মাসুদ রানা রাব্বানী, রাজশাহী:
চলতি বছর রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে সাপের কামড়ে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা গত ১৪ বছরের রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে। উদ্বেগজনক এই তথ্য জানিয়েছেন হাসপাতালের আইসিইউ প্রধান ডা. আবু হেনা মোস্তফা কামাল।
তিনি বলেন, সাপের কামড়ের রোগীর সংখ্যা অপ্রত্যাশিতভাবে বৃদ্ধি পেলেও উন্নত চিকিৎসার ফলে মৃত্যুহার কিছুটা কমেছে। ডা. মোস্তফা কামালের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ২০২৪ সালে আইসিইউতে ৫৭ জন সাপে কামড়ানো রোগী ভর্তি হয়েছিলেন, যার মধ্যে মৃত্যুহার ছিল ২৪%। তবে চলতি বছর ৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৮৬ জনে।
আশার কথা হলো- নিবিড় পরিচর্যা ও দ্রুত চিকিৎসার কারণে এই বছর মৃত্যুহার ১৩% এ নেমে এসেছে। চলতি বছর রাসেল ভাইপারের কামড়ে আক্রান্ত হয়ে ৮ জন রোগী আইসিইউতে ভর্তি হয়েছেন। যার মধ্যে মারা গেছেন ৬ জন। স¤প্রতি কুষ্টিয়া জেলার ২৫ বছর বয়সী এক ছাত্র পদ্মা নদীর ধারে নানা বাড়িতে বেড়াতে গিয়ে রাসেল ভাইপারের কামড়ে গুরুতর আহত হন। তিনি রামেক হাসপাতালে আইসিইউতে ভর্তি হয়ে হেমো ডায়ালাইসিসসহ উন্নত চিকিৎসা শেষে শঙ্কামুক্ত হয়ে এখন ওয়ার্ডে রয়েছেন।
অন্যদিকে, ঘরের ভেতরে কামড়ানো সাধারণ সাপ (ঈড়সসড়হ কৎধরঃং) দ্বারা আক্রান্ত ৭৮ জন রোগীর মধ্যে ৭৩ জন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন, যা প্রায় ৯৪% সাফল্যের হার।
ডা. মোস্তফা কামাল জানান, রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সাপে কামড়ানো রোগীদের বিনামূল্যে অ্যান্টিভেনম দেওয়া হয়। প্রতিটি রোগীর চিকিৎসায় সরকার কেবল অ্যান্টিভেনম বাবদ গড়ে ৩০ থেকে ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত খরচ করছে।
তিনি জোর দিয়ে বলেন, দেরিতে হাসপাতালে আসার কারণেই অনেককে বাঁচানো সম্ভব হয় না। এ বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধির ওপর জোর দিয়েছেন তিনি।
তার মতে, একটিও সাপে কামড়ানো রোগী মারা যাবে না, এটাই আমাদের কামনা। এজন্য সাপে কামড়ানো রোগী দ্রুত হাসপাতালে ভর্তি করাতে হবে। সচেতনতার পাশাপাশি ডা. মোস্তফা কামাল নদী তীরবর্তী এলাকার কৃষকদের সাপের কামড় থেকে রক্ষা পাওয়ার একটি কার্যকর উপায় গামবুট ব্যবহার বাধ্যতামূলক করা। রাসেল ভাইপার ও অন্যান্য সাপের উপদ্রব থেকে বাঁচতে সকলকে সতর্ক থাকতে হবে এবং সাপ কামড়ালে কালক্ষেপণ না করে দ্রুত নিকটস্থ হাসপাতালে যেতে হবে।