মোঃ আফজাল হোসেন, ফুলবাড়ী, দিনাজপুর প্রতিনিধি- দিনাজপুরের মধ্যপাড়ায় শালিকার সঙ্গে অবৈধ ভাবে শারীরিক মেলামেশার সময় হাতে নাতে ধরা পড়ে চরম মারপিটের স্বীকার হয়ে মাফিজুল ইসলাম (৫০) নামের এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে।
ঘটনাটি ঘটে মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১.৪৫ মিনিটের দিকে। মধ্যপাড়া পাথর খনি এলাকার পলিপাড়া গ্রামের মৃত্যু আনছার আলীর ছেলে মোঃ মাহফিজুল হক পার্শ্ববর্তী খাগড়াবন্দ কোটওয়াল পাড়ায় শালিকা ফেন্সিয়ারা ঘরে গিয়ে মেলামেশার সময় আটক হয়ে মারপিটে শিকার হয়। এ নির্যাতনের সাথে সরাসরি জড়িত নিহতের ভায়রা বনিজ উদ্দিন বকুল।
এছাড়াও, নিহত মাফিজুলের ছেলে মোঃ সজীব মিয়া স্ত্রী সন্ধসঢ়জুয়ারা জামাতা মেনারুল হক নির্যাতনে অংশ নেয়। প্রত্যক্ষদর্শীগনের ভাষ্য ও ধারনকৃত ভিডিওতে এ খবরটি’র সত্যতা মিলেছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, মাফিজুল ইসলাম গত কয়েক বছর যাবত তার আপন ভায়রা বনিজ উদ্দিন বকুলের স্ত্রী ফেন্সিয়ারা বেগমের সাথে পরকীয়া প্রেমে লিপ্ত হয়ে দীর্ঘদিন যাবত শারিরিক যৌন সম্পর্ক গড়ে তোলে। তারা দুজন অসংখ্য বার স্থানীয় লোকদের হাতে ধরা পড়ে সামাজিক বিচারের মুখোমুখিও হন।
শালিকা ফেনসিয়ারার দায়ের কৃত ধর্ষন মামলায় মাহফিজুল ইসলাম আসামী হয়ে মাসাধিক কাল জেল হাজত খাটেন। শুধু তাই নয় মধ্যপাড়া কলেজ মাঠের শাহ আলম ড্রাইভারের স্ত্রী দুই সন্তানের জননী মোছাঃ তহুরা বেগমের সঙ্গে তার ব্যাবসায়ীক দোকানে কয়েক দফায় অপ্রীতিকর অবস্থায় আটক হয়ে জনরোষে পড়ে জেল হাজতে যায়।
ঘটনার ধারাবহিকতায় আবারও সে তার শালিকার ঘরে প্রবেশ করে শারিরীকভাবে যৌন সম্পর্কে লিপ্ত হন। এসময় বনিজ উদ্দিন বকুল প্রতিবেশী লোকজন নিয়ে তার স্ত্রী ও ভায়রা মাফিজুলকে উলঙ্গ অবস্থায় দেখতে পান। এমন কুৎসিত দৃশ্য দেখে রইচ উদ্দিন বকুল নিজেকে সামলাতে না পেরে মাফিজুলের হাত ও পা বেঁধে লাঠি দিয়ে মারধর করে।
এ সময় নিহত মাফিজুলের স্ত্রী, ছেলে ও জামাইতা তার উপর নির্যাতন চালায়। মাফিজুল জ্ঞান হারিয়ে ফেললে তাকে রংপুর জেলার বদরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সে সময় কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষনা করেন।
এদিকে ঘটনাকে, আড়াল করতে বনিচ উদ্দিন বকুল তার স্ত্রী ফেন্সিয়ারা বেগম ও কলেজ ছাত্র মোঃ রাশেল ইসলাম মধ্যপাড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রে গিয়ে নিহত মাফিজুল ইসলাম তাদেরকে হত্যার হুমকি দিচ্ছে মর্মে সাধারন ডায়েরী করতে চাইলে তাদের পুলিশ কৌশলে আটকে দেয়। ওই সময়েই ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা উজ্জল মাফিজুলের মৃত্যুর সংবাদ পেলে সাধারন ডায়েরী করতে আসা তিন ব্যক্তিকে আটক করে পার্বতীপুর মডেল থানায় প্রেরণ করেন।
এ হত্যাকান্ডের ঘটনায় মধ্যপাড়া পুলিশ তাহাজুল ইসলাম নামের এক খনি শ্রমিককেও আটক করেছে বলে পুলিশ নিশ্চিত করেছেন। পরকিয়া করতে গিয়ে প্রান হারানোর ঘটনা আড়াল করতে কতিপয় চক্রান্তকারী মধ্যপাড়া রেলস্টেশনের পতিত কয়েক একর জমি নিয়ে মাহফিজুল গংদের সঙ্গে বৈধলিজ ধারিদের বিরোধ চলমান থাকার সুযোগ কাজে লাগাতে বিষয় টি ভিন্ন খাতে প্রবাহের চেষ্টা চালাচ্ছে এবং তাদের কে হত্যা মামলায় জড়ানোর মাস্টারপ্ল্যান তৈরি করেছে মর্মে অভিযোগ উঠেছে।
সরেজমিনে গেলে এলাকা বাসী মাহফিজুল হত্যার সঠিক বিচার নিশ্চিত করার দাবি জানিয়ে বলেন, যেহেতু মাহফিজুল কে হাসপাতালে নেওয়ার পূর্বে তার ছেলে সজীব মিয়া স্ত্রী সঞ্জুয়ারা জামাতা মেনারুল হক নির্মমভাবে নির্যাতন করেছে যা ভাইরাল ভিডিও তে স্পষ্ট দৃশ্য মান তাই আসামি তালিকায় তাদেরকে অবশ্যই সম্পৃক্ত করা উচিৎ।
অপরদিকে, নিহত মাহফিজুল হকের সঙ্গে দীর্ঘদিন হতে রেলওয়ের জমির দখল নিয়ে প্রতিবেশী বকুল মিয়ার ছেলে মাহাবুবুর রহমানের অস্তিত্বের লড়াই চলছিল এবং দফায় রক্ত ক্ষয়ী সংঘর্ষ সহ কয়েকটি মামলা চলমান অবস্থায় কৌশলী মাহাবুর মাহফিজুলের সঙ্গে সাম্প্রতিক সময়ে হাত মিলায়। আহত মাহফিজুল কে হাসপাতালে নেওয়ার সময় চিরশত্রু মাহবুব একই গাড়িতে ছিল, সন্দেহের তীর সে এড়াতে পারে না। ১০ নং হরিরামপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ দলীয় চেয়ারম্যান মোজাহিদুল ইসলাম সোহাগ এর আর্শিবাদ পুষ্ট হওয়ায় বেপরোয়া ভাবে চলতো।
এ ব্যাপারে পার্বতীপুর মডেল থানার অফিসার ইন্ধসঢ়;চার্জ আব্দুল্লাহ আল মামুন জানায়, নিহতের মরদেহ ময়না তদন্তে পাঠানো হয়েছে। ৪ জনকে আটকের কথা স্বীকার করে তিনি বলেছেন, আটককৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। মামলা দায়েরের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।