লাগানো না যায়, তাহলে ট্যুরিজম ইন্ডাস্ট্রি মুখ থুবড়ে পড়বে বলে মনে করেন ড. মোহাম্মদ জাহিদ হোসেন।



 

সম্পাদকীয় :

প্রকাশক ও সম্পাদক : মোঃ গোলাম মাওলা শাওন
মোবাইল : ০১৭১১-০০৬২১৪

অফিস :

প্রধান কার্যালয় : ৩১/১ শরীফ কমপ্লেক্স ৫ম তলা পুরানা পল্টন ঢাকা ১০০০

মোবাইল : ০১৯৯৯-৯৫৩৯৭০

ই-মেইল : [email protected],  [email protected]