
মো: হারুন-উর-রশীদ, ফুলবাড়ী (দিনাজপুর) থেকে:
দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজলায় আওয়ামীলীগের শাসন আমলের ১১ বছর ও অন্তবর্তীকালিন সরকারের ১ বছর মোট ১২ বছর দিনাজপুর ফুলবাড়ী উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তার দায়িত্বে আখতারুজ্জামান। দির্ঘদিন একই স্টেশনের দায়িত্বে থাকায় স্থানীয় নেতা-কর্মীদের সাথে সক্ষমতা তৈরী করে সমাজসেবা অধিদপ্তরের সুবিধাভোগিদের কাছ থেকে হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা। এমন অভিযোগ উঠেছে বর্তমান সমাজসেবা কর্মকর্তা আখতারুজ্জামান এর বিরুদ্ধে।
উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা আখতারুজ্জামান বিগত আওয়ামীলীগ সরকারের ১১ বছর সাবেক মন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমানের আস্থাভাজন ও অনুগত ছিলেন। সেই সময় আওয়ামীলীগের মনোনিত ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যানদের আবদার মেটাতে ও তাদের সানিধ্যে থাকার চেষ্টায় সেই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানেরদ এলাকার যে সকল মাদ্রাসা ক্যাপিটেশন গ্রান্ডের জন্য আবেদন করেছিলো তাদের যাচাই বাচাই ছাড়াই নিবন্ধনের সুযোগ করে দেন তিনি। সেকারনে ক্যাপিটেশন গ্রান্ড পাওয়া কোন মাদ্রাসাতে মেলেনি অসহায়, দুস্থ্য, এতিমদের সঠিক হিসাব। যে মাদ্রসায় ৮৭ জন এতিম, দুস্থ্যদের ক্যাপিটেশন উত্তোলন করা হয়। সেই মাদ্রাসার শিক্ষার্থীর সংখ্যায় ৫০ জন। এমন অবস্থা উপজেলার অধিকাংশ ক্যাপিটেশন গ্রান্ড মাদ্রসা গুলোতে।
মাদ্রসার কমিটির অনেকেই অভিযোগ করে বলেন, উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা নিজেই আমাদের বলেছেন যে, শিক্ষার্থী বাড়িয়ে নিয়ে ক্যাপিটেশন বাড়িয়ে নেন। এতে আপনাদের লাভ হবে।
এছাড়াও, আওয়ামীলীগের সমর্থনকারী বিবাহিতদের বিধবা বানিয়ে ভাতা কার্ড তৈরী করে দেওয়া, আওয়ামীলীগের চেয়ারম্যানদের সাথে যোগ সাজসে প্রতিবন্ধী ভাতা, বয়স্ক ভাতা সিলেকশন ও ক্লাব সংস্থার রেজিস্ট্রেশনসহ চিকিৎসা অনুদানের টাকার কমিশন বানিজ্য করার মতো অনেক অপরাধ সংগঠিত করেছেন সাবেক মন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমানের আস্থাভাজন বর্তমান ফুলবাড়ী উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা আখতারুজ্জামান। টাকা ছাড়া কোন কাজ হয় না ফুলবাড়ী সমাজসেবা অফিসে এমনও অভিযোগ করে অনেকে।
সরাসরি মাদিলাহাট আল-হেরা জামিয়াতুল হোসাইনিয়া হাফিজিয়া মাদ্রাসা লিল্লাহ বোর্ডি ও এতিমখানায় তদন্তে দেখা যায় যে মাদ্রসায় ৮৪ জন এতিম, দুস্থ্যদের ক্যাপিটেশনের টাকা উত্তোলন করে, সেই মাদ্রাসার শিক্ষার্থীর সংখ্যায়ই ৫০ জন।
চৌরাইট মহেশপুর হাফিজিয়া কাওমি মাদ্রসা তদন্তে মাদ্রাসার সহকারী শিক্ষক বলছেন, তার মাদ্রসার শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১২ থেকে ১৮ জন। সেই মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল মকসেদ আলী বলছেন, শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৩৬ জন কিন্তু ক্যাপিটেশনের টাকা তুলছেন ৪০ জনের, সেটা যে অন্যায় তাও তিনি বুঝেন।
জামিয়াতুল আবরার আশরাফুল উলুম হাফেজিয়া লিল্লাহ বোডিং ও এতিমখানা মাদ্রাসা দতন্তে দেখা যায় ক্যাপিটেশন গ্রান্ড থাকা স্বত্বেও ক্যাপিটেশন তালিকা ভুক্ত শিক্ষার্থীর অভিভাবকের কাছ থেকে মাসে ২০০০ হাজার টাকা বেতন নেওয়া হয়। এছাড়াও পরীক্ষার ফি, ভর্তি ফিসহ অন্যান্য বিদ্যুৎ বিল পর্যন্ত আদায় করা হয়।
উত্তর লক্ষিপুর মাদ্রসার কমিটির সাবেক মিনহাজ বলেন, আমার জানা মতে ৭ থেকে ৯ জন শিক্ষার্থী দিয়ে আমাদের মাদ্রসার ক্যাপিটেশন গ্রান্ড চালু করা হয়। সেই সময় সমাজসেবা আমাদের বলেছিলো শিক্ষার্থী বাড়িয়ে নেন। আর সুবিধা বেশি গ্রহন করেন। সামাজসেবা থেকে নিবন্ধিত এনজিও এফডিওকে সাবেক মন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমানের জামাইকে হস্তান্তর করতে বাধ্য করেন সমাজসেবা কর্মকর্তার আখতারুজ্জামান।
এমন অভিযোগ করেন, এফডিও এনজিওর নির্বাহী পরিচালক সৈয়দ সিরাজুল ইসলাম। সরজমিনে ঘুরে বেতদিঘি ইউনিয়নের আল-হেরা মাদ্রসা, চৌরাইট মাদ্রাসা, রুদ্রানি মাদ্রাসা, লক্ষিপুর মাদ্রাসা, কড়াইপাড়া মাদ্রাসা, কানাহার মাদ্রসাসহ সকল মাদ্রসায় বর্তমান শিক্ষার্থীদের সংখ্যার চেয়ে ক্যাপিটেশন শিক্ষার্থ তালিকায় সংখ্যা বেশি দেখা যায়।
উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা আক্তারুজ্জামান সাবেক ইউনিয়ন পষিদের চেয়ারম্যানগণ ও আওয়ামীলীগের নেতা-কর্মীদের সাথে সক্ষমতার সুযোগে অযোগ্য মাদ্রাসাকে যোগ্য হিসাবে চিহ্নিত করে ক্যাপেটেশন গ্রান্ড পাইয়ে দেওয়ার মতো অপরাধ, আওয়ামীলীগের সমর্থনকারী বিবাহিতদের বিধবা বানিয়ে ভাতা কার্ড তৈরী করে দেওয়া, আওয়ামীলীগের চেয়ারম্যানদের সাথে যোগ সাজসে প্রতিবন্ধী ভাতা, বয়স্ক ভাতা সিলেকশন ও ক্লাব সংস্থার রেজিস্ট্রেশনসহ চিকিৎসা অনুদানের টাকার কমিশন বানিজ্য করার মতো অনেক অপরাধ সংগঠিত করেছেন সাবেক মন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমানের আস্থাভাজন বর্তমান ফুলবাড়ী উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা আখতারুজ্জামান। বর্তমানে তিনি যেদিকে বৃষ্টি সেদিকে ছাতা ধরার মতো চালাকি করে চলছে।
সরাসরি মাদিলাহাট আল-হেরা জামিয়াতুল হোসাইনিয়া হাফিজিয়া মাদ্রাসা লিল্লাহ বোর্ডি ও এতিমখানায় তদন্তে দেখা যায় যে মাদ্রসায় ৮৪ জন এতিম, দুস্থ্যদের ক্যাপিটেশনের টাকা উত্তোলন করে, সেই মাদ্রাসার শিক্ষার্থীর সংখ্যায়ই ৫০ জন।
চৌরাইট মহেশপুর হাফিজিয়া কাওমি মাদ্রসা তদন্তে মাদ্রাসার সহকারী শিক্ষক বলছেন, তার মাদ্রসার শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১২ থেকে ১৮ জন। সেই মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল মকসেদ আলী বলছেন, শিক্ষার্থীর সংখ্যা ৩৬ জন কিন্তু ক্যাপিটেশনের টাকা তুলছেন ৪০ জনের, সেটা যে অন্যায় তাও তিনি বুঝেন।
জামিয়াতুল আবরার আশরাফুল উলুম হাফেজিয়া লিল্লাহ বোডিং ও এতিমখানা মাদ্রাসা দতন্তে দেখা যায় ক্যাপিটেশন গ্রান্ড থাকা স্বত্বেও ক্যাপিটেশন তালিকা ভুক্ত শিক্ষার্থীর অভিভাবকের কাছ থেকে মাসে ২০০০ হাজার টাকা বেতন নেওয়া হয়। এছাড়াও পরীক্ষার ফি,ভর্তি ফিসহ অন্যান্য বিদ্যুৎ বিল পর্যন্ত আদায় করা হয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মাদ্রাসার সহকারী শিক্ষক বলেন, চৌরাইট মহেশপুর হাফিজিয়া কাওমি মাদ্রাসা মোট ১৪ থেকে ১৮ জন শিক্ষার্থী আছে তবে এতিম একটাও নেই।
জামিয়াতুল আবরার আশরাফুল উলুম হাফেজিয়া লিল্লাহ বোডিং ও এতিমখানা মাদ্রাসান শিক্ষার্থীর অভিভাবক আলতাফ হেসেন জানান,
আমি আমার চাচ্চার খাবার দাবারের জন্য মাসে ২০০০ হাজার টাকা দেই।
বেদদিঘী ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান আব্দুল মান্নন বলেন, আল-হেরা মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল ৫ আগষ্টের আগে কি করেছে তা জানিনা। তবে এরপর অনেক অনুষ্ঠান করলেও আমাকে কোনদিন জানানো হয় নাই।
উত্তর লক্ষিপুর মাদ্রসার সাবেক কমিটির সদস্য মখলেছ বলেন, আমার জানা মতে ৭ থেকে ৯ জন শিক্ষার্থী দিয়ে আমাদের মাদ্রসার ক্যাপিটেশন গ্রান্ড চালু করা হয়। সেই সময় সমাজসেবা অফিসার আমাদের বলেছিলো শিক্ষার্থী বাড়িয়ে নেন। আরও সুবিধা বেশি গ্রহন করেন।
সৈয়দ সিরাজুল হক, এফডিও এনজিওর নির্বাহী পরিচালক বলেন, আমার সামাজসেবা থেকে নিবন্ধিত এনজিও এফডিওকে সাবেক মন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমানের জামাইকে হস্তাস্তর করতে বাধ্য করেন সমাজসেবা কর্মকর্তার আখতারুজ্জামান।
সম্মিলিত নাগরিক সমাজের আহবায়ক মো. হামিদুল হক বলেন, আমরা বিভিন্ন ভাবে জানতে পেরেছি এই সমাজসেবা কর্মকর্তা প্রায় ১২ বছর যাবৎ এই উপজেলায় থাকায় সাবেক মন্ত্রীর সহযোগি হিসাবে অনেক অন্যায় অনিয়ম করেছে। আমরা তার প্রত্যাহার দাবি করছি। এবিষয়ে ফুলবাড়ী উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা আখতারুজ্জামান এর সাথে কথা বলতে গেলে তিনি কোন কথা বলবেন না বলে সাফ জানিয়ে দেন।
সমাজসেবা অধিদপ্তর দিনাজপুরের পরিচালক আব্দুল মতিন বলেন, ক্যাপিটেশন গ্রান্ড কোন প্রতিষ্ঠান পাবে তার তদন্ত সংশ্লিষ্ট উপজেলা সমাজসেবা করে থাকে। আমরা তার সুপারিশে অনুমোদন দিয়ে থাকি। সমাজসেবা অফিসারের কোন অনিয়োম পাওয়া গেলে আমরা বিভাগীয় তদন্ত করে ব্যবস্থা নিবো।
এবং যে সকল মাদ্রসা ক্যাপিটেশনর সুবিধা ভোগ করছে, অথচ অনিয়ম আছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। “দীর্ঘদিন একই পদে থেকে স্থানীয় রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় যে ধরনের অনিয়ম-দুর্নীতি চালিয়ে আসছেন ফুলবাড়ী সমাজসেবা কর্মকর্তা আখতারুজ্জামান তাতে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে সরকারী তহবিল ও প্রকৃত সুবিধাভোগীরা। তাই অনতিবিলম্বে তার বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নেয়ার দাবি স্থানীয়দের।”