হাত দিলেই উঠে যাচ্ছে রাস্তার কার্পেটিং

আপলোড সময় : ১৩-০৯-২০২৫ ০৮:২২:৩৫ অপরাহ্ন , আপডেট সময় : ১৩-০৯-২০২৫ ০৮:২২:৩৫ অপরাহ্ন
 
মো: গোলাম কিবরিয়া, রাজশাহী প্রতিনিধি:
 
রাজশাহীর দুর্গাপুর উপজেলার তিওরকুড়ি থেকে পাঁচবাড়ি হয়ে দেলুয়াবাড়ি পর্যন্ত চার কিলোমিটার দীর্ঘ নতুন গ্রামীণ সড়কের পিচ কার্পেটিং মাত্র এক মাসের মধ্যে হাত দিয়ে টান দিলে উঠে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয়রা কাজের নিম্নমানকেই দায়ী করছেন এবং সঠিক তদন্তের দাবি জানিয়েছেন।
 
সড়কটি সম্প্রতি স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) গ্রামীণ সড়ক প্রকল্পের আওতায় সংস্কার করা হয়েছে। এই কাজে খরচ হয়েছে ২ কোটি ৬৫ লাখ ৩৭ হাজার ৮৯৬ টাকা। নির্মাণ কাজ বাস্তবায়ন করেছে, চট্টগ্রামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স ইউনুস অ্যান্ড ব্রাদার্স, যা গত ২৫ ফেব্রুয়ারি শুরু হয়। তবে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজ শেষ না হওয়ায় সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময় বাড়ানো হয়।
 
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, সড়কের পিচ কার্পেটিং ঠিকমতো জমাট হয়নি। স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন, মাটি লেভেল করা হয়নি, ইটখোয়া, বালু বা কুচি পাথর ঠিকভাবে বসানো হয়নি এবং সরাসরি পিচ ঢালাই করা হয়েছে। ফলে ছোটখাটো যানবাহনের চাপেই সড়কের পিচ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে।
 
এলাকার বাসিন্দা মাসুদ রানা বলেন, “পা দিয়ে চাপ দিলেই কার্পেটিং উঠে যাচ্ছে। নতুন সড়কে এমন হওয়ার কথা নয়। আমরা কাজ চলাকালীন প্রতিবাদ করেছি, কিন্তু তা কোনো কাজে আসেনি।”
 
ইয়াসিন আলী জানান, “পরিমাণমতো উপকরণ ব্যবহার না হওয়ায় সড়কের পিচ উঠে যাচ্ছে। ট্রাক চললে সড়ক পুরোপুরি নষ্ট হবে, ভারী বৃষ্টিতেও পিচ থাকবে না।”
 
দেলুয়াবাড়ি এলাকার বাসিন্দা আবু বাক্কার বলেন, “সড়কের কার্যাদেশমূল্য ২ কোটি ৬৫ লাখ হলেও পরে তা বাড়িয়ে খরচ দেখানো হয়েছে প্রায় ৩ কোটি টাকা। এতো টাকা দিয়ে এমন দায়িত্বহীন কাজ মেনে নেওয়া যায় না।”
 
তিওরকুড়ি এলাকার বাসিন্দা আনজুয়ারা বেগম বলেন, “পিচ ঢালাইয়ের আগে মাটি ঠিকমতো রোলিং করা হয়নি। ধুলাবালির ওপরেই ঢালাই করা হয়েছে। প্রতিবাদ করলেও ঠিকাদার কারও কথা শোনেনি, এলজিইডির কর্মকর্তাও আসেননি।”
 
নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় একজন ঠিকাদার জানিয়েছেন, “পিচ কার্পেটিং হাত বা পা দিলে উঠে যাচ্ছে, কারণ অ্যাসফল্ট ঠিকমতো ব্যবহার করা হয়নি। নিম্নমানের উপকরণ ব্যবহার এবং পাথর-বালু-বিটুমিনের অনুপাতে ত্রুটি থাকায় এই সমস্যা তৈরি হচ্ছে।”
 
এলাকার অভিযোগের বিষয়ে মেসার্স ইউনুস অ্যান্ড ব্রাদার্স এর প্রতিনিধি ওয়াসিম হোসেন বলেন, তিনি কোন মন্তব্য করতে পারবেন না।
 
অপরদিকে, এলজিইডির দুর্গাপুর উপজেলা প্রকৌশলী মাসুক ই মোহাম্মদ দাবি করেছেন, “সড়কটি ঠিকঠাক নির্মাণ করা হয়েছে। কাজ খারাপ হয়েছে বলে এলাকার মানুষের অভিযোগ সঠিক নয়।”
 
তবে এলজিইডি রাজশাহীর নির্বাহী প্রকৌশলী জহিরুল ইসলাম জানান, “সড়কের পিচ কার্পেটিং উঠে যাচ্ছে এমন অভিযোগ আমাদের কাছে এসেছে। উপজেলা প্রকৌশলীকে সরেজমিনে পরিদর্শন করে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। নির্মাণে ত্রুটি ধরা পড়লে ঠিকাদারকে পুনঃনির্মাণের নির্দেশ দেওয়া হবে।”



 

সম্পাদকীয় :

প্রকাশক ও সম্পাদক : মোঃ গোলাম মাওলা শাওন
মোবাইল : ০১৭১১-০০৬২১৪

অফিস :

প্রধান কার্যালয় : ৩১/১ শরীফ কমপ্লেক্স ৫ম তলা পুরানা পল্টন ঢাকা ১০০০

মোবাইল : ০১৯৯৯-৯৫৩৯৭০

ই-মেইল : [email protected],  [email protected]