দিনাজপুর প্রতিনিধি: দিনাজপুরের মধ্যপাড়ায় শালিকার সঙ্গে পরকীয়ার জেরে গণপিটুনিতে আহত মাফিজুল ইসলাম (৪৮) নামের এক ব্যক্তির হাসপাতালে নেওয়ার পথে মৃত্যু হয়েছে।
ঘটনার ১১দিন পরে পার্বতীপুর মডেল থানায় ২২ জনকে আসামি করে ১৪ই সেপ্টেম্বর মামলা রেকর্ড হয়েছে, যার মামলা নং ১৩ তাং ১৪/৯/২৫ইং। মামলা রেকর্ড হওয়ার পর থেকে পলিপাড়া ও কোটওয়াল পাড়া এলাকা পুরুষ শুন্য।
এদিকে, প্রকৃত ঘটনা আড়াল করতে এবং নিজের অপকর্ম লুকাতে নিহত মাহফিজুলের ছেলে সজীব ইসলাম তার বাবার পূর্ব শত্রুদের সঙ্গে আঁতাত করে মধ্যপাড়া রেলওয়ে স্টেশনের জমির লিজ বাতিল কে কেন্দ্র করে বিবাদের কারণ দেখিয়ে প্রকৃত বৈধ লিজ ধারীগন সহ স্ধসঢ়হানীয় বিএনপি নেতা মমিনুল হক কে প্রধান আসামি করে মামলা দায়ের করায় জনমনে বিরুপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে।
মাফিজুল ইসলাম নিহত হওয়ার পর পুলিশ আটক কৃত ০৪ জনকে বিজ্ঞ আদালতে প্রেরন প্রতিবেদনে স্পষ্ট উল্লেখ করেন, ্য়ঁড়ঃ মাহফিজুল ইসলামের সহিত শালিকা ফেন্সি আরার দীর্ঘ দিনের পরকীয়া প্রেমের সম্পর্ক বিদ্যমান। সেই সুত্র ধরে ০৪/০৯/২৫ তারিখ রাত্রী ২.০৫ ঘটিকার সময় মাফিজুল ইসলাম শালিকা ফেন্সি আরা বেগম (৪০) এর শয়ন কক্ষের ভিতরে প্রবেশ করে উভয়ই শারিরীক সম্পর্কে মিলিত হইলে ফেন্সি আরার স্বামী আসামি বনিজ উদ্দিন (বকুল) দ্৩৯জন কেই হাতে নাতে আটক করে রশ্মি দিয়ে বেঁধে লাঠি দিয়ে মারধর করে।
মধ্যপাড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্র ইনচার্জ উজ্জ্বল মৈত্র স্বাক্ষরিত লিখিত বক্তব্যে উপস্থাপন পার্বতীপুর মডেল থানার জিডি নং ২০৪ তারিখ ০৪/০৯/২৫ ধারা ফৌঃকাঃবিঃ ৫৪ এবং ক্রমিক নং০২/২৫( পার্বতীপুর) প্রতিবেদনে জানা গেছে।
গত ৪ সেপ্টেম্বর /২৫ পার্বতীপুর উপজেলার মধ্য পাড়া পাথর খনি এলাকার পলিপাড়া গ্রামের মৃত্যু আনছার আলীর ছেলে মোঃ মাফিজুল হক পার্শ্ববর্তী খাগড়াবন্দ কোটওয়াল পাড়ায় শালিকা ফেন্সিয়ারা ঘরে গিয়ে মেলামেশার সময় আটক হয়ে মারপিটে শিকার হয় এবং হাসপাতালে নেওয়ার পথে মারা যায়।
এ ঘটনায়, পুলিশ ৪ জন কে জেল হাজতে প্রেরন করেন। নিহত মাফিজুলের ভায়রা বনিজ উদ্দিন বকুল ছাড়াও ছেলে মোঃ সজীব ইসলাম স্ত্রী সন্ধসঢ়;জুয়ারা বেগম নির্যাতনে অংশ নেয় এবং মারধরের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। প্রত্যক্ষদর্শীগনের ভাষ্য ও ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে এ খবরটি’র সত্যতা মিলেছে। এ ঘটনায় মাফিজুলের ছেলে সজীব ইসলাম জানান গত ৮/৯/২৫ তারিখে থানায় মামলা দায়ের করতে গেল সংশ্লিষ্ট ওসি আমাকে মামলার বাদী না হয়ে আসামি করার হুমকি দিয়ে তাড়িয়ে দিয়েছেন এবং পরবর্তীতে আমি বাদী হয়ে মামলা করেছি।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, মাফিজুল ইসলাম গত কয়েক বছর যাবত তার আপন ভায়রা বনিজ উদ্দিন বকুলের স্ত্রী ফেন্সিয়ারা বেগমের সাথে পরকীয়া প্রেমে লিপ্ত হয়ে দীর্ঘদিন যাবত শারিরিক যৌন সম্পর্ক গড়ে তোলে। তারা দুজন অসংখ্য বার স্থানীয় লোকদের হাতে ধরা পড়ে সামাজিক বিচারের মুখোমুখিও হন। শালিকা ফেনসিয়ারার দায়ের কৃত ধর্ষন মামলায় মাফিজুল ইসলাম আসামী হয়ে মাসাধিক কাল জেল হাজত খাটেন। শুধু তাই নয় মধ্যপাড়া কলেজ মাঠের শাহ আলম ড্রাইভারের স্ত্রী দুই সন্তানের জননী মোছাঃ তহুরা বেগমের সঙ্গে তার ব্যাবসায়ীক দোকানে কয়েক দফায় অপ্রীতিকর অবস্থায় আটক হয়ে জনরোষে পড়ে জেল হাজতে যায়।
ঘটনার ধারাবহিকতায় আবারও সে তার শালিকার ঘরে প্রবেশ করে শারিরীকভাবে যৌন সম্পর্কে লিপ্ত হন। এসময় বনিজ উদ্দিন বকুল প্রতিবেশী লোকজন নিয়ে তার স্ত্রী ও ভায়রা মাফিজুলকে অনৈতিক অবস্থায় দেখতে পান। বনিচ উদ্দিন বকুল তার স্ত্রী ফেন্সিয়ারা বেগম ও ভাতিজা কলেজ ছাত্র মোঃ রাশেল ইসলাম মধ্যপাড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রে গিয়ে তাদেরকে হত্যার হুমকি দিচ্ছে মর্মে সাধারন ডায়েরী করতে চাইলে পুলিশ কৌশলে তাদের কে আটকে দেয়। ওই সময়েই ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা উজ্জল মৈত্র মাফিজুলের মৃত্যুর সংবাদ পেলে সাধারন ডায়েরী করতে আসা তিন ব্যক্তিকে আটক করে পার্বতীপুর মডেল থানায় প্রেরণ করেন।
এ হত্যাকান্ডের ঘটনায় মধ্যপাড়া পুলিশ তাহাজুল ইসলাম নামের এক খনি শ্রমিককে একই পাড়ার মৃত্যু নজির হোসেনের ছেলে জেনারুল ইসলামের নেতৃত্বে মব সৃষ্টি করে কয়েক জন চক্রান্ত মুলক ভাবে আটক করে থানায় দেয় বলে পুলিশ নিশ্চিত করেছেন। পরকিয়া করতে গিয়ে প্রান হারানোর ঘটনা আড়াল করতে কতিপয় চক্রান্তকারী মধ্যপাড়া রেলস্টেশনের পতিত কয়েক একর জমি নিয়ে মাফিজুল গংদের সঙ্গে বৈধলিজ ধারিদের বিরোধ চলমান থাকার সুযোগ কাজে লাগাতে বিষয় টি ভিন্ন খাতে প্রবাহের চেষ্টায় নিরাপরাধ বিএনপি পন্ধিসঢ়হ সাধারণ মানুষ গুলোকে হত্যা মামলায় জড়ানো হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
সরেজমিনে গেলে এলাকা বাসী মাফিজুল হত্যার সঠিক বিচার নিশ্চিত করার দাবি জানিয়ে বলেন, যেহেতু মাফিজুল কে হাসপাতালে নেওয়ার পূর্বে তার ছেলে সজীব মিয়া স্ত্রী সন্ধসঢ়জুয়ারা বেগম নির্মমভাবে নির্যাতন করেছে যা ভাইরাল ভিডিও তে স্পষ্ট দৃশ্য মান, তাই আসামি তালিকায় তাদের নাম থাকা উচিৎ ছিল।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন জানান, নিহত মাফিজুল হকের সঙ্গে দীর্ঘদিন হতে রেলওয়ের জমির দখল এবং আওয়ামিলীগ দলীয় প্রভাব নিয়ে প্রতিবেশী বকুল মিয়ার ছেলে মাহাবুবুর রহমানের অস্তিত্বের লড়াই চলছিল এবং দফায় রক্ত ক্ষয়ী সংঘর্ষ সহ কয়েকটি মামলা চলমান অবস্থায় কৌশলী মাহাবুর মাফিজুলের সঙ্গে সাম্প্রতিক সময়ে হাত মিলায়।
আহত মাফিজুল কে হাসপাতালে নেওয়ার সময় চিরশত্রু মাহবুব একই গাড়িতে ছিল, সন্দেহের তীর সে এড়াতে পারে না। উপজেলার ১০ নং হরিরামপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ দলীয় চেয়ারম্যান মোজাহিদুল ইসলাম সোহাগ এর আর্শিবাদ পুষ্ট হওয়ায় মাহফিজুল বেপরোয়া ভাবে চলতো এবং আইনের তোয়াক্কা করতো না বলেই শালিকার বাড়িতে বীরদর্পে যাতায়াত করতো। সোহাগ চেয়ারম্যান তার সকল অপকর্মের মদদদাতা এবং মধ্যপাড়া ভাদুরীবাজারের বিভিন্ন জায়গা দখল করে তার মাধ্যমে টাকা হাতিয়ে নিতো বলে এলাকাবাসী জানান।
সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন বিএনপির কৃষক দলের সিনিয়র সহ -সভাপতি সাইমুল ইসলাম বলেন, মাফিজুল নিহতের সঠিক সুষ্ঠু বিচার নিশ্চিত হোক এটা আমারাও দাবি করি।
তবে শালিকার সঙ্গে পরকীয়ার জেরে নিহত হওয়ার ঘটনা আড়াল করতে রেলওয়ের বৈধ লিজ ধারী দের জড়িয়ে মামলা দায়ের গভীর ষড়যন্ত্র, সেই সঙ্গে বিএনপি নেতা মমিনুল ইসলাম এবং তার ছেলে তরিকুল ইসলাম সুমন সহ অন্যান্য বিএনপি কর্মিদের নামে মামলা দিয়ে হয়রানির তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি পুলিশ প্রশাসন নিশ্চয়ই সঠিক তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত সত্য উদঘাটন করবেন।
এ ব্যাপারে পার্বতীপুর মডেল থানার অফিসার ইন্ধসঢ়চার্জ আব্দুল্লাহ আল মামুন মামলা দায়েরের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, সঠিক তদন্ত সাপেক্ষে আইননানুগ ব্যবস্থা গৃহীত হবে।